%% আর যারা সীমা লঙ্ঘণ করেছিল, এক বিকট গর্জন তাদেরকে পাকড়াও করল, ফলে তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল৷%%

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:৫০:৫৮ সকাল

(উর্দূ বয়ানুল কোরআনের ধারা বাহিক বাংলা অনুবাদ)

সুরা হুদ রুকু;-৬ আয়াত;-৬১-৬৮

আদ জাতি ধ্বংস হল৷ আল্লাহ তায়ালা হুদ আঃ ও তাঁর সাথে মুমিনদের নিরাপদে রক্ষা করলেন৷ কাল ক্রমে এদের মধ্যহতেই প্রভাবশালী সামুদ নামের এক ব্যাক্তির বংশধরেরা সামুদ জাতি রূপে প্রকাশ পায়৷ এবং তারাও শির্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে৷ আল্লাহ তায়ালা তাদের রসুল হিসেবে হজরত সালেহ আঃ কে মনোনিত করেন৷ তারই বর্ণনানিয়ে আসছে এ রুকু;

৬১/وَإِلَى ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَالِحًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُواْ اللّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ هُوَ أَنشَأَكُم مِّنَ الأَرْضِ وَاسْتَعْمَرَكُمْ فِيهَا فَاسْتَغْفِرُوهُ ثُمَّ تُوبُواْ إِلَيْهِ إِنَّ رَبِّي قَرِيبٌ مُّجِيبٌ

অর্থ;-আর সামুদ জাতির প্রতি তাদের ভাই সালেহ কে পাঠিয়েছিলাম৷ তিনি বললেন, হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর৷ তিনি ছাড়া তোমাদের কোন উপাস্য নেই৷ তিনিই তোমাদেরকে জমীন থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর সেখানেই তোমাদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন৷ তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, পুনরায় তারই দিকে ফিরে এস৷ নিশ্চয়ই আমার রব কাছেই আছেন৷ তিনি (আবেদন) কবুল করেন৷

৬২/قَالُواْ يَا صَالِحُ قَدْ كُنتَ فِينَا مَرْجُوًّا قَبْلَ هَـذَا أَتَنْهَانَا أَن نَّعْبُدَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا وَإِنَّنَا لَفِي شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ

অর্থ;-তারা বলল, হে সালেহ, তুমিতো ছিলে এর আগে আমাদের আশা ভরসার স্থল৷ তুমিকি আমাদের নিষেধ কছ তাদের উপাসনা করতে, যাদের উপাসনা আমাদের বাপ-দাদারা করত! অবশ্যই আমরা সন্দেহের মধ্যে রয়েছি যে বিষয়ে তুমি আমাদের ডাকছ, মন সায় দেয় না৷

৬৩/قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَى بَيِّنَةً مِّن رَّبِّي وَآتَانِي مِنْهُ رَحْمَةً فَمَن يَنصُرُنِي مِنَ اللّهِ إِنْ عَصَيْتُهُ فَمَا تَزِيدُونَنِي غَيْرَ تَخْسِيرٍ

অর্থ;-(সালেহ) বললেন, হে আমার কওম, তোমরা কি দেখনি, আমি ‘বাইয়েনা’র উপর ছিলাম৷ আমার উপরে তার(আল্লাহর) রহমত এল৷ আমি দি তার অবাধ্য হই তবে কে আমাকে(আল্লাহর) হাত থেকে রক্ষা করবে? তোমরাতো আমার ক্ষতি বৃদ্ধি ছাড়া কিছুই করতে পারবে না৷

# একজন নবী জন্মগত ভাবেই নম্র, ভদ্র ও সত্য পথের পথিক হয়েই থাকেন৷ আল্লাহ তায়ালা তার উপর ওহী পাঠান যাতে তাঁর জ্ঞানের বৃদ্ধি হয়৷ বিচক্ষনতার দরুন সামুদ কওম সালেহ আঃ এর কাছে তাদের প্রচলিত ধ্যান ধারণারই উন্নতি আশা করত৷ কিন্তু তারা আশাহত হল যখন তিনি তাদের শির্ক ছেড়ে আল্লাহর পথে আসতে বললেন৷ অন্যন্ন জাতির মত তারাও তাদের বাপ দাদার ধর্ম বিশ্বাস ত্যাগ করতে অপারগতা জানাল৷ সালেহ আঃ তাঁর অতীত সততার কথা বলে তাঁর কথা বিশ্বাস যোগ্য করতে চাইলেন ও আরও বললেন, যদি আমি তোমাদের কথামত আল্লাহর আদেশ অমান্য করি তবে আমি অবশ্য বিপদে পড়ব, আল্লাহ আমায় রেহাই দেবেন না৷

৬৪/وَيَا قَوْمِ هَـذِهِ نَاقَةُ اللّهِ لَكُمْ آيَةً فَذَرُوهَا تَأْكُلْ فِي أَرْضِ اللّهِ وَلاَ تَمَسُّوهَا بِسُوءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابٌ قَرِيبٌ

অর্থ;-হে আমার কওম, এটি আল্লাহর উটনী; তোমাদের জন্য নিদর্শন৷ সুতরাং একে ছেড়ে দাও, যেন আল্লাহর জমীনে বিচরণ করে খায়৷ অসৎ উদ্দেশ্যে একে স্পর্শ কোরনা৷ ফলে আকস্মিক আজাব তোমাদের গ্রাস করতে পারে৷

৬৫/فَعَقَرُوهَا فَقَالَ تَمَتَّعُواْ فِي دَارِكُمْ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ ذَلِكَ وَعْدٌ غَيْرُ مَكْذُوبٍ

অর্থ;-তবুও তারা তাকে হত্যা করল৷ তিনি (সালেহ) বললেন, তোমরা নিজ গৃহে তিনদিন উপভোগ করে নাও৷ এটা এমন ওয়াদা যা মিথ্যা হবার নয়৷

# মোজেজার দাবীর প্রেক্ষতে আল্লাহ তায়ালা এ উটনীটিকে তাদের দিয়ে ছিলেন, যার কথা আমরা সুরা আ’রাফে জেনে এসেছি৷ উটনীটিকে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে স্পর্শ করতে নিষেধ সত্যেও তারা উটনীটিকে হত্যা করল৷ তখন সালেহ আঃ তাদের আসন্ন বিপদের কথা জানালেন, বললেন, তোমরা নিজ বাড়িতে তিনদিন যা উপভোগ করার তা করে নাও৷ তোমাদের অবাধ্যতার শাস্তি চলে আসবে৷ আর এ ওয়াদার কোন ব্যাতিক্রম হবেনা৷

৬৬/فَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا صَالِحًا وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَمِنْ خِزْيِ يَوْمِئِذٍ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ

অর্থ;-আর যখন আমার নির্দেশ এল তখন আমি নিজ অনুগ্রহে সালেহ ও তার সাথে যারা ইমান এনেছিল তাদের রক্ষা করলাম এবং তাদেরকে সেদিনের লাঞ্ছনা থেকে বাঁচালাম৷

৬৭/وَأَخَذَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ

অর্থ;-আর যারা সীমা লঙ্ঘন করেছিল, এক বিকট গর্জন তাদেরকে পাকড়াও করল, ফলে তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল৷

৬৮/وَأَخَذَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ

অর্থ;-যেন তারা সেখানে কোন দিনই ছিলনা৷ জেনে রেখো, সামুদ জাতি তাদের রবকে অস্বীকার করেছিল৷ জেনে রেখো সামুদ জাতির পরিনাম হল ধ্বংস৷

# সালেহ আঃ এর বলে দেওয়া তিন দিন যেতে না যেতেই তারা এক বিকট গর্জনে মৃত্যু বরণ করল৷ সামুদ জাতি পাহাড় কেটেও বিরাট বিরাট বাড়ি বানিয়েছিল৷ কিন্তু সে জনপদ বিরাণ হল, যেন সেখানে কেউ কোনদিন ছিলই না এমন হল৷

বিষয়: বিবিধ

১০৬৬ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

341981
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:০৬
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : অনেক জ্ঞানের কথা। জাজাকাল্লাহু খায়র।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫০
283460
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনার জন্যও৷ ধন্যবাদ৷
341983
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৪৯
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, জাজাকাল্লাহুল খাইরান, অনেক সুন্দর পোস্ট
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫১
283462
শেখের পোলা লিখেছেন : আলহামদু লিল্লাহ৷ শুভেচ্ছা রইল ভাতিজা৷
342004
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শুনেছি সেীদি আরবের উত্তরাঞ্চলে এখনও সামুদ জাতির বিশাল নিদর্শন দেখা যায়। তাবুক অভিযানের সময় কেবল মাত্র একটি কূপ ছাড়া এই এলাকার বাকি কূপের পানি ব্যাহার করতে রাসুল (সাঃ) নিষেধ করেছিলেন। এলাকাটি এখনও বিরান।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
283465
শেখের পোলা লিখেছেন : অনেক কিছুই নিদর্শণ হিসেবে আল্লাহ রক্ষণ করেছেন৷আপনাকে ধন্যবাদ৷
342052
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:০৩
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ জাযাকাল্লাহ খাইর
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
283466
শেখের পোলা লিখেছেন : অআলাইকুমুস সালাম অ রমাতুল্লাহ৷ আমিন৷আপনাকেও আল্লাহ জাজা দিক৷ধন্যবাদ৷
342055
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:১৯
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : অনেক ভালা ভালা কথা কইছেন। যার কথার দালালীতে নেমেছেন তিনিই আন্নেরে দালালীর উপযুক্ত প্রতিদান দিবেন বলে মনে অয়। মুই দোয়া করি আন্নে যেন হারা জীবন সেই একক সত্বার দালালীতে নিয়োজিত থাইক্যা নিত্য নতুন কিছু সাপোর্টার তৈরী কইবার পারেন। চিন্তার কিছুই নেই, মুইও কেন্তু নিয়মিত দালালী কইরবার না পারলেও সেই একক সত্বার পক্ষে চামচাগিরি করে বেড়াই। চামচাগিরি করার অপরাধে হযরত গাইরুল্লাহ শাহ (লা.আ.)এর রোষাণলের শিকার হয়ে মেলা দিন থেকেই বাড়ী ঘরছাড়া।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০০
283467
শেখের পোলা লিখেছেন : কি আর করার৷ বৃৃৃৃহৎ সেই সত্তায় কইছে্ন রসুলের চামচা হও, আবার রসুল কইছেন আমার পক্ষে দালালী কর৷ তাই কইরা যাইতাছি৷ অন্ততঃ কইতে পারুম গ্যাঞ্জাম খান সাক্ষী আছে যে মুই দালালী কইরাছি৷ আমনেরে ধন্যবাদ৷
342111
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৬
আফরা লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইর চাচাজান ।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৩৯
283567
শেখের পোলা লিখেছেন : মনামা'র জন্য অনেক শুভেচ্ছা৷
342149
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৩৮
শেখের পোলা লিখেছেন : মনামা'র জন্য অনেক শুভেচ্ছা৷
342255
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:৪২
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ।

আল্লাহ আমাদের সীমালংঘন মূলক প্রতিটি কাজ থেকে রক্ষা করুণ ! আমীন!

জাযাকাল্লাহু খাইর!
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:১৩
283677
শেখের পোলা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খাইরান৷
342284
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:১৯
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : শিরোনামে নতুনত্ব আনা দরকার।
যাযাকুমুল্লাহ।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:২৬
283679
শেখের পোলা লিখেছেন : আমার শিরনাম গুলি কোরআনের আয়াত৷ আমি কোরআন প্রচার করি, তাই শিরনামেও তার ছোঁয়া থাকে৷ পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ৷
১০
342359
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৭
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। যাজাকাল্লাহ।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:৪৫
283838
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷ ঈদের আগাম শুভেচ্ছা রইল৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File