গণজাগরণ মঞ্চ, তুমি কেমনে সইবে জাতি বিভক্তির এ দায়?
লিখেছেন লিখেছেন আল মাসুদ ১৭ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:৫০:৪১ সকাল
গণজাগরণ মঞ্চ, তোমার ঘোষনার ধার ছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের আদেশের চেয়ে শক্তিশালী। কিসের রাত? কিসের দিন? যা বলেছো, তাই করেছে রাষ্ট্রের হর্তাকর্তা অনেকে। কিন্তু কয়েকদিন যেতেই তোমার গণজোয়ারে ভাটা দেখা দেয়। কোথাকার এক মাহমুদুর রহমান টেনে ধরে তোমার আব্রু। তোমার ভরা যৌবনের এই অকুল অবস্থার জন্য দায়ী তিনি ও তার পত্রিকা। এত্তবড় সাহস তাঁর! তোমার চেতনা নিয়ে কথা। তোমার রণহুংকারে বেটা আরো তেজে যায়। মেকআপ দিয়ে তুমি লুকানোর চেষ্টা করেছিলে তোমার ভিতরের কুৎসিত রুপ। তোমার কাছে ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যে চেতনা দিয়ে তুমি ঘায়েল করতে ছাড়নি মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের অনেক জ্ঞানী-গুনী মানুষকে। এটা তোমার অনেক বড় হাতিয়ার, যা গেলাতে পেরেছ মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস না জানা যুবকদের। তোমার ষ্পর্শে এসে দেশবিরোধীরা হয়েছে নন্দিত আর দেশপ্রেমীরা হয়েছে নিন্দিত। তাইনা হলে তোমার হাল ধরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পরিবারের সন্তান? রাজাকারদের মুরগী সাপ্লায়ার, মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যাম্পাসে বসে থাকা টগবগে যুবকরা হয় তোমার উপদেষ্টা? অন্যদিকে বঙ্গবীররা, সেক্টর কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধারা হয় রাজাকার? তুমি সব সম্ভাবনার দ্বার। তুমিইতো পেরেছিলে রাষ্ট্রকে চাপ দিয়ে ক্লাশ বাদ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের তোমার ঘৃণ্য খপ্পরে আনতে। আবার তুমিই জন্ম দিয়েছিল শিবিরের কথা শুনে তেলের কড়াইতে পড়া কিছু কাপুরুষ। তুমি সব পার!
গণজাগরণ মঞ্চ, তুমিই পেয়েছিলে স্মরণকালের মিডিয়া কাভারেজ, যাদের কাজ ছিল তিলকে তাল বানানো। তোমার ভয়ে রাতের আধারে অনেকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে, যাতে তোমার চেতনাবিরোধী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় তাদের নাম না ওঠে। পাশের দেশের করুনা ছিল তোমার প্রতি, তাই না হলে তোমার দেশের প্রতি তাদের অন্যায্য ব্যবহারে কেন কোন দিন তুমি কথা বলনি? তুমি সব পার! শুধু পারনা রাষ্ট্রযন্ত্রের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে। তুমি পার বাকহীনের লাশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অথচ লাশের জীবদ্দশায় তুমি তাঁর কাছে হেরেছ অহরহ। তুমি চরম প্রতিশোধপরায়ণ বলেই যুক্তি-তর্কের উর্দ্ধে উঠে যাওয়া লাশের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছ। তুমি কি চিন্তা করোনা যেদিন তোমার চেতনার সূর্য অস্তমিত যাবে সেদিন থেকেই তোমার হাল ধরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পরিবারের সন্তান, রাজাকারদের মুরগী সাপ্লায়ার ও মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যাম্পাসে বসে থাকা টগবগে যুবকদের প্রতি একই রকম আচরণ হতে পারে (যদিও আমরা সে রকম চাই না। তুমি অধম হইলে আমরা উত্তম হইবো না কেন।)। তুমি চরম আবেগী, কিন্তু ভবিষৎদ্রষ্টা নও। তুমি বর্তমান নিয়ে খুব চিন্তা কর। কিন্তু তোমার সন্তানেরা যেদিন তোমাকে ছেড়ে পালাবে কোথায আশ্রয় নিবে তুমি? তুমিতো কোথাও আশ্রয় পাবে না। কেননা তুমিই নষ্ট করে দিয়েছো বাঙ্গালীর হাজার বছরের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক। তুমিই জাতিকে বিভাজন করেছো চেতনাধারী আর চেতনাবিমূখ দ্বিধারায়। তুমিই নষ্ট করেছো ভিন্নমতের মানুষের প্রতি বাঙ্গালীর আবহমান কালের শ্রদ্ধাবোধ। তুমিই নষ্ট করেছো একই পরিবারের দ্বিওত্রিমুখী রাজনৈতিক সম্পর্ক। তোমার এই নষ্টামীর ধারা এখন জাতির প্রতিটি নাগরিকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তুমি কেমনে সইবে জাতি বিভক্তির এই দায়?
পূর্ববর্তী লেখা: http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/3729/almasud/54956
বিষয়: বিবিধ
১৯৩৫ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দলকানা স্বার্থপর মতান্ধ কিছু কুমানুষদের সৃষ্টি এই 'যৌনজাগরণ'। চেতনার ফেরী করে করে এরা 'মহান মুক্তিযোদ্ধ'কেই হাস্যরসে পরিণত করেছে।
অনৈতিকতা আর ধর্মহীনতা যাদের মজ্জাগত,তারাই এদের সমর্থন করতে পারে।
একমত ।
শহীদমিনার ও মসজিদমিনারের এ পার্থক্যরেখা জাতির জন্য কল্যানকর হতে পারে
তবে
তুমিই নষ্ট করেছো ভিন্নমতের মানুষের প্রতি বাঙ্গালীর আবহমান কালের শ্রদ্ধাবোধ
এ কৃতিত্ব অস্বীকার করার জো নেই!
মন্তব্য করতে লগইন করুন