@@@@@ ভোর বেলাই তাদের জন্য প্রতিশ্রুত সময়; ভোর কি নিকটবর্তী নয়!@@@@@

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:২৫:০৬ রাত

(মরহুম জনাব ডাঃ ইসরার আহমাদ সাহেবের উর্দু বয়ানুল কোরআনের ধারাবাহিক বাংলা অনুবাদ)

সুরা হুদ রুকু;-৭ আয়াত;-৬৯-৮৩

“আম্বউ রুসুল” বর্ণনার ধারায় এ সুরায় আমরা ইতি মধ্যে তিন জন রসুলের কথা পড়ে এসেছি৷ এ তিন জনই ছিলেন প্রাক ইব্রাহীম আঃ৷ সামনের তিনজন হলেন ইব্রাহীম আঃ এর পরে আগত৷ সুরা ‘আনআমে’ আমরা দেখেছি ইব্রাহীম আঃ কে মধ্য হতে সরিয়ে আলাদা ভাবে, ‘আম্বাউ রুসল’ নয় বরং ‘কাসাসুন্নাবিঈন’ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে৷ এ সুরায় আলাদা স্থান দেওয়া না হলেও সংক্ষীপ্তাকারে ‘কাসাসুন্নাবিঈন’ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে৷ এর পর ক্রমান্বয়ে বাকী তিনজন রসুল যাঁরা ছিলেন ইব্রাহীম আঃ এর বংশের সাথে জড়িত তাদের বর্ণনা আসবে৷ এ রুকুতে হজরত লূত আঃ এর বর্ণনা পাওয়া যাবে, তিনি হজরত ইব্রাহীম আঃ এর ভাইপো ছিলেন৷

৬৯/وَلَقَدْ جَاءتْ رُسُلُنَا إِبْرَاهِيمَ بِالْبُـشْرَى قَالُواْ سَلاَمًا قَالَ سَلاَمٌ فَمَا لَبِثَ أَن جَاء بِعِجْلٍ حَنِيذٍ

অর্থ;-আর আমার প্রেরিত (ফেরেশ্তা)রা অবশ্যই সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে এসেছিল৷ তারা বলল, সালাম৷ তিনিও বললেন, সালাম৷ দেরী না করে তিনি একটি বাছুর-কাবাব নিয়ে এলেন৷



# দুইজন ফেরেশ্তা মেহমান হয়ে হঠাৎ ইব্রাহীম আঃ এর বাড়ি এলেন, সালাম বিনিময়ের পরই ইব্রাহীম আঃ মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য একটি কাবাব করা বাছুর এনে মেহমানদের সামনে রাখলেন৷

৭০/فَلَمَّا رَأَى أَيْدِيَهُمْ لاَ تَصِلُ إِلَيْهِ نَكِرَهُمْ وَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً قَالُواْ لاَ تَخَفْ إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمِ لُوطٍ

অর্থ;-কিন্তু যখন তিনি দেখলেন, তাদের হাত সেদিকে প্রসারিত হচ্ছেনা, তখন তিনি তাদের প্রতি সন্ধিগ্ধ হলেন ও মনে মনে তাদের সম্পর্কে ভীত হলেন৷ তারা বললেন, ‘ভীত হবেন না, আমরা লূত এর কওমের প্রতি প্রেরিত হয়েছি’৷

৭১/وَامْرَأَتُهُ قَآئِمَةٌ فَضَحِكَتْ فَبَشَّرْنَاهَا بِإِسْحَقَ وَمِن وَرَاء إِسْحَقَ يَعْقُوبَ

অর্থ;-আর তাঁর স্ত্রীও দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি হাঁসলেন৷ তার পর আমি তাকে ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম ও তার পরে ইয়াকুবেরও৷

# ইব্রাহীম আঃ এর অবস্থা দেখে পাশে দাঁড়ানো তাঁর স্ত্রী বিবি সারা সালামুন আলাইহা হেঁসে দিলেন৷ এর পর, ফেরেশ্তারা নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁ ভয় দূর করলেন ও বললেন, আমরা লূত আঃ এর কওমের শাস্তি নিয়েই সেখানে চলেছি, পথে আপনাকে একটি সুসংবাদ দিতে এসেছি, তাহল, আপনার একটা পুত্র সন্তান হবে ইসহাক নামে আর তার পুত্র, আপনার নাতি হবে ইয়াকুব নামে৷ পুরাকালে প্রচলিত নিয়ম ছিল, কেউ কারো ক্ষতি করতে তার বাড়ি গেলে লবন মেশা খাবার খেতো না, যখন মেহমানরা খাবারে হাত দিলনা তখন এ কথা মনে করেই ইব্রাহীম আঃ মনে কোন ক্ষতির আশংকা করে ছিলেন৷ আর তা দেখেই সারা আঃ হেঁসেছিলেন৷ কোন নবীর হৃদয়ে আল্লাহ ছাড়া কারও ভয় অবশ্যই থাকেনা৷

তওরাতে বর্ণিত কিছু কথা উল্লেখ করা যেতে পারে৷ হজরত সারার গর্ভে কোন সন্তান না হওয়ায় তিনিই স্বামীকে হজরত হাজেরা, যাকে মিশরের বাদশা ইব্রাহীম আঃ এর খেদমত করার জন্য দিয়ে ছিলেন, তিনিও শাহজাদীই ছিলেন, তার সাথে সম্পর্ক করতে বলে ছিলেন৷ এই হাজেরার গর্ভেই হজরত ইসমাঈলের জন্ম হয়৷ স্বভাবতঃই সন্তান ও তার মায়ের প্রতি ইব্রাহীম আঃ বেশী মনোনিবেশ করেন৷ যা বিবি সারার(সালামুন আলাইহা) কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে৷ তখন তিনি স্বামীকে দিয়ে মা ও ইসমাঈল আঃ কে ভবিষ্যত কাবার অঞ্চলে, যেখানে তখন শুধুই ভীত ছিল, সেখানে নির্বাসন দেওয়ান৷ সেই বিবি সারার গরভে পুত্র সন্তানের সু খবর পাঠালেন আল্লাহ৷

৭২/قَالَتْ يَا وَيْلَتَى أَأَلِدُ وَأَنَاْ عَجُوزٌ وَهَـذَا بَعْلِي شَيْخًا إِنَّ هَـذَا لَشَيْءٌ عَجِيبٌ

অর্থ;-তিনি (হজরত সারা) বললেন, হায় কপাল! আমি সন্তান প্রসব করব! অথচ আমি বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এবং আমার স্বামীও বৃদ্ধ! এতো এক বিষ্ময়কর ব্যাপার!

৭৩/قَالُواْ أَتَعْجَبِينَ مِنْ أَمْرِ اللّهِ رَحْمَتُ اللّهِ وَبَرَكَاتُهُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ إِنَّهُ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ

অর্থ;-তারা বললেন, আপনি কি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিষ্ময় বোধ করছেন? হে গৃহবাসী, আপনাদের উপর আল্লাহর রহমত ও বরকত রয়েছে৷ নিশ্চয় তিনি প্রশংসিত ও মহিমাময়৷

# পাশে দাঁড়ানো হজরত সারা সালামুন আলাইহা ফেরেশ্তাদের দেওয়া সুখবর শুনে বিষ্ময়ে নিজেদের বার্ধক্যের কথা প্রকাশ কলরলেন৷ তাদর্শনে ফেরেশ্তাদয় বললেন, এটি আল্লাহর পাঠানো সংবাদ৷ এতে বিষ্ময়ের কিছুনেই৷ তিনি ইচ্ছে করলে যা কিছু করতে পারেন৷ আর এই গৃহের উপর আল্লাহর রহমত ও বরকত রয়েছে৷

‘আহলে বাইত’ বলতে কোরআনে স্ত্রীকেই বোঝানো হয়৷ রসুল সঃ তাতে বাড়তি হিসেবে, হজরত ফাতেমা, আলি, হাসান ও হোসাইনকেও যোগ করতে আল্লাহর কাছে অনুরোধ করে ছিলেন৷

৭৪/فَلَمَّا ذَهَبَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ الرَّوْعُ وَجَاءتْهُ الْبُشْرَى يُجَادِلُنَا فِي قَوْمِ لُوطٍ

অর্থ;-অতঃপর যখন ইব্রাহীমের মন থেকে ভয় দূর হল এবং তার কাছে সুসংবাদ এল, তখন তিনি আমাদের সাথে লূতের কওম সম্পর্কে বাদানুবাদ করতে লাগলেন৷

৭৫/إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَحَلِيمٌ أَوَّاهٌ مُّنِيبٌ

অর্থ;-অবশ্যই ইব্রাহীম বড়ই ধৈর্যশীল, কোমল অন্তর ও সতত আল্লাহ মুখী৷

# ফেরেশ্তাগন বললেন, তারা হজরত লূত আঃ এর অবাধ্য কওমের শাস্তি দিতেই এসেছেন৷ সেই সাথে সু সংবাদও দিয়ে গেলেন৷ হজরত ইব্রাহীম আঃ এর অন্তর ছিল রসুল সঃ ও হজরত আবু বকর রাঃ এর মত৷ শাস্তির কথা শুনে কোমল হৃদয় ব্যকুল হল৷ তিনি ফেরেশ্তাদের বললেন, যদি সেখানে চল্লিশ জন লোকও ইমানদার থাকে তবে কি তাদের শাস্তি বন্ধ করা যায়না? ফেরেশ্তরা বললেন, তাহলে হতে পারে৷ তিনি বললেন আর যদি তিরিশজন হয়! ফেরশ্তারা বললেন তাহলেও হতে পারে৷ এমনই করে তিনি পাঁচ জনে নেমে এলেন৷ এ ঘটনা তওরাতে পাওয়া যায়৷

৭৬/يَا إِبْرَاهِيمُ أَعْرِضْ عَنْ هَذَا إِنَّهُ قَدْ جَاء أَمْرُ رَبِّكَ وَإِنَّهُمْ آتِيهِمْ عَذَابٌ غَيْرُ مَرْدُودٍ

অর্থ;-হে ইব্রাহীম, এহেন ধারণা পরিহার করুন৷ আপনার পালন কর্তার হুকুম এসে গেছে, নিশ্চয়ই তাদের উপর সে আজাব আসবেই, যা কখনও প্রতিহত করা যাবেনা৷

# যখন ইব্রাহীম আঃ পাঁচজন ইমানদারের কথায় এলেন তখন ফেরেশ্তারা বললেন, সেখানে এক জনও নেই৷ আপনি কাদের সুপারিশ করছেন৷ আর আল্লাহর হুকম হয়েই গেছে৷ তাদের শাস্তি আর কোন ভাবেই রোহীত করা যাবেনা৷

৭৭/وَلَمَّا جَاءتْ رُسُلُنَا لُوطًا سِيءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا وَقَالَ هَـذَا يَوْمٌ عَصِيبٌ

অর্থ;-তারপর যখন আমার প্রেরিত (ফেরেশ্তা) রা লূতের কাছে এল, তখন তাদের কারণে তিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লেন৷ এবং তাদেরকে রক্ষা করতে সংকোচ বোধ করলেন, আর বললেন, আজ আমার অত্যন্ত সংকটময় দিন৷

# নবীর বাড়ি মেহমান এসেছেন, তিনি নিজেকে অসহায় মনে করলেন আর সংকোচ বোধ করলেন, তা মেহমানদের যত্ন করতে না পারার জন্য নয়৷ দুই জন অচেনা সু দর্শণ যুবক মেহমান, তাদেরকে তাঁর সমকামী অবাধ্য কওমের হাত থেকে বৃদ্ধ বয়সে নিরাপত্তা দিতে না পারার আশংকায়ই তিনি সংকুচিত হলেন আর বললেন আজ তার সামনে কঠিন সময় উপস্থিত৷

৭৮/وَجَاءهُ قَوْمُهُ يُهْرَعُونَ إِلَيْهِ وَمِن قَبْلُ كَانُواْ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ قَالَ يَا قَوْمِ هَـؤُلاء بَنَاتِي هُنَّ أَطْهَرُ لَكُمْ فَاتَّقُواْ اللّهَ وَلاَ تُخْزُونِ فِي ضَيْفِي أَلَيْسَ مِنكُمْ رَجُلٌ رَّشِيدٌ

অর্থ;-তাঁর কওমের লোকেরা স্বতস্ফুর্ত ভাবে তাঁর দিকে ছুটে আসতে লাগল, তারা পূর্ব থেকেই কূ-কর্মে তৎপর ছিল৷ তিনি (লূত) বললেন, হে আমার কওম, আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা৷ সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, অতিথীদের ব্যাপারে আমাদের লজ্জিত কোরনা৷ তোমাদের মধ্যেকি কোন বুদ্ধিমান নেই?

# লূত আঃ এর অবাধ্য সমকামী কওমের সর্দারেরা শিকারের আশায় নবীর বাড়ি এসে হাজির হল৷ লূত আঃ যা বললেন তা দুই ভাবে বলা যেতে পারে৷ প্রত্যেক নবী তার কওমের পিতৃ সদৃশ, বলা হয়েছে, ‘নবীর স্ত্রীরা তোমাদের মা’য়ের মত’৷ সেই অর্থে কওমের স্ত্রীগন নবীর কন্যা স্বরূপ৷ তাই লূত আঃ বললেন, তোমাদের ঘরে আমার যে মেয়েরা রয়েছে, তারাই তোমাদের কাছে পবিত্র তম৷ তাদের নিয়েই সন্তুষ্ট থাক, আর আল্লাহ কে ভয় কর৷ অথবা হয়ত লূত আঃ নিজের মেয়েদের তাদের সাথে বিয়ে দেবার কথাও বলে থাকবেন (আল্লাহ ভাল জানেন)৷

৭৯/قَالُواْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا لَنَا فِي بَنَاتِكَ مِنْ حَقٍّ وَإِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا نُرِيدُ

অর্থ;-তারা বলল, আপনিতো জানেন, আপনার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই৷ আর আপনি অবশ্যই জানেন আমরা কি চাই৷

৮০/قَالَ لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ

অর্থ;-তিনি (লূত) বললেন হায়! তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা যদি কোন সুদৃঢ় স্তম্ভের (দূর্গ) আশ্রয় থাকত!

# বৃদ্ধ লূত আঃ তাদের কবল থেকে মেহমানদের রক্ষার ব্যাপারে আক্ষেপ করে বললেন, আমার নিজের পেশী শক্তিও নেই বা নিরাপদ কোন বেষ্টনিও নেই৷ যার দ্বারা আমার আগন্তুক মেহমানদের নিরা পত্তা দিতে পারি৷

হাদিসে এসেছে, একজন নবী নিরাপত্তা বেষ্টনির মধেই থাকেন৷ অতএব এটি তাঁর সাময়ীক দূর্বলতা৷ যা নবুয়তের বাধা নয়৷

৮১/قَالُواْ يَا لُوطُ إِنَّا رُسُلُ رَبِّكَ لَن يَصِلُواْ إِلَيْكَ فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ اللَّيْلِ وَلاَ يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ إِلاَّ امْرَأَتَكَ إِنَّهُ مُصِيبُهَا مَا أَصَابَهُمْ إِنَّ مَوْعِدَهُمُ الصُّبْحُ أَلَيْسَ الصُّبْحُ بِقَرِيبٍ

অর্থ;-তাঁরা (ফেরেশ্তারা) বললেন, হে লূত আমরা আপনার রবের প্রেরিত ফেরেশ্তা, তারা কখনও আপনার কাছে পৌঁছতে পারবে না৷ অতএব আপনি রাতের বাকী অংশের মধ্যে আপনার ‘আহলে বাইত’ দের নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন৷ আর আপনাদের মধ্য হতে কেউ যেন পিছনে না তাকায়, কিন্তু আপনার স্ত্রী বাদে৷ অবশ্যই তার উপর সে আজাব আসবে যা তাদের উপর আসবে৷ ভোর বেলাই তাদের জন্য প্রতিশ্রুত সময়; ভোর কি নিকটবর্তী নয়!

# এতক্ষন পর মেহমানরা তাদের পরিচয় দিলেন৷ বললেন যে তারা আল্লাহ প্রেরিত ফেরেশ্তা, অবাধ্য কওমের শাস্তি নিয়েই এসেছেন, যার নির্ধারিত সময় ভোর বেলা৷ ভোর হতে বেশী বাকী নেই, অতএব লূত আঃ তাঁর পরিজন নিয়ে যেন বেরিয়ে যান, আর পিছন ফিরে কেউ না দেখে৷ আর লূত আঃ স্ত্রীকে যেন সঙ্গে না নেওয়া হয়৷ বলা বাহুল্য সেও অবাধ্য কওমের দলেই ছিল, তাই শাস্তি তারও প্রাপ্য৷ দুইজন নবী যাঁরা আল্লাহর গজব থেকে নিজেদের স্ত্রীদের বাঁচাতে পারেন নি, তাদেরই একজন হজরত লূত আঃ ও অপর জন হজরত নূহ আঃ৷ সুরা ‘তাহরীম’ এ এনাদের কথা জানা যাবে৷

৮২/فَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ مَّنضُودٍ

অর্থ;-অবশেষে যখন আমার আদেশ এসে গেল তখন আমি জনপদটিকে উল্টিয়ে দিলাম৷ এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর বর্ষণ করলাম৷

# ভূমী কম্পের দ্বারা জনপদটিকে উল্টে দেওয়া হল, তার সাথে কাঁকরের বৃষ্টি দিয়ে তাদের নিশ্চিহ্ন করা হল৷ ‘সিজ্জীল’ শব্দটি ফার্সী ভাষা থেকে এসেছে, যা ছিল ‘সঙ্গে গীল’৷ ধূলোর উপর সামান্য দুচার ফোঁটা বৃষ্টি পড়লে তা গোল দানায় বা কাঁকরে পরিনত হয় রোদে তা শক্ত হয়ে যায় তাকেই ‘সঙ্গে গীল’ বা ‘সিজ্জীল’ বলে৷

৮৩/مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِينَ بِبَعِيدٍ

অর্থ;-যা বিশেষ ভাবে চিহ্নিত ছিল আপনার রবের কাছে, আর সেই জনপদ এই জালীমদের থেকে বেশী দূরে নয়৷

# সেই কাঁকরের প্রতিটি কার উপর পড়বে আল্লাহ তায়ালাই জানতেন৷ তৎকালে আরব অঞ্চলের বানিজ্য কাফেলা, উত্তর হতে দক্ষীন আর পূব হতে পশ্চিমেই মূলতঃ যাতায়ত করত৷ আর এই ধ্বংস প্রাপ্ত অঞ্চলগুলী তাদের যাতায়াতের পথেই ছিল৷ এবং তা মক্কা হতে বেশী দূরেও নয়৷ এ কথাগুলী মক্কার মুশরীকদের জন্য রুকুর উপসংহারে বলে দিওয়া হল৷

## লক্ষ্যনীয় যে আগের তিন রসুলের বেলায় ‘আখাহুম’ বা তাদের ভাই, বলা হয়েছে ও তাঁরা ‘বাইয়েনা’ বা সৎ চরিত্রের বলে পরিচয় করা হয়েছে, কারণ কওমের লোকদের মাঝেই তাঁরা অতীতে ছিলেন৷ কিন্তু হজরত লূত আঃ এর বেলায় এ কথা গুলো বলা হয়নি৷ কারণ তিনি ছিলেন বহিরাগত, হজরত ইব্রাহীম আঃ এর ভাইপো৷ রসুল মনোনিত করে ঐ কওমে আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছিলেন৷ সেখানেই তিনি বিয়েও করে ছিলেন৷

বিষয়: বিবিধ

১৪৮৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343778
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:৫০
আবাবীল লিখেছেন : শুকরিয়া
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:০০
285180
শেখের পোলা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খাইরান৷ ধন্যবাদ৷
343779
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:২৮
নাবিক লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগলো..
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:০১
285181
শেখের পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে৷
343823
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৩৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
আল্লাহতায়লার এতবড় নিদর্শন সামনে থাকা সত্বেও আমরা সমকামিতার মত বিষয়কে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা লিপ্ত আছি।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩২
285248
শেখের পোলা লিখেছেন : নিজেদের খারাবী নিজেরাই ডেকে আনছি৷ সাবধান থাকুন৷ ধন্যবাদ৷
343832
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : সমকামিতা হল মানবাধিকার - হিলারী ক্লিন্টন

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৪
285249
শেখের পোলা লিখেছেন : চিৎপটাংও হবে মানবাধিকার৷ হিলারীকে তখন আর পাওয়া যাবেনা৷ধন্যবাদ৷
343841
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:২২
মাটিরলাঠি লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ। ভালো লাগলো। জাজাকাল্লাহু খাইরান। Rose Rose
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৪
285250
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ৷
343859
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৩
আফরা লিখেছেন : অত্যান্ত মনোযোগের সাথে পড়লাম খুব ভাল লাগল ।

জাজাকাল্লাহ খাইরান চাচাজান !
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৫
285286
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷ শুভেচ্ছা রইল৷
343871
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২০
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম
আল্লাহ আপনার শ্রম কবুল করে নিন এবং আমাদেরকেও সওয়াবে শামিল করুণ! জাযাকাল্লঝু খাইর!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৬
285287
শেখের পোলা লিখেছেন : অআলাইকুমুস সালাম অরহমাতুহু৷ আমিন৷ শুকরিয়া৷
343873
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৫৪
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : খুব ভালো লাগলো। আল্লাহ যদি আবারও পাঠাতেন সেই ফেরেশতাদের, যারা লুত (আঃ) এর কাওমের প্রতি প্রেরিত হয়ৈছিলেন!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৯
285288
শেখের পোলা লিখেছেন : আল্লাহ ইচ্ছা করলে পাঠাবেন৷ আল্লাহ ছোটখাট বিপর্যয় দিয়ে সাবধান করেই চলেছেন৷ মানুষ আমলে নেয়না৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File