:"হে মুমিনগণ, আমিকি তোমাদের এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে৷"
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৭ মার্চ, ২০১৫, ০৮:১৯:১২ রাত
( উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ)
সুরা আস সফ রুকু;-২ আয়াত;-১০-১৪
১০/يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
অর্থ;-হে মুমিনগণ, আমিকি তোমাদের এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রনা দায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে৷
# কোন সে বানিজ্য যা মানুষকে কঠোর শাস্তি থেকে নিশ্চিত মুক্তি দেবে! এমনই এক বাকী বিনিময় বানিজ্যের কথা সুরা তওবায় (১১১) জেনে এসেছি, আল্লাহ মুমিনের জান মাল জান্নাতের বদলে কিনে নিয়েছেন৷ একই বানিজ্যের বিষয় এখানেও বলা হয়েছে এবং তিনি তা কোথায় ব্যবহার করবেন তা পরের আয়াতে বলা হয়েছে৷
১১/تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
অর্থ;-তা এইযে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং আল্লাহর পথে নিজের ধন সম্পদ, জীবন পণ করে জেহাদ করবে৷ এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে৷
# সুরা ‘নিসা’র ৭৪ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, যারা আখেরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবনকে বিক্রী করে দিয়েছে৷ আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, তার পর নিহত হোক বা বিজয়ী হোক, অবশ্যই তাকে দেব মহা পুরষ্কারর৷ সুরা হুজরাতের ১৫ আয়াতে বলা হয়েছে যে, যারা বিনা সন্দেহে ইমান এনেছে, নিজেদের ধন সম্পদ ও জীবন দিয়ে জেহাদ করেছে, তারাই সত্যবাদী লোক (সিদ্দীকীন)৷ অতএব, জেহাদ ছাড়া গতি নাই, যার বিনিময়ে নিশ্চিত প্রাপ্তি হল;-
১২/يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থ;-তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহীত এবং উদ্যানে মনোরম গৃহ অনন্ত বাসের জন্য৷ এটাই মহা সাফল্য৷
# পার্থিব ক্ষণস্থায়ী জীবনের সাফল্য অর্জনে মানুষ, ন্যায় অন্যায়, হালাল হারাম ভুলে ঘুষ দুর্নীতির পিছনে জীবন শেষ করে৷ অথচ পরকালের অনন্ত জীবনের সাফল্যের কথা মনে করেনা বা করলেও তা থাকে ভাসা ভাসা আর কয়েকটি আচরণে আবদ্ধ৷ প্রতিটি মুমিনের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ পরকালের সাফল্য৷ তার জন্য আল্লাহ প্রত্যেক কওমকে মিনহাজ বা গাইড লাইন দিয়েছেন৷ যারা উম্মতে মোহাম্মদী বলে দাবী করে তাদের উচিৎ মিনহাজে মোহাম্মদীর সন্ধান ও তার অনুসরণ৷ তবেই আসবে মহা সাফল্য৷ সঙ্গে বোনাস হিসেবে রয়েছে আল্লাহর আরও একটি অনুগ্রহ-
১৩/ وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থ;-এবং আরও একটি অনুগ্রহ রয়েছে, যা তোমরা পছন্দ কর, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়৷ মুমিনদের সু সংবাদ দান করুন৷
# এ সুরাটিকে সুরা ‘আহযাবের’ পরিশিষ্ট বলা যেতে পারে৷ আহযাবের যুদ্ধের পর রসুল সঃ বলেছিলেন যে, এর পর আর কোরাইশরা তোমাদের উপর চড়াও হবার সাহস করবেনা, এখন পালা তোমাদের অগ্রসর হবার৷ আল্লাহ ইচ্ছা করলে যে কোন মুহুর্তে তাঁর দ্বীন কায়েম করতে পারেন, কিন্তু প্রকৃত মুমিনদের পরিক্ষার মাধ্যমে তা করাতে চান৷ অগ্রসর হলে আল্লাহ মুমিনদের সাহয্য করবেন আর বিজয় মুমিনদের হবেই৷
১৪/يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونوا أَنصَارَ اللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّينَ مَنْ أَنصَارِي إِلَى اللَّهِ قَالَ الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ اللَّهِ فَآَمَنَت طَّائِفَةٌ مِّن بَنِي إِسْرَائِيلَ وَكَفَرَت طَّائِفَةٌ فَأَيَّدْنَا الَّذِينَ آَمَنُوا عَلَى عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا ظَاهِرِينَ
অর্থ;-হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ইশা ইবনে মরিয়ম তাঁর শিষ্য বর্গকে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে?’ শিষ্যরা বলে ছিল; ‘আমরা আল্লাহর পথের সাহায্যকারী৷’ অতঃপর [/i[i]]বণীইস্রাঈলের একদল ইমান আনল আর একদল কাফের হয়ে গেল৷ যারা ইমান এনেছিল আমি তাদেরকে তাদের শত্রুর মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল৷
# প্রকাশ্য রসুলের আনুগত্য যা অদৃশ্যে আল্লাহর আনুগত্য৷ প্রকাশ্যে রসুলের হাতে হাত রেখে বাইয়াত যেন আল্লাহর হাতে হাত রেখে বাইয়াত, কেননা অদৃশ্যে আল্লাহর হাত সেখানে ছিল৷ তাই রসুলকে সাহা্য্য করাও আল্লাহকে সাহায্য করা৷ ইশা আঃ তাঁর সঙ্গীদের কাছে এমন সাহায্যই চেয়ে ছিলেন৷ সে ডাকে হাওয়ারীগণ সাড়া দিয়েছিল, আল্লাহ তাদের সাহায্যও করেছিলেন৷ ফলে একদল ইমান এনেছিল৷ এ সাফ্যের জন্য তাদের তিন শত বৎসর লেগেছিল৷ যাতে তদের কঠিন অত্যাচার সইতে হয়েছিল৷ আসহাবে উখদুদ ও আসহাবে কাহফের খবর আমরা জানি৷ আসহাবে কাহফ বা সাতজন গুহাবাসী যখন প্রকাশ হল তখন রোমান সাম্রাজ্য ইশায়ীদের দখলে৷ যদিও তারা বিভক্ত হয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করে৷ বাঁকা পথে হলেও আজও তারা ইশায়ী৷ আর মাত্র তেইশ বছরে নবী সঃ মিজান প্রতিষ্ঠা করে বিশ্ববাসীকে নমুনা উপহার দিয়ে গেলেন৷
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু একটু পড়েই মনের ভিতর শয়তান ডুকবে ।
আল্লাহ আপনার নেক হায়াত দান করুন আর বেশী বেশী দ্বীনের খেদমত করার সুযোগ দিন । আমীন ।
এক সময় কম্বে এক সময় বাড়বে, অল্প হোক বেশি হোক, চর্চা যদি নিয়মিত হয়য় তাহলে একদিন শয়তান দ্বারে কাছে ঘেষার সুযোগই পাবে না।
'পনি' যেখানে 'সাকা সেখানে!
ইসলামী আন্দোলনের চরম ক্রান্তি লগ্নে এই আয়াতের মর্মবাণী যদি প্রত্যেক কর্মী মনে প্রাণে ধারণ করে, তাহলে বিজয় আসে না কেন? বলে বলে হা হুস্তাশ করবে না। আন্দোলনের পথে হতাশা খুব খারাপ জিনিস, যা থেকে মুক্তি দিতে আল্লাহর শ্বাসত বাণী।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আবারো সে একই সমস্যা! যৌনতার ইঙ্গিত করে পোস্ট করলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে, অথচ দুজাহানের জন্যো উপকারী পোস্ট পাঠক শূনন্যতায় হাহাকার করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন