চুমকির বিয়ে
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ২৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:৪০:০৬ রাত
মা বাবার একমাত্র আদরের মেয়ে চুমকি। বাবা ছাদিক মিয়া সরকারী চাকরি করেন , চাকরির কারণে গ্রাম থেকে প্রায় ২৫ বছর আগেই শহরে চলে আসেন । ছাদিক মিয়া ছুটিতে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যেতেন। গ্রামের আত্বীয় স্বজন ছাদিক মিয়াকে অনেক ভালোবাসে শিক্ষা থাকার কারণে। ছাদিক মিয়ার গ্রামে খুভ অল্প সংখ্যক মানুষ উচ্চ শিক্ষিত। এবার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আত্বীয় সজনদের কাছে জানিয়ে আসলেন মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেবেন আর সেই বিয়েতে সবাইকে যেতে হবে। মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য ভালো পাত্র দেখা হয়েছে দিন-কন ও টিক করা শেষ।
চুমকি সবে মাত্র মাস্টার্স শেষ করেছে তার ইচ্ছে ছিল চাকরি করবে ,কিন্তু বাবা মা চিন্তা করলেন চাকরি করতে চাইলে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে করতে পারবে , এসব চিন্তা করে বাবা মা মেয়ের বিয়ে টিক করেছেন।ধুম-ধাম করে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন রাতে গায়ে হলুদ অনুষ্টান ছিল।সরকারী বাসাতে ছাদিক মিয়া থাকেন ৩ টি বেড রুম আছে বাসাতে। রাতে কিছু আত্বীয় স্বজন এসেছেন ,গ্রামের অধিকাংশ আত্বীয় আসবেন বিয়ের সেন্টারে ,বিয়ে শহরের উন্নত মানের একটি কমিনিউটি সেন্টারে হচ্ছে। সেন্টারে দেশের পরিচিত মুখ মেহমান হয়েও আসবেন চুমকির বাবার দাওয়াতে। বর পক্ষের ৬০০ জন অতিথি আসবেন।
দুপুর ১২ টার আগেই চুমকিকে নিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে যাওয়া হলো টিক সময় বর পক্ষ ও হাজির। আকদের কাজ ও সম্পন্ন করা হয়েছে। খাবার দাবার শেষে চুমকিকে বরের হাতে তুলে দেবেন ছাদিক মিয়া ,টিক সেই মুহুর্তে ১০-১২ টি যুবক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সেন্টারে হাজির যুবকদের মধ্যে এক জন সবাইকে নিরব থেকে তার কথা শুনার জন্য বলে। সে উপস্তিত সবাইকে জানিয়ে দিল আমার নাম শান্ত আমি চুমকিকে ভালোবাসি সুতরাং চুমকিকে অন্য কেউ পেতে পারেনা ।
চুমকির বাবা ঐ যুবকের কাছে জানতে চান চুমকি কি তোমায় ভালোবাসে ?যুবক জবাবে বলে সেটা চুমকি বলবে সবার সামনে। চুমকির বাবা চুমকিকে জিজ্ঞাসা করলে চুমকি বলে আমি কাউকে ভালোবাসি না আমি শুধু বন্ধুত্ব করেছিলাম । চুমকির নতুন বরের বাবা ও উপস্তিত অনেকে বিষয়টি ভালো করে জানার জন্য চুমকিকে খুলে বলার জন্য বলেন। চুমকি এবার খুলে বলতে লাগলো সে বলে ,আমার বাবা সরকারী চাকরি করতেন প্রায় সময় উনি বাসায় থাকতেন না মা ঘরের কাজে ব্যাস্ত থাকতেন আমি ভার্সিটিতে থাকতাম ঘরে আসলে নিজ ঘরে একা একা থাকতে হতো। তাই আমি মনে করলাম আমার বন্ধু প্রয়োজন সেই সুত্রে আমি প্রথমে একজন পরে একাদিক ছেলে বন্ধু ও তিন জন মেয়ে বন্ধু বানালাম সবাই আমার ভার্সিটির শিক্ষার্থী। বাবা মায়ের কাছ থেকে আমি ইচ্ছে মুতাবেক টাকা পেতাম সেই টাকা দিয়ে বন্ধুদের মধ্যে অধিক পছন্দের বন্ধুদের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী কিনে দিতাম ওরা ও দিত। ওদের কাছে প্রতি দিন ফোনে কথা হত একাদিকবার। ভার্সিটিতে একসাথে বসে আবার আলাদা আলাদা বসে আড্ডা দিতাম। অনেক সময় বন্ধুরা মিলে সিনেমা দেখতে যেতাম ,পর্যটন কেন্দ্রে যেতাম ,ভালো উন্নত মানের হোটেলে খাবার খেতে যেতাম ,অনেক রাত করে বাড়ি ফিরতাম ,আমি নেশা করতাম না কিন্তু আমার বন্ধুদের মধ্যে কয়েকজন নেশা করত। এরকম আমার ভার্সিটির শেষ দিন পর্যন্ত চলে যায়। আমি মাজে মধ্যে বুঝতে পারতাম আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকই আমাকে পাওয়ার চেষ্টা করত কিন্তু আমি সেদিকে নজর দিতাম না। চুমকি বলে সেন্টারে আশা অস্ত্রধারী যুবকদের মধ্যে সে শুধু শান্ত কে চেনে শান্ত তার বন্ধুদের মধ্যে এক বন্ধু ।
এসব শুনে বরের বাবা উপস্তিত সবাইকে জানিয়ে দেন আদালতের মাধ্যমে চুমকির সাথে তার ছেলের বিবাহ বিছিন্ন করবেন আর সেই কাজে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে যেন আজ যারা উপস্তিত হয়েছেন তারা তা করেন। এই বলে বর ও বরের পক্ষের লোক কে সাথে নিয়ে চলে যান বরের বাবা ।যে মেয়েটির মুখে সব সময় হাসি লেগে থাকত সেই চুমকি সাথে সাথে বদলে যায় তার দু -চুখ দিয়ে পানি পরতে থাকে।
এ দিকে চুমকির বাবা মায়ের লজ্জার পাহাড় তাদের কে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছিয়ে দিয়েছে । একে একে সকল মেহমান চলে গেলেন। মেহমান গেলেন নিজের বাড়ি আর চুমকি গেল দুনিয়া ছাড়ি।
বিষয়: বিয়ের গল্প
২১০০ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পড়ে মন্তব্য করায় ধন্যবাদ ভাইয়া
চুমকি দুনিয়া ছাড়ি
দিল তার প্রমান।
বিয়ে নিয়ে ইয়ে
দেখছি শুধু তাকিয়ে
মন্তব্য করতে লগইন করুন