ইসলাম একটি অসাম্প্রদায়িক শাসনব্যবস্থার নাম

লিখেছেন লিখেছেন ইকবাল হোসাইন নাবিল ০৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:১৯:৪৬ বিকাল

বিশ্বমানবতার জন্য ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। অনেকেই ইসলামকে শুধুমাত্র একটি ধর্ম হিসেবে দেখে থাকেন। এটা তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ছাড়া কিছুই নয়। ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্মের নাম নয় বরং সর্বকালের সর্বযুগের পরীক্ষিত সফল একটি অসাম্প্রদায়িক শাসনব্যবস্থা।

গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক (আংশিক) ও অর্থনৈতিক বিষয়াবলির সমাধান দিয়ে থাকে। কিন্তু ইসলাম এগুলোতো বটেই তার পাশাপাশি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন, আধ্যাত্নিক জীবন, পারিবারিক জীবনসহ জীবনের সর্বক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ সমাধান প্রদান করেছে। এমনকি একজন ব্যক্তি খাবে কিভাবে, পোশাক পরবে কিভাবে তার সমাধানও ইসলাম দিয়েছে। তবে হ্যাঁ, ইসলামি রাষ্ট্রে অন্য ধর্মাবলম্বী ব্যাক্তি কিভাবে খাবে, কিভাবে পরবে এতে রাষ্ট্র কোনো হস্তক্ষেপ করে না। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী ব্যাক্তি তার স্বীয় ধর্ম পালনে স্বাধীন। ইসলামী রাষ্ট্র অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনাঘর পর্যন্ত পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা করবে- কুরআন ও হাদীসে এমনটিই বলা হয়েছে। শুধু তাই-ই নয় ইসলামী রাষ্ট্রে কাউকে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করতে পারবে না। রাসূল সা. বলেছেন, “তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।” তবে হ্যাঁ কাউকে শান্তিপূর্ণভাবে দাওয়াত দেয়া যেতে পারে; মেনে নেয়া না নেয়া নিতান্তই তার ব্যপার। যেমন আমি আপনাকে আমার লেখাকে সমর্থন করার অনুরোধ করতেই পারি। আপনি আমার কথা রাখবেন কিনা তা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

আজ আমরা অনেক গণতান্ত্রিক ও ধর্মরিপেক্ষ দেশেই দেখি সেখানে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের নির্যাতন করা হয়; এমনকি তাদের ধর্মীয় পোশাক পরিধানেও বাধা প্রদান করা হয় ( যেমন- ফ্রান্স)। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রে কোন একটি ধর্মমতে বিশ্বাসী একজন ব্যক্তিও যদি থাকেন ইসলামি রাষ্ট্র তার নিরাপত্তা প্রদান করবে। একবার কোন একটি বিষয়ে রাসূল সা. এর কাছে একজন মুসলিম ও ইহুদি বিচার নিয়ে আসল। রায় গেল ইহুদির পক্ষে। এ হল ইসলামি রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িকতার সামান্য নমুণা। এরকম ঘটনা আরো অনেক আছে যা ব্লগের ক্ষুদ্র পরিসরে লিখে শেষ করা কঠিন। সুতরাং যতই গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র কিংবা ধর্মনিরপেক্ষতার মধুর বুলি আওড়ানো হোক না কেন এগুলো অসাম্প্রদায়িকতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পুরাতন আর ব্যাকডেটেড যা-ই বলি না কেন, আমরা যে আমেরিকা-রাশিয়ার বোল আওড়াই, আজ তাদের দেশে সেই ব্যাকডেটেড ইসলামের বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ ইসলামের পতাকাতলে আসছে। বিশ্বের সবচেয়ে সাম্প্রদায়িক জাতি ইহুদি-ইসরায়েলি লবিতে চালানো বিশ্ব মিডিয়াগুলো এ তথ্য আমাদের দেয় না। আজ সারা বিশ্বের মানুষ নিজেদের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করে হলেও ইসলামকে বেছে নিচ্ছে তাদের লাইফ-স্টাইল হিসেবে।

এদেশসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনেতিক মুক্তির জন্য ইসলাম-ই একমাত্র পরীক্ষিত শাসন ব্যবস্থা। রাসূল সা. ও সাহাবিদের শাসনামল যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যেখানে রাস্তার একটা কুকুরের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হয়েছে; যেখানে রাতের আঁধারে নারী একাকি পথ চলতে পেরেছে নিশ্চিন্তে। সকল ধর্মের মানুষ পেয়েছে ন্যায়বিচার, পেয়েছে স্বাধীনভাবে স্বীয় ধর্ম পালন ও বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা। বর্তমানে সারা বিশ্বে কোনো পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র নেই। আর তাই আমরা ইসলামী রাষ্ট্রের উদাহরণ টানতে পারি না। উদাহরণ দিতে হলে ফিরে যেতে হয় অনেক পিছনে। সবশেষে আবার এ কথাটিই দাবি করছি- বর্তমান বিশ্বমানবতার মুক্তির জন্য, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলাম-ই উপযুক্ত অসাম্প্রদায়িক শাসনব্যবস্থা।

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১০৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File