মনে অশান্তি মোবাইল ফোনে!

লিখেছেন লিখেছেন হেলাল আলনুর ২৮ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৫৫:৫৬ সকাল

বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা, মানসিক চাপের কারণ হতে পারে আপনার সঙ্গী মোবাইল ফোনটি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনের ওপর অতি-নির্ভরতা ক্রমশ ব্যবহারকারীর মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে যা তাঁরা আদৌ টের পাচ্ছেন না।

গবেষকেরা ২০১১ সালের একটি গবেষণায় দেখেছিলেন তরুণরা স্মার্টফোনে মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকে পড়ছে। তরুণদের যদি ২৪ ঘণ্টা প্রযুক্তি সুবিধার বাইরে রাখা হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁদের শারীরিক ও মানসিক চাপে থাকার নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এক খবরে জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।

স্মার্টফোন ব্যবহার মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে কিনা তা নীচের কয়েকটি লক্ষণ দেখে অনুমান করা যেতে পারে।

অতিরিক্ত ইমেইল প্রবণতা

মানসিক চাপে থাকার প্রথম লক্ষণটি হচ্ছে, ব্যবহারকারী তাঁর ই-মেইলের উত্তর দেওয়ার জন্য জরুরি প্রয়োজন অনুভব করতে থাকেন এবং উত্তর না পাঠানো পর্যন্ত তাঁর অস্থির লাগে। গবেষকেদের ভাষ্য, যদি ই-মেইলের বিষয়টি ব্যবহারকারীর হূত্স্পন্দন বাড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় হয়ে দাঁড়ায় তবে বুঝতে হবে মোবাইলের কারণে ব্যবহারকারীর মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে।

ফ্যান্টম সেলফোন সিনড্রোম

স্মার্টফোন ব্যবহারে মানসিক চাপ অনুভব করার দ্বিতীয় লক্ষণটি হচ্ছে ফ্যান্টম সেলফোন সিনড্রোম বা ফোন না বাজলেও ফোন বাজার শব্দ অনুভূত হওয়া। যখন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর কাছে মনে হয়, পকেটে মোবাইল ফোন না থাকা সত্বেও তাঁর পকেটে মোবাইল ফোনের রিং টোন বেজে উঠছে বা ফোনটির স্পন্দন টের পাওয়া যাচ্ছে, তখন বুঝতে হবে মোবাইল ফোন মানসিক চাপ তৈরি করেছে।

ফিয়ার অব মিসিং আউট বা ফোমো

স্মার্টফোনের কারণে মানসিক চাপের তৃতীয় লক্ষণটি হচ্ছে ফিয়ার অব মিসিং আউট বা ফোমো। স্মার্টফোনে অতিরিক্ত আসক্তির কারণে এ উপসর্গটি দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোন নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা থেকেই ফোমো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোন নিয়ে কে কী করছেন, এই মুহূর্তে কোনো বিষয় অগোচরে ঘটে যাচ্ছে কিনা এমন ভাবনা স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মনে উদয় হতে থাকে। স্মার্টফোন ব্যবহার করে ছবি, ঘটনা দেখার সময় অগোচরে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার জন্য চাপ অনুভব হতে থাকে।

মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত মনোযোগ

চতুর্থ লক্ষণটি হচ্ছে, মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত মনোযোগের ফলে চারপাশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার বিষয়টি। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোনকে কাছের বন্ধু হিসেবে মনে হতে থাকে এবং বাস্তবের বন্ধু, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার বিষয়টি স্মার্টফোন থেকে সৃষ্ট মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। যেমন খেতে বসেও খাবার প্লেটের পাশে থাকা মোবাইলে মনোযোগ চলে যাওয়ার বিষয়টি। খাবার সময় সবার সঙ্গে আলোচনার বদলে মোবাইল ফোনে কী বার্তা এলো অধিকাংশ সময় সেদিকে মনোযোগ চলে যাওয়ার বিষয়টি মানসিক চাপের নির্দেশক।

মোবাইল ফোনের জন্য উদ্বিগ্নতা

পঞ্চম লক্ষণটি হচ্ছে, মোবাইল ফোনের জন্য অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়া। মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে কিছুক্ষণ বিরত থাকলে বা মোবাইল ফোন সঙ্গে না থাকলে অস্থিরতা বোধ করতে থাকা।

মনোযোগে বিঘ্ন ঘটা

মোবাইল ফোনে কল বা বার্তা আসতে পারে এই ভেবে অনেক সময় কাজে মন বসে না। এতে করে বার বার মোবাইল ফোন নেড়েচেড়ে দেখা, কাজের মনোযোগ নষ্ট হলে বুঝতে হবে মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সাধের স্মার্টফোনটি।

মানসিক চাপ এড়াতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

স্মার্টফোন ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রয়োজন না পড়লে স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ঘুমের সময় বা জরুরি কাজের সময় স্মার্টফোন বন্ধ করে বা সুইচ অফ করে রাখুন। স্মার্টফোনের চেয়ে বাস্তবের বন্ধুদের গুরুত্ব দিন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File