‘আমার শেষ স্মৃতিটা মার কাছে পৌঁছে দিও’
লিখেছেন লিখেছেন আল মাসুদ ২৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৭:৪০ সকাল
চোখের পানি আটকে রাখা কষ্টকর। গতকাল থেকে টিভির পর্দায় ঠায় বসে। এতগুলো মানুষ চোখের সামনে মারা গেছে, যাচ্ছে। আমরা নির্বাক, নিষ্পলোক চেয়ে আছি। হায় আল্লাহ! তুমি কেন গরীবদের এত কষ্ট দাও। তুমি কি টাকার উপর শুয়ে থাকা ভদ্র লোকদের দেখনা। আল্লাহ তুমি সবাইকে জান্নাত দিও। (লেখক)
মৃত্যুকে যখন সামনে থেকে উপলব্ধি করছিলেন তখন ধসে পড়া রানা প্লাজার তিনতলায় আটকে পড়া আয়রন ম্যান দিপঙ্কর ঘোষ বলছিলেন, ‘আমার শেষ স্মৃতিটা মা’র কাছে পৌঁছে দিও।’
বুধবার বিকাল চারটায় অনেক চেষ্টা করেও যখন দিপঙ্কর বের হতে পারেনি তখন এক উদ্ধারকর্মীর হাতে তুলে দিয়েছে নিজের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ।
দিপঙ্করের পরিবারের সন্দেহ এখনো যখন বের হতে পারেনি তার মানে সে এই পৃথিবীতে আর নেই।
দিপঙ্করের চাচা সুদাংশু ঘোষ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলানিউজকে বলেন, “আমি কাল ১০টায় মোবাইলে এই খবর শোনার পর কুষ্টিয়া থেকে এসেছি কেবলমাত্র লাশের আশায়। তবে এসে শুনি ও তখনও বেঁচেছিলো। উদ্ধারকর্মীদের নাকি বলছিলো যে, আমার হাতটা কেটে হলেও আমাকে বের করো। আমি মরতে চাই না।”
এদিকে বৃহষ্পতিবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দিপঙ্করকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে সাভারের বাসায় মা গীতা রাণী ঘোষ জ্ঞান হারাচ্ছেন বারবার। গীতা রানীর দুই সন্তানের মধ্যে দিপঙ্করই ছিলো একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
দিপঙ্করের মৃত্যুর আশঙ্কায় দিশেহীন হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার।
দিপঙ্করের চাচা সুদাংশু ঘোষ বলেন, “আর কিছু না হোক ভাতিজার লাশটা যেন গুম না হয়। বৌদি ছেলের মুখটা শেষবারের মতো দেখতে না পেলে হয়তো মরেই যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আত্মীয়-স্বজনরা বারবার ফোন করছে খবর জানার জন্য। কিন্তু কি বলব! ভাই মারা যাওয়ার পর কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। আজ এই দৃশ্য দেখতে হবে ভাবিনি।”
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এ ভবন ধসের ঘটনায় ১৫৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১০২ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন