{} আর যারা কুফরী করেছে তাদের কৃতকর্মের কারণে সব সময় আঘাত পেতে থাকবে অথবা তাদের নিকটবর্তী স্থানে আঘাত নেমে আসবে, যে পর্যন্ত না আল্লাহর ওয়াদা আসে৷ আল্লাহতো ওয়াদা খেলাপ করেন না৷ {}

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ০১:৫০:১৪ রাত



(উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারাবাহিক বাংলা অনুবাদ)

সুরা রা’দ রুকু;-৪ আয়াত;-২৭-৩১

২৭/وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْلاَ أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ قُلْ إِنَّ اللّهَ يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَنْ أَنَابَ

অর্থ;-কাফেররা বলে, তাঁর প্রতি তাঁর রবের পক্ষ থেকে কোন মোজেজা অবতীর্ণ করা হলনা কেন? বলে দিন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ ভ্রষ্ট করেন আর হেদায়েত করেন তাকে যে তার দিকে অভিমুখী হয়৷

# কাফেরদের এমন দাবী নতুন নয়৷ তা বার বার এসেছে৷ আর আল্লাহ তাঁ সিদ্ধানতে অনড়৷ তিনি রসুলকে সান্ত্বনাই দিয়ে থাকেন৷ বলা হয়েছে, যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি পথ ভ্রষ্ট করেন আর যারা তার পথে অগ্রসর হয় তাদের তিনি হেদায়েত দিয়ে থাকেন৷ হেদায়েতের প্রত্যাশীগনই তা পেয়ে থাকেন৷

২৮/الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

অর্থ;-যারা ইমান এনেছে, আল্লাহর স্মরণে (জিকিরে) তাদের অন্তর শান্তিলাভ করে৷ জেনে রাখ আল্লাহর স্মরণেই অন্তর পরিতৃপ্ত হয়ে থাকে৷

# অন্তর বা রুহের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে৷ কারণ তা এসেছে ঊর্দ্ধজগত হতে৷ তাই আল্লাহর জিকির বা স্মরণেই সেই অন্তর তৃপ্তি লাভ করে৷ অপর দিকে শরীর গঠিত হয় পৃথিবীর মাটি হতে৷ তার জিবীকার উপাদানও আসে জমীন হতে৷ তাই সে তৃপ্ত হতে চায় পৃথিবীর ধন সম্পদ, বিলাস ব্যসনে৷ কিন্তু প্রকৃত তৃপ্তি আসেনা৷

২৯/الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ طُوبَى لَهُمْ وَحُسْنُ مَآبٍ

অর্থ;-যারা ইমান আনে ও নেক কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে সু সংবাদ ও মনোরম প্রত্যাবর্তন৷

৩০/كَذَلِكَ أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَا أُمَمٌ لِّتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ الَّذِيَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَـنِ قُلْ هُوَ رَبِّي لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ

অর্থ;-এমন করেই আমি আপনাকে এমন উম্মতের মধ্যে পাঠিয়েছি যাদের পূর্বে আরোও অনেক উম্মত গত হয়েছে; যেন আপনি তাদেরকে, যা আমি ওহীর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠিয়েছি তা পাঠ করে শোনান৷ আর তারা রহমানকে অস্বীকার করে৷ বলুন তিনি আমার রব৷ তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই৷ তারই উপর আমি ভরসা করছি আর তার দিকেই আমার প্রত্যাবর্তন৷

# আল্লাহ তায়ালা সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মদ সঃ কে এমন এক কওমের মধ্যে পাঠালেন যাদের আগে আরও অনেক কওম দুনিয়া হতে গত হয়েছে৷ ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সে সব অনেক কওমের কথা রসুল সঃ কে জানিয়েছেন তাদেরকে জানানোর জন্য৷ মুশরিক কোরাইশরা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নামটারর সাথেই পরিচিত ছিল, রহমান নামটা তাদের অজানা ছিল তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের এ নামটির ব্যাপারে কৌতুহল মেটানোর জন্য রসুলকে দিয়ে এটি আল্লাহরই আর একটি নাম তা বলে দিলেন৷

৩১/وَلَوْ أَنَّ قُرْآنًا سُيِّرَتْ بِهِ الْجِبَالُ أَوْ قُطِّعَتْ بِهِ الأَرْضُ أَوْ كُلِّمَ بِهِ الْمَوْتَى بَل لِّلّهِ الأَمْرُ جَمِيعًا أَفَلَمْ يَيْأَسِ الَّذِينَ آمَنُواْ أَن لَّوْ يَشَاء اللّهُ لَهَدَى النَّاسَ جَمِيعًا وَلاَ يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُواْ تُصِيبُهُم بِمَا صَنَعُواْ قَارِعَةٌ أَوْ تَحُلُّ قَرِيبًا مِّن دَارِهِمْ حَتَّى يَأْتِيَ وَعْدُ اللّهِ إِنَّ اللّهَ لاَ يُخْلِفُ الْمِيعَادَ

অর্থ;-আর যদি এমন কোরআনও হত যার দ্বারা পাহাড় চলমান হয়, অথবা জমীন খণ্ডিত হয়, কিংবা মৃতকে কথা বলানো যায়৷ বরং সমস্ত কর্তৃত্ব আল্লাহরই৷ তবেকি মুমিনরা নিশ্চিত নয় যে যদি আল্লাহ চাইতেন তে সমস্ত মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন৷ আর যারা কুফরী করেছে তাদের কৃতকর্মের কারণে সব সময় আঘাত পেতে থাকবে অথবা তাদের নিকটবর্তী স্থানে আঘাত নেমে আসবে, যে পর্যন্ত না আল্লাহর ওয়াদা আসে৷ আল্লাহতো ওয়াদা খেলাপ করেন না৷

# কথাগুলো মুশরিকদের নয় বরং মুমিনদেরই বলা হয়েছে৷ মুশরিকের বারংবার মোজেজার দাবীতে মুমিনদেরও মাঝে মাঝে এমন মোজেজার ইচ্ছা জাগতো৷ তাই তাদেরই উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে যে, যে কোরান দ্বারা পাহাড়কে নড়ানো যেত বা পৃথিবীকে টুকরা করা যেত বা মৃতকে কথা বলানো যেত তবুও তারা সেই কোরআনে বিশ্বাস করতোনা৷ আল্লাহ সর্বজ্ঞাত, তার কর্তৃত্বই চুড়ান্ত৷ তিনি ইচ্ছা করলে যেকোন মুহূর্তে বিশ্বের সকলকে মুমিন বানাতে পারেন৷ কিন্তু এটি তার নিয়ম নয়৷ যার যার ইচ্ছা মতই এগিয়ে এসে বিজয় লাভ করতে হবে৷

কাফের বা অবিশ্বাসীদের জন্য একটা দুঃসংবাদও এসেছে৷ তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের প্রতি বার বার বিপদ আসবে বা তাদের নিকটবর্তী অঞ্চলেও বিপদ আপতিত হতে থাকবে যতদিন না আল্লাহর ওয়াদা পূর্ণ হয়৷ আজ আমাদের দূর্দশা বা বিপদ আপদের জন্য আমরা নিজেরাই যে দায়ী এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷

বিষয়: বিবিধ

১০৮০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

357784
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০২:২৭
আবু জারীর লিখেছেন : আজকের আমাদের দূর্দসা আমাদের হাতেরই কামাই।
আল্লাহর কাছে দুয়া করি তিনি যেন এই বিপদ থেকে আমাদের মুক্তি দেন।
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
296889
শেখের পোলা লিখেছেন : আমাদের সকলের এখন বেশী বেশী তওবা করে ভুল শংশোধন করা উচিৎ৷ আপনাকে ধন্যবাদ৷
357794
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৪:৪৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় ও সুপ্রিয় বড় ভাই। দয়াবান প্রভু আমাদের উপর সদয় হউন এবং আমাদের কর্মকে পরিশুদ্ধ করে সঠিক ও সহজ পথে পরিচালিত করে দুনো জাহানের কামিয়াবি লাভে ধন্য করুণ আমীন।
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
296890
শেখের পোলা লিখেছেন : অ আলায়কুমুস সালাম অ রহমাতুল্লাহ৷ আমিন৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
357826
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৪৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০১:২৩
296910
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
357832
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:৩৬
আফরা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়ের চাচাজান ।
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০১:২৩
296911
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷ শুভেচ্ছা রইল৷
357897
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অর্থ;-কাফেররা বলে, তাঁর প্রতি তাঁর রবের পক্ষ থেকে কোন মোজেজা অবতীর্ণ করা হলনা কেন? বলে দিন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ ভ্রষ্ট করেন আর হেদায়েত করেন তাকে যে তার দিকে অভিমুখী হয়৷
-আমরা জানি কাফের মানে অবিশ্বাসী। যে স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। সেকালে কুরআনের ভাষায় যাদের কাফের বলা হয়, বর্তমানে তারা নাস্তিক নয় কি?(নিজস্ব মত)
কাফেরদের মত নাস্তিকরা উদ্ভট উদ্ভট প্রশ্ন করে সর্বত্রই (যেমন ব্লগে)প্যাঁচাল সৃষ্টি করছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:০৬
296974
শেখের পোলা লিখেছেন : একটু তফাৎ আছে৷ কাফেররা ছিল স্পষ্টবাদী,তাদের কুফরী ছিল প্রকশ্যে৷ আর নাস্তিকরা হল কাফেরদের চেয়েও বয়াবহ৷ তারা মুসলীম পরিচয়ে ইসলামের সাথে গোপনে শত্রুতা করত৷ আজকের নাস্তিকরা শত্রুতা প্রকাশ্যে করে আর খোলসটা ইসলামের পরেই করে৷ এরা ঘরের শত্রু, আরও বিপদজ্জনক৷ ধন্যবাদ৷
357900
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:০৬
শেখের পোলা লিখেছেন : একটু তফাৎ আছে৷ কাফেররা ছিল স্পষ্টবাদী,তাদের কুফরী ছিল প্রকশ্যে৷ আর নাস্তিকরা হল কাফেরদের চেয়েও বয়াবহ৷ তারা মুসলীম পরিচয়ে ইসলামের সাথে গোপনে শত্রুতা করত৷ আজকের নাস্তিকরা শত্রুতা প্রকাশ্যে করে আর খোলসটা ইসলামের পরেই করে৷ এরা ঘরের শত্রু, আরও বিপদজ্জনক৷ ধন্যবাদ৷
358044
৩০ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২২
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : বর্তমানে দেশে যেটা চলছে সেটা হলো নাস্তিক্যবাদী সম্মিলিত দোয়া করা দরকার
ধন্যবাদ
৩০ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:০৮
297086
শেখের পোলা লিখেছেন : সঠিক কথা বলেছেন৷ সমবেত তওবা দরকার৷ কারণ আমরা মুসলীম ছেড়ে মুশরীকদের অিভাবক বানিয়েছিলাম,আজও তাদের গুরু মানি৷ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File