><> আর যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের অন্যায়ের কারণে পাকড়াও করতেন তবে ভূ পৃষ্ঠে চলমান কোন কিছুকেই রেহাই দিতেন না৷ ><>
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৬ জুন, ২০১৬, ০৪:২২:২১ রাত
(উর্দুু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
সুরা আন নাহল রুকু;-৮ আয়াত;-৬১- ৬৫
৬১/وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللّهُ النَّاسَ بِظُلْمِهِم مَّا تَرَكَ عَلَيْهَا مِن دَآبَّةٍ وَلَكِن يُؤَخِّرُهُمْ إلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ لاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ
অর্থ;-আর যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের অন্যায়ের কারণে পাকড়াও করতেন তবে ভূ পৃষ্ঠে চলমান কোন কিছুকেই রেহাই দিতেন না৷ কিন্তু এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন৷ অবশেষে যখন তাদের নির্ধারিত সময় এসে যাবে তারা এক মুহূর্ত বিলম্ব কিংবা ত্বরা করতে পারবে না৷
# মানুষ অন্যায় করার সাথে সাথে যদি তাকে শাস্তি দিতেন তবে পৃথিবীতে কোন চলমান মানুষই পাওয়া যেতনা৷ আল্লাহ মানুষকে তার ভুল শোধরাবার জন্য অবকাশ দিয়ে থাকেন এবং তার জন্য প্রত্যেকের একটি নির্ধারিত সময় রয়েছে৷ যখন সেই নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাবে তখন কেউই তা আর বিলম্বিত করতে পারবে না আবার তেমনই কেউ তা ত্বরান্বিতও করতে পারবে না৷
৬২/وَيَجْعَلُونَ لِلّهِ مَا يَكْرَهُونَ وَتَصِفُ أَلْسِنَتُهُمُ الْكَذِبَ أَنَّ لَهُمُ الْحُسْنَى لاَ جَرَمَ أَنَّ لَهُمُ الْنَّارَ وَأَنَّهُم مُّفْرَطُونَ
অর্থ;-যা তারা নিজেদের জন্য অপছন্দ করে তাই তারা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করে৷ এবং তাদের জিহ্বা বর্ণনা করে যে, তাদেরই জন্য রয়েছে কল্যান৷ নিঃসন্দেহে তাদেরই জন্য রয়েছে আগুন এবং তাদেরকেই সর্বাগ্রে নিক্ষেপ করা হবে৷
# নিজেদের জন্য কন্যা সন্তান পছন্দ করতনা, এটিকে বড়ই অপমানের বিষয় মনে করত অথচ তাদের উপাস্য গুলিকে আল্লাহর কন্যা বলেই প্রতিষ্ঠা করেছিল৷ তারা এও বলে বেড়াত যে, যেহেতু আল্লাহ তাদের দুনিয়ায় এত কিছু দিয়েছেন তাই বুঝতে হবে তিনি তাদের পছন্দ করেন বলেই দিয়েছেন, তাই পরকালেও তাদের এমনই সমাদর করবেন, উষ্ত্তম বদলাই দেবেন৷ আল্লাহ বলেন যে, তাদের জন্য রয়েছে আগুন আর সেখানেই তাদের নিক্ষেপ করা হবে৷
৬৩/تَاللّهِ لَقَدْ أَرْسَلْنَا إِلَى أُمَمٍ مِّن قَبْلِكَ فَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَهُوَ وَلِيُّهُمُ الْيَوْمَ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
অর্থ;-আল্লাহর কসম! আমি আপনার পূর্বে বহু জাতীর কাছে রসুল প্রেরণ করেছি, অতঃপর শয়তান তাদেরকে তাদের কর্ম সুশোভিত করে দেখিয়েছে৷ সুতরাং সেইই আজ তাদের অভিভাবক এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি৷
# কোন বিপথগামী জাতীর জন্য প্রথমে নবী পাঠানো হয়৷ যখন নবী তাদের মাঝে অকৃতকার্য হন তখনই আল্লাহ তায়ালা সেই জাতীর জন্য একজন রসুল পাঠান৷ আর এই রসুলই হলেন তাদের জন্য শেষ বা ফাইনাল সতর্ক কারী৷ শয়তানের প্ররোচনায় ও বাহ্যিক চাকচিক্যে মুগ্ধ ঐ জাতী যখন রসুলের শেষ চেষ্টাকেও বিফল করে তখনই আল্লাহর নিয়ম অনুযায়ী ঐ জাতীর অবাধ্যজনের ভাগ্যে ধ্বংসের শাস্তি আপতিত হয়৷
৬৪/وَمَا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ إِلاَّ لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي اخْتَلَفُواْ فِيهِ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
অর্থ;-আমিতো আপনার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি এ উদ্দেশ্যে যে, আপনি সুস্পষ্ট ভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে দেবেন যে বিষয়ে তারা মতভেদ করে এবং মুমিন লোকদের জন্য হেদায়েত ও রহমত স্বরূপ৷
# রসুলের দায়িত্ব আল্লাহর বাণী উম্মতের কাছে পৌঁছে দেওয়া৷ এ পৌঁছানো পিয়নের চিঠি পৌঁছে দেওয়া নয় বরং তা উম্মতের কাছে তার অন্তর্নিহীত গূঢ় তথ্য সবিস্তারে পৌঁছে দেওয়া৷ তাই কোরআন শুধুই পৌঁছে দেওয়া নয় তা উম্মতের বোধগম্য করে দেওয়াও রসুল সঃ এর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে,যাতে মতভেদ কারীদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়৷ ৪৪ নং আয়াতেও এমন কথা বলা হয়েছে৷ আর যারা বিনা মতভেদে তা মেনে নেবে সেই মুমিনদের জন্য এতে রয়েছে হেদায়েত ও রহমত৷ সুরা ইউনুসে কোরআন কে ‘মওয়েজা’ বা রোগ মুক্তির উপাদান বলা হয়েছে৷ আর তাই আজ তাঁর অবর্তমানে আমাদের সহী হাদীশের সাহায্য একান্ত প্রয়োজন৷
৬৫/وَاللّهُ أَنزَلَ مِنَ الْسَّمَاء مَاء فَأَحْيَا بِهِ الأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَسْمَعُونَ
অর্থ;-আর আল্লাহ আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, তার দ্বারা জমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন৷ নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা শ্রবন করে৷
# এ সুরায় বলা হয়েছে, ‘যদি তারা জানত’ ‘যদি তারা চিন্তা করে’ এখানে বলা হল, ‘যারা শ্রবন করে’৷ জানা, বোঝা, চিন্তা করা, দেখা, শোনা প্রভৃতি কর্মগুলি দুভাবে হয়ে থাকে৷ সাধারণ দেখা, শোনা, বোঝা বা চিন্তা করা আর আন্তরিকতার সাথে জানা বোঝা দেখা ও চিন্তা করার মাঝে তফাৎ রয়েছে৷ সাধারণ দেখা, শোনা বোঝা যা পশু পক্ষীরাও দেখে বোঝে শোনে৷ কিন্তু মানুষের মাঝে আল্লাহর রুহ রয়েছে৷ তারও দেখা, শোনা, বোঝা, চিন্তা করার মত ইন্দ্রীয় রয়েছে৷ এখানে তার শোনার কথাই বলা হয়েছে৷ যারা তেমন শোনে বা চিন্তা করে বা দেখে তারাই হয় সফল কাম৷
শুষ্ক জমীন, যেখানে কোন ফসল বা ঝোপঝাড়, গাছ পালা থাকেনা তা মৃতের সমান৷ সেই জমীনে বৃষ্টির পানি পড়ার পর তা লতা গুল্ম ঝোপঝাড় ফসলে সজীব হয়ে ওঠে, যেন তাতে প্রাণের সঞ্চার হয়৷ রূহ ব্যাতিত শরীরও তাই৷ রূহই শরীরকে সচল করে রাখে৷ রূহ শরীর ছেড়ে গেলে মানুষও মৃত হয়৷ কেয়ামতে এই রূহকে পুনরায় সংযোজনকরে মানুষকেও পুনর্জন্ম দেওয়া হবে৷ এ আয়াত সেই ইঙ্গীত বহন করে৷
বিষয়: বিবিধ
১৩৪১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের যেদিন আবার পুনরুথ্থান হবে সেদিন ইসলামের উপর অটল বিশ্বাস অবস্থায় উঠানো হোক এটাই দোয়া ।
জাযাকাল্লাহ খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন