{}{} তাদের পূর্ববর্তীরাও চক্রান্ত করে ছিল, তার পর আল্লাহ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন, ফলে উপর থেকে তাদের মাথায় ইমারতের ছাদ ধ্বসে পড়ল এবং তাদের উপর আজাব এল এমন দিক থেকে তা তারা ধারণাও করেনি৷{}{}
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০২ জুন, ২০১৬, ০৭:৪৯:১৮ সকাল
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
সুরা আন নাহল রুকু;-৪ আয়াত;-২৬-৩৪
২৬/قَدْ مَكَرَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَأَتَى اللّهُ بُنْيَانَهُم مِّنَ الْقَوَاعِدِ فَخَرَّ عَلَيْهِمُ السَّقْفُ مِن فَوْقِهِمْ وَأَتَاهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَشْعُرُونَ
অর্থ;-তাদের পূর্ববর্তীরাও চক্রান্ত করে ছিল, তার পর আল্লাহ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন, ফলে উপর থেকে তাদের মাথায় ইমারতের ছাদ ধ্বসে পড়ল এবং তাদের উপর আজাব এল এমন দিক থেকে তা তারা ধারণাও করেনি৷
# পূর্ববর্তী বলতে যে সমস্ত কওমের ধ্বংসের কথা আমরা আগে পড়ে এসেছি; মূলতঃ ঐ সব কওমের কথাই বার বার বলা হয়েছে৷ মনে রাখা দরকার যে আরবরা যাদের ধ্বংসাবশেষ তাদের বানিজ্য পথের পাশে দেখতো বা যাদের সন্মন্ধে তারা কিছু কিছু অবগত ছিল কোরআনে শুধু তাদের কথাই বলা হয়েছে৷
২৭/
ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُخْزِيهِمْ وَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَآئِيَ الَّذِينَ كُنتُمْ تُشَاقُّونَ فِيهِمْ قَالَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْعِلْمَ إِنَّ الْخِزْيَ الْيَوْمَ وَالْسُّوءَ عَلَى الْكَافِرِينَ
অর্থ;-তারপর কেয়ামতের দিন তিনি তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন আর বলবেন; কোথায় আমার সেসব শরিকরা যাদের ব্যাপারে তোমরা হঠকারিতা করতে! যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছিল তারা বলবে; নিশ্চয় আজকের দিনে লাঞ্ছনা ও দূর্গতি কাফেরদের জন্য৷
# এই সমস্ত জ্ঞানী ব্যক্তি তারাই যাদের কথা ২৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে৷ সাধারণের মুখপাত্র হয়ে এরাই রসুল সঃ এর মজমায় উপস্থিত হত৷ সাধারণ মানুষ তাদের কাছে ঐ দিন কোরআনের কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে, তাচ্ছিল্য ভাবে জওয়াব দিয়ে তাদের নিরুৎসাহিত করত ও বিপথে নিতে সাহায্য করত৷
আর যারা আল্লাহর সাথে অন্যকে শরিক করত, অনেক ক্ষেত্র ঐ শরিকদের পক্ষ হয়ে অন্যের সাথে বিতর্কও করত৷ এরাও এক প্রকার জ্ঞানী৷ এরাই কেয়ামতের দিন পরাজয় স্বীকার করে লাঞ্ছনা আর দূর্গতির হকদার বলে মেনে নেবে৷
২৮/الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلائِكَةُ ظَالِمِي أَنفُسِهِمْ فَأَلْقَوُاْ السَّلَمَ مَا كُنَّا نَعْمَلُ مِن سُوءٍ بَلَى إِنَّ اللّهَ عَلِيمٌ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ;-ফেরেশ্তারা তাদের জান এমন অবস্থায় কবজ করবে যে তারা নিজেদের উপর জুলুম করছে৷ তখন তারা আনুগত্য প্রকাশ করে বলবে; আমরা তো কোন মন্দ কাজ করতাম না৷ বটে, নিশ্চয় আল্লাহ সবিশেষ অবগত আছেন যা তোমরা করতে৷
# দূর্বৃত্তরা অন্যায়ে লিপ্ত অবস্থায়ও যদি ফেরেশ্তা তাদের জানন কবজ করতে আসে তখন তারা আত্ম সমর্পণ করে বলবে, ‘আমরা তো কোন অন্যায় কাজ করছি না৷ তখন ফেরেশ্তা তাদের বলবে, তোমরা কি করতে তার সব খবর আল্লাহর কাছে আছে৷ তিনি সবই জানেন৷
২৯/فَادْخُلُواْ أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا فَلَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ
অর্থ;-সুতরাং জাহান্নামের দরজাদিয়ে প্রবেশ কর, এতেই অনন্তকাল বাস কর৷ আর অহংকারীদের বাসস্থল কতই নিকৃষ্ট৷
৩০/وَقِيلَ لِلَّذِينَ اتَّقَوْاْ مَاذَا أَنزَلَ رَبُّكُمْ قَالُواْ خَيْرًا لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ وَلَدَارُ الآخِرَةِ خَيْرٌ وَلَنِعْمَ دَارُ الْمُتَّقِينَ
অর্থ;-আর পরহেজগাররদেরকে যখন বলা হবে, তোমাদের পালনকর্তা কি নাজিল করেছেন? তারা বলবে; মহা কল্যান৷ যারা এ জগতে সৎ কাজ করে তাদের জন্য কল্যান রয়েছে এবং পরকালের গৃহ আরও উত্তম, পরহেজগারদের গৃহ কি চমৎকার!
