"তখন সকলে জানতে পারবে সে কোন কাজটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে আর কোনটি পিছনে ঠেলেছে"৷
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ১৫ মার্চ, ২০১৫, ০৯:১৮:৫৭ রাত
(উর্দু বয়ানুল কোরআনের সরল বাংলা অনুবাদ)
(৮২) সুরা আল ইনফিতার (মক্কী) রুকু ১টি আয়াত ১৯টি
সুরা ‘আত-তাকবীর’, সুরা ‘আল ইনফিতার’, সুরা ‘মুতাফ্ফিফীন,’ও সুরা ‘ইনশিক্বাক্ব’ চারটি সুরার বিষয় মুটামুটি একই এবং তা কেয়ামতের আলামত, অবস্থা ও ফলাফল৷ চারটি সুরা পপরষ্পর জোড়া ও একটি গুচ্ছ৷ সুরা ‘আত-তাকবীরে’ ১৩টি আয়াতের পরে আমলের ফলাফলের কথা এসেছে ও অবশেষে বলা হয়েছে যে, তোমরা কোন পথে চলেছো৷ আর সুরা ‘ইনফিতারে’ দুটি পথেরই পরিনতির কথা বলা হয়েছে৷
সুরা আল ইনফিতার রুকু;-১ আয়াত;-১-১৯
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
১/إِذَا السَّمَاء انفَطَرَتْ
অর্থ;-যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
২/وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ
অর্থ;-আর যখন নক্ষত্র সমূহ খসে পড়বে,
৩/وَإِذَا الْبِحَارُ فُجِّرَتْ
অর্থ;-আর যখন সমু্দ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
৪/ وَإِذَا الْقُبُورُ بُعْثِرَتْ
অর্থ;-আর যখন কবর সমূহ উন্মোচিত হবে,
৫ عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ وَأَخَّرَتْ
অর্থ;-তখন সকলে জানতে পারবে সে কি আগে করেছে আর কি পিছনে রেখেছে৷
# এমন আয়াতে আমরা জেনে এসেছি যে, মৃত্যুর আগে পরকালের পাথেয় হিসাবে কে কি পাঠিয়েছিল আর এমন কি আমল রেখে এসেছে যা তার মৃত্যুর পরেও ঐ কাজের সুফল বা কুফল তার উপকারে আসবে, তা কেয়ামতে জানতে পারবে৷ শুধু তাই নয়, বরং এটিও জানতে পারবে যে, পৃথিবীতে সে কোন কাজটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল আর কোনটিকে পিছনে রেখেছিল৷ যেমন, কেউ আখেরাতকেই প্রাধান্য দিয়েই সকল আমল করল, সাথে দুনিয়া প্রাপ্তি যতটুকু হল তাকেই বোনাস মনে করে তৃপ্ত হল, আর কেউ পার্থিব জীবনকেই প্রাধান্য দিয়ে, তার যত প্রচেষ্টা তাতেই ব্যয় করল আর আখেরাতকে কম গুরুত্ব দিল বা উপেক্ষাই করল, কেয়ামতের দিন তাও জানতে পারবে৷
৬/يَا أَيُّهَا الْإِنسَانُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ
অর্থ;-হে মানুষ, কিসে তোমাকে বিভ্রান্ত করল, তোমার মহা মহীম প্রভু সম্পর্কে?
# আল্লাহ তায়ালার গফুর ও রহীম গুনকে কাজে লাগিয়ে শয়তান মানুষকে বিভ্রা্ন্ত করে৷ প্রয়োজনীয় বিষয় থেকে ফিরিয়ে অপ্রয়োজনীয় আমল গুলোতে ব্যস্ত রাখে৷ বুঝ দেয় যে, আল্লাহ দয়াময়, মাফ কারী, অবশ্যই ভুল হলে মাফ করে দেবে৷ এ আলোচনা সুরা ‘লুকমান’ ও সুরা ‘হাদীদেও’ এসেছে৷ এভাবেই ফরজ ইবাদত থেকে সরিয়ে মানুষকে শবেবরাত, শবেকদর, জিকির, পীরের ওসীলা, শির্ণী, জিয়াফতকেই আল্লাহ প্রাপ্তির উত্তম মাধ্যম বলে পার পাওয়ার পরা মর্শ দেয়৷ আর এভাবেই সৃষ্টি হয় অগ্র পশ্চাত ভ্রান্তির৷
৭/الَّذِي خَلَقَكَ فَسَوَّاكَ فَعَدَلَكَ
অর্থ;-যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সু বিন্যস্ত করেছেন এবং (আদল) সুষম করেছেন৷
৮/فِي أَيِّ صُورَةٍ مَّا شَاء رَكَّبَكَ
অর্থ;-তিনি তোমাকে তার ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন৷
# আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলি যথাস্থানে সাজিয়েছেন৷ সব কিছুই তাঁর পছন্দ মত করেছেন৷ সেখানে কারও পছন্দের অবকাশ নেই৷ মানুষের সৃষ্টিতে যেমন আদল বা সুষমতা দিয়েছেন, তার অন্তরেও আদল বা ইনসাফ দিয়েছেন৷
৯/كَلَّا بَلْ تُكَذِّبُونَ بِالدِّينِ
অর্থ;-কখনই নয়, বরং তোমরাতো প্রতিদান (আখেরাত) কেই অস্বীকার করছ৷
১০/وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ
অর্থ;-নিশ্চয়ই তোমাদের উপর রক্ষক নিযুক্ত রয়েছে,
১১/كِرَامًا كَاتِبِينَ
অর্থ;-সম্মানিত লেখক বৃন্দ৷
১২/يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ
অর্থ;-তারা জানে তোমরা যা কর৷
# যদি মানুষের কর্মফলের হিসাব নিকাশ, জবাব দেহিতা ও তার বদলা যা আখেরাতে দেওয়া হবে, না থাকত তবেতো মানুষের দৈনন্দিন কার্য কলাপের নথি সংরক্ষান বা লিখনের ও তার জন্য অদৃশ্য ফেরেশ্তা নিয়োগের কোনই প্রয়োজন ছিলনা৷
১৩/إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ
অর্থ;-সৎ-কর্মশীলগন নিশ্চয়ই জান্নাতে থাকবে,
১৪/وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٍ
অর্থ;-এবং দুষ্কর্মীরা থাকবে জাহান্নামে৷
১৫/يَصْلَوْنَهَا يَوْمَ الدِّينِ
অর্থ;-তারা বিচার দিবসে সেখানে প্রবেশ করবে৷
১৬/وَمَا هُمْ عَنْهَا بِغَائِبِينَ
অর্থ;-সেখান থেকে তারা পৃথক হবেনা৷
১৭/وَمَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الدِّينِ
অর্থ;-আর আপনি জানেন বিচার দিবস কি!
১৮/ثُمَّ مَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الدِّينِ
অর্থ;-পুনরায়, আপনি জানেন বিচার দিবস কি!
১৯/يَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئًا وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ
অর্থ;-সেদিন কেউ কারও উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সব কর্তৃত্বই হবে আল্লাহর৷
বিষয়: বিবিধ
১০৬২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহ খাইরান চাচাজান ।
৪ নাম্বার আয়াতটি লিখা হয় নাই, পাঁচ নাম্বারটিই দু'বার লিখা হয়েছে। সম্ভবত কপি পেষ্ট। জাযাকাল্লাহ খাইর।
ইয়া আল্লাহ ক্ষমা করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন