"আর প্রতিদানের আশায় কাউকে কিছু দান করবেন না"৷
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ১১ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:০৪:৫৩ সকাল
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
(৭৪) সুরা আল মুদ্দাস্সীর (মক্কী) রুকু ২টি আয়াত;-৫৬টি
জোড়ার অপর সুরাটি এই সুরা আল মুদ্দাস্সীর৷ এটি মক্কী সুরা৷ এতে দুইটি রুকু রয়েছে ও আয়াত রয়েছে ছাপান্নটি৷ সুরা মুযাম্মিলের মত এটিও তিন অংশে বিভক্ত৷ প্রথম সাত আয়াতে রসুলের প্রতি আদেশ, দ্বিতীয় তিন আয়তে কেয়ামত ও বাকী ‘জারনী’-অবাধ্যদেরকে আমার (আল্লার) জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া৷ সুরা মুযাম্মিলের ২০ আয়াতটির মত এ সুরার ৩১ আয়াতেও মত ভেদ রয়েছে৷
সুরা মুদ্দাস্সীরের প্রথম সাতটি আয়াত এক সাহাবীর বর্ণনায় প্রথম ওহী বলা হয়েছে৷ কিন্তু আমরা জেনে এসেছি যে, সুরা ‘আলাক, এর প্রথম চার আয়াত প্রথম ওহী ও সুরা ‘কলম’ এর প্রথম সাতটি আয়াত৷ প্রথম ওহীর প্রকাশে কোরাইশদের বিরূপ মন্তব্য রসুলের ব্যথিত হৃদয়ে শান্ত্বনা দিতেঈই দ্বিতীয় ওহী আসে৷ রসুল সঃ এর মনোবল বা আত্মীক শক্তি বর্ধনের প্রশিক্ষনের বিষয়, ‘কেয়ামুল লাইল’ নিয়ে আসে তৃতীয় ওহী, সুরা মুযাম্মিলের নয়টি আয়াত৷ সেই সুবাদে সুরা মুদ্দাস্সীরের প্রথম সাতটি আয়াত চতুর্থ ওহী৷
একে প্রথম ওহী বলার পিছনেও যুক্তি আছে, তা হল, নবীগণ নবীর আদর্শ নিয়েই জন্মান৷ পরে এক সময় আসে তাঁর নবুয়তের সীকৃতি বা নবুয়তের প্রকাশ৷ রসুল সঃ তার ব্যতিক্রম নন৷ সুরা ‘আলাক’ এর চার আয়াতে তাঁর নবুয়তের প্রকাশ ঘটে৷ তৃতীয় ওহী সুরা ‘মুযাম্মিলের’ ‘কেয়ামুল লাইল’ এ কোরআনকে ধীরে ধীরে বারংবার পাঠের মাধ্যমে সংযম ও আত্মিক শক্তি ও দৃঢ়তার প্রশিক্ষন শুরু হয়৷ এর পর দীর্ঘকাল কোন ওহী আসেনা৷ ঐ সময়টিতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর শিক্ষার জন্য হজরত ইস্রাফীল আঃ কে নিয়োগ দেন৷ তিনি পুঁথীগত ক্ষিক্ষায় উম্মী বা অশিক্ষীত ছিলেন, কিন্তু তাকে আমরা মূর্খ বলব না৷ (নাউজু বিল্লাহ)
শৈশবে এতীম, কৈশোরে রাখাল ও যৌবনে কামলা, নিজের মূলধন ছিলনা তাই অন্যের ব্যবসা পরিচালনা করে জীবিকা চালিয়েছেন৷ সততা ও কর্ম দক্ষতার কারনেই হজরত খাদিজা তাঁকে স্বমীত্বে বরণ করেন৷ এতে তাঁর জীবিকার একটা ব্যবস্থা হয়৷
তিনি যেমন ছিলেন বহীর্মূখী অর্থাৎ সকলের সাথে মিলে মিশে হৈহুল্লোড় খেলাধূলা, কাজকর্ম করতে ভাল বাসতেন, ঠিক তেমনই ছিনে অন্তর্মূখী, একাকিত্বে বসে চিন্তা ভাবনা, গবেষণা করতেও ভালবাসতেন৷
হজরত আয়েশা রাঃ হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁর বয়স যখন চল্লিশ বৎসর হয় তখন তিনি দূরে পাহাড়ের হেরা গুহায় নির্জনে একাকী বসে, সৃষ্টি, স্রষ্টা, সমাজ, মানুষ, জন্ম মৃত্যু নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতেন৷ এমনই এক দিনে হজরত জিবরাঈল আঃ আল্লাহর হুকুমে দেখা দিলেন, পড়িয়ে গেলেন সুরা ‘আলাকের’ চার আয়াত, প্রথম ওহী৷ এর পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওহী৷ তার পর দীর্ঘ বিরতি৷
হেরা গুহায় যাতায়াত চলতেই থাকে৷ এমনই একদিন গুহা থেকে নমে আসছেন, আওয়াজ এল, হে মোহাম্মদ, তিনি আশেপাশে তাকালেন কোথাও কেউ নেই৷ আবার হাঁটছেন, আবার ডাক এল, আবারও একিক ওদিক তাকালেন, কেউ নেই৷ আবার পা বাড়ালেন, আবারও শোনা গেল, হে মোহাম্মদ, ভয় পেলেন, সামনে উপরের দিকে দৃষ্টি দিলেন, দেখলেন, হেরা গুহায় আগত সেই ফেরেশ্তা দিগন্ত বিস্তৃত হয়ে আপন অবয়বে দণ্ডায়মান৷ কিভাবে চিনলেন, হেরা গুহায় প্রথম বার কোন অবয়বে এসেছিলেন তা আমরা পরে জানব৷(ইনশাআল্লাহ)
তিনি ভীত হয়ে বাড়ি ফিরলেন ও কম্বল মুড়িদিয়ে শুয়ে রইলেন৷ এ অবস্থায় নাজিল হল এ সুরার প্রথম সাতটি আয়াত৷ যার মাধ্যমে শুরু হল তাঁর রেসালাত৷ দীর্ঘ বিরতীর পর হওায় একে প্রথম ওহী বলা হয়েছে৷৷ এর পরই ওহীর সিলসিলা চালু হয়৷
সুরা আল মুদ্দাস্সীর রুকু;-১ আয়াত;-১-৩১
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
১/يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ
অর্থ;-হে বস্ত্রাবৃত (রসুল)৷
২/قُمْ فَأَنذِرْ
অর্থ;-উঠুন, সতর্ক করুন৷
# সুরা মুযাম্মিলের সাথে প্রথম দিকের আয়াতগুলির যথেষ্ট মিল রয়েছে৷ ওনে ছিল ‘কেয়ামুল লাইল’ আর এখানে হল ‘কেয়ামুন্নাহার’, ‘রেসালাতের’ প্রধান কাজ সকর্তী করণ৷ অবশ্যই তা খানকা ও শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝেই সীমাবদ্ধ করা নয়, যার প্রমান পাওয়া যাবে তৃতীয় আয়াতে৷ আর তার জন্য যে মনোবল প্রয়োজন তার প্রশিক্ষন হয়েছে সুরা মুযাম্মিলে৷ কতটুকু কোরআনইবা নাজিল হয়েছিল! তাকেই রাতের অর্ধাংশ বা তার চাইতে কিছু কমবেশী সময় ধরে বার বার আবৃত্তি করতে বলা হয়েছে৷ যাতে গুরুভার বহণের উপযুক্ততা তৈরী হয়৷ যদিও আমরা সুরা ‘কলমে’র ৪র্থ আয়াতে পড়েছি ‘আর আপনি নিশ্চয়ই মহান চরিত্রের অধিকারী’৷ এই রেসালাতই সেই গুরুভার৷ প্রথম তিনটি আয়াতের অন্তরালে আছে রসুল সঃ এর জীবনের তিনটি অধ্যায়্, কৈশোর, যৌবন, চিন্তা চেতনায় পরিপক্ক পুরুষ৷
পথম ওহীর পর ভীত কম্পিত অবস্থায় হজরত খাদিজা রাঃ রসুলকে সঃ কে আপন চাচাতো ভাই আধ্যাত্মীক পুরুষ, বারকা ইবনে নওফেলের কাছে নিয়ে গিয়ে ছিলেন৷ বিবরণ শুনে তিনি বলেছিলেন যে, এটা তাই যা ঈশা ও মুসা আঃ এর উপর এসেছিল৷ শহরবাসী তোমাকে বহিষ্কার করে ছাড়বে৷ কথা শুনে রসুল সঃ অবাক হয়েছিলেন, এই বলে যে, যারা আমার এত অনুগত, ভক্ত, এত সম্মান করে তারা আমায় শহর থেকে বার করে দেবে! তিনি বলেছিলেন যে, হাঁ, হয়ত তখন আমি থাকবনা৷ যারাই রেসালাতের দাবী করেছে, তারাই কওমের দুশমন হয়েছে৷ সত্যই তিনি রেসালাত প্রকাশ হওয়া অবধি বেঁচে ছিলেন না৷
৩/وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ
অর্থ;-আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করুন৷
# রবতো সর্বদাই শ্রেষ্ঠ আছেন, তাঁকে আবার কেমন করে শ্রেষ্ঠ করা যাবে! হাঁ, তিনি তাঁর স্থানে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ আছেন৷ তবে তা মন্য করা হচ্ছেনা৷ জীবনের সর্বত্রই তাঁকে শ্রেষ্ঠ মানতে হবে, এবং তা সম্ভব একমাত্র তাঁর দ্বীন, বীধি বিধান ব্যবহারিক জীবনে কায়েম করে৷
৪/وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ
অর্থ;-আপনার পোশাক পবিত্র করুন৷
৫/وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ
অর্থ;-এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন৷
# সাধারণ ভাবে এমন অর্থ হলেও অন্তর্নিহীত অর্থ হল, ভীতর ও বাহীর পরিষ্কার করুন৷ আচরণে বা অন্তরে যেন গায়রুল্লার স্থান না থাকে৷
৬/وَلَا تَمْنُن تَسْتَكْثِرُ
অর্থ;-আর প্রতিদানের আশায় কাউকে কিছু দান করবেন না৷
# কারো সাথে সম্পর্ক ছেদ হয় এমন আচরণ করবেন না৷ সকলকে মানিয়ে চলুন৷ দ্বীনের জিদ্দ জোহদ ব্যহত হয়, এমন কাজথেকে দূরে থাকুন৷
৭/وَلِرَبِّكَ فَاصْبِرْ
অর্থ;-এবং আপনর রবের উদ্দেশ্যে সবর (অপেক্ষা) করুন৷
# তিন অংশের প্রথম অংশ শেষ হল৷, যেমনটি ছিল সুরা ‘মুযাম্মিলে’, সুরা ‘নূরে’ আর পাওয়া যাবে সুরা ‘আলাকে’৷
৮/فَإِذَا نُقِرَ فِي النَّاقُور
অর্থ;-যেদিন সিঙ্গায় ফুক দেওয়া হবে;
৯/فَذَلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ عَسِيرٌ
অর্থ;-সেদিন হবে কঠিন দিন৷
১০/عَلَى الْكَافِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍ
অর্থ;-কাফেরদের জন্য এটা সহজ নয়৷
# সুরা ‘মুযাম্মিলে’ বলা হয়েছে যে, ঐদিন আসমান ফেটে যাবে, পাহাড়গুলো ধূলারাশির মত উড়তে থাকবে আর সে ভয়ে বালকরা বৃদ্ধ হয়ে যাবে৷
১১/ذَرْنِي وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًا
অর্থ;-যাকে আমি অনন্য সৃষ্টি করেছি, তাকে আপনি আমার হাতে ছেড়ে দিন৷
# উল্লেখিত ব্যাক্তি সম্পর্কে সকলেই একমত যে, এখানে ওয়ালিদ বিন মুগীরার কথা বলা হয়েছে৷ আল্লাহ তাকে, তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান করে সৃষ্টি করেছিলেন৷
১২/وَجَعَلْتُ لَهُ مَالًا مَّمْدُودًا
অর্থ;-আমি তাকে বিপুল ধন-সম্পদ দিয়েছি,
১৩/وَبَنِينَ شُهُودًا
অর্থ;-এবং সদা সঙ্গী পুত্রবর্গ দিয়েছি৷
১৪/وَمَهَّدتُّ لَهُ تَمْهِيدًا
অর্থ;-আর তাকে খুব সচ্ছলতা দিয়েছি৷
১৫/ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ
অর্থ;-এর পরও সে আশাকরে যে, আমি তাকে আরও দেই৷
১৬/كَلَّا إِنَّهُ كَانَ لِآيَاتِنَا عَنِيدًا
অর্থ;-কখনই নয়, সে আমার নিদর্শণ সমূহের বিরুদ্ধাচারণ কারী,
১৭/سَأُرْهِقُهُ صَعُودًا
অর্থ;-আমি সত্তরই তাকে শাস্তির পাহাড়ে আরোহণ করাব৷
# আল্লাহ তায়ালা ওয়ালিদ বিন মুগীরাকে শুধু বিপুল ধন-সম্পদই নয় কয়েকটি পুত্র সন্তান যারা তার পাশেই ছিল৷ মক্কা ও তায়েফ উভয় এলাকাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক জমি, বাগান, বাড়িও দিয়েছিলেন৷ তবুও তার চাহিদার শেষ ছিলনা৷ সে ছিল আল্লাহর নিদর্শণ অমান্যকারী৷ আল্লাহ তাকে আর সম্পদ দেবেন না বরং শিঘ্রই তাকে শাস্তীর জায়গায় পাঠাবেন৷
সে ছিল প্রবীন ও বিচক্ষণ ব্যাক্তি৷ রসুলের সাথে আপোষ প্রস্তাবে সেই ছিল অগ্রগন্য৷ আমাদের কিছু মেনে নাও আর আমরা তোমরা কিছু মানি৷ নয়ত আমরা, কোরাইশরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে কমজোর হয়েপড়ব৷ এ প্রস্তাব ছিল তারই৷
তাদের মধ্যে আলোচনার বৈঠক চলছে, কি ভাবে রসুল সঃ কে নিরস্ত করা যায়৷ মতা মত নেওয়া হচ্ছে৷ কেউ বলে মোহাম্মদ জ্বীনের আশরে পাগল হয়েছে, কেউ বলে কাহিন (যোগী) হয়েছে, কেউ বলে সে কবি হয়েছে, কেউ বলে যাদুকর৷ বাইরের মানুষ এসে সব শোনে, দেখে, বিচক্ষন প্রবীন হিসাবে তার মতামত জানতে চায়৷ সে বলে, আমি অনেক কাহিনকে জানি, মোহাম্মদ তাদের মত নয়, কবিও নয়৷ সকলে রসুল সঃ সামনে আসে৷ সেখানে যে চিত্রের অবতারণা হয় তা পরের কয়েকটি আয়াতে আঁকা হয়েছে৷
১৮/إِنَّهُ فَكَّرَ وَقَدَّرَ
অর্থ;-সে চিন্তা করেছে এবং মনস্থির করেছে,
১৯/فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ
অর্থ;-অতএব, ধ্বংস হোক সে, কেমন করে সে এরুপ সিদ্ধান্ত করল!
২০/ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ
অর্থ;-পুনরায় সে ধ্বংস হোক, কেমন করে সে এমন সিদ্ধান্ত নিল!
২১/ثُمَّ نَظَرَ
অর্থ;-সে আবার দৃষ্টিপাত করল৷
২২/ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ
অর্থ;-অতঃপর সে ভ্রুকুঞ্চিত করল ও মুখ বিকৃত করল,
২৩/ثُمَّ أَدْبَرَ وَاسْتَكْبَرَ
অর্থ;-পরে সে পিছনে ফিরল ও অহংকার করল৷
২৪/فَقَالَ إِنْ هَذَا إِلَّا سِحْرٌ يُؤْثَرُ
অর্থ;-অবশেষে সে ঘোষণা করল; এ-তো লোক পরম্পরায় প্রাপ্ত যাদু ছাড়া আর কিছু নয়৷
২৫/إِنْ هَذَا إِلَّا قَوْلُ الْبَشَر
অর্থ;-এ-তো নিছক মানুষেরই কথা৷
# সকলে মিলে রসুলের কাছে এল৷ বিচক্ষণ ব্যক্তি বিচক্ষনতার সাথে রসুল সঃ কে নিরীক্ষন করল, তারপর তির্যক দৃষটিতে আবার অবলোকন করে বিজয়ের মুখ বাঁকানো হাঁসি হাঁসল ও পিছনে ফিরে আসল ও সিদ্ধান্ত বা বিজ্ঞ পর্যবক্ষণের একমাত্র ফলাফল ঘোষণা করল যে, মোহাম্মদ লোক পরম্পরায় সমাজে চলে আসা এক জন যাদুকর আর সে যা শোনায় (কোরআন) তা মানুষেরই কথা৷
২৬/سَأُصْلِيهِ سَقَرَ
অর্থ;-আমি তাকে অচিরেই সাকারে (আগুন) দাখিল করব৷
২৭/وَمَا أَدْرَاكَ مَا سَقَرُ
অর্থ;-আপনিকি জানেন সাকার কি?
২৮/لَا تُبْقِي وَلَا تَذَرُ
অর্থ;-এটা কাউকে অক্ষতও রাখবে না এবং ছাড়বেও না৷
২৯/لَوَّاحَةٌ لِّلْبَشَر
অর্থ;-এটা মানুষকে দগ্ধ করে বিকৃত করে দেবে৷
৩০/عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ
অর্থ;-তার উপর নিয়োজিত আছে উনিশ জন৷(ফেরেশ্তা)
# সেই জাহান্নামের (সাকার) দারোগা হিসাবে উনিশজন ফেরেশ্তা নিযুক্ত আছেন৷ মুশরীকরা এই আয়াতটি নিয়ে মশকরা শুরু করে৷৷৷ একজন এমনও বলে যে, উনিশজনের দশজনের জন্য আমি একাই যথেষ্ট, বাকী নয়জন তোমরা সকলে সামলাবে৷ এই দাম্বিক মশকরার জবাব পরের আাতে দেওয়া হয়েছে, যদিও সুরা মুযাম্মিলের ২০তম আয়াতের মত এ আয়াতটিরও নাজিলের সময় নিয়ে মতভেদদ আছে৷ তবে হীজরতের অল্প আগেই নাজিল হওয়ার পক্ষেই অধিকাংশের মত৷৷
৩১/وَمَا جَعَلْنَا أَصْحَابَ النَّارِ إِلَّا مَلَائِكَةً وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا لِيَسْتَيْقِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَيَزْدَادَ الَّذِينَ آمَنُوا إِيمَانًا وَلَا يَرْتَابَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُونَ وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَذَا مَثَلًا كَذَلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ وَمَا هِيَ إِلَّا ذِكْرَى لِلْبَشَر
অর্থ;-আর আমিতো কেবল ফেরেশ্তাদেরকেই জাহান্নামের তত্বাবধায়ক রেখেছি৷ আর শুধু কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যই এ সংখ্যা রেখেছি৷যাতে মুমিনদের ইমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবী ওমুমিনরা সন্দেহ পোষণ না করে৷ এবং যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা ও কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এ উদাহরণ দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছেন? এমনই ভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা করেন সৎপথে পরিচালিত করেন৷ আপনার রবের সেনা বাহিনীর সংখ্যা তিনি ছাড়া কেউ জানেনা৷ আর দোজখের এই বর্ণনাতো কেবল উপদেশ মাত্র৷
#৷জাহান্নামের উনিশজন দারোগার কথা তাওরাতেও আছে, তাই মুমিন বলে ইহুদী মুমিনদের ইমান বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে, কেননা কোরআন তাওরাতের সেই কথার সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ আর তাতে অন্য ইহুদী ও নও মুমিনরা যেন সন্দেহ নাকরে৷ আল্লাহর সেনা বাহিনী কত বড় তা একমাত্র তিনিই জানেন৷ আর প্রহরীরা ফেরেশ্তা মানুষ নয় যে তাদের পরাস্ত করা যাবে৷ কোরআনে উনিশ সংখ্যাটির আরও গুরুত্ব রয়ছে, যার কিছু জানা গেছে৷ হয়ত আরও আছে৷
বিষয়: বিবিধ
১২৬৭ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মানুষ এই আমল খুব ভালভাবেই সম্পন্ন করে থাকে, তবে শুধু পোশাকেই, মনের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বরাবরই উদাসীন!
অর্থ;-আর আমিতো কেবল ফেরেশ্তাদেরকেই জাহান্নামের তত্বাবধায়ক রেখেছি৷ আর শুধু কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যই এ সংখ্যা রেখেছি৷যাতে মুমিনদের ইমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবী ওমুমিনরা সন্দেহ পোষণ না করে৷ এবং যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা ও কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এ উদাহরণ দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছেন? এমনই ভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা করেন সৎপথে পরিচালিত করেন৷ আপনার রবের সেনা বাহিনীর সংখ্যা তিনি ছাড়া কেউ জানেনা৷ আর দোজখের এই বর্ণনাতো কেবল উপদেশ মাত্র৷
ভাবতেই প্রশান্তিতে চোক বুজে আসে, ইসলামের বড় বড় বিষয় থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি বিষয় পর্যন্ত, যেকোন সমস্যার সমধান, প্রশ্নের জবাব সরাসরি আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আসে, যা মনগড়া কারও মতামত বলে এড়িয়ে যাবার বা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই!
জাযাকাল্লাহু খাইর।
পবিত্র কোরআনের তাফসীরময় উপস্হাপনা পড়লাম!
আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ ও পথে চলার তৌফিক দিন!আমিন!!
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান!!
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান
সূরা মুদ্দাস্সির এর আয়াতগুলোর মধ্যে অবিষ্মরনীয় শিহরন জাগানিয়া ঈমানী অনুভূতি কাজ করে যা রক্তকনিকা গুলোকে ধাক্কা দিয়ে জড়তা,ভীড়ুতা কাটিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর অকুতো নির্দেশ দেয়! সুবহানাল্লাহ!
চমৎকার বিশ্লেষন এবং শেয়ারের জন্য জাযাকাল্লাহু খাইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন