আব্দুল কাদের মোল্লার রায় এবং উত্থাপিত প্রশ্ন..

লিখেছেন লিখেছেন সব্যসাচীর কলম ০৭ মার্চ, ২০১৩, ০৭:১১:২৭ সকাল

কাদের মোল্লার রায়ের পর বহু ঘটনাপ্রবাহই লক্ষ্য করা গেল। বাংলাদেশের মানুষের সহজাত হুজুগে চরিত্রের অধিকারী এই আমরা আম-জনতা শাহবাগে গিয়ে কয়েকদিন বেশ ফুর্তিময় সময় কাটালাম। কিন্তু বাস্তবতা হলো রায়ের যে বিশ্লেষণগুলো সামনে এনে আসামীপক্ষ বারবারই বলছেন যে তারা ন্যায় বিচার পাননি, খুন সুকৌশলে সেটিকে আমাদের আম-জনতার চিন্তার বলয় থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। অন্তত আমি নিশ্চিত আমি এবং আমার বন্ধুরা যারা ১০/১২ ঘন্টা হলেও শাহবাগে ব্যয় করে এসেছি তারা শুধু হুজুগেই মাতম ছিলাম বা একটি রাজনৈতিক খেলার ক্রীড়ানকে পরিণত হয়েছিলাম।

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা এবং আসামীপক্ষের প্রশ্ন...

প্রথম চার্জটি হলো মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ পল্লবকে হত্যা করা। এই চার্জে রাষ্ট্রপক্ষর দ্বিতীয় সাক্ষী সৈয়দ শহিদুল হক মামা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, তিনি শুনেছেন কাদের মোল্লার নির্দেশে আক্তার গুন্ডা পল্লবকে ঠাটারি বাজার থেকে ধরে এনে মিরপুরে হত্যা করে। কিন্তু তিনি কার কাছ থেকে শুনেছেন এ ব্যাপারে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেন নি। বরঞ্চ তিনি বলেন, ‘‘আমি জনতার কাফেলার কাছ থেকে শুনেছি’’। রাষ্ট্রপক্ষের অপর সাক্ষী সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম কলেছেন যে, তিনি শুনেছেন মিরপুর বাংলা কলেজের একজন ছাত্রকে কাদের মোল্লার নির্দেশে হত্যা করা হয়। কিন্তু কার নিকট থেকে শুনেছেন সে কথা তিনি জেরায় উত্তর দিতে পারেন নি। কাদের মোল্লার পক্ষের সাক্ষী হিসাবে সাক্ষ্যদেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী শাহেরা, তিনি শহীদ পল্লবের ভাবী। তিনি বলেন, তিনি কখনও শহীদ পল্লবের হত্যাকান্ডের ব্যাপারে কাদের মোল্লার নাম শুনেননি। শুধু তাই নয় তদন্তকারী কর্মকর্তা তার কোন প্রকার জবানবন্দি গ্রহণ না করে কাদের মোল্লার নাম জড়িয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি জমা দেন।

এই চার্জের অন্যতম স্বাক্ষী শহিদুল হক মামা,যিনি ১ ও ২ নং চার্জের স্বাক্ষী, ২০/০৪/২০১২ ইং তারিখে বিটিভি’তে প্রচারিত ‘রনাঙ্গনের দিনগুলি’ নামক এক অনুষ্ঠানে উক্ত চার্জের ঘটনাগুলো বর্ণনা করেন। কিন্তু সে বর্ণনায় আসামীর নাম জড়িয়ে কোন ঘটনার উল্লেখ করেন নি। অথচ ট্রাইব্যুনাল উপরোক্ত চার্জে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে ১৫ বছরে কারাদন্ড প্রদান করেন।

দ্বিতীয় চার্জে আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে শহীদ কবি মেহেরুন্নেসা হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই চার্জে স্বাক্ষী দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষী-২: সৈয়দ শহিদুল হক মামা, রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষী-৪: কবি কাজী রোজী, রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষী-১০: সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম। উক্ত স্বাক্ষীদের কেউই জনাব আব্দূল কাদের মোল্লার এই ঘটনাটি দেখেন নি এবং তারা কার কাছ থেকে শুনেছেন তাও ট্রাইব্যুনালে বলতে পারেন নি। রাষ্ট্রপক্ষের-২ নং স্বাক্ষী বলেন, তিনি শুনেছেন কবি মেহেরুন্নেসাকে কাদের মোল্লার নির্দেশে হত্যা করা হয় কিন্তু তিনি কার মাধ্যমে শুনেছেন কিভাবে শুনেছেন তা আসামী পক্ষের প্রশ্নের উত্তরে জবাব দিতে পারেননি। রাষ্ট্রপক্ষের-৪ নং স্বাক্ষী কবি কাজী রোজী বলেন তিনি শুনেছেন কাদের মোল্লার নেতৃত্বে বিহারীরা শহীদ কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা করেন। কিন্তু কাদের মোল্লা কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা করেছেন কিনা তিনি তা শুনেননি। অপরদিকে তার ২০১১ সালের জুন মাসে প্রকাশিত ‘শহীদ কবি মেহেরুন্নেসা’ নামক বইয়ে তিনি শহীদ কবি মেহেরুন্নেসার মৃত্যুর ব্যাপারে বিষদভাবে লিখেন। কিন্তু তিনি তার বইয়ে কাদের মোল্লার নাম কোথাও উল্লেখ করেননি। রাষ্ট্রপক্ষের-১০ নং স্বাক্ষী বলেন শহীদ কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা করেছে বিহারী এবং এই হত্যার ব্যাপারে তিনি কোন ভাবেই কাদের মোল্লাকে জড়িত করেননি। এই চার্জে প্রসিকিউশন তাদের মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে ব্যার্থ হয়েছে তা সত্ত্বেও জনাব কাদের মোল্লাকে আইন বহির্ভূতভাবে ট্রাইব্যুনাল ১৫ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন।

তৃতীয় চার্জে আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আইনজীবী এবং বুদ্ধিজীবী খন্দকার আবু তালেব হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এই চার্জে স্বাক্ষী দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের-৫ নং স্বাক্ষী খন্দকার আবুল আহসান এবং রাষ্ট্রপক্ষের-১০ নং স্বাক্ষী সৈয়দ আব্দুল কাউয়ুম। তারা উভয়ে শোনা স্বাক্ষী এবং তারা কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি খন্দকার আবু তালেব হত্যাকাণ্ডের সাথে আব্দুল কাদের মোল্লা জড়িত। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে মিরপুরের জল্লাদখানায় সংরক্ষিত শহীদদের জীবনী এবং শহীদ পরিবারের বিভিন্ন জনের জবানবন্দী সংরক্ষণ করা হয়েছে তা আসামী পক্ষ সংগ্রহ করে বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। উক্ত জবানবন্দীতে দেখা যায় রাষ্ট্রপক্ষের-৪ নং স্বাক্ষী কাজী রোজী তার লেখা বই ‘শহীদ কবি মেহেরুন্নেছা’ তে খন্দকার আবু তালেব হত্যার জন্য বিহারী হালিমকে দায়ী করেন। সেখানে তিনি কেন আব্দুল কাদের মোল্লার নাম উল্লেখ করেননি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “কাদের মোল্লার ভয়ে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।” আইনজীবিগণ প্রশ্ন করেন, “আপনার বই প্রকাশ হয়েছে ২০১১ সালে আর আব্দুল কাদের মোল্লা গ্রেফতার হন ২০১০ সালে তাহলে তিনি কিভাবে আপনাকে ভীতি প্রদর্শণ করলেন?” রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষী কাজী রোজি এর কোন জবাব দিতে পারেননি। অথচ মাননীয় ট্রাইব্যুনাল শুধুমাত্র শোনা স্বাক্ষীর উপর ভিত্তি করে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে ১৫ বছরের কারাদন্ড প্রদান করে।

পঞ্চম চার্জে পল্লবীর আলোবদি গ্রামে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে। এই চার্জে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের-৬ নং স্বাক্ষী শফিউদ্দিন মোল্লা এবং রাষ্ট্রপক্ষের-৯ নং স্বাক্ষী আমির হোসেন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষের-৬ নং স্বাক্ষী তার প্রদত্ত জবানবন্দিতে বলেছেন, ঘটনার আগে তার পুরো পরিবার প্রাণভয়ে সাভারস্থ সারুলিয়া গ্রামে চলে যায়। তিনি না গিয়ে ঘটনার দিন পার্শ্ববর্তী ঝোপ থেকে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে গুলি করতে দেখেছেন। অপরদিকে তার আপন ছোট ভাই (আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষের-৫ নং স্বাক্ষী)আলতাফ উদ্দিন মোল্লা বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে স্বাক্ষ দেন যে, ঘটনার পূর্বে তাদের পুরো পরিবার পালিয়ে গিয়েছিল সাভারস্থ সারুলিয়া গ্রামে এবং তার বড় ভাই শফিউদ্দিন মোল্লাও তাদের সাথে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সুতরাং তার ঘটনা দেখার কোন প্রশ্নই আসে না এবং তিনি মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের-৯ নং স্বাক্ষী আমির হোসেন মোল্লা মিরপুর এলাকার লাট ভাই হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৩ ডিসেম্বর ২০০১ ইং তারিখে অস্ত্র সহ গ্রেফতার হয়েছিলেন। শুধু তাই নয় ১৫/০৫/২০১২ ইং তারিখে হাইকোর্টের বর্তমান একজন বিচারপতি মহোদয়ের জায়গা দখলের অভিযোগে সম্প্রতি কারা ভোগ করেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভূমিদখল এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে শতাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। তিনি ২৫/০১/২০০৮ ইং তারিখে পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন নিজামী, মুজাহিদ এবং কাদের মোল্লা আলোবদি গ্রাম আক্রমন করে এবং ঘটনার সময় সে দুয়ারী পাড়াস্থ এক ডোবায় আশ্রয় নেয় যা আলোবদি গ্রাম থেকে ৪ মাইল দুরে অবস্থিত। অথচ ২৬/০৮/২০১২ ইং তারিখে তিনি মাননীয় ট্রাইব্যুনালে এসে বলেন ঘটনার সময় তিনি আলোবদি গ্রামে ছিলেন এবং ঘটনার সময় তিনি আব্দুল কাদের মোল্লাকে গুলি করতে দেখেছেন।

উপরোক্ত বর্ণনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে প্রসিকিউশনের স্বাক্ষীবৃন্দ ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে ট্রাইব্যুনালের সামনে অসত্য স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মাননীয় ট্রাইব্যুনাল উক্ত অভিযোগে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।

ষষ্ঠ চার্জে প্রসিকিউশন আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে হযরত আলী লসকর এবং তার পরিবারকে হত্যার ব্যাপারে অভিযোগ আনেন, যার একমাত্র স্বাক্ষী হল মোমেনা বেগম রাষ্ট্রপক্ষের-৩ নং স্বাক্ষী। তিনি বলেন যে, তিনি কাদের মোল্লাকে দেখেননি। জনৈক কামাল ও আক্কাস মোল্লার কাছ থেকে শুনেছেন যে তার বাবাকে কাদের মোল্লা হত্যা করেছে।

একই সাক্ষী মোমেনা বেগম তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা বিষয়ে ২০০৭ সালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে জবানবন্দী দিয়েছেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেছেন, ঘটনার দুই দিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি চলে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। কোর্টে বলেন, ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন আর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত বক্তব্যে দেখা যায় তিনি ঘটনার দুই দিন আগে শ্বশুর বাড়ি চলে যান।অথচ মাননীয় ট্রাইব্যুনল উক্ত অভিযোগে মাত্র একজন স্বাক্ষীর মুখ থেকে শুনে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।

কাদের মোল্লার পক্ষ থেকে তার স্বাক্ষী-২ সুশীল চন্দ্র মন্ডল ট্রাইব্যুনালে এসে বলেন যে কাদের মোল্লা স্বাধীনতার পুরো সময় ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফরিদপুরের সদরপুর গ্রামে ছিলেন এবং সেখানকার ধলা মিয়া পীর সাহেবের বাড়িতে থেকে তার সন্তানদের পড়াতেন। আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষের-৩ নং স্বাক্ষী মোসলেম উদ্দিন আহমেদ যিনি ফরিদপুরে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনিও বলেন কাদের মোল্লা সাহেব স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় ফরিদপুরের সদরপুরে ছিলেন এবং ধলা মিয়া পীর সাহেবের ছেলে মেয়েদের পড়াতেন।এবং আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষের ৬ নং স্বাক্ষী জনাব হাফেজ এ, আই, এম লোকমান যিনি ১৯৭১ সালে শহিদুল্লাহ হলের ইমাম ছিলেন এবং যে হলে জনাব আব্দুল কাদের মোল্লা থাকতেন। তিনি বলেন যে, ৭ই মার্চের পর তিনি জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে দেখেছিলেন এবং কাদের মোল্লা ১৯৭২ সালের শেষের দিকে বাড়ি থেকে আবার প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।

কাদের মোল্লা সত্যিই এত বড় রাজাকার হলে নিচের উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর জবাব কি....

১. ১৯৭২ সালের শেষের দিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র হিসাবে হলে অবস্থান করে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়ন অব্যাহত রাখতে পারলেন?

২. ১৯৭৪ এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং জগন্নাথ হলের মাঝা মাঝি অবস্থিত উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে কিভাবে কর্মরত থাকতে পারলেন?

৩. ১৯৭৭সালে বাংলাদেশ রাইফেলস কলেজের সিনিয়র শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে কিভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারলেন?

৪. তিনি যদি সত্যিই এমন চিহ্ণত অপরাধী হবেন তাহলে কি করে ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে ২বার সাংবাদিকদের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন?

ফরহাদ মজহার বলছেন, বিচারকে বিচারিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখতে হবে এবং প্রত্যেক অভিযুক্তের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। এই একটি জায়গায় সম্ভবত অন্ধ রাজনৈতিক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সবাই একমত হবেন।

সবাই ভালো থাকুন...।

বিষয়: রাজনীতি

১২৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File