****** সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হবে যে অন্ধ? বোধ সম্পন্ন ব্যক্তিরাইতো উপদেশ গ্রহন করে৷ ******
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২২ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৫:১৪:৪৮ সকাল
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারাবাহিক বাংলা অনুবাদ)
সুরা রা’দ রুকু;-৩ আয়াত;-১৯-২৬
১৯/أَفَمَن يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَى إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُوْلُواْ الأَلْبَابِ
অর্থ;-যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি নাজিল করা হয়েছে তা সত্য, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হবে যে অন্ধ? বোধ সম্পন্ন ব্যক্তিরাইতো উপদেশ গ্রহন করে৷
২০/الَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ اللّهِ وَلاَ يِنقُضُونَ الْمِيثَاقَ
অর্থ;-তারা এমন লোক, যারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূরণ করে এবং চুক্তি ভঙ্গ করেনা৷
# যারা প্রকৃত বোধ সম্পন্ন কেবল তারাই উপদেশ গ্রহন করে আর তারা কখনই আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করেনা৷ আল্লাহর সাথে ওয়াদার কথা আমরা সুরা ‘বাক্বারায়’ পড়ে এসেছি৷ সুরা তওবায় মুমিনদের জান মালের বিনিময়ে জান্নাতের চুক্তির কথাও পড়ে এসেছি৷ সর্ব প্রথম ওয়াদা ছিল রুহের আকারে ‘আলামে আরওয়াহে’’ ‘আমিকি তোমাদের রব নই? এর উওরে সবাই বলেছিল, ‘অবশ্যই’৷
২১/وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ وَيَخَافُونَ سُوءَ الحِسَابِ
অর্থ;-আর যারা ঐ সম্পর্ক বজায় রাখে যা বজায় রাখতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন এবং আপন রব কে ভয় করে আর কঠিন হিসাবের আশংকা রাখে৷
২২/وَالَّذِينَ صَبَرُواْ ابْتِغَاء وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُواْ الصَّلاَةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلاَنِيَةً وَيَدْرَؤُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ أُوْلَئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ
অর্থ;-আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সবর করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, এবং যারা ভাল দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে, তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতের শুভ পরিনাম৷
# যারা সম্পর্ক ভাঙ্গেনা বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক তা গড়ে, আল্লাহর প্রতি কাজে বিপদে আপদে সবর করে, নামাজের ধারা অব্যাহত রাখে, আল্লাহ দেওয়া সম্প, যাই তাকে দিয়েছেন তা থেকে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য ভাবে অন্যের জন্য খরচ করে, তদোপরি নিজের উচ্চ ভাল আমল, যার দ্বারা তার ছোট গোনাহ গুলিকে মুছে ফেলতে পারে, এমন লোকের জন্য পরকালে সু খবর রয়েছে৷ প্রকাশ্যে দান করার মানে, ঘোষণা করে, সুনাম বৃদ্ধিকরার জন্য মনে করলে ভূল হবে৷ কারণ তাতে থাকে অহংকার যা পুরো দানটাই নষ্টকরে দিতে পারে৷ আখেরাতের সুখবরটি হল;-
২৩/جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَنْ صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ وَالمَلاَئِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِم مِّن كُلِّ بَابٍ
অর্থ;-স্থায়ী জান্নাত, সেখানে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের পিতামাতা, স্বামী স্ত্রী, সন্তান সন্ততি দের মধ্যে যারা নেক কাজ করেছে তারাও এবং প্রত্যেক দরজা দিয়ে ফেরেশ্তারা তাদের কাছে আসবে৷
২৪/سَلاَمٌ عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ
অর্থ;-(বলবে,) তোমাদের প্রতি অনাবিল শান্তি বর্ষিত হোক! কেননা তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে আর তোমাদের এ পরিনাম কত উত্তম!
# জান্নাতই হবে তাতের স্থায়ী আবাস৷ প্রতি দরজা দিয়ে ফেরেশ্তারা প্রবেশ করবে, তারা ঐ নেককার জান্নাতীদের শুভেচ্ছা জানাবে৷ বলা হয়েছে;-মাতাপিতা, স্বামী স্ত্রী, সন্তান সন্ততি রা একই সাথে ঐ জান্নাতে যেতে পারবে, তার শর্তও দেওয়া আছে যারা সাথে যেতে পারবে অবশ্যই তাদের নেককার হতে হবে৷ যেমন, কোন পিতা তার নেক আমল দ্বারা উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন জান্নাতের অধিকারী হয়েছে আর তার সন্তানেরাও জান্নাতী হয়েছে তবে তা সাধারণ জান্নাত, এমত অবস্থায় ঐ পিতা তার সাধারণ জান্নাতী সন্তানদের সাথে নিয়ে নিজের মর্যাদাবান জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবেন৷ যে সম্পর্কে গুলোর কথা বলা হয়েছে তারা পরষ্পর এমন করতে পারবে৷ তবে বিচারে যারা ফেল করবে বা জান্নাত পাবেনা, তাদের নেওয়া যাবেনা৷
২৫/وَالَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللّهِ مِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَآ أَمَرَ اللّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ أُوْلَئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ
অর্থ;-আর যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকার করার পর তা ভঙ্গ করে এবং যে সম্পর্ক বায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে, আর পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ‘লানত’ এবং তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট ঠিকানা৷
# উপরের কয়েকটি আয়াতে নেককারদের নেক আমল ও তার পরিনাম বা পুরষ্কারের কথা বলা হয়েছে আর এখানে তাদের বিপরীত বা বদকারদের পরিনাম বা শাস্তির কথা বলা হল৷ তাদের আবাস হবে নিকৃষ্ট বা জাহান্নাম৷
২৬/اللّهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاء وَيَقَدِرُ وَفَرِحُواْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ مَتَاعٌ
অর্থ;-আল্লাহ যাকে ইচ্ছা প্রচুর রিজিক দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা তা সংকীর্ন করেন৷ কিন্তু তারা পার্থিব জীবন নিয়ে উল্লাস করে৷ অথচ পার্থিব জীবন আখেরাতের তুলনায় সামান্য সম্পদ বৈ নয়৷
# যাকে যতটুকু সম্পদই দিয়ে থাকেন না কেন এটা তার জন্য পরীক্ষা বৈ আর কিছু নয়৷ কিন্ত বাস্তবে মানুষ সেই সম্পদ নিয়ে গর্ব করে নিজেক অপরাধী করে৷ আবার মন্দ লোকে সম্পদের মালিক হয়ে নিজেকে আল্লাহর প্রীয় পাত্র পাত্র মনে করে, আর সে কারণেই তাকে এত সম্পদের মালিক করেছেন বলে মনে করে৷ কিন্ত আল্লাহ ভাল মন্দ ব্যতিরেকে যাকে খুশী তাকেই সম্পদ দিয়ে থাকেন৷
বিষয়: বিবিধ
১২৭৫ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Kemon achen?
May Allah include us among those who follow and attain Jannat!
--আমিন, আপনাকে ধন্যবাদ৷
অত্যন্ত চমৎকার কথা। জাজাকাল্লাহ চাচাভাই
অতি হৃদয়গ্রাহী লিখার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মহান রব সর্বাবস্থায় তাঁর অশেষ দয়া ও শান্তির ছায়াতলে আপনাকে ঘিরে রাখুন। কল্যাণময় সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু দান করুণ। এই কামনা রইলো।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদয়েতের পথে চলার তৌফিক দিন৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন