লাশের দেশ

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ২৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:২৪:০৭ রাত



গত ২২ জানুয়ারি বুধবার আমার দেশ অনলাইনে প্রধান শিরোনাম ছিল" আরও একটি ভয়ঙ্কর বছরের সূচনা : রাজনৈতিক সহিংসতায় ২১ দিনে নিহত অন্তত ৫৭ জন : নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও আ.লীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে " এই লিখাটি পড়ে দেশ বিদেশের বাংলাদেশীরা হতবাক হয়েছেন।দেশের ইতিহাসের এক কলঙ্ক তম বছর হিসেবে শুরু হয়েছে ২০১৪। মনে হয়েছে যেন দেশের মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।প্রতিবেদনমূলক লিখায় যে চিত্র ফুটে উটেছে দেশের তা ভয়ঙ্কর।ওই লিখায় বলা হয় , শেখ মুজিবের শাসনকাল ছাড়া কোনো একটি বছরে এতো মানুষ নিহত হয়নি, যেটা হয়েছে ২০১৩ সালে। শুধু রাজনৈতিক সহিংসতা ৫০০ এর বেশি লোক নিহত হওয়ার পাশাপাশি এ সময় সাভারের রানা প্লাজার ধসে নিহত হয়েছেন ১১ শতাধিক লোক। সব মিলিয়ে ২০১৩ সালে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও রাজনৈতিক সহিংতায় নিহত হয় আড়াই হাজারের বেশি মানুষ। তবে ২০১৪ সালটি শুরু হলো আরও ভয়াবহতার মধ্যে। নতুন বছরের প্রথম দিনই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিএনপি ও জামায়াতের ২ নেতা নিহত হন। অন্যদিকে গতকাল রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছেন ৩ জন। এর মধ্যে দুজনই নিহত হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে।বস্তুত গত ২১ দিনে যে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে।বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ২১ দিনে প্রায় ৪০ জনই নিরাপত্তার বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। অবশ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী বন্দুকযুদ্ধের অতি পুরনো এবং হাস্যকর গল্প শুনিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ২১ দিনে রাজনৈতিক সহিংসতায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মী, জামায়াত-শিবিরের ১৫ এবং আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। দেশের এই পরিস্তিতি স্বাধীনতা ও ভাতৃত্বের সংস্কৃতিকে লজ্জা দেয়। দেশে হিংসার সংস্কৃতির রূপ ও ক্ষমতার লালসা জন্ম নিয়েছে যার ফলে লাশের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে দিন দিন ।মনে হয়েছে আজ লাশের দেশে রুপান্তরিত প্রিয় বাংলাদেশ। বিগত ৫ বছর দেশবাসী দেখেছেন সরকারের দেশ পরিচালোনার নমুনা সেখানে শুধুই হিংসা ও ক্ষমতা আকড়ে রাখার কৌশল ছিল আর সেই কৌশল ছিল অগণতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসী। যার কারণে দেশের মানুষের উন্নয়নের সপ্ন বিফলে গেছে ,দেশের মানুষের আশা আদুরী রয়ে গেছে। দেশে খুন গুমের সংস্কৃতি চালু হয়েছে ,জেল জুলুমের মাত্রা বেড়ে গেছে। সরকারের অপকর্মের বিরোদ্ধে দাড়ালেই খুন ,গুম ,জেল ,জুলুম ,হয়রানির শিকার হতে হয়েছে যা এখনো বিদ্ধমান বরং এর মাত্রা অনেক গুন বেশি ।বিরোধী নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক ,চিকিত্সক ,আইনজীবী , শিক্ষক ,ছাত্রসহ সকল স্তরের জনগনকে পাশাপাশি অনেক প্রতিশানকে হাসিনা সরকারের হিংসার আগুনে পুড়তে হয়েছে কম বা বেশি। আওয়ামী সরকার সংবিধানের দুহাই দিয়ে নির্বাচন কালীন নির্দলীয় নিরপক্ষ সরকার ব্যবস্তা তুলে দিয়ে সর্বদলীয় নামে মহাজোট সরকার পুনর্গঠন করে কৌশলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচন নির্বাচন খেলা সম্পন্ন করে দেশের মধ্যে এক রকমের গৃহযোদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে। দেশের জনগনকে তার অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন পর্যন্ত ও করতে দিচ্ছে না হাসিনার হিংস্রাত্মক সরকার। ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি হানাদারদের মত প্রশাসন ঘরে ঘরে গিয়ে প্রকাশ্যে খুন করতেছে সরকারের বিরোধী মতের নেতা কর্মীদের তা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না সাধারণ জনগনও ।বিরোধীমতের নেতাকর্মীদের ঘর বাড়ি জালিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন ও হাসিনা সরকারের গুন্ডারা। দেশের জনগনের উপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে আওয়ামী সরকার হায়েনার মত।এ দিকে দ্রব্য মূল্যের দাম লাগামহীন বেড়ে যাওয়াতে দেশের অধিকাংশ পরিবার বিপাকে পড়েছেন। দেশে আজ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্তিতি বিরাজ করতেছে। প্রধান বিরোধী দল বিনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সরকারের হিংসা ও ক্ষমতার লালসার শিকার থেকে দেশের জনগনকে রক্ষার জন্য গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ,দেশের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্তিতি থেকে উদ্ধার করার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। বিএনপি - জাময়াতের সাথে দেখা যাচ্ছে দেশের অধিকাংশ জনগণ আন্দোলনে নেমেছে। বর্তমানের এই রুপ স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে দেখা যায়নি ।স্বাধীন দেশের এমন রুপ কল্পনা করা যায় না এবং অনাকাঙ্কিত ।আজ দেশের ইঞ্চি ইঞ্চি সীমা রেখা কাঁদে ,আহাজারি করে, দেশ আজ প্রশ্ন রাখতে চায় তার বুক রক্তে লাল কেন ?তার মাটিতে কেন পরিচিত লাশ পরে থাকে ?তার বুকে চলমান নদীতে কেন বেওয়ারিশ লাশ বাসে ?তার বুকে গুলি কেনো ?তার বুকে বসবাসকারী জনগনের উপর অত্যাচার কেন ?তার জনগনের অধিকারের উপর কেন হস্তক্ষেপ ?তার জনগনের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয় কেন ?তার বুকে বসবাসকারীদের মধ্যে এত হিংসা কেন ?তারা নিজেদের মধ্যে সম্মানিতদের সম্মান দিতে জানে না কেন ?সে আরো প্রশ্ন রাখতে চায় তাহলে কেন ১৯৭১ সালে স্বধীনতার জন্য জীবন দিতে হলো ?কিন্তু সে কার কাছে প্রশ্ন রাখবে ?কেইবা তার এই প্রশ্নের জবাব দেবে ?কেইবা থাকে সান্তনা দেবে ?সান্তনা দেবার মত কেউ নেই সবাই ব্যস্ত নিজেদের নিজ কর্মে ।কেউ ব্যস্ত অত্যাচারীর অত্যাচার থেকে নিজেও সমাজকে বাচতে ।কেউ ব্যস্ত ক্ষমতা ধরে রাখতে ।

বিষয়: বিবিধ

১২৮৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

166036
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৩৪
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবদ ভাইয়া ।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫০
120194
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আপনাদের ভালো লাগায় আমার প্রেরণা ,আশা করি সাথে থাকবেন ,ধন্যবাদ। Good Luck
166056
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:২৭
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের সাহায্য কর।
166140
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:৩৩
সাইদ লিখেছেন : সবই হচ্ছে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য।যেমন রাজা তেমন প্রজা।আবার যেমন প্রজা তেমন রাজা।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১৯
120427
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : হুম ,পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া Good Luck Good Luck
166238
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:২২
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : আল্লাহ তুমি সকল জনগণকে রক্ষা কর। আমীন
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১৯
120428
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমীন ।
166332
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৪১
জবলুল হক লিখেছেন : ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ ।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৫০
120445
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ
168692
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৩৫
সালু সুন্দর লিখেছেন : এই পরিস্তিতিতে আমাদের যা করনিও তা হোলো শুধু আল্লাহর কাছে দেশের জন্য দো্য়া করা।
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৩৯
122547
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : পাশা পাশি নিজ নিজ অবস্তান থেকে প্রতিবাদ করা ,
অনেক ধন্যবাদ
169894
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২৩
অজানা পথিক লিখেছেন : লশে লাশে একাকার দেশ
মিডিয়া সন্ত্রাস চলছে বেশ
বিবেক বুদ্ধি সব দেখি শেষ
স্বৈরাচারের কাটাতে রেশ
তৈরী করো পরিবেশ
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৪১
123695
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : সঠিক বলেছেন ভাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File