# মুশরিক, নাস্তিক, দাম্ভিকদের যখন কোরআন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তারা তাচ্ছিল্য করে মনগড়া উত্তর দিয়েছিল৷ তাদের পরিনতি ও পরবর্তী আবাসের কথা আগের আয়াতে বলা হয়েছে৷ এ আয়াতে একই প্রশ্ন তাকওয়াবান দের করায় তাদের জওয়াব ও পরিণতি ও পরবর্তী আবাসের কথা বলা হল৷ ঠিক যেমন একই ফুল হতে ভ্রমরের বিষ আর মৌমাছির মধু আহরণ৷
৩১/جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَآؤُونَ كَذَلِكَ يَجْزِي اللّهُ الْمُتَّقِينَ
অর্থ;-সর্বদা বসবাসের উদ্যান, তারা যাতে প্রবেশ করবে৷ এর পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়, তাদের জন্য তাতে তাই রয়েছে যা তারা চায়৷ আল্লাহ পরহেজগারদের এমনই ভাবে প্রতিদান দেবেন৷
৩২/الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلآئِكَةُ طَيِّبِينَ يَقُولُونَ سَلامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُواْ الْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ;-ফেরেশ্তারা যাদের জান কবজ করে তাদের পবিত্র থাকা অবস্থায় ফেরেশ্তারা বলবে; তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক! তোমরা যা করতে তার প্রতিদান, জান্নাতে প্রবেশ কর৷
৩৩/هَلْ يَنظُرُونَ إِلاَّ أَن تَأْتِيَهُمُ الْمَلائِكَةُ أَوْ يَأْتِيَ أَمْرُ رَبِّكَ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَمَا ظَلَمَهُمُ اللّهُ وَلـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
অর্থ;-তারাকি শুধু অপেক্ষা করছে যে, তাদের কাছে ফেরেশ্তারা আসবে কিংবা আপনার রবের নির্দেশ পৌঁছবে? তাদের পূর্ববর্তীরা এমনই করেছিল৷ আল্লাহ তাদের প্রতি অবিচার করেন নি৷ কিন্তু তারা স্বয়ং নিজেদের প্রতি জুলুম করে ছিল৷
# ধ্বংস প্রাপ্ত জাতী সমুহের উপমা দিয়ে এখানে মুশরিকদের সাবধান করা হয়েছে৷ তারাও আল্লাহর সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় কাল ক্ষেপন করেই ধ্বংস হয়েছিল৷
৩৪/فَأَصَابَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا عَمِلُواْ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِؤُونَ
অর্থ;-সুতরাং তাদের মন্দ কাজের শাস্তি তাদের মাথার উপর আপতিত হয়েছে এবং তারা যে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তাই উল্টে তাদের উপর পড়েছে৷
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৩ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার এ মূল্যবান লিখনীটি কঠিন মানুষদের দিল নরম করার সহায়ক হোক এই প্রত্যাশা।
সেইসাথে আপনার এই কষ্টকর মেহনতকে আল্লাহ্ পাক কবুল করুণ এই দোয়া ও কামনা।
যথার্থ বলেছেন!
একদল মানুষ যেমন কুরআনকে নিজের আখেরাতের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করতে জীবনবাজি রাখছে, ঠিক তেমনি আরেকদল কুরআনের বিরোধিতা করাকেই দুনিয়ার জীবনের সাফল্য মনে করছে- যার দ্বারা আখেরাতের বরবাদী নিশ্চিত করছে!
জাযাকাল্লাহ
আল্লাহ যেন এমন আচরনই করেন ,আমার সাথে ও পরিবারের সাথে !!!
এটা ছিলো আছে থাকবে, সত্যের দাওয়াত যতদিন থাকবে বিরোধীতাও থাকবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন