নাটক 'রেশমী'নাট্যকার শেখ হাসিনা এবং মুন্নি সাহা-মাহবুব সুয়েদ
লিখেছেন লিখেছেন সমশের ১১ মে, ২০১৩, ০৫:৪০:১৫ সকাল
সকালে ফেসবুক খুলতেই দেখলাম বন্ধুরা প্রায় সবাই একটা নিউজ শেয়ার করছে আর তা হল সাভারে ঘটে যাওয়া মৃত্যুপুরী থেকে রেশমী নাম্নি এক মহিলার জীবিত ও অক্ষত উদ্বার নিয়ে।নানাজন নানাভাবে মহান আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞ্যাপন করছে।কেউ কেউ আবার একে আল্লাহর অপার ক্ষমতার এক নজির বলে ঘোষনা করছে।এটিন বাংলার সাংবাদিক চিরকুমারী মুন্নি সাহা এনিয়ে সেনাবাহিনীর এক উদ্বারকর্মীকে কয়েকটি যুক্তিমুলক প্রশ্ন করায় তাকে নানাজন নানাভাবে গালাগাল করতেও দেখলাম।আমার কয়েকজন প্রিয় ভাইকেও এই জিহাদে (মুন্নি সাহাকে গালাগালিতে) খুব এক্টিব দেখলাম।আমি এই রেশমী বেগমের উদ্বারকে কেন জানি সহযে মেনে নিতে পারছিনা।নানা প্রশ্ন মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্চে সাহস পাচ্ছিনা বলে কিছু কমেন্ট ও করিনি সারাদিন।বিষয়টি এমনি এক স্পর্শকাতর যে এই সন্দেহ বা সমালোচনায় আমাদের ডান বা বাম সব দিকের লোকই হয়তো আমায় অন্ধ্ব হাসিনা বিদ্বেষি বলে গালাগাল করতে পারে।তারপরেও আমি আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত এবং যুক্তি তুলে ধরছি কারো ভাল না লাগলে নো কমেন্ট প্লিজ।আমার ব্লগ,সামহয়ার,সোনার বাংলায় গালাগালি আর কটুক্তি শুনতে শুনতে আর প্রতিবাদ করতে করতে এখন আর ভালো লাগেনা।৬ই মে শাপলা চত্বরে ঘটে যাওয়া 'ইসাবেলীয় নৃশংসতা'র পর গত দুই দিন যাবত হঠাৎ করে সাভারে ধ্বসে যাওয়া রানা প্লাজা থেকে অস্বাভাবিক হারে লাশের সংখ্যা বৃদ্বি পাচ্চিল এবং এ নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্নও উটে গেছে।কানার যেমন মনে মনে সব জানা থাকে আমরা সকলেই কোন প্রমান না থাকলেও এটা মূঠামুঠি বুঝি যে,এই লাশ গুলি কার।৬ মের শিকার করা প্রানী (হাসিনার দৃষ্টিতে) তাদেরই যে রানা প্লাজায় এনে নাটক করা হচ্ছে তা তো মুঠামূঠি সকলেরি জানা আছে।গত কাল থেকে এই লাশের সংখ্যা বৃদ্বিতে যখনি প্রশ্ন উঠা শুরু হয় এবং লাশ গুমের নাটক ধরা পড়ে যায় তখনি আজ আরেক মহা নাটকের মাধ্যমে সেই প্রশ্নটিকে মিঠিয়ে ফেলা হল।বাংলাদেশীরা আমরা আসলেই ধর্মীয় আবেগপ্রবন মানুষ তাই নাটকটি এমনভাবে সাজানো/মঞ্চস্থ করা হয়েছে যে,কারো মনে এটিকে এক আল্লাহর কুদরত ছাড়া আর কিছু বলার নেই।উপমহাদেশের রাজনীতিতে সর্বকালের সেরা রাজনৈতিক অভিনেত্রী ডঃ শেখ হাসিনা নাটক নির্মান এবং এর সুষ্ট প্রয়োগে যে কত পারদর্শী তা আজ আবারও প্রমান করলেন তিনি।তিনি একঢিলে তিন পাখি শিকারে অভ্যস্ত এবং এবারও করলেন।
১। ৬ই মের গনহত্যার লাশগুলো নিয়ে উথাপিত প্রশ্ন বা এ নিয়ে অনুসন্দ্বিতসু মুখে তিনি কুলুপ এটে দিলেন এর মাধ্যমে এখন আর সে বিষয়ে অর্থ্যাৎ রানা প্লাজায় লাশের সংখ্যা বৃদ্বি নিয়ে যেই কথা উঠেছিল তা বন্ধ হয়ে গেল এবং গনহত্যার লাশ গুলো গুমের পথ পরিস্কার হয়ে গেল।
২।বিবিসি ,রয়টার্স্,সিএনএন সহ আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম যেগুলো সাভারে উদ্বার অভিযানে সরকারের সমালোচনায় মুখর ছিল তাদের চোখে তিনি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে,আমরা ১৭ দিন পরেও জীবিত মানুষ উদ্বার করেছি কাজেই তারাও আর চুপসে যাবে এখন।
৩।৬ই মের গন হত্যা,সাভারে ভবন ধস,খালেদার আল্টিমেটাম ইত্যাদি বিষয়ে আপামর জনসাধারনের দৃষ্টি এখন সাভারের রেশমির দিকে এবং বলা যায় এটি এখন 'ট্যক অফ দ্যা কান্ট্রি'।
এই রেশমি উদ্বারকে কেন নাটক মনে হল তার কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করছি...
১।কয়েকদিন আগে মাহমুদুর রহমানে অনশনকালে আমরা দেখলাম চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ তত্বাবধানে থাকার পরেও তিনি যতদিন যাচ্ছিল কথা বলতে পারছিলেন না।আর এই রেশমি বেগম সে কিনা ১৭ দিন না খেয়ে বেচে ছিল তাও আবার এক মৃত্যুপুরীতে।সে কি সিন্দাবাদের কবরবাসের মত হয়ে গেলনা?
২।সাধারন জনগনের মনে বিশ্বাস জন্মানোর জন্য বলা হল মসজিদের বেইসমেন্টে তাকে অক্ষত পাওয়া যায় হায় সেলুকাস আমরা তো ভাল করেই জানি যে নেত্রী কি করে সুযোগমত ধর্মকে কাজে লাগান এবার লাগালেন ডাইরেক্ট মসজিদকে কাজে লাগালেন।
৩।উদ্বারের পর ১৭ দিন কবরে ( এটি কবর নয়তো কি) থাকার পরে উদ্বার হয়ে সে কি করে তার বেচে থাকার গাজাখুরি বলতে পারে?তারতো জীবন মরন অবস্থা হওয়ার কথা ছিল।
৪।তাকে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর ছোটে যাওয়াটা কি অস্বাভাবিক নয় যেখানে তিনি রানা প্লাজা ধ্বসের ৪ দিন পর দেখতে গিয়েছিলেন।
৫।আমাকে বিশ্বাস করতেই হবে যে,সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া পাপকে আড়াল করতেই প্রধানমন্ত্রী এই নাটক করলেন কারন ইতিপুর্বে যেকোন অঘটন ঘটিয়ে তারা আরেকটি সংঘটনের দ্বারা আগেরটি মুছেছেন এবং জনগনকে বিভ্রান্ত করেছেন যেমন চূরঞ্জিত বাবুর টাকা চুরি ধামা চাপা দিতে বিএনপির বিপ্লবী নেতা ইলিয়াস আলিকে গুম করে এক ঢিলে তিন পাখি তিনি স্বীকার করেছিলেন।
আমি আমার নিছক ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরলাম কারো খারাপ লাগলে কিছু করার নেই যদিও বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর......।।
বিষয়: বিবিধ
১৮৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন