মুসলিমরা বেশ কিছু আজগুবি কল্প কাহিনি বিশ্বাস করে।
লিখেছেন লিখেছেন হেলাল আলনুর ০১ মার্চ, ২০১৩, ১২:০৪:২৭ দুপুর
মুসলিমরা বেশ কিছু আজগুবি কল্প কাহিনি বিশ্বাস করে।
এই যেমন রাসুলের মিরাজে গমন, সিনা চাক, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেস্তা, তাকদির,হাসর, ইত্যাদি ইত্যাদি।
সত্যিই তো!!!! মুসলিম হিসেবে কতই না আজগুবি কাহিনি বিশ্বাস করি আমরা!!!
লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আসে । মনে মনে ভাবি বিজ্ঞানের এই যুগে এইসব উদ্ভট কাহিনি বিশ্বাস না করে যদি নাস্তিকদের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করি হয়ত তা আমার কাজে দিবে। বলা যায় না আল্লাহ হিদায়াত দিয়া আমারে নাস্তিক বানিয়ে দিতেও পারে!!!!!!
নাস্তিকদের ধারনা তারা ভাল বিজ্ঞান বোঝেন ।
আর তাদের সেই বিজ্ঞান বোঝার দৌড় কতটুকু সেটা কয়েকমাস তাদের সাথে কথা বলে বুঝলাম।
এই পৃথিবীতে মানুষের মত বুদ্ধি আর কৌতূহল অন্য কোন প্রানির নাই।
মানুষ সবসময় তাঁর অস্তিত্য সম্পর্কে সচেতন। আর এই কারনেই সে জানতে চায় সে কোথা থেকে এসেছে? প্রান কি? মৃত্যুর পরে কি কিছু আছে?
মৃত্যুর পরে প্রান কোথায় যায়? মানুষের এই পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কি???
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আস্তিকরা বিশেষ করে মুসলিমরা অনেক আগেই পেয়ে গেছেন।
স্রষ্টার অস্তিত্যে বিশ্বাস সকল প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর দিতে পারে।
কিন্তু যারা বিশ্বাস করে স্রষ্টা বলে কিছু নেই তাঁদেরও মনে এই জটিল রহস্যে উদ্ঘাটনের পিপাসা অপরিসীম। আফটার অল তারাও মানুষ!
কিন্তু কিভাবে এর উত্তর পাওয়া যাবে তা তারা জানত না।
নাস্তিকদের সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসেন মহান বিজ্ঞানি ডারুইন!!!
তিনি প্রস্তাব করেন যে মানুষ আর বানর প্রজাতির মিল দেখে তিনি ধারনা করে মানুষ আর বানর একই পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে।
এইভাবে সকল প্রানিই কোন না কোন পূর্ববর্তী রুপ থেকে বিবর্তিত হয়ে এসেছে।
কিন্তু মানুষ যে প্রাণী থেকে বিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে সেটার নাম কি, দেখতে কি রকম ছিল তা ডারউইন বলে যেতে পারেন নাই।
ধর্মবিদ্বেষীরা সেটা নিয়ে প্রশ্ন করেন নাই। করার প্রয়োজন ও ছিল না। ডারউইন যতটুকু করেছেন তা নাস্তিক সমাজে ১৫০ বছর ধরে তাঁকে "বিজ্ঞানি" দের কাতারে রেখেছে।
সবচাইতে বড় যে ভুল ডারউইন করেছেন তা হল প্রানের একেবারে আদি রুপ কি ছিল সেটা তিনি বলে যেতে পারেন নাই। মানে পৃথিবীর প্রথম প্রাণী কিভাবে এসেছে সেটা ডারউইন জানতেন না। তাই ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব থেকে গেল অপূর্ণ।
আর সেই অসম্পপুরনতাকেই পূর্ণতা দিতে এসেছে স্টিফেন হকিং।
ডিসকভারি চ্যানেলে প্রচারিত হকিং এর একটি ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। সেখানে তিনি ডারউইন কে পূর্ণতা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি এক্ষেত্রে দুটি সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন।
প্রথব সম্ভাবনা হল সকল প্রাণেরই উদ্ভব হচ্ছে জড়বস্তু থেকে!!!!!!! জি জনাব আপনি ভুল দেখেন নাই। স্তিফেন হকিং এর প্রথম যে সম্ভাবনাটির কথা তুলে ধরেন সেই থিওরিটিকে নাম হল এবায়জেনেসিস (Abiogenesis)। এবায়জেনেসিস এর মুল বক্তব্য হল প্রাণহীন বস্তু থেকে প্রানের উৎপত্তি। মুলত পাথরজাতীয় বস্তুতে সর্বপ্রথম প্রান সঞ্চার হয়। স্তিফেন হকিন স্বীকার করেন এটা বিশ্বাস করা অনেকের জন্যই অসম্ভব। তাই তিনি দ্বিতীয় আরেকটি সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
দ্বিতীয় সম্ভাবনা হচ্ছে ভিন্ন কোন গ্রহে প্রথম প্রানের উৎপত্তি হয়। এই থিওরির নাম হচ্ছে (Panspermia) । তারপর সেই গ্রহ থেকে কিছু মিটিওরাইট বা উল্কার পতন হয় পৃথিবীর বুকে। সেই পাথরের ভেতরের জমাটবাধা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এককোষী প্রান থেকে সমগ্র সৃষ্টির উৎপত্তি।
আমি এখানে আপনাদের বার বার মনে করিয়ে দিতে চাই শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ অক্ষম কিন্তু স্বাভাবিক চিন্তা করতে সম্পূর্ণ সক্ষম এই বিজ্ঞানি আসলে তাঁর কিছু ধারনার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর ধারনার সাথে একমত পোষণ করা বা না করা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এর কোনটিই প্রমানিত সত্য নয় । এমনকি এগুলো ভবিষ্যতে প্রমানিত হবে এমন সম্ভাবনাও শূন্য।
এখন প্রশ্ন জাগে সেই উল্কা বা মিটীওরাইট কথা থেকে এসেছে। স্তিফেন হকিং স্বীকার বলেন প্রানের উদ্ভবের জন্যে একটি উপাদান অপরিহার্য। আর সেটা হল পানি। পানি ছাড়া কোন প্রানের উৎপত্তি সম্ভব নয়। হকিং স্বীকার করেন সৌরজগতে একমাত্র পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও প্রানের উতপত্তির উপকুল পরিবেশ নাই। পৃথিবীর বাইরে সৌরজগতের মাঝে প্রান যদি পাওয়া যায় তাহলে তা একমাত্র মঙ্গল গ্রহেই সম্ভব। কিন্তু সম্প্রতি কিউরিসিটী নামের নাসার নভোযান মঙ্গলগ্রহ চষে বেড়ান পানির সন্ধানে। স্বাভাবিকভাবেই পানির অস্তিত্য পাওয়া যায় নাই। এর আগে থেকে বিজ্ঞানীরা জানতেন মঙ্গল গ্রহে পানির অস্তিত্য থাকা অসম্ভব!!
মঙ্গল গ্রহে যদি পানি না থাকে তাহলে প্রান থাকা অসম্ভব। তাহলে প্রান বহনকারী উল্কাটি আসলো কোথা থেকে?
সেই সমস্যারাও সমাধান দেন হুকিং। তিনি বলেন সম্ভবত সৌরজগতের বাইরের কোন গ্রহ থেকে বা ভিন্ন কোন গ্যালাক্সি থেকে প্রানবহনকারি উল্কাগুলি পৃথিবীতে এসেছে।
(যা মানুষের নাগালের বাইরে এবং প্রমান করা অসম্ভব)
হকিং এর এই কথাটি আপনি তখনি বিশ্বাস করবেন যখন আপনি মনে প্রানে নাস্তিক হবেন। পৃথিবীর বাইরে লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরে কোন এক গ্যালাক্সিতে কোন এক বালিকনা আকৃতির গ্রহে কোন এক পাথরখন্ড প্রান বহন করে পৃথিবীতে এসেছে সেটা বিশ্বাস করা অনেক নাস্তিকদের কাছে রাসুলের মিরাজে গমন এ বিশ্বাস করার চাইতে সহজ!!!
এটি আসলে এমন একটি থিওরি যা মানুষের পক্ষে সঠিক বা ভুল প্রমান করা সম্ভব নয়। নাস্তিকতার প্রচারকারি বিজ্ঞানিদের এটি সবচাইতে বড় সুবিধা। তারা মানুষের নাগালের বাইরে গিয়ে এমন থিওরি দেন যা কট্টর অন্ধবিশ্বাসী না হলে অন্তর থেকে গ্রহন করা অসম্ভব ।
যাই হোক লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দুরের সেই গ্রহটিতেই বা কি করে প্রানের উৎপত্তি হল সেটা নিয়ে হকিং কিছু বলেন নাই।
তাহলে সংক্ষেপে আমরা বলতে পারি
১) প্রানএসেছে প্রাণহীন জড় পদার্থ থেকে
২) অথবা লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দুরের কোন গ্যালাক্সি থেকে।
হকিং অবশ্য শেষে ইঙ্গিত দেন যে প্রান যেখান থেকেই আসুক এই দুটি থিওরির বাইরে থেকে প্রানের সৃষ্টি হতে পারে না।
(মানে সৃষ্টিকর্তার মাধ্যমে প্রান সৃষ্টির তৃতীয় কোন থিওরি গ্রহণযোগ্য নয়)
হকিং কিন্তু আরও একটি থিওরি মেনে নিয়েছে যেটা দিয়ে রাসুলের মিরাজ গমন ব্যাখ্যা করা যায়। সেটা হল আইনস্টাইনের বিখ্যাত রিলেটিভিটি থিওরি। যদিও আইনস্টাইনের সরাসরি সমালোচনা করার ক্ষমতা বা সাহস কোনটাই নাস্তিকদের নাই কিন্তু রিলেটিভিটি থিওরির কথা তুলে ধরলে নাস্তিকদের ভয়ঙ্কর গাত্রদাহ হয়। আপনি রিলেটিভিটির থিওরির স্বপক্ষে কিছু লিখে দেখতে পারেন। নাস্তিকরা কিভাবে হুমরি খেয়ে পরবে তা ভুল প্রমানের জন্যে!! (এখানে একটি কথা বলে রাখা ভাল আমি রাসুলের মিরাজে গমন কোন বৈজ্ঞানিক থিওরি দিয়ে ব্যাখ্যা করার পক্ষপাতী নই। কারন সেটার প্রয়োজন নেই)
রাসুল মিরাজ থেকে ফিরে এসে দেখতে পান মিরাজের আগে তিনি যে অজু করছিলেন সেই পানি এখনও গড়িয়ে পড়ছে। মানে পৃথিবীর কাছে খুব ক্ষুদ্র সময়কাল ৭ আসমানে অনেক দীর্ঘ যে সময়টাতে রাসুল জান্নাত জাহান্নাম দর্শন এবং আল্লাহর দিদার লাভ করেন। যা রিলেটিভিটি থিওরি দিয়ে ব্যখ্যা করা যায়।
হকিং এ বিশ্বাস করা নাস্তিকদের জন্যে যতটা না সহজ আইন্সটাইনে বিশ্বাস করা ততটাই কঠিন। আসলে নিজেদের মতের বিপক্ষে গেলে থিওরি কে থিওরি বলতে নাস্তিকদের আর আপত্তি থাকে না। আর এই কারনে আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি থিওরি নাস্তিকরা পাতে তোলে না।
এইবার আসেন নাস্তিক আর আস্তিকদের বিশ্বাসের তুলনা করা যাক।
>>>>>মুসলিমদের বিশ্বাস
মানুষ সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ
ডারউইন এর বিবর্তন তত্ত্ব মিথ্যা
মানুষ সৃষ্টির সেরা
আল্লাহ তায়ালা সমগ্র জগত সৃষ্টি করেছেন
>>>>>>নাস্তিকদের বিশ্বাস
মানুষ আসলে জীবের বিবর্তনের ফসল। প্রথম প্রান সৃষ্টি হয়েছে প্রাণহীন জড়বস্তু থেকে,অথবা আমাদের গ্যালাক্সি কিংবা ভিন্ন কোন
গ্যালাক্সিতে অবস্থিত কোন গ্রহ থেকে যা লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
ডারউইন এর বিবর্তন থিওরি সত্য
মানুষ সৃষ্টির সেরা নয়। মানুষের চাইতে বুদ্ধিমান প্রানি বা এলিওন অন্য কোন গ্রহে আছে। আমাদের সৌরজগৎ এ না থাকলেও অন্য কোন সৌরজগৎ বা গালাক্সিতে আছে
যা প্রমান করা অসম্ভব!!!
কোন কারন বা উদ্দেশ্য ছাড়াই সমস্ত জগত এমনি এমনি সৃষ্টি এবং বিন্যস্ত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
নাস্তিকরা ভাবে তারা আসলে বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মের সাথে যুদ্ধে নেমেছে। আসল কথা হচ্ছে নাস্তিক আস্তিক যুদ্ধ শুধুমাত্র একটি বিশ্বাসের সাথে আরেকটি বিশ্বাসের যুদ্ধ। বিজ্ঞানের বোরখার নিচে নাস্তিকরা যতই লুকানোর চেষ্টা করুন না কেন তাদের আসল রুপ বেরিয়ে আসবেই।
অনেকেই বলবেন হয়ত এমবিএ করা আল ফাটা আসছে স্তিফেন হকিং রে ভুল প্রমানিত করতে!!
তাদের আমি আগে ভাগেই বলে রাখি স্তিফেন হকিং নিজের কোন থিওরি জোড় করে কাউকে বিশ্বাস করতে বলেন নাই। তাঁর চেয়ে বড় কথা প্রানের সৃষ্টি যদি স্রষ্টার ব্যাখ্যা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে হকিং এর ব্যাখায় দুইটি সে নির্দ্বিধায় লুফে নিবে। কারন স্রষ্টা যদি না থাকেন তাহলে প্রানের আবির্ভাবের এই দুটি ব্যাখ্যা ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করলে তা আরও অবিশ্বাস্য, অদ্ভুদ ও অগ্রহণযোগ্য হবে।
তাই নাস্তিকদের আধ্যাত্মিক গুরু হচ্ছে হকিং আর ডারউইন।
কোন প্রমান ছাড়াই নাস্তিকরা তাদের থিওরির উপর পূর্ণ সমর্থন এনেছে, কারন এটা স্রষ্টাকে স্বীকার না করেই সৃষ্টি এবং প্রানের ব্যখ্যা দিতে পারে (যদিও তা বিশ্বাস করা কঠিন !!)
নাস্তিকরা দাবী করে ধার্মিকরা মূর্খ। স্রষ্টায় বিশ্বাসের সাথে বিজ্ঞান খাপ খায় না।
তাদের জেনে রাখা ভাল হকিং মত থিওরি দেনেওয়ালা বিজ্ঞানি নন গতিসূত্রের মত সুত্রের জনক বিজ্ঞানি নিউটন অনেক ধার্মিক ছিলেন। স্রষ্টায় বিশ্বাসের উপর তিনি কিছু বইও লিখেন।
ন্যানোটেকনলজির জনক নোবেল জয়ী বিজ্ঞানি রিচারড স্মলেই বিবর্তনকে তুরি মেরে উরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে বিবর্তন একটি আজগুবি ধারনা মাত্র।
আসলে নাস্তিকতা বা ধার্মিকতা আসলে দুটি বিশ্বাসের সংঘাত মাত্র। বাংলাদেশি নাস্তিকরা যতই বিজ্ঞানের বোরখার নিচে মুখ লুকাক না কেন দেখে যাবে যে তাদের জ্ঞানের দৌড় কেবল মুক্তমনার লিখা হিফয আর কপি পেস্ট পর্যন্ত।
বিজ্ঞানের বোরখা পড়া নাস্তিকদের বোরখার তল দিয়ে বান্দরের লেজ ঠিকই দেখা যায়।
আফটার অল ল্যাঞ্জা ইস ভেরি ডিফিকাল্ট থিং টু হাইড!!!!!
বিষয়: বিবিধ
২৪২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন