বাকশালী ঢলা কেমন লাগছে !!!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন নাহিদ ০৫ মার্চ, ২০১৩, ১২:৩৪:৩০ দুপুর
ছিলেন ইসলামী ব্লগের মডু। কিন্তু দেশে যে এখন ধর্মনিরপেক্ষতার বাতাস বইছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রিক, অনলাইন সকল মিডিয়ায় ধর্মনিরপেক্ষতার জয়ে জয়কার। এই অবস্থায় ইসলামী ব্লগের মডু হয়ে সমাজে মুখ দেখাবেন কিভাবে ? তাছাড়া ইসলাম দিয়ে দেশের প্রচলিত মূলধারার স্রোতে মিশতে পারবেন না। তাই মূলধারার মিডিয়াতে জায়গা পাওয়ার জন্য সোনার বাংলাদেশ ব্লগকে বদলে ফেললেন তিনি। ইসলামী লেখার জন্য অনেককে ব্যান করলেন, অনেকের কমেন্ট সুবিধা কেড়ে নিলেন, প্রথম পাতায় লেখার অধিকার বাতিল করলেন, সতর্কতা ছাড়াই পোস্ট মুছে ফেললেন। এর পরিবর্তে সেক্যুলার ভাবধারার লেখাকে প্রোমোট করা হলো, ভুয়া নিক খুলে পোস্ট দিয়ে সেটাকে স্টিকি করা হলো; দুষ্টুমেয়ে, আলেয়া, এলিজাবেথ, রুপবান প্রভৃতি ভুয়া নিক দিয়ে আল্লাহ, রাসুল (সা.) কে ব্যাঙ্গবিদ্রুপ করে মানুষের মনে কষ্ট দেয়া হলো। তিনি নিজেই আধুনিক ইসলাম, অসাম্প্রদায়িক, বামঘেষা চিন্তাধারার পোস্ট লিখে সেগুলোকে স্টিকি করে দিতেন সময় সময়। অর্থ্যাত, ব্লগে ছোটখাটো একটা বাকশাল কায়েম করে ফেললেন তিনি। আর ভাবলেন, এতে করে হয়তো অরিজিনাল বাকশালীদের মনে জায়গা পাবেন, গা থেকে ইসলামী তকমা মুছে যাবে, মূলধারার মিডিয়াতে জায়গা পাবেন।
কিন্তু হায় ! এতকিছু করেও কি শেষরক্ষা হয়েছে ? আজ বাকশালী কারাগারে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হয়তো এসবই চিন্তা করছেন মোহায়মেন সাহেব। যার জন্য জীবন, মান সবকিছু বিসর্জন দিয়েছিলেন, শেষমেষ তাদের হাতেই সাইজ হতে হচ্ছে তাঁকে। এরচেয়ে ইসলামী ব্লগের মডু হয়ে থাকাটাই ভালো ছিল। তাতে সাধারণ ব্লগারদের সাপোর্ট পেতেন তিনি। কিন্তু আজ তারাও পাশে নেই। সবাইকে চটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সৈরাচারী আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে বহু ব্লগার ব্লগ ছেড়ে চলে গেছে। আজ তাঁর এই দু:সময়ে তারা দাঁত বের করে হাসছে। তাঁর অবস্থা হয়েছে বাংলা ছবির ভিলেনের চামচার মতো, যার কাজ গ্রামের মানুষদের অত্যাচার করা। ছবির শেষ দৃশ্যে তাকে উদ্দেশ্য করে ভিলেনকে বলতে শোনা যায়, ‘তুই আমার জন্য অনেক করেছিস। এই নে তোর পুরষ্কার’ - এই কথা বলে ঢিশিয়াঁও.... করে গুলি করে মেরে ফেলে তাকে।
এই ঘটনার সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, চামচামির পরিণতি কখনো ভালো হয়না। এসবি মডারেটর লোভে পড়ে হোক, চাপে পড়ে হোক ক্ষমতাসীনদের চামচামি করেছেন। চুশীল সাজতে গিয়ে নীতি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। যারা সত্য বলতে চেয়েছে তাদের টুটি চেপে ধরেছেন। তিনি মাহামুদুর রহমানের মতো নীতির প্রতি অবিচল থাকেননি, সময়ে সময়ে নীতি চেঞ্জ করেছেন। এই যাত্রা যদি তিনি বেঁচে যান, তাহলে এই বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখবেন আশাকরি।
এই ঘটনার আরেকটা শিক্ষণীয় দিক হলো, নিজেকে গুটিয়ে রাখলে প্রয়োজনে কারো সাহায্য পাওয়া যায় না। অনলাইনের বাসিন্দারা এখন কেবল অনলাইনে নেই। তারা জনসম্মুখে আসছেন। ব্লগাররা একে অন্যের সাথে বাস্তবে পরিচিত হচ্ছেন, মিটিং করছেন, বনভোজনে যাচ্ছেন। অথচ দেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ব্লগ এসবি’র মডারেটররা নিজেদের পরিচয় জানানোর গরজ অনুভব করেননি। তাঁরা কখনই জনসম্মুখে আসেননি। কখনোই জানাননি তারা কারা, তাদের উদ্দেশ্য কি, তাদের অফিস কোথায়। স্বভাবতই তাদের বিপদে ব্লগারদেরও কিছু করনীয় নেই, কেবল প্রার্থণা ছাড়া।
একদিন হয়তো মোহায়মেন সাহেব মুক্ত হবেন। ততদিনে তিনি বাকশালের মজেজা টের পেয়ে যাবেন। তখন সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াবেন এর বিরুদ্ধে। সেদিন যেন বেশী দূরে না হয় সে দোয়াই করি।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন