তাওহীদ সংরক্ষণে মুহাম্মদ (সাঃ)-র গুরুত্বঃ

লিখেছেন লিখেছেন আবু হাফসাহ ১৭ মার্চ, ২০১৩, ০৮:১৫:২২ রাত

মুহাম্মদ (সাঃ)উম্মতের মঙ্গল সাধনে জীবণভর নির্লস ভাবে চেষ্টা করে গেছেন;যাতে এ উম্মত পরিচিত হয় শক্তিশালি ও সংরক্ষিত জাতি হিসেবে,আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্টাকারি হিসেবে। এজন্যে আল্লাহ্র তাওহীদের পরিপন্থী বা একে বিনষ্ট সৃষ্টিকারি সকল মাধ্যমগুলি পরিহার করতে জোর তাগিদ দিয়েছেন। তাইতো রাসূলে মানবপ্রেম সম্পর্কে আল্লাহ্তায়ালা বলেন,

অর্থ,তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রসূল।তোমাদের দুঃখ্য-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ।তিনি তোমাদের সঙ্গলকামী,মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়" [সূরাহঃ তাওবাহ:১২৭]

রাসূল (সাঃ) উম্মতকে অত্যাধিক শির্ক থেকে বাচতে বলেছে।মানুষকে শির্‌ক থেকে সতর্ক করছে।নতুন নতুন করে শির্‌ক থেকে বাচার জন্য বলেছে। কখন বিশেষ আবার কখন ব্যাপক ভাবে শির্‌কের ধারে কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে। নির্মল স্বচ্ছ সুন্দর বিশ্বাসের ধর্ম ইসলাম । এ ইসলামের প্রতিষ্টতা ইব্‌রাহীম (আঃ) । তার জাতী যেন সম্পূর্ণ ভাবে স্বন্ত্রতা বজায় রাখতে পারে সেজন্য এমন কথা ও কাজ পরিহার করতে বলেছেন যেগুলির দ্বারা তাওহীদ বিলিন হয় বা নষ্ট হয়।রাসূল (সাঃ) হতে এমর্মে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এতে তাওহীদ রক্ষার প্রমান এমন ভাবে প্রতিষ্টা করেছেন এবং সন্দেহ দুর করেছেন যাতে মানুষ পরে কোন আপত্তি করার সুযোগ না পায়।সেজন্যে সকল রাস্তা পরিস্কার করে বর্ণনা করেছেন।নিম্নের কয়েক অনুচ্ছেদে কিছু তথ্য আলোচনা হবে। তার আলোকে প্রমাণিত হবে,রাসূল (সাঃ) তাওহীদের সীমানা রক্ষায় কতখানি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং শির্‌ক ও বাতেল মিশ্রণের সকল রাস্ত ও ফাঁক ফোকর বন্ধ করেছেন।

প্রথম অনুচ্ছেদঃ

‘আর-রুক্‌য়ী’ বা ঝাড় ফুঁক করা:

ক-রোগমুত্তির আশায় কোন কিছু পড়ে ফুঁ দেয়ার নাম ‘আর-রুক্‌য়ী’। পঠিত জিনিষ কোরআন কারিম অথবা নাবী (সাঃ) হতে বর্ণিত দু’আও হতে পারে।

খ-আরগ্য লাভের জন্যে এমনটি করা যায়েজ।এর অনেক প্রমান রয়েছে।যেমন আউফ ইবনে মালেক (রাঃ)কতৃক বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা জাহেলী যুগে ঝাড় ফুঁ করিতাম। আপনি এব্যাপারে কি বলেন? তিনি বললেন: তোমাদের ‘আর-রুক্‌য়ী’ বা ঝাড় ফুঁক আ্মার নিকট নিয়ে এসো। অতঃপর তা দেখে বললেন: কোন অসুবিধা নেই যতক্ষণ এতে শির্‌কের মিশ্রণ না ঘটে। [মুসলিম:২২০০] তদ্রুপ আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) কতৃক বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন: ( রাসূল সাঃ চোখ লাগা, বিষ লাগা, ঘাঁর জন্যে ঝাঁড় ফুঁক করার অনুমোদন দিয়েছেন)[মুসলিম:২১৯৬]অনুরুপ ভাবে এপ্রসংঙ্গে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ-র হাদীস প্রনিধান যোগ্য।তিনি বলেন:রাসূল (সাঃ) এরশাদ ফরমায়েছেন( তোমাদের মধ্য কেহ তার অপর ভাইকে উপকার করতে সক্ষম হলে যেন তা করে) [মুসলিম:২১৯৯]আয়েশা রাঃ –র হাদীস এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।তিনি বলেন:(আমাদের মধ্যকার কোন রুগি রাসূল (সাঃ)-এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি স্বীয় ডান তার উপর হাত বুলায়ে দিতেন এবং বলিতেন:()

অর্থ,(হে আ্মাদের প্রভূ! মানুষের সব কষ্ট দুর করে দাও।তুমি রোগমুক্তি দাও; তুমিইতো আরগ্যের একমাত্র মালিক।একমাত্র তোমার আরগ্যতায় আমি বিশ্বাস করি।তোমার দেয়া আরগ্যতা কোনো অসুস্থতাকে অতিক্রম যেতে পারেনা) [বুখারি:৫৭৪৩ -মুসলিম:২১৯১]

গ-এ ‘ঝাঁড়-ফুঁক’যায়েজ ও বিশুদ্ধ হওয়ার কতিপয় শর্তঃ অনুসন্ধানে তিনটি শর্ত মোটিমুটি উল্লেখযোগ্য।এগুলি ধারাবাহিক ভাবে নিম্নে আ্লোক পাত করা হলো।

১-আল্লাহ্ ছাড়ায় ঝাঁড়-ফুঁক’ নিজেই উপকার করার ক্ষমতা রাখে বলে বিশ্বাস না কর।আল্লাহ্ ছাড়া উহা নিজেই উপকার স্বাধন করতে পারার বিশ্বাস কেহ রাখলে তা হারাম।বরং উহ শির্কের পর্যায়ে।বরঞ্চ ঝাঁড়-ফুঁক একটি মাধ্যম হিসেবে মনে করবে।ইহা আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে উপকার করে।

২- ‘ঝাঁড়-ফুঁক’শরীয়তের পরিপন্থি জিনিষের সংমিশ্রন নাহতে হবে।যেমন: এমন ‘ঝাঁড়-ফুঁক’যাতে আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যর কাছে দু’আ পাওয়া যায়। অথবা জ্বিনের সাহায্য চাওয়া হয়,ইত্যাদি।এমন আরও অন্যান্য ঝাঁড়-ফুঁক যাতে আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যর নিকট কোন আবেদনের অর্থ রয়েছে।তার সবগুলিই হারাম বরং শির্‌ক।

৩- এবং এতে পঠিত সবকিছুর অর্থই যেন বোধগম্য ও অর্থবহ হয়।ইহা যদি হেঁয়ালি,যাদুমন্ত্র বা তেলেসমতি প্রকৃতির হয় তাহলে যায়েয নেই।

ইমাম মালেক (রঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: ((কোন লোক কি 'ঝাঁড়-ফুক’ করবে অথবা নিজের উপর ইহা করাতে বলবে? তখন তিনি উত্তর দিলেন: এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে তা হতে হবে পবিত্র ও ভাল অর্থবহ কথা দিয়ে))

ঘ- নিষিদ্ধ ‘আর-রুক্‌য়ী’ বা ঝাঁড়-ফুঁক: উপরুল্লেখিত শর্তের যেকোন একটি শর্ত বহিরভূত ‘ঝাড়-ফুঁক’ মাত্রই নিষিদ্ধ বা সম্পূর্ণ হারাম।যেমন, ‘ঝাড়-ফুঁক’ কৃত ব্যক্তি বা ‘ঝাড়-ফুঁক’ কারি মনে করে যে, ইহা নিজেই উপকার করে এবং নিজেই প্রভাব সৃষ্টি করে। অথবা ‘ঝাড়-ফুঁক’-এ পঠিত মন্ত্রে শির্‌কমূলক শব্দ এবং কুফরি ওসিলা, বিদআত প্রকৃতি শব্দ থাকলে তা হারাম। তেলেসমতির মত কোন অস্পষ্টকর ও অর্থহীন কোন শব্দ পাঠ করে ‘ঝাঁড়-ফুঁক’ করা হারাম।

বিষয়: বিবিধ

১৩০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File