" তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু"
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ০৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:৩৭:৪৬ রাত
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
সুরা আল মুযাম্মিল রুকু;-২ আয়াত;-২০ মাত্র
দ্বিতীয় রুকুটি মাত্র বড় একটি আয়াতেই সীমাবদ্ধ৷ কিন্তু বয়ান ভিন্নতর৷ বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া সাহাবী হজরত ইবনে আব্বাসের রাঃ একটি বর্ণনায় জানা গেল যে আয়াতটিতে দুইটি অংশ রয়েছে৷ দ্বিতীয় অংশটির ব্যাপারে বেশ মতভেদ পাওয়া যায়৷ কেউ বলেন আট মাস, কেউ বলেন বারো মাস, কেউ বলেন ষোল মাস পরে নাজিল হয়েছে৷ কেউ বলেন এটি মাদানী আয়াত, কারণ এতে কেতাল (যুদ্ধ) এর কথা বলা হয়েছে, যা মাদানী বিষয়ক৷ আবার কারও মতে হিজরতের প্রাক্যালে অথবা হিজরতের পরেই এগার হিজরীতে নাজিল হয়েছে, কেননা এখানে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ ও রোজার কথা বলা হয়েছে৷
২০/إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَى مِن ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهُ وَثُلُثَهُ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِينَ مَعَكَ وَاللَّهُ يُقَدِّرُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ عَلِمَ أَن لَّن تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرْضَى وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِن فَضْلِ اللَّهِ وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ هُوَ خَيْرًا وَأَعْظَمَ أَجْرًا وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থ;-আপনার রব জানেন যে, আপনি ইবাদতের জন্য রাত্রীর দুই তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ, কখনও এক তৃতীয়াংশ দণ্ডায়মান হন৷ আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দণ্ডায়মান হয়৷ আর আল্লাহই রাত ও দিনের পরিমাপ নির্ধারণ করেন৷ তিনি জানেন যে, তোমরা তা পূর্ণ করতে অক্ষম হবে, তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ণ হয়েছেন৷ সুতরাং, কোরআনের যত টুকু পাঠ করা সহজ তত টুকু পাঠ কর৷
তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে পূথিবীতে ঘুরে বেড়াবে, আর কেউ কেউ আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে৷ অতএব, কোরআনের যতটুকু তেলাওয়াত করা সহজ ততটুকু কর৷ আর তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও, এবং আল্লাহকে উত্তম কর্জ দাও৷ আর তোমরা নিজেদের জন্য যা অগ্রে প্রেরণ করবে, আল্লাহর কাছে তা পাবে তদপেক্ষা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার হিসেবে৷ তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর৷ নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু৷
# আল্লাহ যেভাবে ‘কিয়ামুল লাইলে’র আদেশ দিলেন, রসুল সঃ ঠিক সেভাবেই তা পালন করতে থাকলেন, কখনও অর্ধেক রাত, কখনও তারও বেশী, কখনও অর্ধেকের কম৷ তিনি একা নন, কিছু সাহাবীও তাঁর সাথে তা পালন করতে থাকলেন৷ এক সময় মুমিনদের জন্য এটি কষ্টকর হবে, তাই আল্লাহ নিজেই দয়া পরবশ হয়ে তা সহজ করে দিলেন, যতটুকু কোরআন পড়া সহজ হয় ততটুকুই পড়৷ সহজ করা হলেও ফরজিয়াত শেষ হয়নি৷ এত টুকুই আয়াতের প্রথমাংশ৷ দ্বিতীয়াংশে ১১ হিজরীতে মেরাজের পর যখন পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ ফরজ হল, তখন বলা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ থাকতে পারে, জীবিকার অন্বেষণে ঘুরতে হতে পারে, যুদ্ধে যেতে হতে পারে, তাদের জন্য নামাজ আদায় ও ‘কেয়ামুল লাইল’ কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে৷ তাই ‘কেয়ামুল লাইল’ সহজ ও অল্প কেরাতে রেখেই তার ফরজিয়াতকে উঠিয়ে নেওয়া হল৷ নামাজের সঙ্গে থাকল জাকাত ও কর্জে হাসানা৷ পরকালের জন্য যা পাঠানো হবে, তা আল্লাহর কাজে তার চেয়ে উত্তম হয়ে জমা হবে৷
উল্লখ্য যে, ‘কেয়ামুল লাইল’ রমজানের তারাবীতে বদল হয়েছে এমন কোন ইঙ্গীত নেই৷ বৎসরের বারো মাসের একমাস রোজা ফরজ করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে হজরত সালমান ফারসী রাঃ রসুল সঃ এর খোৎবার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, রমজানের রোজাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন আর তারাবীহকে তার বাইরে রেখেছেন৷ জুমআর খোৎবায় শোনা যায়, ‘মান কামা রামাজানা ইমানাও ওয়া ইহতেশাবান----৷’ এ কেয়াম সে কেয়াম নয়৷ ইমাম (রসুল সঃ) তারাবীতে মধুর স্বরে ধীরে ধীরে স্পষ্ট ভাবে তেলাওয়াত করেন আর মুক্তাদীরা তার প্রতিটা শব্দ, প্রতিটা আয়াত অন্তর দিয়ে অনুভব করেন, কারণ এটি তাদের মাতৃ ভাষা৷ দিন মজুর, যোদ্ধা ও অসুস্থ মানুষের কথা মাথায় রেখে হজরত ওমর পরে তারাবীর সয়মসীমাকে কমিয়ে সহজ করেছিলেন৷ কিন্তু যাদের এ ওজর নেই, বরং ইচ্ছা করলে একটি মাস ছুটিও নিতে পারে, তারাও এ সুযোগ নিয়ে চলেছে৷ সেই তারাবিহ এখন বিশ না বার না আট রাকাতের দ্বন্দে আবদ্ধ৷ আর কোন্ হাফেজ সব চাইতে কম সময়ে খতম দিতে পারে তাকে আন৷ আর হাফেজ সাহেব কি পড়লেন তা বোঝার বা বোঝাবার বালাই নাই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে৷
বিষয়: বিবিধ
২৩৩৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার কুরআন চর্চা ও পোস্টার মাধমে অন্যদের জানান দেওয়া আল্লাহ যেন কবুল করেন সেই দোয়া রইলো ,,আমিন
আমার ব্যাক্তিগত মত হচ্ছে ভালভাবে ৮ রাকাত পরা দ্রুত গতিতে ২০ রাকাত খতম এর থেকে উত্তম!
যতক্ষণ আমার কাছে সহজ মনে হয়য় ততক্ষণ পড়ি, বিশ আট রাকাত হিসেব করে তারাবিহ পড়া আমার জন্য বেজায় কঠিন।
এমতবস্থায় আমার করণীয় কি বলবেন দয়া করে।
আল্লাহ ক্ষমাশীল ,দয়ালু আমাদের ক্ষমা চাইতে বলেছেন সেটাও আমরা চাই না আমরা কতই নাদান ।
জাজাকাল্লাহ খাইরান চাচাজান ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন