%%%%% তৌহীদে আমলী'র বাকী অংশ %%%%%
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০৪ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৯:২৪:২১ রাত
প্রথমাংশ এখানে;-http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/bloglist/3696/boka
এখন তৌহীদ ফিদ্দোওয়ার বিষয়ে কিঞ্চিত আলোচনা করার চেষ্টা করব৷ যেহেতু হাদীশে এসেছে, ‘আদ্দোওয়াও মুখ্যুল ইবাদাত,’-দোওয়াই ইবাদতের মূল অংশ, আগ বাড়িয়ে বললে বলতে হয় দোওয়াই আসল ইবাদত৷ কেননা বান্দা যার কাছে হাত পাতে, বিপদে সাহায্যের আবেদন জানায় তিনিই তার মাবুদ৷এখানে সুরা ‘মুমিন’ এর ৬০ নং আয়াতটি শোনাতে চাই, যদিও আজকের আলোচনায় ওটির তেমন কোন দখল নেই, শুধুমাত্র উপরোক্ত হাদীশের সাথে তার মিল আছে এ জন্যই৷
৬০/وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
অর্থ;-তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাক (দোওয়া কর) আমি সাড়া দেব৷ যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা সত্ত্বরই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল হবে৷
আল্লাহ বলেন, ‘লা তাদউ মায়াল্লাহে আহাদান’,-সাবধান, আল্লাহর সাথে আর কাউকে ডেকোনা৷ আল্লাহর সাথে আর কাউকে শামিল করোনা৷ যদি করে তবে শির্ক ফিত্তৌহীদ বলে গন্য হবে৷ যারা আমার কাছে চাওয়াকে অস্বীকার করে তাদেরকে নিকৃষ্টতম হিসেবে জাহান্নামে যেতে হবে৷ সেই দোওয়ার সাথেও থাকা চাই ইখলাস বা সর্বাত্মক আনুগত্য৷ সুরা ‘মুমিন’ এর ৬৫ ও ৬৬ আয়াতে তেমনটাই বলা হয়েছে৷
৬৫/هُوَ الْحَيُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অর্থ;-তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, অতএব, তাকে ডাক একনিষ্ঠ হয়ে৷ সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর৷
৬৬/قُلْ إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَمَّا جَاءنِيَ الْبَيِّنَاتُ مِن رَّبِّي وَأُمِرْتُ أَنْ أُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
অর্থ;-বলুন, যখন আমার কাছে আমার রবের পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমানাদি এসে গেছে, তখন আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যার পূঁজা কর তার ইবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে৷ আমাকে আদেশ করা হয়েছে বিশ্ব পালনকর্তার অনুগত থাকতে৷
আমাদের অভিজ্ঞতা আর অনেকের অভিযোগ, আমাদের দোওয়া কবুল না হওয়ার কারণ কি? রসুল সঃ একটি উদাহরণ দিয়েছেন, তাহল;-বহু পথ অতিক্রম করে ধুলায় মলীন পথের ক্লান্তি নিয়ে এক মুসাফির হারামাইনে উপস্থিত হয়ে দুহাত উপরে তুলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল, পরে বহু কষ্টে জাবালে নূরে উঠেও বহুক্ষন অনুনয় বিনয়ের সাথে দোওয়া করল, আল্লাহর রসুল বলেন কেমন করে তার দোওয়া কবুল হবে, তার শরীর গড়ে উঠেছে হারাম খাদ্যে আর তার পরণে রয়েছে হারামের টাকায় কেনা পোষাক৷ আমাদের দোওয়া কবুল না হওয়ার কারণ বুঝতে কারও বাকী থাকার কথা নয়৷সুরা ‘বাক্বারার’ ১৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন;- وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
অর্থাৎ;-আর যখন আমার বান্দা আমার ব্যপারে, তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, আমি সন্নিকটেই রয়েছি, যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করি, কাজেই আমার হুকুম মান্য করা ও আমার প্রতি বিশ্বাস করা একান্ত কর্তব্য, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।
অন্যত্র আরও বলেছেন,-‘ইন তানসুরুল্লাহা ইয়ানসুরুকুম’ যদি তোমরা আল্লাহর সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাকে সাহায্য করবেন৷ কিছু পেতে হলে আগে কিছু দিতে হবে৷ আল্লাহ অভাবী নন, তার সাহায্য গ্রহণেরও প্রয়োজন পড়েনা৷ মুখলেসীনা লাহুদ্বীন হয়ে যাও৷ দোওয়া কবুল হবে৷ মৃত্যুর আলামত প্রকাশ হওয়ার আগে পর্যন্ত তওবার দরজা খোলা আছে৷ দুনিয়ার মুসলীম আসুন চির তরে আল্লাহর পথে সর্বাত্মকরণে তওবা করে ফিরে আসি৷ এ অবস্থায় পৌঁছেই কোন বান্দা নিজেকে আব্দুল্লাহ বলে দাবী করতে পারে৷
একটি মশাল থেকেই হাজার মশাল জ্বলে৷ সেই আল্লাহর বান্দা এখন ইসলামের মশাল, তার দায়ীত্ব অন্য মশাল জ্বালানো৷ বা দাওয়াত দেওয়া৷ দাওয়াত শব্দটির উৎপত্তি দোওয়া থেকে৷ তাই দোওয়ার পরেই দাওয়াতের কথায় আসা যাক৷ সুরা ‘হামীম সাজদায়’ বলা হয়েছে,-
৩৩/وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
অর্থ;-তার কথা অপেক্ষা কার কথা ভাল হবে? যে আল্লাহর দিকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আত্মসমর্পণকারী৷
এটিই এই সুরার মূল বিষয় বস্তু৷ নিজে সঠিক স্থানে শক্ত হয়ে দাঁড়াও ও অন্যকে আহবান কর৷ এমন না হয় যা ইহুদীদের বলা হয়েছে সুরা বাক্বারায়;-
৪৪/أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
অর্থাৎ;-তোমরাকি মানুষকে সৎ কর্মের নির্দেশ দাও আর ভুলে যাও নিজেদেরকে, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর, তবুও কি তোমরা চিন্তা করনা?
দুর্ভাগ্য বশতঃ আমরাই এখন এ অবস্থার শিকার৷
দাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য কি শুধুই সমাজে নামাজী, রোজাদার, হাজী, দাড়ি টুপি ওয়ালদের সংখ্যা বাড়ানো? না লক্ষ্য রাখতে হবে যে দাওয়াতের গাড়ি বেগবান হয়ে পথ অতিক্রম করছে নাকি এক জাগায় দাঁড়িয়ে মার্কটাইম, লেফট রাইট করে চলেছে৷ যাতে নড়ন চড়ন থাকলেও গতি নেই৷ আসুন সুরা ‘শুরা’তে গিয়ে দেখি৷
১৩/شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاء وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ
অর্থ;-তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়ে ছিলেন নূহকে৷ যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যা আমি আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মুসা ও ঈশাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করোনা৷ আপনি মুশরিকদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আমন্ত্রন জানান, তা তাদের কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হয়৷ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মনোনিত করেন এবং যে তার অভিমুখী হয় তাকে পথ প্রদর্শণ করেন৷
১৪/وَمَا تَفَرَّقُوا إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى لَّقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ أُورِثُوا الْكِتَابَ مِن بَعْدِهِمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
অর্থ;-তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারষ্পরিক বিভেদের কারণে মতভেদ করেছে৷ যদি আপনার রবের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকত তবে, তাদের ফায়সালা হয়ে যেত৷ তাদের পর যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে৷
১৫/فَلِذَلِكَ فَادْعُ وَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءهُمْ وَقُلْ آمَنتُ بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِن كِتَابٍ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ اللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ لَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ اللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَا وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ
অর্থ;-সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুম অনুযায়ী অবিচল থাকুন৷ আপনি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করবেন না৷ বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাজিল করেছেন আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি৷ আমি তোমাদের মাঝে ন্যায় বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি৷ আল্লাহ আমাদের রব ও তোমাদের রব৷ আমাদের জন্য আমাদের কর্ম ও তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম৷আমাদের মধ্যে ও তোমাদর মধ্যে কোন বিবাদ নেই৷ আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন৷ এবং তারই দিকে প্রত্যবর্তন হবে৷
এটিই হল দাওতের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য৷ এর শুরু আজ নয় বরং হজরত নূহ আঃ থেকে শেষ নবী পর্যন্ত প্রত্যেক নবী রসুল গণ এ দাওয়াতই দিয়ে এসেছেন৷ উম্মতে মোহাম্মদী হিসেবে এ কাজ আমাদেরও দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে পড়েছে৷ বলা হয়েছে, তোমরা দ্বীন (আল্লাহর মনোনিত জীবন বিধান) কায়েম কর, তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করোনা৷
দ্বীন কায়েম কর আর দ্বীন কায়েম রাখ, বাক্য দুটিতে তেমন পার্থক্য নেই৷ ঠিক যেমন ঝড়ের আগ মুহূর্তে তাবু বহাল রাখার নির্দেশ মান্য করা৷ তাঁবু পড়ে গিয়ে থাকলে তাকে খাড়া কর আর খাড়া থাকলে বহাল রাখ৷ দ্বীনের ক্ষেত্রেও তাই না থাকলে খাড়া কর আর খাড়া থাকলে বহাল রাখ৷ সংবিধানের শুরুতেই লেখা আছে যে, কোরআন ও সুন্নাহ বহির্ভুত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে না৷ শুধু মাত্র এই ছোট্ট কথাটা বাস্তবে পূর্ণ রূপ দিলেই দেশে ইসলাম কায়েমের জন্য যথেষ্ট৷ মাদানী কোরআনের তিন যায়গায় বলা হয়েছে;-‘হুয়াল্লাজি আরসালা রাসুলুহু বিল হুা অয়া দ্বীনিল হাক্কে লে ইয়ুজহেরাহু কুল্লিহি’৷ এটিই ছিল রসুলুল্লার মিশণ ও ভীষণ৷ আর তিনিই প্রথম যিনি আরব ভূমে মাত্র তেইশ বৎসরে তা প্রতিষ্ঠা করে নজির সৃষ্টি করে গেছেন৷ আর যেহেতু তিনি সমগ্র জাহানের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন তাই তাঁর মিশণ এখানেই শেষ নয়৷ তাঁর আরাদ্ধ দায়িত্ব তিনি তাঁর উম্মতের উপর দিয়ে গে্ছেন। উম্মতকে তাঁর এ মিশণ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিতেই হবে৷
মনে রাখতে হবে, ১০০ হতে মাত্র এক বাদ দিলে আর শতভাগ থাকে না৷ আল্লাহর চাই শত ভাগ৷ সমাজে যত রকমের নীতি থাকবে তা কোরআন ও সুন্নার গণ্ডির ভিতরে থাকতে হবে৷ নয়ত সেই আয়াতের ফরমুলায় পড়তে হবে৷ বলা হয়েছে;-‘তোমরা কি আমার কিতাবের কিছু অংশ স্বীকার কর আর কিছু অংশ অস্বীকার কর! যদি এমন কর তবে তার শাস্তি হচ্ছে, দুনিয়ায় তোমরা হবে নিকৃষ্ট, পদদলিত আর কেয়ামতে তোমাদের ফেলা হবে কঠিন আজাবে’৷ এখানেও রয়েছে সেই শত ভাগের শর্ত৷ যদি ভুল বশতঃ বা হঠকারী বশতঃ কোন ভুল হয়েই যায় তবে শিঘ্রই সংশোধন করার সুযোগ আছে৷ আল্লাহ বলেন;-‘ইন্নামাত্তাওবাতো আলাল্লাহে লিল্লাজিনা ইয়া’মালুনাস্ সুয়া বে জিহালাতিন সুম্মা ইয়াতুবুনা মিন কারীবিন৷’-যারা অজান্তে ভুল করে বসে ও যথাশিঘ্র তওবা করে, আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করা নিজের উপর ওয়াজিব করেছেন৷
ব্যক্তিগত কিংবা সমষ্টিগত পর্যায়ে আল্লাহর নিয়ম শতভাগ বাস্তবায়ন চাই৷ যার শুরু হয়ছিল সুরা মুদ্দাশ্শেরের মাধ্যমে৷-
১/يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ
অর্থ;-হে বস্ত্রাবৃত (রসুল)৷
২/قُمْ فَأَنذِرْ
অর্থ;-উঠুন, সতর্ক করুন৷
৩/وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ
অর্থ;-আপনার রবকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করুন৷
হে বস্ত্রাবৃত রসুল, উঠুন আর মানুষকে সতর্ক করুন এ বিষয়ে যে আখেরাতে তাকে আপন সৃষ্টি কর্তার আদালতে দাঁড়িয়ে যাবতীয় কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে৷ তারা ধরে নিয়েছে এ দুনিয়াই সব, আর কোন বিষয়ে কারো কোন দায় দায়িত্ব নেই৷ দাওয়াতের শুরু এখান থেকেই আর তার সমাপ্তি হবে সেদিন যেদিন ‘অয়ারব্বিকা ফা কাব্বির’ আপনার রবের শ্রষ্ঠত্ব বহাল করুন৷ যেদিন এ আয়াত বাস্তবে রূপায়িত হবে সেদিন এ দাওয়াত পূর্ণাঙ্গ হবে৷ সুরা বণী ইস্রাঈলের শেষ আয়াত যা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে তার বৈশিষ্ট এখানেই৷ এ বিষয়ের এটিই শ্রেষ্ঠ আয়াত বলে আমি মনে করি৷
‘তাকবীর’ বলতে আমরা বুঝি গগণ বিদারী আওয়াজে ‘আল্লাহু আকবার’ বলা৷ এ ভাবেই আমরা আল্লাহকে উপরে তুলে ধরি৷ কিন্তু উপরোক্ত আয়াত তিন এর উদ্দেশ্য তা নয়৷ আল্লাহ তো সব সময়ই বড় আর সবার উপরে আছেন৷ আসলে তাকবীর শব্দের শাব্দিক অর্থ কাউকে বড় করা৷ এ আয়াতে আল্লাকে বড় করতে বলা হয়েছে৷ আর আল্লাহকে বড় করা হল, তাঁর আদেশ নিষেধ, নিয়ম নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া৷ আর তাও হতে হবে শতভাগ৷ ব্যক্তি পর্যায়ে যেমন শতভাগ কাম্য৷ আমি নামাজ রোজা জাকাত খয়রাত কোরবানী হজ সব কিছুই যথাযত করি কিন্তু ব্যাঙ্কের লোন নানিয়ে তো বাড়ি বানাতে পারিনা, তাই বাধ্য হয়েই সুদের সাথে জড়িত হতে হয়েছে৷ এখানে আর শতভাগ হল না৷ অতএব, আমার সবটুকুই শেষ৷ সমষ্টিগত বা সামাজিক নাগরীক যাাই বলেননা কেন সেখানেও সেই শতভাগ কাম্য৷ আর এসমস্ত ক্ষেত্রেই আল্লাহকে অর্থাৎ তার দ্বীনকে, নিয়ম নীতিকেই উপরে রাখতে হবে৷ সামাজিক বা জাতীয় জীবনে এটা তখনই সম্ভব যখন দেশের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বা পার্লমেন্টে তাকে অগ্রধিকার দেওয়া হবে৷ দেশের কোন আইন তা অর্থনীতি, বানিজ্য নীতি, সমরনীতি, প্রশাসণ যাই হোকনা কেন৷ একমাত্র তখনই হবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা আর তখনই পালিত হবে “ওয়া রাব্বিকা ফা কাব্বির৷” আল্লামা ইকবালের একটি কাসীদা দিয়ে শেষ করতে চাই৷৷ ‘মোকামে বন্দগী দিগার, মোকামে আশেকী দিগার, যে নূরী সিজদাহ মি খাহী, যে খাকী বে সদা খাহী, চু না খুদরা নিগাহদারী, কে বায়ি বে নিয়াজী হা, শাহাদাত বর খুনে দোস্ত খাহা’৷-বন্দেগী হল প্রাথমিক স্তর যা তৌহীদে আমলীর প্রথম দাবী৷ যেখানে শামিল হয়েছে ফেরেশ্তাগনও, যারা বলেছিল, ‘নাহনু নুসাব্বেহো বে হামদেকা ওয়া নুকাদ্দেশু লাকা’৷ এর বশী তাদের কাছে আল্লাহর আর দাবী নেই, কিন্তু মাটির মানুষের কাছে আল্লাহর দাবী আরও অনেক অনেক বেশী৷ আল্লাহ চায় তার বান্দা আপন রক্তে রঞ্জিত হয়ে তার দ্বীনকে তার দুনিয়ায় কায়েম করুক৷ ৪/إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنيَانٌ مَّرْصُوصٌ
অর্থ;-নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে ভাল বাসেন, যারা তাঁর পথে যুদ্ধ করে সারিবদ্ধ ভাবে, যেন তারা সীসা ঢালা সুদৃঢ় প্রাচীর৷ (সুরা সাফ)
অমা আলাইনা ইল্লাল বালাগ৷ (সংক্ষেপীত)
(মূল বক্তা মরহুম জনাব ডাঃ ইসরার আহমদ রঃ) প্রথমাংশ এখানে;-http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/bloglist/3696/boka
বিষয়: বিবিধ
১৪২৪ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দুটো একসাথে কপি করে রাখলাম, ব্যস্ততা কমলে পড়া/শোনার আশা রাখি ইনশাআল্লাহ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
অনেক সুন্দর একটা লিখা উপ হার দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ চাচাজান ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন