@@ ]অর্থ;-আর যখন তোমার রব ঘোষণা করলেন যে, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর তবে আমি অবশ্যই আরও দেব৷ আর যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে আমার শাস্তি হবে কঠোর৷@@
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০১ মার্চ, ২০১৬, ০২:০৬:৪১ রাত
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারা বাহিক বাংলা অনুবাদ)
সুরা ইব্রাহীম রুকু;-২ আয়াত;-৭-১২
৭/وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
অর্থ;-আর যখন তোমার রব ঘোষণা করলেন যে, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর তবে আমি অবশ্যই আরও দেব৷ আর যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে আমার শাস্তি হবে কঠোর৷
# আল্লাহ তায়ালা কখনও তার ওয়াদা খেলাপ করেন না৷ আজ দুনিয়ার মুসলীম অকৃতজ্ঞ নয় বরং কৃতঘ্ন হয়ে গেছে৷ আর যার কারণে সারা দুনিয়ার মুসলীম কঠোর শাস্তি ভোগ করে চলেছে৷
৮/وَقَالَ مُوسَى إِن تَكْفُرُواْ أَنتُمْ وَمَن فِي الأَرْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ اللّهَ لَغَنِيٌّ حَمِيدٌ
অর্থ;-আর মুসা বললেন; যদি তোমরা এবং দুনিয়ার সকল লোক কুফরী কর তবুও আল্লাহ অবশ্যই অমুখাপেক্ষী ও যাবতীয় গুনের আধার৷
# সারা দুনিয়ার কেউই যদি আল্লাহর উপর ইমান না আনে বা কৃতজ্ঞ না হয়, তাতে আল্লাহর কিছুই এসে যায়না, তিনি কারও পরওয়া করেন না, তিনি অসীম, স্বয়ং সম্পূর্ণ সকল গুনের অধিকারী৷
৯/أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَأُ الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَالَّذِينَ مِن بَعْدِهِمْ لاَ يَعْلَمُهُمْ إِلاَّ اللّهُ جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَرَدُّواْ أَيْدِيَهُمْ فِي أَفْوَاهِهِمْ وَقَالُواْ إِنَّا كَفَرْنَا بِمَا أُرْسِلْتُم بِهِ وَإِنَّا لَفِي شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَنَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ
অর্থ;-তোমাদের কাছে কি পূর্ববর্তী কওম, নূহ, আদ ও সামুদ এবং তাদের পূর্ববর্তীদের খবর পৌঁছেনি? তাদের বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা৷ তাদের কাছে তাদের পয়গম্বরগন প্রমানাদী নিয়ে আগমন করেন৷ অতঃপর তারা নিজেদের হাত নিজেদের মুখে রেখে দিয়েছে এবং বলেছে, ‘যা কিছু সহ তোমাদের প্রেরণ করা হয়েছে, আমরা তা মানিনা এবং যে পথের দিকে তোমরা আমাদেরকে আহবান কর তাতে আমরা অবশ্যই ঘোরতর সন্দেহ পোষণ করি ও উৎকণ্ঠায় আছি৷
# প্রত্যেক কওমে প্রেরীত রসুল প্রায় একই কথা বলেছেন৷ ভয়াবহ পরিনতির বিপথ হতে সতর্ক করে সু পথের সু সংবাদ দিয়ে সেখানে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাই সকল পয়গম্বর করেছেন৷ আর সব কওমের অধিকাংশ লোকেরাই প্রায় একই কথা বলে সেই রসুলদিগকে অস্বীকার করেছে ও অত্যাচার করেছে৷ অনেকে তাদের নবুয়তের প্রকাশ্য প্রমানের দাবীও করেছে৷ অনেকে রসুল কে আল্লাহ প্রমান স্বরূপ বিভিন্ন কেরামতিও দিয়েছেন৷ তার পরও তাদের সন্দেহ দূর হয়নি৷
১০/قَالَتْ رُسُلُهُمْ أَفِي اللّهِ شَكٌّ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ يَدْعُوكُمْ لِيَغْفِرَ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرَكُمْ إِلَى أَجَلٍ مُّسَـمًّى قَالُواْ إِنْ أَنتُمْ إِلاَّ بَشَرٌ مِّثْلُنَا تُرِيدُونَ أَن تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ آبَآؤُنَا فَأْتُونَا بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
অর্থ;-তাদের রসুলগন বলেছিলেন; আল্লাহ সম্পর্কে কি কোন সন্দেহ আছে, যিনি আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তা? তিনি তোমাদেরকে ডাকছেন, যাতে তোমাদের কিছু গোনাহ মাফ করে দেন৷ এবং নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তোমাদের সময় দেন৷ তারা বলল; তোরা তো আমাদের মতই মানুষ! তোমরা আমাদেরকে ঐ উপাস্য থেকে বিরত রাখতে চাও! যার উপাসনা আমাদের পিতৃপুরুষগন করত! অতএব তোমরা কোন সুষ্পষ্ট প্রমান আনয়ন কর৷
# যেহেতু আল্লাহ কওমের মধ্যহতেই রসুল মনোনিত করেছেন তাই তিনি সাধারণের মতই মানুষ হবেন৷ এখানেও কাফেরদের আপত্তি৷ আর প্রমানতো অনেকেই দেখিয়েছেন, তখন তাদেরকে যাদুকরের অপবাদ দেওয়া হয়েছে৷
এ আয়াতটিও যেন একটি ‘সার্চিং কোশ্চেন’ সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহকে মানার মধ্যে তাদের সন্দেহ ছিলনা, তাই সে প্রশ্ন দিয়েই তাদের সজাগ করা হয়েছে৷ তাদের পিতৃপুরুষদের উপাস্য হতে তাদের সরিয়ে আনাতেই তাদের আপত্তি৷ যুগ যুগের বিশ্বাস ত্যাগ করা সহজও নয়৷ এমন কি আজও যারা পীর, মাজার দরগায় আসক্ত তারাও তা ছেড়ে বেরুতে নারাজ, সেটা বাপ দাদার আমল থেকে চলে আসছে এই অজুহাতে৷
১১/قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلاَّ بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَـكِنَّ اللّهَ يَمُنُّ عَلَى مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَمَا كَانَ لَنَا أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَانٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ وَعلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
অর্থ;-তাদের রসুলগন তাদের বললেন; প্রকৃতপক্ষে আমরাও তোমাদের মত মানুষ৷ কিন্তু আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্য হতে যার প্রতি ইচ্ছা অনগ্রহ করে থাকেন৷ আর আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া তোমাদেরকে কোন মোজেজা দেখানো আমাদের কাজ নয়৷ আর মুমিনের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা।
# সাধারণের মধ্যহতেই পূণ্যাত্মা ও আল্লাহতে নিবেদিত প্রান, এমন মানুষকেই আল্লাহ অনুগ্রহ করে নবী রসুল বানান ও তার দ্বারা ঐ কওমকে সুথে আনার ব্যবস্থা করেন৷ অনেক রসুল কে অনেক অলৌকীক ক্ষমতা দিয়েছেন আর তাঁরা তা আল্লাহর ইচ্ছা বলেই প্রয়োগ করেছেন৷ এটি যেমন কোন রসুলের নিজস্ব ইখ্তিয়ারে নেই তেমনই মোজেজার কার্যকারিত ঐ রসুলের সাথেই জড়িত৷ মুসা আঃ এর লাঠি তাঁর ইন্তেকালের পর আর সাপ হয়নি৷
১২/وَمَا لَنَا أَلاَّ نَتَوَكَّلَ عَلَى اللّهِ وَقَدْ هَدَانَا سُبُلَنَا وَلَنَصْبِرَنَّ عَلَى مَا آذَيْتُمُونَا وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُتَوَكِّلُونَ
অর্থ;-আমাদের আল্লাহর উপর ভরসা না করার কি কারণ থাকতে পারে, অথচ তিনি আমাদেরকে আমাদের পথ বলে দিয়েছেন৷ তোমরা আমাদেরকে যে কষ্ট দিতেছ, আমরা তা ধৈর্যের সাথে অবশ্যই তা সহ্য করব৷ যারা ভরসা করতে চায় তারা যেন আল্লাহর উপরই ভরসা করে৷
# সব পয়গম্বরই নিজ কওমের কাছে নিগৃহীত, লাঞ্ছিত, অত্যাচারিত হয়েছেন৷ তাঁরা তা নিরবে সহ্য করেছেন৷ আমরা জানি রসুল সঃ এর উপর কোরাইশরা যে অত্যাচার করেছে৷ শুধু তাই নয় তাঁর সাহাবীরাও বাদ যাননি৷ তাদের প্রতিবাদ করার অধিকার টুকুও আল্লাহ রহীত করে ছিলেন৷ তাঁরা একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করে নীরবে সব সহ্য করেছেন৷
বিষয়: বিবিধ
১১৯৫ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং কৃতজ্ঞ বান্দা-বান্দীদের কাতারে থাকতে পারি এই দোআ ই কাম্য প্রভুর নিকট।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
হওয়ার চেষ্টা করতে আমাদের ক্ষতি কি? বলে সম্ভব না! হারার আগেই হেরে যাওয়া. আম্রা যতই কোরআন হাদীস পড়ব ততই বুঝতে পারব ইসলামের পথ কখনই মসৃণ ছিলো না।
শেখ সাহেব আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
জাজাকাল্লাহ খায়ের চাচাজান ।
যারা দ্বীনের দাওয়াতের সঙ্গে জড়িত একমাত্র তারাই এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন।
জাযাকাল্লাহ খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন