আমার বিয়ে
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৪৩:২৫ রাত
আমার মা একা নিজেই পুরো বাড়িটি মাথার উপর করে ফেলেছেন। মায়ের নিরব হৈহুল্লোর আর চেচামেচিতে বাবা এক রকম বিরক্ত হচ্ছেন ,বিরক্ত হওয়ার কারণ আছে সেটা হলো ,বিয়ের বাকি এখন ও ৩ দিন। কিন্তু সাহস নেই মাকে কিছু বলার কারণ মায়ের বড় সন্তানের বিয়ে ,আমরা দুই ভাই ছোট্র ভাই ৫ম শ্রেণীতে পড়ে।সে মায়ের অনুমতিতে বাবার কাছ থেকে মালিশ (কৌশলে) মেরে স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে ৫ দিনের। আমার বাবা মায়ের কান্ড দেখে দাতে দাতে যোদ্ধে নিজেকে ব্যাস্ত রাখলেন। অন্য দিকে মায়ের ব্যস্ত সময় যাচ্ছে কখনো ছোট্র ভাইকে বাজারে পাটাচ্ছেন কখনো ভাইকে সাথে করে নিজেই বোরকা পরে বাজারে যাচ্ছেন ,কখনো চাচাতো ভাইদেরকে এদিক ওদিক পাটাচ্ছেন।উনার লক্ষ্য ছেলের বিয়ের সকল আয়োজন টিক মত সম্পন্ন করতে।আমি কনে মাত্র একবার দেখেছি, মা কয়েকবার দেখেছন ।আমি প্রবাসে থাকি তাই মা আগে থেকে দেখে রেখেছেন আমি শুধু বিয়ে করব। আমার মায়ের পছন্দ আমার পছন্দ। বিয়ের আর মাত্র ৩ দিন বাকি মা রাতে আমার সাথে বসলেন আলোচনায় বিয়ের দিনের আয়োজন সম্পর্কে। এই আলোচনায় শুধু মা ছেলে এমনকি বাবাকে ও রাখা হলো না এখান থেকে মা আমাকে উনার সিদ্ধান্ত জানালেন । আগামী কালের আলোচনা হবে বাড়ির কর্তা দের। সেখানে মায়ের মতামতের জানান দেওয়াটাই ছিল আজকের মা ছেলের আলোচনার কারণ । বড় চাচার ঘরে পরের দিন রাতে বাড়ির সবাই বসলেন বিয়ের আয়োজন সম্পর্কে আলোচনাতে।
চাচা গ্রামের মেম্বার, আমাদের এলাকাতে উনার ভালো একটা অবস্তান আছে। ঘরের ডান দিক থেকে যতাক্রমে বসলেন আমার দাদার ছোট্র ভাই শফিক উদ্দিন ,দাদার আরেক ভাই রফিক মাস্টার ,আমজাদ , আমার বড় চাচা আবুল মেম্বার ,করিম মাস্টার চাচা ,রেজা চাচা ,আমার চাচত ভাই মেম্বারের ছেলে শামিম সবার পেছনে লুকিয়ে বসলাম আমি আব্দুল্লাহ আল শাহীন ।পাশের ঘরে আমার মা ,দাদী ,চাচি ও ফুফুরা বসে আছেন আলোচনা শুনার জন্য। আর এই আলোচনা হচ্ছে আমাদের বাড়ির একটা রেওয়াজ।
আলোচনায় যে কয়েকটি বিষয় ছিল সেগুলো হলো ,
১ ,বিয়ের দিন আত্বীয় সজনদের মধ্যে কেউ যেন বাদ না পরে।
২,বিয়ের রাতে সাইমুম শিল্পী গোষ্টির জন্য স্টেজ এর জায়গা করা।
৩,বিয়ের দিন সকালে গাড়ি টিক সময় মত বাড়িতে হাজির করা।
৪,বর কে সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া ।
৫, কমিউনিটি সেন্টারে পৌছানোর পর মেহমানদের দেখবাল করা।
৬,খাবার দাবার টিকমত হচ্ছে কিনা তদারিক করা।
৭,অতপর কনে নিয়ে বাড়িতে আসা।
উপরের ৭ টি বিষয়ের জন্য সাতজনকে দায়িত্ব দেওয়া হলো। আলোচনার শেষে দাদী সবার মাজে হাজির আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে গিত গাইলেন। কান্নার যে কারণ ছিল সেটা আমাদের উপস্তিত সবার মধ্যে বিদ্ধমান ছিল সেটা হলো আমার দাদা বছর দুয়েক আগে মৃত্যু বরণ করেছেন।
দাদির গিত গাওয়ার মধ্যে আমি যা দেখতে পেলাম তা হলো স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসার এক বন্ধন।
বিয়ের দিন একে একে সবাই গাড়িতে উঠলেন আমি নিজেও উঠলাম আমার ডান পাশে আমার দাদী বাম পাশে আমার মা সামনের সিটে আমার চাচত ভাই। পেছনের সিটে ছোট্র ছোট্র বোন এক হালি। আমার দাদী গাড়িতে উঠেই আমায় খুচা দিলেন ,আমি মায়ের দিকে থাকলাম মা ও হাসতেছেন।মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার বন্ধুরা সবাই এসেছে তো আমি জবাব দিলাম হে ,উনি বললেন তোমার ব্লগার বন্ধুরা এসেছে আমি কিছুই বললাম না কারণ উনারা কেউ আসেনি।
আমার বিয়েতে ছিল না কোনো যৌতুক ,ছিল না কোনো অপসংস্কৃতি।
আর সবচয়ে বড় কথা আমি বিয়েই করিনি উপরের সব কল্পনা।
বিষয়: বিয়ের গল্প
৩৪৬২ বার পঠিত, ৮২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার বউ অনেক সুন্দর
বেলুন ফেটে গেছে আগেই
আমি আপনার ছেলের মত খুঁজে দেন এক্কান। ..
@সুর্যের পাশে হারিকেন@ উনার এতো লুটপুটি খেয়ে হাসার কারন কি ? উনিও কি একই নৌকার মাঝি নাকি ? উনি ভুলে গেছেন সুর্যের পাশে হারিকেন দেখতে মনে হলেও বাস্তবে দিল্লিকা লাড্ডু বহু দূর।
সুন্দর লেখেছেন। অনেক বানান ভুল হয়েছে এব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। ছোট গল্প বেশি করে পড়তে হবে গল্প লেখার জন্য। ধন্যবাদ মনে কিছু করবেননা বেশি বলে ফেললাম। বন্ধুর জন্মদিনে চড় একটি পোস্ট দিলাম পড়ে মন্তব্য করবেন।
মনে কিছু করার নেই আমি বানান টিক করার জন্য আপনাদের কাছ থেকে এরকম মন্তব্য চাই ,বিয়ে করেন না কেন মিয়া বুড়ো হয়ে গেলেন ।<:-P
ভাইয়া আপনাদের না বলে বিয়ে করব না। >-
দারুন সব কল্পনা
বাস্তবে দেখতে চাই।
কবে আসবে সেই মধুক্ষণ ?
না হয় বিয়ে করব না শুধুই বউ নিয়ে আসবো
বিয়ের দিন শাহীণ ভাই তার বউকে আংটি পরিয়ে দিচ্ছেন।
হ্যাপী ওয়াইফ হ্যাপী লাইফ কথাটি মনে রাখবেন।
আল্লাহ তায়ালা আপনার মনের আশা পুরণ করুক। আমিন। দুবাইতে আসেন আপনাকে মিষ্টি থাওয়াতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন