{}{} এ গুলি কিতাবের আয়াত৷ আর যা আপনার প্রতি নাজিল করা হয়েছে তা সত্য৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বিশ্বাস করেনা৷{}{}

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ০২:১১:৪৯ রাত



(উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারাবাহিক বাংলা অনুবাদ)

শুরু হতে যাচ্ছে তৃতীয় গ্রুপের দ্বিতীয় শাখা গ্রুপ৷ এতে রয়েছে তিনটি ছোট ছোট সুরা, ‘সুরা রা’দ’, ‘সুরা ইব্রাহীম’ও ‘সুরা হিজর’৷

(১৩) সুরা রা’দ (মক্কী) রুকু সংখ্যা-৬ আয়াত সংখ্যা-৪৩

রুকু;-১ আয়াত;-১-৭

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।



১/المر تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَالَّذِيَ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يُؤْمِنُونَ

অর্থ;-‘আলিফ’ ‘লাম’ ‘মীম’ ‘রা’ এগুলি কিতাবের আয়াত৷ আর যা আপনার প্রতি নাজিল করা হয়েছে তা সত্য৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করেনা৷

২/اللّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لأَجَلٍ مُّسَمًّى يُدَبِّرُ الأَمْرَ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لَعَلَّكُم بِلِقَاء رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ

অর্থ;-তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান সমুহকে উর্দ্ধে স্থাপন করেছেন তোমাদের দৃশ্যত স্থম্ভ ছাড়া৷ অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিক হলেন৷ এবং চন্দ্র ও সূর্যকে নিয়মাধীন করলেন৷ প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক চলমান রয়েছে৷ তিনিই যাবতীয় বিযয় নিয়ন্ত্রন করেন, নিদর্শন সমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা তোমাদের রবের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে পার৷

# এ আয়াতগুলি ‘আত তাজকীর বে আলা ইল্লাহে’র অন্তর্গত৷ যিনি আসমানকে দৃশ্যত কোন খুঁটি ছাড়া উপরে স্থাপন করেছেন, চাঁদ ও সূর্য সহ সকল গ্রহ, উপগ্রহ নক্ষত্র, গ্যালাক্সী প্রভৃতিকে একটি আকর্ষেনর মাধ্যমে সমতা রক্ষা করে অনন্তর চলার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন৷ আবার এদের যেমন রয়েছে নিজস্ব পথ তেমনই রয়েছি নির্দিষ্ট মেয়াদ৷ তিনই সেই আল্লাহ৷ তিনিই এই আসমান ও জমীনের সকল কার্য নিজ ছক মোতাবেক করে থাকেন৷ আবার তিনিই বহুবিধ নিদর্শন দেখিয়ে থাকেন যাতে তার বান্দাদের তার সাথে সাক্ষাতের বা আখেরাতের বিষয়ে সন্দেহ না থাকে৷

৩/وَهُوَ الَّذِي مَدَّ الأَرْضَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْهَارًا وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ جَعَلَ فِيهَا زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

অর্থ;-তিনিই পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন৷ এবং নোঙ্গর দিয়েছেন ও নদ নদী সৃষ্টি করেছেন৷ আর প্রত্যেক প্রকারের ফল জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন৷ তিনিই দিনকে রাত দিয়ে আবৃত করেন৷ এতে রয়েছে নিশ্চিত নিদর্শন চিন্তাশীল লোকদের জন্য৷৷

# পৃথিবীকে বিছিয়ে দিয়ে পাহাড় পর্বত দ্বারা তাকে নোঙ্গর করেছেন বা এর ভারসাম্য রক্ষা করেছেন৷ সেখানে ফলমূল সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়, অর্থাৎ সবের মাঝেই তিনি নর ও মাদী সৃষ্টি করেছেন৷ কোন কোন ফুলেও এমন দুটি অংশ দেখা যায়৷ দিন ও রাতের পরিক্রমা তিনিই সৃষ্টি করেছেন৷ তার প্রতিটি সৃষ্টির মাঝেই রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন যা চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক৷

৪/وَفِي الأَرْضِ قِطَعٌ مُّتَجَاوِرَاتٌ وَجَنَّاتٌ مِّنْ أَعْنَابٍ وَزَرْعٌ وَنَخِيلٌ صِنْوَانٌ وَغَيْرُ صِنْوَانٍ يُسْقَى بِمَاء وَاحِدٍ وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ فِي الأُكُلِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

অর্থ;-আর পৃথিবীতে রয়েছে বিভিন্ন ভূ-খণ্ড, একটি অপরটির সাথে সংলগ্ন এবং রয়েছে আঙ্গুরের বাগান, শষ্যক্ষেত্র, খেজুরেরগাছ, কতকের মূল অপরের সাথে মিলিত, কতক আলাদা৷ একই পানি দ্বারা সেচ করা হয় আর আমি স্বাদে একটিকে অপরটির চাইতে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি৷ এগুলোর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে যারা চিন্তা ভাবনা করে৷

# পৃথিবীর স্থল ভাগটি বিস্তৃত গায়ে গায়ে লাগা হলেও এখানে আবহাওয়াগত পার্থক্য রয়েছে৷ বিভিন্ন ধরনের ফলের উৎপাদন হয়, এমনও রয়েছে যে দুটি গাছ একই যায়গায় গোড়া, একই পানি দিয়ে সেচ দেওয়া হচ্ছে, একই ধরনের ফল তবুও তাদের মধ্যে স্বাদে পার্থক্য রয়েছে৷ আবার অঞ্চল ভেদে একই ফলের স্বাদে ভিন্নতা রয়েছে৷ এ সবের মাঝেও রয়েঝে চিন্তাশীলদের জন্য উপাদান৷ আর এরই পিছনে রয়েছে সৃষ্টিকর্তার কারিগরি৷

৫/وَإِن تَعْجَبْ فَعَجَبٌ قَوْلُهُمْ أَئِذَا كُنَّا تُرَابًا أَئِنَّا لَفِي خَلْقٍ جَدِيدٍ أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِمْ وَأُوْلَئِكَ الأَغْلاَلُ فِي أَعْنَاقِهِمْ وَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدونَ

অর্থ;-আর যদি তুমি বিষ্মিত হও তবে তাদের উক্তিই বিষ্ময়কর যে, ‘আমরা যখন মাটি হয়ে যাব তখনকি নতুন ভাবে সৃষ্ট হব!’ এরাই স্বীয় পালনকর্তার সত্ত্বায় অবিশ্বাসী হয়ে গেছে এবং এদের গলায় লোহার বেড়ি পড়বে, আর এরাই হবে দোজখবাসী৷ সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে৷

# কোন ব্যাপারে যদি কারোও অবাক হবার থাকে, তবে যারা বলে বা ভাবে, মানুষ মৃত্যুর পর মাটি হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, সেই মানুষকে কেমন করে আবার সৃষ্টি করা হবে! মূলতঃ তাদের আল্লাহর ক্ষমতার বিষয়ে ধারণা নাই বা তারা বিশ্বাস করেনা৷ কারণ, কোন জিনিষ প্রথমবার বানানোই কষ্টকর৷ আল্লাহ তায়ালা যখন তা অবলীলায় করেন, তখন দ্বিতীয়বার সেই জিনিষ বানানোতে কোনই বিষ্ময়ের কিছু নেই৷ অতএব তাদের এই বিষ্ময়কর উক্তিটিই অবাক করার মত৷ আর এমন লোকদের গলায় কেয়ামতের দিন লোহার শিকল পরিয়ে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হবে৷ আর সেটাই হবে তাদের অনন্ত আবাস৷

৬/وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالسَّيِّئَةِ قَبْلَ الْحَسَنَةِ وَقَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِمُ الْمَثُلاَتُ وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ لِّلنَّاسِ عَلَى ظُلْمِهِمْ وَإِنَّ رَبَّكَ لَشَدِيدُ الْعِقَابِ

অর্থ;-এরা আপনার কাছে দ্রুত মঙ্গলের পরিবর্তে দ্রুত অমঙ্গল কামনা করে৷ তাদের পূর্বে আজাবের বহু দৃষ্টান্ত অতীত হয়ে গেছে৷ আপনার রবতো ক্ষমাশীল৷ তাদের অন্যায় আচরণ সত্বেও এবং আপনার রব কঠিন শাস্তিদাতাও বটে৷

# অবিশ্বাসী মুশরিকদের এ দাবী বার বার এসেছে, কোথায় আজাব! আনেন আপনার আজাব! অথচ এমন আজাবের বহু প্রমান তারা দেখেছে যা ইতিহাস হয়ে রয়েছে৷ বরং এটা আল্লাহর অনুগ্রহ যে তাদের এ হেন অন্যায় হটকারি আচরণের পরও তাদের আজাব না দিয়ে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে৷ কারণ তিনি ক্ষমাশীল৷ আবার সেই সঙ্গে কঠিন শাস্তিদাতাও বটে৷ তার শাস্তীটাও তেমনই কঠোর৷

৭/وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْلآ أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ إِنَّمَا أَنتَ مُنذِرٌ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ

অর্থ;-কাফেররা বলে, তার প্রতি তার রবের পক্ষ হতে কোন মোজেজা অবতীর্ন হয়না কেন! আপনি শুধুই সতর্ককারী৷ প্রত্যেক কওমের জন্য পথ প্রদর্শক রয়েছে৷

# মোজেজা বা অলৌকিকত্ব দেখার বায়না যুগে যুগে হয়ে এসেছে৷ সেই মোজেজা দেখার পরই সুযোগের পথ বন্ধ হয়ে গেছে আর আজাব এসেছে৷ অতএব যতদিন তা না দেখানো হচ্ছে ততদিনই মঙ্গল৷ মুশরিকদের এ দাবীর জবাবে রসুলকে শুধুই সতর্ককারী রূপে উপস্থাপন করা হচ্ছে, ঠিক যেমন অন্যান্ন কওমের জন্যও সতর্ককারী বাহেদায়েতের পথে আহ্বানকারী পাঠিয়েছেন৷ আর মোজেজার এখ্তেয়ার শুধুই আল্লাহর৷ তিনিই জানেন কখন কি ভাবে তা দেখাবেন কি দেখাবেন না৷ এখানে প্রত্যেক কওমের জন্য ‘হাদী’ আছেন বলা হয়েছে৷ নবী বা রসুল বলা হয়নি৷ অতএব এই হাদী কোন ওলী আউলিয়াও হতে পারেন৷

বিষয়: বিবিধ

১২০৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

356393
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৬
আফরা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়ের চাচাজান ।
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৪৪
295912
শেখের পোলা লিখেছেন : শুভেচ্ছা নিও৷ভাল থাক৷
356407
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৪৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান চাচাভাই Happy
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৪৫
295913
শেখের পোলা লিখেছেন : অনেক অনেক শুভেচ্ছা চাচারও লাগিয়া৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File