<><> আল্লাহ জানেন যা তোমরা গোপন কর আর যা তোমরা প্রকাশ কর৷<><>
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ১৩ মে, ২০১৬, ০৬:৫৪:৪৪ সকাল
(উর্দু বয়নুল কোরআনের সরল বাংলা অনুবাদ)
সুরা আন নাহল রুকু;-২ আয়াত;-১০-২১
১০/هُوَ الَّذِي أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء لَّكُم مِّنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ
অর্থ;-তিনি সেই সত্তা যিনি আসমান থেকে পানি বর্ষন করেন; তোমাদের জন্য রয়েছে তাতে পানীয় এবং সে পানি থেকেই উদ্ভিদ উৎপন্ন হয় যাতে তোমরা পশু চারণ কর৷
১১/يُنبِتُ لَكُم بِهِ الزَّرْعَ وَالزَّيْتُونَ وَالنَّخِيلَ وَالأَعْنَابَ وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
অর্থ;-তা দিয়ে তিনি তোমাদের জন্য ফষল উৎপন্ন করেন, জলপাই, খেজুর, আঙ্গুর ও সর্ব প্রকার ফল৷ নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন রয়েছে৷
# সুষ্ঠ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ সৃষ্টি ও তার উপকারিতার পিছনে স্রষ্টার অবস্থানের কথা অবশ্যই চিন্তা করে৷ এরাই প্রকৃত চিন্তাশীল৷
১২/وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالْنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالْنُّجُومُ مُسَخَّرَاتٌ بِأَمْرِهِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
অর্থ;-তিনি তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি, দিন, সূর্য ও চন্দ্রকে৷ তারকা সমুহ তারই হুকুমে নিয়োজিত রয়েছে৷ নিশ্চয়ই এতে জ্ঞানবানদের জন্য নিদর্শন রয়েছে৷
১৩/وَمَا ذَرَأَ لَكُمْ فِي الأَرْضِ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ
অর্থ;-তোমাদের জন্য পৃথিবীতে যে সব রং বেরং এর বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলোতে নিদর্শন রয়েছে (উপদেশ গ্রহন কারীদের জন্য)যারা চিন্তা ভাবনা করে তাদের জন্য৷
# তিনটি আয়াতে তিনটি ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যারা প্রকৃত চিন্তাশীল, জ্ঞানবান আর কিছু দেখে কিছু শিখতে চায় বা উপদেশ গ্রহন করতে চায়, প্রকৃতীর মধ্যেই তাদের জন্য উপাদান রয়েছে৷ ওলী আউলিয়া নবী রসুল ছাড়াও তারা আল্লাহর অস্তিত্ব অনুধাবন করতে পারে৷
১৪/وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُواْ مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُواْ مِنْهُ حِلْيَةً تَلْبَسُونَهَا وَتَرَى الْفُلْكَ مَوَاخِرَ فِيهِ وَلِتَبْتَغُواْ مِن فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অর্থ;-তিনিই সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তাথেকে তোমরা তাজা গোশ্ত খেতে পার এবং যা থেকে পরিধেয় অলংকার আহোরণ করতে পার৷ তুমি তাতে জলযান সমুহকে পানি চিরে চলতে দেখবে যাতে তোমরা তার কৃপা অন্বেষন কর এবং তার অনুগ্রহ স্বীকার কর৷
# চাঁদ সূর্য, রাত দিনের পরিক্রমা, নক্ষত্র, সাগর সহ সমস্ত প্রকৃতীর মাঝেই রয়েছে আল্লাহর কৃপা, তার অনুগ্রহ৷ আর সমস্তকেই আল্লাহ মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন৷ সামুদ্রীক মাছ যা আজ পৃথিবীময় উপাদেয় খাদ্য বলে বিবেচিত৷ সাগরের বুক চিরে জাহাজ চলে যা মানুষেরই কল্যানার্থে৷ এছাড়া মহা মূলবান পাথর যা অলংকার হিসেবে ব্যবহার হয় তাও সাগরের তল হতেই সংগ্রহ করা হয়৷
১৫/وَأَلْقَى فِي الأَرْضِ رَوَاسِيَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَأَنْهَارًا وَسُبُلاً لَّعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
অর্থ;-তিনি পৃথিবীর উপর পাহাড় স্থাপন করেছেন যাতে তোমাদের নিয়ে ঝুঁকে না পড়ে৷ নদ নদী ও পথমালা সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা গন্তব্যে পৌঁছতে পার৷
# আদি কালে নদী পথেই যাতায়াত বেশী হত আর পায়ে চলা রাস্তা গুলোও নদীর পাড় দিয়েই চলত৷ মানুষের বসবাসও ছিল নদীর কাছাকাছি৷ তাই নদীর সাথেই পথের কথা বলা হয়েছে৷
১৬/وَعَلامَاتٍ وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُونَ
অর্থ;-তিনি পথ নির্দেশক বহু চিহ্ন সৃষ্টি করেছেন, আর নক্ষত্রের সাহয্যেও তারা পথের সন্ধান পায়৷
# সীমাহীন সমুদ্র বা দিগন্ত বিস্তৃত মরুভূমী পাড়ি দিতে মানুষ নক্ষত্রের দ্বারায়ই গতিপথ চিনতো৷ আজও তা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি৷ এমনকি দিগদর্শন যন্ত্রের মাছেও রয়েছে প্রকৃতীর অবদান৷
১৭/أَفَمَن يَخْلُقُ كَمَن لاَّ يَخْلُقُ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
অর্থ;-যিনি সৃষ্টি করেন তিনিকি তার সমতুল্য যে সৃষ্টি করেনা! তোমরাকি চিন্তা করোনা?
১৮/وَإِن تَعُدُّواْ نِعْمَةَ اللّهِ لاَ تُحْصُوهَا إِنَّ اللّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থ;-যদি আল্লাহর নেয়ামত গননা কর শেষ করতে পারবেনা৷ নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু৷
১৯/وَاللّهُ يَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ
অর্থ;-আল্লাহ জানেন যা তোমরা গোপন কর আর যা তোমরা প্রকাশ কর৷
২০/وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ لاَ يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ
অর্থ;-আর যারা আল্লাহকে ছেড়ে অন্যকে ডাকে ওরাতো কোন বস্তুই সৃষ্টি করেনা বরং ওরা নিজেরাই সৃষ্ট৷
# ফেরেশ্তা, জ্বীন, ইনসান, ওলী আউলীয়া সহ যাবতীয়ই সৃষ্ট আর একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টি কর্তা৷
২১/أَمْواتٌ غَيْرُ أَحْيَاء وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ
অর্থ;-তারা মৃত প্রাণহীন এবং কবে পুনরুত্থিত হবে জানেনা৷
# ওলী আউলীয়া বা পীর যাদের শরিক করা হত মৃত্যুর পর তারা নিজেরাই জানেন না কবে তাদের আবার ওঠানো হবে৷ আর মাটি ও পাথরের দেবতাদের প্রানই নেই৷ তারাতো কিছুই জানেনা, বোঝেনা, শোনেনা৷ কেয়ামত কবে হবে তা এক মাত্র আল্লাহই জানেন৷
বিষয়: বিবিধ
১৩০০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন