মাহমুদুর রহমানঃএই শতকের আরেক মানিক মিয়ার কথা - মাহবুব সুয়েদ

লিখেছেন লিখেছেন সমশের ২৩ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৫২:৩৮ সকাল

(তিন মাস আগের লেখা)

একঃ মরহুম সাংবাদিক তফাজ্জুল হুসেন মানিক মিয়া৷বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের সাংবাদিকতা জগতের এক কিংবদন্তী পরুষের নাম৷উপমহাদেশের মুসলমানদের মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত ৪৭ সালে পাকিস্তান আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ হওয়ার আগ-পর্যন্ত সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে তিনি যেমন প্রতিবাদ করছিলেন কলমের মাধ্যমে তেমনি শরিক ছিলেন রাজপথের সকল সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে।গনতান্ত্রিক আন্দোলন/সংগ্রাম,দেশপ্রেম,শাষকগোস্টির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্য কথা বলে সময়ের ধারাবাহিকতায় মানিক মিয়া যেন হয়ে উঠেছিলেন সংবাদমাধ্যম জগতের কালের মিনার”” “” '।'যতদিন সংবাদমাধ্যম থাকবে ততদিন তফাজ্জুল হুসেন মানিক মিয়া বেচে থাকবেন কালের সাক্ষী হিসেবে'।'কারন তিনি সাংবাদিকতাকে শুধুমাত্র রুটি-রুজির মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করেননি তিনি এটাকে দেশসেবার হাতিয়ার হিসেবে ও নিয়েছিলেন'।'তার ই প্রতিষ্টিত দৈনিক ইত্তেফাক আজ ও দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জাতীয় দৈনিক হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

দুইঃ বাংলাদেশে গনমাধ্যম জগতের আরেক জীবন্ত কিংবদন্তী এবিএম মুসা, সদ্যপ্রয়াত আতাউস সামাদ ,বিবিসি খ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রাহমান,অমর একুশের রচয়িতা গাফফার চৌঃ,মরহুম ফয়েজ আহমেদ,সদ্যপ্রয়াত প্রখ্যাত সাংবাদিক নির্মল সেন,শফিক রেহমান ও বদর উদ্দিন উমর সহ অনেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়ে কাজ করেছেন এবং করছেন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য অথবা নিজে যে আদর্শে বিশ্বাসী সেই আদর্শের জন্য'।'তাদের কলম শাষকগোস্টির রক্তচক্ষুকে যেমন ভয় করেনি তেমনি নিজের আদর্শের কথা নির্ভিকভাবে বলতে একবিন্দু ও পিছপা হয়নি'।'মাঝে মাঝে তাদের নিজেদের মধ্যে তীব্র কলমযুদ্ব ও আমরা হতে দেখেছি'।'বিপরীত মতাদর্শের কাছে তারা তীব্র সমালোচিত হওয়া সত্তেও তারা নিজের আদর্শের উপর থেকেছেন অঠল এবং অবিচল'।'

তিনঃ প্রকৌশলি মাহমুদুর রহমান'।'মা-বাবার একমাত্র সন্তান এবং নিজে ও নিঃস্বন্তান'।'পেশায় একজন সিরামিক বিশেষজ্ঞ'।'জাপান থেকে ডিগ্রী নিয়ে এসে চাকুরী করেছেন দেশের নামকরা অনেক প্রতিষ্টানে'।'

ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী এবং জাতীয়তাবাদের আদর্শের প্রতি অনুরাগী।যতদুর জানা যায়,এই পর্যন্ত যত প্রতিষ্টানের সাথে কাজ করেছেন প্রায় সবজায়গায় সততার স্বাক্ষর রেখে এসেছেন'।'আওয়ামিলীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের কোম্পানিতে ও চাকুরী করেছেন অনেকদিন'।'২০০১ সালে তৎকালীন চারদলীয় জোটসরকারের সময় নাইকো কেলেংকারিতে প্রতিমন্ত্রি একে এম মোশাররাফ সাহেব পদত্যাগ করলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রি বেগম খালেদা জিয়া জনাব মাহমুদুর রহমানকে প্রতিমন্ত্রির পদমর্যাদায় জ্বালানি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন এবং মূলত তখন থেকেই তিনি ব্যপক আলোচিত হন'।'এই আলোচিত হওয়ার অন্যতম কারন ছিল তাকে এর আগে বিএনপির কোন কার্যক্রমে কেউ দেখেনি বা অনেকে হয়তো তাকে তেমন একটা চিনতেন ও না'।'জ্বালানি উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাহমুদুর রহমান নিষ্টার সাথে দায়িত্ব চালিয়ে তার উপর রাখা বেগম জিয়ার আস্থার যতার্থ মুল্যায়ন করেছিলেন'।'রাজনৈতিক প্রতিমন্ত্রির রেখে যাওয়া সকল জঞ্জালকে কাঠিয়ে উঠে দক্ষতার সাথে অরাজনৈতিক তিনি দায়িত্বপালনকালে দেশের জ্বালানিখাত ব্যপক প্রবৃদ্বি লাভ করেছিল'।' আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি দেশের এই প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের রেষারেষির ফল হিসেবে ২০০৭ সালে তত্বাবদায়ক সরকারের খোলসে মূলত সামরিক বাহিনি ক্ষমতার দখল নিলে যখন দেশের সকল রাজনৈতিক দলের বাঘা বাঘা নেতারা হয় মুখবুঝে আছেন না হয় সরকারের সাথে গোপনে হাত মিলিয়ে সংস্কার সংস্কার খেলা খেলছেন ঠিক সেই সময় মাহমুদুর রহমান সাহসীকতার সাথে গনতন্ত্রকে পুনরুদ্বারের লক্ষেই মূলত তার মিশন শুরু করেন'।'তার উত্তরার অফিসে তিনি সরকারের আমলাদের এক বৈঠক ডাকেন কিভাবে এই অগনতান্ত্রিক শক্তিকে বিদেয় করে নির্বাচন করা যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্যে যদিও এটা নিয়ে একশ্রেনির সুশীলনামধারি পত্রিকা ব্যাপক মিথ্যাচার চালিয়েছিল'।'এই তত্তাবদায়ক সরকারের সময় ই আরেকটি ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠে আর তা ছিল বিএনপি নেতা আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলী ফালুর মালিকানাধিন জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার বিরুদ্বে'।'এমনকি যেই বিল্ডিং থেকে পত্রিকাটি পাবলিশ হত সেই বিল্ডিংয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়'।'জাতীয়তাবাদি শক্তির এই মুখপাত্রটিকে বন্ধ্বকরে দিয়ে সেনা সমর্থিত সরকারকে দ্বীর্ঘসময় ধরে শাষন ক্ষমতায় ঠিকিয়ে রাখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য'।'একদিকে পত্রিকাটির মালিক ফালু সাহেব জেলে বন্দি অপরদিকে রাষ্ট্রের শীর্ষমহলের প্রষাদ ষড়যন্ত্রের কাছে ঠিকতে না পেরে এটি প্রায় বন্ধ্ব হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল'।'ঠিক এমনি এক মুহুর্তে সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক ও আমার দেশের উপদেষ্টা সম্পাদক জনাব আতাউস সামাদের অনুরুধে সাংবাদিক জগত সম্বধ্বে কোন প্রকার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া ই পত্রিকাটির দায়িত্ব পালনে রাজি হয়ে এই জগতে প্রবেশ করেন আজকের এই সময়ের আলোচিত ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জনাব মাহমুদুর রহমান'।'প্রায় নিশ্বেস হওয়ার পথে পত্রিকাটির দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি শাষকগোস্টির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি শুরু করেন কলমযুদ্ব'।'আমার দেশের পাশাপাশি অন্যান্য দৈনিক সমুহে ও তিনি জাতীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে লিখনীর মাধ্যমে রিতীমত নাকানি-চুবানি খাওয়াতে শুরু করেন মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকারকে'।'একথা বললে অত্যুক্তি হবেনা যে,ওয়ান ইলেভেনের এই কালো ভুতকে জাতির কাধ থেকে নামিয়ে গনতন্ত্র পুনরুদ্বারে মাহমুদুর রহমানেরন অবদান সেই সময়ে প্রকাশিত সকল জাতীয় দৈনিক সমুহের মান্যবর সম্পাদক/সাংবাদিক ভাইদের চেয়ে দ্বিগুন বেশি ছিল'।'মঈন-ফখরুদ্দিনের দেওয়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামিলীগ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করার পর সকলের ই আশা ছিল সেনাসমর্থিত সরকারের চেয়ে গনতান্ত্রিক এই সরকারের আমলে বুধহয় দেশ একটু সুখে থাকবে'।'মানুষের বাকস্বাধীনতা,গনমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা সহ সরকারের ভাল-মন্দের সমালোচনা করা যাবে'।'একটি গনতান্ত্রিক সরকারের কাছে দেশের জনসাধারনের এই প্রত্যাশা করাটা অযৌক্তিক ছিলনা'।'ছাত্রলীগের সন্ত্রাস,পিলখানা হত্যাকান্ড,টেন্ডারবাজি-চাদাবাজি,সর্বোপরি সরকারদলীয় লোকদের নানা কীর্তিকলাপ নিয়ে জনাব মাহমুদুর রহমানের সম্পাদিত দৈনিক আমার দেশ যখন জনগুরুত্বপুর্ন সংবাদ সমুহ প্রকাশ করতে থাকে তখনি মূলত তিনি এবং তার পত্রিকা সরকারের রোষনালে পড়ে যান'।'সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে তৃনমুল পর্যন্ত ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে তখনি যখন আমার দেশে প্রধানমন্ত্রির পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় এবং জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহির কয়েক কোটি টাকার দুর্নিতির সংবাদ ছাপা হয়'।'জনাব মাহমু্দুর রহমানের বিরুদ্বে শুরু হয় মিথ্যা প্রপাগান্ডা তার গাড়িতে আক্রমন করা হয় এমনকি বিলেতের মাঠিতে ও যুবলীগের হামলার স্বীকার হতে হয় তাকে'।'লন্ডনের ব্রিকলেনে তার উপর যুবলীগ ক্যডারদের হামলার দৃশ্য নিজ চোখে দেখেছি'।'প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা হলে সরকার তো মানহানি মামলা করতে পারতেন কিন্তু তা না করে এরকম শারিরিক ভাবে একজন সম্পাদককে আঘাত করার নজির ইতিহাসে আছে কি-না আমার জানা নেই'।'শুধু আঘাতে ই তারা ক্ষান্ত হয়নি তার বিরুদ্বে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘ ৬ মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়'।'সরকার হয়তো ভেবে ছিল,একবার কারাগার থেকে বের হলে তিনি ভড়কে যাবেন এবং আর তাদের পিছু নেবেননা'।'কিন্তু হায়,তাদের কপাল মন্দ!যেই মাহমুদুর রহমানকে তারা কারাগারে পাঠালেন ভয়/শক্তিহীন করে দেওয়ার জন্য সেই মাহমুদুর রহমান কারাগার থেকে বের হলেন আরো বেশি মনোবল আরো ব্যপক পরিচিতি এবং বলা যায় ইতিমধ্যে তিনি অর্জন করে ফেললেন বিপুল জনপ্রিয়তা এবং তরুন সমাজ তাকে আপোষহীন সংগ্রামের মূর্তপ্রতিক হিসেবে গ্রহন করে নিল'।'

তাকে কারা নির্যাতনের নিন্দা করে এবং গনমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের খবর ফলাও করে বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়া যেমন বিবিসি,এএফপি,রয়টার্স,সিএনএন সহ অনেকেই প্রচার করল।

চারঃ গত প্রায় দেড়মাস ধরে তিনি তার কার্যালয়ে অবরুদ্ব জীবন যাপন করছেন'।'বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়াম্যন(পদত্যাগী)বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের শপথ ও আইন বহির্ভুতভাবে আরেকজনের সাথে মামলার বিষয়ে স্কাইপের মাধ্যমে ঘন্টার পর ঘন্টা আলাপের সুত্রধরে লন্ডনের প্রভাবশালী ইকোনোমিষ্ট এর বরাতে আমার দেশ বিচারপতির এই স্কাইপ সংলাপটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে শুরু করলে এবং এর জের ধরে এর দায়ভার স্বীকার করে বিচারপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় আবার ও সরকারের রোষনালে পড়ে যান মাহমুদুর রহমান।সরকারের তরফ থেকে শুরু করা হয় তাকে গ্রেফতারের তোড়জোড়'।'কিন্তু আমরা দেখলাম অবরুদ্ব মাহমুদুর রহমান ও দমবার পাত্র নন'।'অবরুদ্ব অবস্থায় টেলিফোনে বিভিন্ন টেলিভিষনে দেওয়া তার সাক্ষাতকার আমার দেশে লেখা তার কলাম সমুহ যেন তার মনোবলকে আরো ও দ্বীগুন করে দিয়েছে।ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ব্যক্তিত্বরা থেকে শুরু করে সর্বমহল ই ব্যপক নিন্দা জানিয়েছে'।'আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুলো ও যথারিতি সংবাদটি ফলাও করে প্রচার করেছে'।'হার মানবার পাত্রনন মাহমুদুর রহমান।অবরুদ্ব অবস্থায় ও তিনি তার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাচঃ ২০০৭-২০১৩ সাল'।'মাত্র ৬ বছরের মধ্যে একজন প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান আজ হয়ে উঠেছেন আপোষহীন বিপ্লবি সাংবাদিক, সফল ও সংগ্রামি সম্পাদক'।'সংবাদমাধ্যম জগতের কিংবদন্তি পুরুষ তফাজ্জোল হুসেন মানিক মিয়াসহ উপরোল্লেখিত সকল বিখ্যাত সাংবাদিকদের সাথে তুলনা করলে আমরা দ্বিধ্বাহীন চিত্তে একথা বলতে পারি,এই অল্প সময়ে মাহমুদুর রহমান যেই ত্যাগ/তিতীক্ষার মাধ্যমে গনমাধ্যম জগতে তার নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন যেই লড়াই তিনি করেছেন এবং করছেন তাতে তিনি হয়ে উঠেছেন এই দশকের আরেক মানিক মিয়া'।'তার অবস্থান আজ তাকে করে তুলেছে সাংবাদিকতার এবং এই জগতের 'কুতুব মিনার'।'যেই মাহমুদুর রহমানের শুরু এই দশকে সে যেন বেচে থাকেন শুধু এই দশক কিংবা শতাব্দিতে ই নয় হাজারো বছর তিনি বেচে থাকুন প্রতিবাদি এবং বিপ্লবের প্রতিক হিসেবে এই কামনা করছি। একঃ মরহুম সাংবাদিক তফাজ্জুল হুসেন মানিক মিয়া৷বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের সাংবাদিকতা জগতের এক কিংবদন্তী পরুষের নাম৷উপমহাদেশের মুসলমানদের মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত ৪৭ সালে পাকিস্তান আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ হওয়ার আগ-পর্যন্ত সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে তিনি যেমন প্রতিবাদ করছিলেন কলমের মাধ্যমে তেমনি শরিক ছিলেন রাজপথের সকল সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে।গনতান্ত্রিক আন্দোলন/সংগ্রাম,দেশপ্রেম,শাষকগোস্টির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্য কথা বলে সময়ের ধারাবাহিকতায় মানিক মিয়া যেন হয়ে উঠেছিলেন সংবাদমাধ্যম জগতের কালের মিনার”” “” '।'যতদিন সংবাদমাধ্যম থাকবে ততদিন তফাজ্জুল হুসেন মানিক মিয়া বেচে থাকবেন কালের সাক্ষী হিসেবে'।'কারন তিনি সাংবাদিকতাকে শুধুমাত্র রুটি-রুজির মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করেননি তিনি এটাকে দেশসেবার হাতিয়ার হিসেবে ও নিয়েছিলেন'।'তার ই প্রতিষ্টিত দৈনিক ইত্তেফাক আজ ও দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জাতীয় দৈনিক হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

দুইঃ বাংলাদেশে গনমাধ্যম জগতের আরেক জীবন্ত কিংবদন্তী এবিএম মুসা, সদ্যপ্রয়াত আতাউস সামাদ ,বিবিসি খ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রাহমান,অমর একুশের রচয়িতা গাফফার চৌঃ,মরহুম ফয়েজ আহমেদ,সদ্যপ্রয়াত প্রখ্যাত সাংবাদিক নির্মল সেন,শফিক রেহমান ও বদর উদ্দিন উমর সহ অনেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়ে কাজ করেছেন এবং করছেন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য অথবা নিজে যে আদর্শে বিশ্বাসী সেই আদর্শের জন্য'।'তাদের কলম শাষকগোস্টির রক্তচক্ষুকে যেমন ভয় করেনি তেমনি নিজের আদর্শের কথা নির্ভিকভাবে বলতে একবিন্দু ও পিছপা হয়নি'।'মাঝে মাঝে তাদের নিজেদের মধ্যে তীব্র কলমযুদ্ব ও আমরা হতে দেখেছি'।'বিপরীত মতাদর্শের কাছে তারা তীব্র সমালোচিত হওয়া সত্তেও তারা নিজের আদর্শের উপর থেকেছেন অঠল এবং অবিচল'।'

তিনঃ প্রকৌশলি মাহমুদুর রহমান'।'মা-বাবার একমাত্র সন্তান এবং নিজে ও নিঃস্বন্তান'।'পেশায় একজন সিরামিক বিশেষজ্ঞ'।'জাপান থেকে ডিগ্রী নিয়ে এসে চাকুরী করেছেন দেশের নামকরা অনেক প্রতিষ্টানে'।'

ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী এবং জাতীয়তাবাদের আদর্শের প্রতি অনুরাগী।যতদুর জানা যায়,এই পর্যন্ত যত প্রতিষ্টানের সাথে কাজ করেছেন প্রায় সবজায়গায় সততার স্বাক্ষর রেখে এসেছেন'।'আওয়ামিলীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের কোম্পানিতে ও চাকুরী করেছেন অনেকদিন'।'২০০১ সালে তৎকালীন চারদলীয় জোটসরকারের সময় নাইকো কেলেংকারিতে প্রতিমন্ত্রি একে এম মোশাররাফ সাহেব পদত্যাগ করলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রি বেগম খালেদা জিয়া জনাব মাহমুদুর রহমানকে প্রতিমন্ত্রির পদমর্যাদায় জ্বালানি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন এবং মূলত তখন থেকেই তিনি ব্যপক আলোচিত হন'।'এই আলোচিত হওয়ার অন্যতম কারন ছিল তাকে এর আগে বিএনপির কোন কার্যক্রমে কেউ দেখেনি বা অনেকে হয়তো তাকে তেমন একটা চিনতেন ও না'।'জ্বালানি উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাহমুদুর রহমান নিষ্টার সাথে দায়িত্ব চালিয়ে তার উপর রাখা বেগম জিয়ার আস্থার যতার্থ মুল্যায়ন করেছিলেন'।'রাজনৈতিক প্রতিমন্ত্রির রেখে যাওয়া সকল জঞ্জালকে কাঠিয়ে উঠে দক্ষতার সাথে অরাজনৈতিক তিনি দায়িত্বপালনকালে দেশের জ্বালানিখাত ব্যপক প্রবৃদ্বি লাভ করেছিল'।' আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি দেশের এই প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের রেষারেষির ফল হিসেবে ২০০৭ সালে তত্বাবদায়ক সরকারের খোলসে মূলত সামরিক বাহিনি ক্ষমতার দখল নিলে যখন দেশের সকল রাজনৈতিক দলের বাঘা বাঘা নেতারা হয় মুখবুঝে আছেন না হয় সরকারের সাথে গোপনে হাত মিলিয়ে সংস্কার সংস্কার খেলা খেলছেন ঠিক সেই সময় মাহমুদুর রহমান সাহসীকতার সাথে গনতন্ত্রকে পুনরুদ্বারের লক্ষেই মূলত তার মিশন শুরু করেন'।'তার উত্তরার অফিসে তিনি সরকারের আমলাদের এক বৈঠক ডাকেন কিভাবে এই অগনতান্ত্রিক শক্তিকে বিদেয় করে নির্বাচন করা যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্যে যদিও এটা নিয়ে একশ্রেনির সুশীলনামধারি পত্রিকা ব্যাপক মিথ্যাচার চালিয়েছিল'।'এই তত্তাবদায়ক সরকারের সময় ই আরেকটি ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠে আর তা ছিল বিএনপি নেতা আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলী ফালুর মালিকানাধিন জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার বিরুদ্বে'।'এমনকি যেই বিল্ডিং থেকে পত্রিকাটি পাবলিশ হত সেই বিল্ডিংয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়'।'জাতীয়তাবাদি শক্তির এই মুখপাত্রটিকে বন্ধ্বকরে দিয়ে সেনা সমর্থিত সরকারকে দ্বীর্ঘসময় ধরে শাষন ক্ষমতায় ঠিকিয়ে রাখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য'।'একদিকে পত্রিকাটির মালিক ফালু সাহেব জেলে বন্দি অপরদিকে রাষ্ট্রের শীর্ষমহলের প্রষাদ ষড়যন্ত্রের কাছে ঠিকতে না পেরে এটি প্রায় বন্ধ্ব হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল'।'ঠিক এমনি এক মুহুর্তে সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক ও আমার দেশের উপদেষ্টা সম্পাদক জনাব আতাউস সামাদের অনুরুধে সাংবাদিক জগত সম্বধ্বে কোন প্রকার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া ই পত্রিকাটির দায়িত্ব পালনে রাজি হয়ে এই জগতে প্রবেশ করেন আজকের এই সময়ের আলোচিত ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জনাব মাহমুদুর রহমান'।'প্রায় নিশ্বেস হওয়ার পথে পত্রিকাটির দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি শাষকগোস্টির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি শুরু করেন কলমযুদ্ব'।'আমার দেশের পাশাপাশি অন্যান্য দৈনিক সমুহে ও তিনি জাতীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে লিখনীর মাধ্যমে রিতীমত নাকানি-চুবানি খাওয়াতে শুরু করেন মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকারকে'।'একথা বললে অত্যুক্তি হবেনা যে,ওয়ান ইলেভেনের এই কালো ভুতকে জাতির কাধ থেকে নামিয়ে গনতন্ত্র পুনরুদ্বারে মাহমুদুর রহমানেরন অবদান সেই সময়ে প্রকাশিত সকল জাতীয় দৈনিক সমুহের মান্যবর সম্পাদক/সাংবাদিক ভাইদের চেয়ে দ্বিগুন বেশি ছিল'।'মঈন-ফখরুদ্দিনের দেওয়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামিলীগ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করার পর সকলের ই আশা ছিল সেনাসমর্থিত সরকারের চেয়ে গনতান্ত্রিক এই সরকারের আমলে বুধহয় দেশ একটু সুখে থাকবে'।'মানুষের বাকস্বাধীনতা,গনমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা সহ সরকারের ভাল-মন্দের সমালোচনা করা যাবে'।'একটি গনতান্ত্রিক সরকারের কাছে দেশের জনসাধারনের এই প্রত্যাশা করাটা অযৌক্তিক ছিলনা'।'ছাত্রলীগের সন্ত্রাস,পিলখানা হত্যাকান্ড,টেন্ডারবাজি-চাদাবাজি,সর্বোপরি সরকারদলীয় লোকদের নানা কীর্তিকলাপ নিয়ে জনাব মাহমুদুর রহমানের সম্পাদিত দৈনিক আমার দেশ যখন জনগুরুত্বপুর্ন সংবাদ সমুহ প্রকাশ করতে থাকে তখনি মূলত তিনি এবং তার পত্রিকা সরকারের রোষনালে পড়ে যান'।'সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে তৃনমুল পর্যন্ত ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে তখনি যখন আমার দেশে প্রধানমন্ত্রির পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় এবং জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহির কয়েক কোটি টাকার দুর্নিতির সংবাদ ছাপা হয়'।'জনাব মাহমু্দুর রহমানের বিরুদ্বে শুরু হয় মিথ্যা প্রপাগান্ডা তার গাড়িতে আক্রমন করা হয় এমনকি বিলেতের মাঠিতে ও যুবলীগের হামলার স্বীকার হতে হয় তাকে'।'লন্ডনের ব্রিকলেনে তার উপর যুবলীগ ক্যডারদের হামলার দৃশ্য নিজ চোখে দেখেছি'।'প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা হলে সরকার তো মানহানি মামলা করতে পারতেন কিন্তু তা না করে এরকম শারিরিক ভাবে একজন সম্পাদককে আঘাত করার নজির ইতিহাসে আছে কি-না আমার জানা নেই'।'শুধু আঘাতে ই তারা ক্ষান্ত হয়নি তার বিরুদ্বে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘ ৬ মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়'।'সরকার হয়তো ভেবে ছিল,একবার কারাগার থেকে বের হলে তিনি ভড়কে যাবেন এবং আর তাদের পিছু নেবেননা'।'কিন্তু হায়,তাদের কপাল মন্দ!যেই মাহমুদুর রহমানকে তারা কারাগারে পাঠালেন ভয়/শক্তিহীন করে দেওয়ার জন্য সেই মাহমুদুর রহমান কারাগার থেকে বের হলেন আরো বেশি মনোবল আরো ব্যপক পরিচিতি এবং বলা যায় ইতিমধ্যে তিনি অর্জন করে ফেললেন বিপুল জনপ্রিয়তা এবং তরুন সমাজ তাকে আপোষহীন সংগ্রামের মূর্তপ্রতিক হিসেবে গ্রহন করে নিল'।'

তাকে কারা নির্যাতনের নিন্দা করে এবং গনমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের খবর ফলাও করে বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়া যেমন বিবিসি,এএফপি,রয়টার্স,সিএনএন সহ অনেকেই প্রচার করল।

চারঃ গত প্রায় দেড়মাস ধরে তিনি তার কার্যালয়ে অবরুদ্ব জীবন যাপন করছেন'।'বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়াম্যন(পদত্যাগী)বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের শপথ ও আইন বহির্ভুতভাবে আরেকজনের সাথে মামলার বিষয়ে স্কাইপের মাধ্যমে ঘন্টার পর ঘন্টা আলাপের সুত্রধরে লন্ডনের প্রভাবশালী ইকোনোমিষ্ট এর বরাতে আমার দেশ বিচারপতির এই স্কাইপ সংলাপটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে শুরু করলে এবং এর জের ধরে এর দায়ভার স্বীকার করে বিচারপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় আবার ও সরকারের রোষনালে পড়ে যান মাহমুদুর রহমান।সরকারের তরফ থেকে শুরু করা হয় তাকে গ্রেফতারের তোড়জোড়'।'কিন্তু আমরা দেখলাম অবরুদ্ব মাহমুদুর রহমান ও দমবার পাত্র নন'।'অবরুদ্ব অবস্থায় টেলিফোনে বিভিন্ন টেলিভিষনে দেওয়া তার সাক্ষাতকার আমার দেশে লেখা তার কলাম সমুহ যেন তার মনোবলকে আরো ও দ্বীগুন করে দিয়েছে।ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ব্যক্তিত্বরা থেকে শুরু করে সর্বমহল ই ব্যপক নিন্দা জানিয়েছে'।'আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুলো ও যথারিতি সংবাদটি ফলাও করে প্রচার করেছে'।'হার মানবার পাত্রনন মাহমুদুর রহমান।অবরুদ্ব অবস্থায় ও তিনি তার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাচঃ ২০০৭-২০১৩ সাল'।'মাত্র ৬ বছরের মধ্যে একজন প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান আজ হয়ে উঠেছেন আপোষহীন বিপ্লবি সাংবাদিক, সফল ও সংগ্রামি সম্পাদক'।'সংবাদমাধ্যম জগতের কিংবদন্তি পুরুষ তফাজ্জোল হুসেন মানিক মিয়াসহ উপরোল্লেখিত সকল বিখ্যাত সাংবাদিকদের সাথে তুলনা করলে আমরা দ্বিধ্বাহীন চিত্তে একথা বলতে পারি,এই অল্প সময়ে মাহমুদুর রহমান যেই ত্যাগ/তিতীক্ষার মাধ্যমে গনমাধ্যম জগতে তার নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন যেই লড়াই তিনি করেছেন এবং করছেন তাতে তিনি হয়ে উঠেছেন এই দশকের আরেক মানিক মিয়া'।'তার অবস্থান আজ তাকে করে তুলেছে সাংবাদিকতার এবং এই জগতের 'কুতুব মিনার'।'যেই মাহমুদুর রহমানের শুরু এই দশকে সে যেন বেচে থাকেন শুধু এই দশক কিংবা শতাব্দিতে ই নয় হাজারো বছর তিনি বেচে থাকুন প্রতিবাদি এবং বিপ্লবের প্রতিক হিসেবে এই কামনা করছি।

-বিঃদ্রঃ-

এক-আজ তিনি কারাগারে বন্দি এবং তিনটি দাবিতে আমরন অনশন পালন করছেন।তার এই মুমুর্ষ অবস্থায় আমরা কি পারিনা মাহমুদুর রহমান মঞ্ছ গঠন করে আন্দোলন করতে?

দুই- হেফাজতে ইসলামের নেতাদের প্রতি অনুরোধ,যেভাবে লংমার্চ করে সরকারের মসনদকে কাপিয়ে দিয়েছেন তেমনি আপনাদের এই আন্দোলনের নেপথ্য কারিগরের এই কঠিন মুহুর্তে আরেকটি কর্মসুচির ডাকদেন দেখবেন সারাদেশের মানুষ এই বেহায়া সরকারকে বিদেয় করে ঘ্রে ফিরবে ইনশাল্লাহ।

তিন-ডক্টর কামাল,বি চৌঃ,ব্যরিষ্টার রফিকুল হকের কাউকে দেশ এবং জাতির এই সঙ্কটময় মুহুর্তে ভারতের আন্না হাজারের ভুমিকায় নেমে আসার অনুরোধ করছি।

চার-মহান মনিবের কাছে করজোড়ে নিবেদন,সংগ্রামী মাহমুদুর রহমানকে আমাদের মাঝে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরিয়ে দাও।

বিষয়: রাজনীতি

১৮৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File