অন্তরায় হিসেবে হিংসা

লিখেছেন লিখেছেন আবু হাফসাহ ২৫ মার্চ, ২০১৩, ১১:৪৭:৫১ রাত

মানুষের কাঙ্খিত ও অভিষ্ট লক্ষ্য পরকালে সর্গ বা জান্নাত লাভে ধন্য হওয়া। আর এ লক্ষ্য অর্জনের অন্তরায়ের অন্যতম একটি হলো হিংসা। এ হিংসা একটি মরণ ব্যধি। এ ব্যধি অত্যান্ত ভয়নক। মানুষের সূচনা হতে আজ অবধি এ রোগে আক্রন্ত হয়ে কত জিবনের সলিল সমাধি রচিত হয়েছে তার কোন ইয়েত্তা নেই। আক্রন্তের সংখ্যা শতভাগ বললেও অত্যুক্তি হবেনা। পরিবার, সমাজ, রাষ্ঠ্রে এর দৃশ্য ভরি ভরি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে নাম বা অবস্থা উল্লেখ করলে আমার ব্লগার ভায়েরা হাসবে।সেদিকে নাইবা গেলাম।আসুন হিংসার স্বরুপ নিয়ে আ্লোচনা করি:হিংসা বা ঈর্ষার আরবী শব্দ হলো,‘হাসাদ’।আরবী ভাষা জানা না থাকলেও অন্তত হিংসার আররী যে হাসাদ তা সবার জানা।বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থ মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা নায়াভী (রঃ) হিংসার পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন,‘অন্যের প্রাপ্ত নিয়ামতের অপসারণ কামনা করা এবং তা নিজের জন্যে হওয়ার বাসনা করার নামই হলো হিংসা’। সংঙ্গাতে উল্লেখিত ‘নিয়ামত ’শব্দটি অত্যান্ত ব্যাপক একটি শব্দ।পৃথিবীতে পছন্দিয় ও উপকারি সবকিছুই নিয়ামত।তাই ছোট খাটো যেকোনো নিয়ামতের ক্ষেত্রে এ অর্থ প্রযোজ্য।

ঈর্ষা করা খুবই ঘৃর্ণিত একটি কাজ।হিংসুক সর্বনিম্মমানের মানুষ।ইহা অপ্রীতিকর নোংরা ও অনাকাঙ্খীত চরিত্রের বহি্রপ্রকাশ।এতে যেমন হিংসুক শান্তিতে থাকেনা।অন্যর সফলতা ধ্বংসের কামনা-বাসনায় সদাসর্বদা বিভর থাকে।সে যেমন শারীরিক কষ্ট ভোগ করতে থাকে তেমনি দ্বীন-দুনিয়া বিনষ্ট করে দেয়।রিতিমত অপর মুসলিম ভাইয়ের উপর অত্যাচার করাতে থাকে।কষ্ট দিতে থাকে।

এত্থেকে আমাদের আল্লাহ্ ও তার রাসূল (সাঃ) কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন, আল্লাহ্ বলেন,“যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট যেয়,তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্যে পাপের বোঝা বহন করে”[আহযাব-৫৮]

তিনি হিংসাকারিদের নিন্দা করে আরও বলেন:“তবে কি তারা লোকদের প্রতি এজন্য হিংসা করে যে, আ্ল্লাহ্ তাদের কে স্বীয় সম্পদ হতে কিছু দা করেছেন”[সূরাহ:নিসা:৫৪]

রাসূল (সাঃ)বলেন,“তোমরা একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ ভাব রাখো না, পরস্পরে হিংসা করবে না,বিচ্ছেদ ভাবাপন্ন হবে না।বরং সবাই এক আল্লাহ্র বান্দাহ হয়ে ভাই ভাই হয়ে যাও।একজন মুসলমানের পক্ষে তার মুসলামান ভাই হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিন দিনের বেশি সালাম-কালাম বন্ধ রাখা জায়েয নেয়”[বুখারী-মুসলীম]

ইসলাম মানুষকে অহিংস ও সম্প্রীতিময় সামাজ গঠনের নিয়ম নিতীর অসাধারণ শিক্ষা দিয়েছে।ফলে যেকোন ক্ষেত্রে এ শিক্ষার আলোকে সহাবস্থান করলে সেখানে নিরাপত্তা ও শান্তির অজস্র ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। মানবতার প্রকৃত দৃশ্যগুলি উদ্ভাষিত হতে থাকে।

এক্ষেত্রে কোন এক হাকিমের কিছু দর্শন উল্লেখ করা যেতে পারে।তিনি বলেন:- ঈর্ষাকারী পাঁচটি পয়েন্টে আল্লাহ্র বিরোধাতা করে

১-সে আল্লাহ্র ঐ সকল নিয়ামত অপছন্দ করে,যা অন্য ভাইয়ের প্রতি প্রকাশ পেয়েছে।

২-সে আল্লাহ্র ভাগ্য বা সম্পদ বন্ঠনে অসন্তুষ্ট হয়, সে যেন আল্লাহকে বলতে চায়, যদি এই ভাবে বন্ঠন করতেন তবে তা ভাল হত।

৩-সে আল্লাহ্র অনুগ্রহে কৃপণতা করে।

৪-আল্লাহ্ যাকে ভালবেসে ধন-সম্পদ প্রদান করেন তাকে অপমান করতে চায়।

৫- সে আল্লাহ্র শত্রু ইবলীসের সাহায্য করে।

এটাও বলা হয়েছে যে, হিংসুকরা মানুষের নিকট শুধু অপমান ও অপদস্থ হয়,ফেরেস্তাদের নিকট থেকে শুধু অভিশাপ পায় এবং সে যখন নির্জনে থাকে তখন মনে দুশ্চিন্তা আর কষ্ট পায়।

আমাদের প্রত্যেকের জানা থাকা ভালো যে ,হিংসা নামক মরণব্যাধি আমাদের অন্তরকে কুরে কুরে শেষ করে দেয়।একে চিকিত্সা করা অপরিহার্য।তবে তা অপারেশনের মাধ্যমে সম্ভব না।নিম্নে হিংসা থেকে বাঁচার জন্যে কিছু উপায় উল্লেখ করছি:

ক-আল্লাহ্র ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা

খ-একনিষ্টতা বা ইখলাছের সাথে মন পরিষ্কার ও মনকে গ্লানি মুক্ত করা।

গ- বেশি বেশি কুরআন পড়া ও তার উপর চিন্তা ভাবনা করা। কুরআন হচ্ছে অন্তর পরিস্কার করার মহা ঔষধ।

ঘ-পরকালের বেশি বেশি স্মরণ করা।

ঙ- আল্লাহ্র নিকট দু’আ করা যেন তার অন্তর অন্যর প্রতি নির্মল থাকে।

চ-দান খয়রাত করা;এতেও আত্মা পবিত্র হয়।

ছ-বেশি বেশি সালাম সম্প্রসার করা;কারণ সালাম পারস্পরিক মহববত ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File