{}{}{}{} "যখন তারা তাকে দেখল; হতভম্ব হয়ে গেল এবং নিজ নিজ হাত কেটে ফেলল"৷{}{}{}{}
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:৪৫:৩৮ সন্ধ্যা
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারাবাহিক বাংলা অনুবাদ)
সুরা ইউসুফ রুকু;-৪ আয়াত;-৩০-৩৫
ঘটনাটি শহরের উচ্চ ও সম্ভ্রান্ত ঘরণীদের আলোচনার বিষয় হয়ে ফিরতে লাগল আর তা আজিজের স্ত্রী জুলায়খার কানে এল৷(তাওরাতে মহীলার নাম জুলায়খা বলা হয়েছে)৷
৩০/وَقَالَ نِسْوَةٌ فِي الْمَدِينَةِ امْرَأَةُ الْعَزِيزِ تُرَاوِدُ فَتَاهَا عَن نَّفْسِهِ قَدْ شَغَفَهَا حُبًّا إِنَّا لَنَرَاهَا فِي ضَلاَلٍ مُّبِينٍ
অর্থ;-নগরে মহীলারা বলাবলি করতে লাগল; আজিজের স্ত্রী নিজ গোলামকে কামনা চরিতার্থ করার জন্য ফুসলাচ্ছে৷ সে তার প্রেমে উন্মত্ত হয়ে গেছে৷ আমরা তাকে প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে দেখতে পাচ্ছি৷
৩১/فَلَمَّا سَمِعَتْ بِمَكْرِهِنَّ أَرْسَلَتْ إِلَيْهِنَّ وَأَعْتَدَتْ لَهُنَّ مُتَّكَأً وَآتَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِّنْهُنَّ سِكِّينًا وَقَالَتِ اخْرُجْ عَلَيْهِنَّ فَلَمَّا رَأَيْنَهُ أَكْبَرْنَهُ وَقَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ وَقُلْنَ حَاشَ لِلّهِ مَا هَـذَا بَشَرًا إِنْ هَـذَا إِلاَّ مَلَكٌ كَرِيمٌ
অর্থ;-যখন মহীলা তাদের কূৎসা রটনার খবর শুনতে পেল, তখন সে তাদেরকে ডেকে পাঠালো এবং তাদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করল৷ সে তাদের প্রত্যেককে একটি করে ছুরি দিয়ে, (ইউসুফ কে) বলল; এদের সামনে বের হও! যখন তারা তাকে দেখল; হতভম্ব হয়ে গেল এবং নিজ নিজ হাত কেটে ফেলল৷ আর বলল; অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম! এতো কোন মানুষ নয়! এতো কোন মহান ফেরেশ্তা!
# অভিজাত সমাজের উচ্চ কারবার৷ মহীলা নিজের সমালোচনা শুনে শহরের সম্ভ্রান্ত হমীলা, যারা তার বিরূপ সমালোচনা করছিল তাদের দাওয়াত দিল৷ হয়ত ফল মূল খাবার আয়োজন ছিল৷ তাই টেবিলে সকলকে ছুরি দেওয়া হয়ে ছিল৷ পরিকল্পনা মোতাবেক ফল কেটে খাওয়া শুরু করতে বলেই আড়ালে থাকা ইউসুফ আঃ তাদের সামনে আসতে বলা হল৷ সকলে একযোগে তাঁকে দেখে রূপ লাবন্যে বিমোহীত হয়ে গেল আর সেই অসতর্ক মুহূর্তে হয়ত কেউ তার আঙ্গুল কেটে ফেলে থাকবে৷ বাড়ির খাদেম হিসেবে ইউসুফ আঃ তার প্রাথমিক চিকিৎসা স্বরূপ ঔষধ, ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দিয়ে থাকবেন৷ সুদর্শন যুবকের সান্নিধ্য পাবার আশায় তখন এক এক করে সকলেই আঙ্গুল কেটে থাকবে৷ কেননা, আয়াতে যে ‘কাত্তা’য়না’ শব্দটি ব্যবহার হয়েছে তাতে বুঝে সুঝে কিছু করাই বোঝায়৷ এ ঘটনায় মহীলাও তার অপরাধ খণ্ডনের বেশ সুযোগ পেয়ে গেল৷
৩২/قَالَتْ فَذَلِكُنَّ الَّذِي لُمْتُنَّنِي فِيهِ وَلَقَدْ رَاوَدتُّهُ عَن نَّفْسِهِ فَاسَتَعْصَمَ وَلَئِن لَّمْ يَفْعَلْ مَا آمُرُهُ لَيُسْجَنَنَّ وَلَيَكُونًا مِّنَ الصَّاغِرِينَ
অর্থ;-মহীলা বলল; এই সেই ব্যাক্তি, যার সন্মন্ধে তোমরা আমায় দোষারোপ করেছিলে৷ অবশ্যই আমি তাকে দিয়ে কামনা চরিতার্থ করতে চেয়ে ছিলাম, কিন্তু সে নিজেকে সংযত রেখেছে৷ আর আমি যা আদেশ দিই তা সে যদি পালন না করে তবে অবশ্যই সে কারাগারে প্রেরীত হবে এবং লাঞ্ছিত হবে৷
# ইউসুফ আঃ এর সংযম আর মহীলার ঔদ্ধত্ব প্রকাশ পেল৷ ইউসুফ আঃ সিদ্ধান্ত নিলেন ও আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানালেন;
৩৩/قَالَ رَبِّ السِّجْنُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا يَدْعُونَنِي إِلَيْهِ وَإِلاَّ تَصْرِفْ عَنِّي كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُن مِّنَ الْجَاهِلِينَ
অর্থ;-তিনি (ইউসুফ আঃ) বললেন, হে রব, এরা যে কাজের জন্য আমাকে আহবান করে তার চাইতে কারাগারই আমার কাছে অধিক প্রীয়৷ তাদের চক্রান্ত থেকে আপনি যদি আমাকে রক্ষা না করেন তবে, আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব, এবং জাহেলদে শামিল হয়ে পড়ব৷
৩৪/فَاسْتَجَابَ لَهُ رَبُّهُ فَصَرَفَ عَنْهُ كَيْدَهُنَّ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
অর্থ;-অতঃপর তার পালনকর্তা তার দোওয়া কবুল করলেন, অতঃপর তাদের চক্রান্তকে প্রতিহত করলেন৷ নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ৷
৩৫/ثُمَّ بَدَا لَهُم مِّن بَعْدِ مَا رَأَوُاْ الآيَاتِ لَيَسْجُنُنَّهُ حَتَّى حِينٍ
অর্থ;-অতঃপর, এ সব নিদর্শন দেখার পর তারা তাকে কিছুদিন কারাগারে রাখা সমীচীন মনে করল৷
# ইউসুফ আঃ এর সিদ্ধান্ত আল্লাহ বাস্ববায়ন করলেন সমাজের কর্ণধারদের মাধ্যমেই৷ তারা সিদ্ধান্ত নিল, পাবলিক সেফটির জন্য ইউসুফকে কিছুদিন লোক চক্ষুর অন্তরালে, কারাগারে রাখা হোক৷ ইউসুফ আঃ কে জেলে পাঠানো হল৷
বিষয়: বিবিধ
১১৯৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নির্দোষ হয়েও কারাবাস বরণ করলেন উদ্দেশ্য ছিলো উনার ন্যায্য বিচার এর ফয়সালা!
জাযাকাল্লাহ খাইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন