&&& -এ কারণে যে আল্লাহ প্রত্যেক কে তার কর্মফল দেবেন৷ নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় দ্রুত হিসাব গ্রহন কারী৷&&&
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২২ মার্চ, ২০১৬, ০৮:৩৬:২৭ রাত
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
সুরা ইব্রাহীম রুকু;-৭ আয়াত;-৪২-৫২
৪২/
وَلاَ تَحْسَبَنَّ اللّهَ غَافِلاً عَمَّا يَعْمَلُ الظَّالِمُونَ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ الأَبْصَارُ
অর্থ;-আর তুমি কখনও মনে করনা যে, জালেমরা যা করে সে সন্মন্ধে আল্লাহ বে-খবর৷ তবে তিনি তাদেরকে অবকাশ দেন সে দিন পর্যন্ত যে দিন চক্ষু সমুহ বিষ্ফোরিত হবে৷
# অবিশ্বাস্য ভয়ঙ্কর কিছু দেখলেই মানুষের চোখ ঠেলে বাইরে বার হতে চায়৷ জালেমরা যখন তাদের অবিশ্বাসের বস্তু সেই ভয়ঙ্কর আজাব প্রত্যক্ষ করবে তখন তাদের চোখ তেমনই হবে৷ কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক৷ সবার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট মেয়াদ৷ মহান আল্লাহ সবই প্রত্যক্ষ করেন৷ মেয়দ শেষে কর্মফলের বদলা প্রত্যক্ষ করতেই হবে৷
৪৩/مُهْطِعِينَ مُقْنِعِي رُءُوسِهِمْ لاَ يَرْتَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْفُهُمْ وَأَفْئِدَتُهُمْ هَوَاء
অর্থ;-ভীত-বিহ্বল চিত্তে মস্তক উর্দ্ধমূখী করে তারা দৌড়তে থাকবে, নিজেদের দিকে তাদের দৃষ্টি ফিরে আসবে না এবং তাদের অন্তর হবে শূন্য৷
# আজাব প্রত্যক্ষ করে অপরাধী মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দিগ্বীদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আকাশের দিকে চোখ রেখে দৌড়তে থাকবে৷ কিন্তু তারা রেহাই পাবেনা৷
৪৪/وَأَنذِرِ النَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ الْعَذَابُ فَيَقُولُ الَّذِينَ ظَلَمُواْ رَبَّنَا أَخِّرْنَا إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ الرُّسُلَ أَوَلَمْ تَكُونُواْ أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ
অর্থ;-আর আপনি মানুষকে ঐ দিনের ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন আজাব আসবে৷ তখন জালেমরা বলবে; হে আমাদের রব, আমাদেরকে সামান্য মেয়দ পর্যন্ত সময় দিন, যাতে আমরা আপনার আহবানে সাড়াদিতে পারি এবং রসুলদের অনুসরণ করতে পারি৷ তোমরা কি পূর্বে কসম করে বলতে না যে, তোমাদেরকে কোথাও যেতে হবে না!
# ঔদ্ধত্ব ও অহংকারীরা সব রসুলের জামানায় একই আচরণ করে ছিল৷ সব অবাধ্য কওমই প্রায় একই ভাবে নিজ নিজ রসুলদের বাণীকে ভূয়া প্রতিপন্ন করত৷ কেয়ামতকে উপহাস করত৷ এরাই যখন আজাব প্রত্যক্ষ করবে তখন আল্লাহর কাছে সামান্য দিনের জন্য রেহাই চাইবে যাতে তারা আল্লাহকে মান্য করবে আর নিজ নিজ রসুলে অনুগত হয়ে যাবার বাসনা জানাবে৷ কিন্তু “অল্লাহু লা ইয়ুআখ্খেরুল আজালো”- আল্লাহর কসম তাদের মেয়াদ বাড়ানো হবে না৷
৪৫/وَسَكَنتُمْ فِي مَسَـاكِنِ الَّذِينَ ظَلَمُواْ أَنفُسَهُمْ وَتَبَيَّنَ لَكُمْ كَيْفَ فَعَلْنَا بِهِمْ وَضَرَبْنَا لَكُمُ الأَمْثَالَ
অর্থ;-অথচ তোমরা তাদের বাসভূমীতেই বাস করতে, যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছিল এবং তোমাদের জানানো হয়েছে আমি তাদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করে ছিলাম৷ এবং আমি তোমাদের কাছে সে সব দৃষ্টান্তই বর্ণনা করেছি৷
# পয়গম্বর দেরকে অমান্যকারী অবাধ্য পথভ্রষ্ট কওম, যাদের কর্মফল তাদের বিভিন্ন ভাবে ধ্বংসের মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছিল যা পবিত্র কোরআনের মাধ্যমেই তার বিস্তারিত বিবরণ মুশরিক কোরইশদের জানানো হয়েছে৷ এর পরও যারা অবাধ্য থেকেই যাবে তাদের পরিনতিও ওদের মত হবে৷
৪৬/وَقَدْ مَكَرُواْ مَكْرَهُمْ وَعِندَ اللّهِ مَكْرُهُمْ وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
অর্থ;-তারা ভীষন চক্রান্ত করেছিল৷ তাদের চক্রান্ত আল্লাহর নিকটই ছিল৷ আর যদিও তা পাহাড় টলিয়ে দেবার মতও হত৷
# মানুষের চক্রান্ত যত বড়ই হোক তাতে আল্লাহর কিছুই এসে যায়না৷ তিনিই শ্রেষ্ঠ চক্রান্তকারী৷ তার কাছে সকলকেই পরাজিত হতেই হবে৷ জাগতীক মোহে মানুষ নিজেদের বিরাট কিছু ভেবে ফেলে৷
৪৭/فَلاَ تَحْسَبَنَّ اللّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِ رُسُلَهُ إِنَّ اللّهَ عَزِيزٌ ذُو انْتِقَامٍ
অর্থ;-সুতরাং তুমি কখনই আল্লাহকে স্বীয় রসুলগনের সাথে কৃত ওয়াদাভঙ্গকারী মনে কোর না৷ নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহনকারী৷
# “কাতাবাল্লাহু লা উগ্ লেবান্না আনা ও রুসুলি” এটাই আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা৷ তিনি আর তার রসুল গন অবশ্যই বিজয়ী হবেন৷ আর এজন্যই বান্দার সকল চক্রান্ত নস্যাত হয়ে থাকে৷ কোন রসুলই কোনদিন নিহত হন নি৷ আর তিনি প্রতিশোধ নিয়েই থাকেন৷
৪৮/يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ وَبَرَزُواْ للّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ
অর্থ;-যেদিন এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে পরিবর্তীত করা হবে আর আসমানন সমূহকেও৷ আর এক পরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে সকলে উপস্থিত হবে৷৷
# এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে বদলে দেওয়া হবে৷ আসমানকেও বদলে দেওয়া হবে৷ বলা হয়েছে, “জুমেয়াস সামশু অয়াল ক্বামারু”, সূর্যও চন্দ্রকে একত্র করা হবে৷ অর্থাৎ সংঘর্ষ হবে৷ জাগতীক সিষ্টেমের পরিবর্তন করে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে বদলে দেওয়া হবে৷ সঙ্কুচিত করে হয়ত এর অভ্যন্তরস্থিত লাভাদিয়েই জাহান্নামের সৃষ্টি হতে পারে৷ এটি অনুমান মাত্র৷ আল্লাহই ভাল জানেন৷ এবং পরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে সকলে উপস্থিত হবে৷ বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ এবং ফেরেশ্তারা স্তরে স্তরে নেমে আসবেন৷’
৪৯/وَتَرَى الْمُجْرِمِينَ يَوْمَئِذٍ مُّقَرَّنِينَ فِي الأَصْفَادِ
অর্থ;-সেদিন তুমি অপরাধীদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ দেখবে৷
৫০/سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٍ وَتَغْشَى وُجُوهَهُمْ النَّارُ
অর্থ;-তাদের জামা হবে আল কাতরার আর তাদের মুখ মণ্ডলকে আগুন আচ্ছাদিত করে ফেলবে৷
৫১/لِيَجْزِي اللّهُ كُلَّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ إِنَّ اللّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
অর্থ;-এ কারণে যে আল্লাহ প্রত্যেক কে তার কর্মফল দেবেন৷ নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় দ্রুত হিসাব গ্রহন কারী৷
# অপরাধীদের পোষাক হবে আলকাতরার মত কালো৷ তারা শিকলে বাঁধা অবস্থায় থাকবে৷ তাদের মুখ আগুনে ঝলসে যাবে৷ বিচারে তাদের এমন কিছুই পাওনা হবে আর এ বিচার পর্ব অতি সংক্ষেপেই শেষ হবে৷
৫২/هَـذَا بَلاَغٌ لِّلنَّاسِ وَلِيُنذَرُواْ بِهِ وَلِيَعْلَمُواْ أَنَّمَا هُوَ إِلَـهٌ وَاحِدٌ وَلِيَذَّكَّرَ أُوْلُواْ الأَلْبَابِ
অর্থ;-এ পয়গাম (কোরআন) মানুষের জন্য যাতে এর মাধ্যমে সতর্ক করা হয় যেন তারা জানতে পারে তিনিই একমাত্র মাবুদ৷ আর যেন জ্ঞানবান লোকেরা উপদেশ গ্রহন করে৷
# পবিত্র কোরআন মানুষের হেদায়েতের জন্য৷ এ কোরআনের মাধ্যমেই মানুষকে ভয়াবহ পরিনতি থেকে সতর্ক করা আর নেক আমলকারীদের সুসংবাদ দেওয়ার জন্যই আল্লাহ ওহী রূপে এ কোরআন রসুল সঃ উপর নাজিল করেছেন৷ সুরা ‘আনআম’এর ১৯ আয়াতে বলা হয়েছে; ‘এ কোরআন আমার প্রতি অবতীর্ন করা হয়েছে যাতে এর দ্বারা আমি তোমাদের ভীতি প্রদর্শণ করি আর যার কাছে পৌঁছে সেও৷’ রসুল সঃ এর কাজ মানুষকে কোআনের বাণীর মাধ্যমে সতর্ক করা ও ভীতি প্রদর্শণ করা আর এ কাজ তিনিও করবেন যার কাছে এ কোরআনের বানী পৌঁছে যাবে৷ এ আয়াতেই উম্মতে মোহাম্মদীর উপর রসুলের দায়িত্ব বর্তে গেল৷
সুরা ইব্রাহীম এখানেই শেষ হল৷
বিষয়: বিবিধ
১১২৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সন্মন্ধে-সম্বন্ধে
সমুহ-সমূহ
শূন্য-শূণ্য
পরিনতি-পরিণতি
ভীষন-ভীষণ
অবতীর্ন-অবতীর্ণ
প্রদর্শণ-প্রদর্শন
এতো এতো সতর্কবাণী শুনি, তবুও কেন সতর্ক হইনা। এই করেই যখন মারা যাবো, তখন অবস্থা কি হবে!
জাযাকাল্লাহু খাইর
যারাই একবার অথবা একাধিকবার বানান ভুল নিয়ে বিরম্ভনায় পড়েছে, তারা খুব করে জেনেছে, বানান ঠিক রাখা কতটা জরুরী।
অন্যের ভুল ধরতে গেলে নিজেরও অনেক শেখা হয়।
চোর হলেও আদ্দব পনিটা!
আল্লাহ আমাদের নিকট থেকে সহজ হিসাব গ্রহণ করুন এই দোআ।
শুকরিয়া।
হে আল্লাহ সেই কঠিন দিনে আমাদের হিসাব সহজ করে নিও । ও তোমার রহমত প্রাপ্তদের কাতারে আমাদেরকেও রাখিও । আমীন ।
জাজাকাল্লাহ খায়ের চাচাজান।
জাযাকাল্লাহ
আল্লাহ আপনার জ্ঞানের বিস্তৃতি আরো প্রসার করুক
গাজী সালাহউদ্দিন ভাই যেই কাজটা করেছে সেটা ভাল
আমার বানান অনেক ভুল হয় কিন্তু লিখতে পারি
মন্তব্য করতে লগইন করুন