সাঈদীর ফাসিঃ সাইয়েদ কুতুব শহীদদের পাল্লাই ভারি হচ্ছে মনে হয়
লিখেছেন লিখেছেন সমশের ০১ মার্চ, ২০১৩, ০২:৫০:৪৭ রাত
সাঈদীর ফাসিঃ সাইয়েদ কুতুব শহীদদের পাল্লাই ভারি হচ্ছে মনে হয়
মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের একসময়ের জানবাঝ কর্মী ও বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ 'তাফসির ফি যিলালিল কুরানের'লেখক সাইয়েদ মোহাম্মাদ কুতুবকে মিশরের সরকার রাষ্ট্রে বিশৃংখলা সৃষ্টি ও আরো কিছু অভিযোগে ফাসিতে ঝুলিয়েছিল'।'সাইয়েদ কুতুব(র)কে ফাসিতে ঝুলিয়ে তৎকালিন সরকার ভেবেছিল কুতুবকে খতম করে দিলে হয়তো তার যেই মিশন সে মিশনকে বন্ধ করা যাবে এবং তার নাম-নিশানা ও থাকবেনা'।'সময়ের ব্যবধানে আজ হয়তো সাইয়েদ কুতুব জুলুমের স্বীকার হয়ে এই নশ্বর দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু তার প্রনিত তাফসির আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত'।'সারা পৃথিবিতে আজ যারা কুরান প্রেমি আছে যারা কুরান নিয়ে গবেষনা করে বা করতে চায় তাদের অন্যতম পছন্দ এই বিখ্যাত তাফসির খানা'।'তাকে ফাসির হুকুমদানকারি সেই কুখ্যাত জামাল নাসেরের নাম আজ কয়জনই বা উচ্চারন করে আর কেউ করলেও তা খুব ঘৃনার সাথে করে থাকে কিন্তু সাইয়েদ কুতুব তার অমর কীর্তির দ্বারা আজও বেচে আছেন এবং কেয়ামাত পর্যন্ত বেচে থাকবেন এটি আমার বিশ্বাস'।'যুগেযুগে অনেক সত্যপন্থিরাই সরকার কতৃক নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন অতীতে'।'যেমনটি হয়েছিলেন ইমাম আবু হানিফা,ইমাম হাসানুল বান্না,ইমাম তিতুমীর সহ উল্লেখযোগ্য আরো অনেকে'।'সাইয়েদ কুতুব শহীদের নাম এ জন্য বললাম কারন তার প্রয়ান খুব বেশী দিন আগের নয়'।
২০১৩ সালের আজকের এই দিনে বাংলাদেশে দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে চলে আসা নাটকের রিহার্সেল শেষে বর্তমান সরকার কতৃক দেশীয় জনবল দ্বারা গঠিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল নামক নাঠ্যমঞ্চ তার নাটক মঞ্চায়ন করেছেন'।'দীর্ঘ তিন বছর ধরে অন্যের পাড়া ডিম তা দিয়ে আজ মুসিক প্রসব করলেন'।'স্বাধিনতার ৪২ বছর পর আজ বর্তমান সরকার সেই কাজটিই করে বসলেন যা করতে তাদের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও সাহস করেননি'।'প্রকৃত অপরাধি যেই হোক তার বিচার আমিও চাই তবে ন্যায় বিচার হবে অবশ্যই'।'রাজনৈতিকভাবে দমনের উদ্দেশ্যে যদি বিচার করা হয় তাহলে তা যে জাতীর জন্য একটি বিষফোড়া হয়ে দাঁড়ায় এবং অনেকটা গৃহযুদ্বের দিকেই জাতীকে দাবিত করে তা নিশ্চয় সকলে ইতিমধ্যে বুঝে গেছেন'।'আজ ট্রাইব্যুনাল তার তৃতীয় মামলার রায় দিয়েছেন এবং তাতে মাওলানা দেলওয়ার হুসেন সাঈদীকে ফাসির রায় দিয়েছেন'।'তার অপরাধ তিনি ৪২ বছর আগে পুর্ব পাকিস্থান যখন পশ্চিম পাকিস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা স্বাধিন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সে সময় তিনি স্বজাতির পক্ষে না দাঁড়িয়ে পাকিদের সহায়তা করেছেন এবং হত্যা,ধর্ষন,লুন্ঠনের সাথে জড়িত ছিলেন'।'তিন বছর ধরে চলে আসা নাটক দেখে এবং মানুষ যেহেতু জানেই যে,আর কেউ থাকলে থাকতেও পারে কিন্তু মাওলানা সাঈদী এই যুদ্বকালিন সময়ে কোন ভুমিকায় ছিলেননা এবং তিনি পার্লামেন্টে ও যেহেতু এই ব্যপারে বক্তৃতা করেছিলেন তাই ভাবেছিলাম হয়তো সরকার এই ক্ষেত্রে অবশ্যই ন্যায় বিচার করবেন কিন্তু আশ্চর্য্য হয়ে দেখলাম সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অমানবিক ও অনৈতিক কাজটিই করে বসলেন'।'যে মানুষটি সারা দুনিয়ায় কুরানের দাওয়াত দিয়ে বেড়াত প্রায় ৬ শতধিক বিধর্মী যার হাতে ইসলাম গ্রহন করল তাকে তারা অতিনিচু মানের কিছু অভিযোগে দন্ডিত করলেন'।' এটাতো আর ওপেন সিক্রেট যে,বর্তমান সরকার চালাচ্ছে বাম মতাদর্শের লোকেরা'।'প্রকৃত আওয়ামীলিগাররা আজ থেকেও নেই সরকারে'।'বামেরা যেহেতু কমিউনিজমে বিশ্বাস করেন অতএব তারা ধরে নিয়েছেন বাংলাদেশে তাদের এই আদর্শিক পতনের পিছনে মাওলানার একটি বড় ধরনের ভুমিকা ছিল'।'মাওলানা হলেন হ্যমিলিয়ানের বাশিওয়ালা'।' আমার মনে হয় সারা দেশে তার দল জামায়াতের যতটুকু জনপ্রিয়তা আছে এক মাওলানার তার চেয়ে বেশি'।'বলা হয়ে থাকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের জনসভা বৃহৎ সভা ছিল বাংলার মাঠিতে কিন্তু আমার মনে হয় এটি আমাদের আবেগের কথা কারন মাওলানা সাঈদীর এক চিটাগাঙ্গয়ের তাফসির মাহফিলে তার চেয়ে ও কয়েকগুন জনসমাগম হয়'।'মাওলানার সুললিত কন্ঠে এবং যুক্তিপুর্ন আলোচনা্য বিভিন্ন মতবাদের মোকাবেলায় ইসলামের শ্রেষ্টত্বের উপস্থাপন বিশেষ করে বর্তমান যুগের বিষফোড়া কমিউনিজমের ব্যর্থতা নিয়ে তার আলোচনা গুলো দেশের তরুন সমাজের কাছে ব্যপক গ্রহনযোগ্যতা পেতে থাকে এবং ক্রমেই মাওলানা দেশের সর্বমহলে নিজের একটি গ্রহনযোগ্যতা তৈরি করে ফেলেন'।'৭০/৮০র দশকের ব্যপক জনপ্রিয় কমিউনিজম যখন দেশে তার জৌলুস হারাতে লাগল এবং বামেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন দলে যোগ দিতে লাগল এর পেছনে মাওলানা সাঈদীর পান্ডিত্যপুর্ন আলোচনা যে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল তা পুথভ্রষ্ট বামেরা ভুলতে পারেনি'।'তারা মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ঘাড়ে সওয়ার হয়ে এবার স্বাধিনতার প্রায় ৪২ বছর পর তাদের সেই পুরনো ক্ষোভ মেটলো'।'বহুগুনে গুনান্বিত মজলুম মাওলানাকে আল্লাহপাক একি দেহে অনেক গুনাবলীর অধিকারি বানিয়েছিলেন'।'একজন সুবক্তা,দ্বীনি পণ্ডিত,ঈর্ষা করার মত ব্যক্তিত্ব এবং সর্বোপরি একজন জননেতা ও বটে'।'তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে বারবার নির্বাচিত সাংসদ এবং দেশের গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে তার অবদান উল্লেখযোগ্য'।'সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি রক্ষায় তার ভুমিকা প্রশংসনীয়'।'আমি চাইনা এই লেখায় তিনি যে যুধ্বাপরাধী নন এই বিষয়ে কোন আলোচনা করতে কারন এই আলোচনা করাটাই আমার কাছে অবান্তর'।'আমার মন থেকে কিছু বিক্ষিপ্ত কথামালা আমি এখানে উল্লেখ করেছি'।'আমার মনে হয়,সরকার হয়তো ভেবেছে সাঈদীকে ফাসি দিয়ে দিলে তার বিপ্লবী আহবান এবং তার অনুসারীদের ও নিশ্বেস করা যাবে কিন্তু ইতিহাস সাক্ষি দেয়,আজ পর্যন্ত কোথাও কোন অত্যাচারি শাসকের নাম স্বররনাক্ষরে লেখা থাকেনা বরং অত্যাচারের স্বীকার ব্যক্তিই সময়ের ব্যবধানে ইতিহাসের অবিচ্চেদ্য অংশে পরিনত হয়ে যায়'।'এদের নাম এদের কীর্তি থাকে যুগ থেকে যুগান্তরে..................।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন