"কাফের ছাড়া আর কেউই আল্লাহর আয়াত নিয়ে বিতর্ক করে না"৷
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৫২:৩১ সকাল
(৪০) সুরা আল মু’মিন (মক্কী)রুকু ৯টি আয়াত ৮৫টি
পঞ্চম গ্রুপেরর তেরটি মক্কী সুরার এটি সপ্তম সুরা ও হরফে মুকাত্তায়াত বিশিষ্ট সাতটির প্রথমটি সুরা মু’মিন৷ এ সুরায় নয়টি রুকু ও পঁচাশিটি আয়াত রয়েছে৷ সুরা ‘যুমারের’ সাথে এর বেশ মিল রয়েছে৷ এ সুরার মূল বিষয় তৌহীদ৷ ‘সুরা যুমারে’ তৌহীদে আমলীর ইবাদত অংশের বর্ণনা ছিল আর এতে আছে দোয়ার অংশ, দোওয়াকেও ইবাদত বলা হয়েছে৷ উভয় সুরাতেই ‘মুখলেসীনা লাহুদ্দ্বীন’ শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ ইত্তেবা বা আনুগত্য গায়রুল্লার আর দোওয়া আল্লাহর কাছে, কোন সফল বয়ে আনবে না৷
সুরা মু’মিনুনে আল্লাহর কিছু ‘সিফাতে ইজাফী’ বা আমাদের জানা নামগুলি ছাড়া আরও কিছু নাম পাওয়া যাবে, সেগুলও গুন বাচক তবে অতিরিক্ত৷ একেই সিফাতে ইজাফী বলা হয়েছে৷৷ সুরা ‘বণী ইস্রাইলের’ যেমন অন্য নাম ‘ইসরা’ তেমন এ সুরাটিরও অন্য নাম ‘সুরা গাফির’৷
সুরা আল মু’মিন রুকু;-১ আয়াত;-১-৯
الرَّحِيمِ الرَّحْمـَنِ اللّهِ بِسْمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
১/حم
অর্থ;-(হা মীম) হরুফে মুকাত্তায়াত৷
২/تَنزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
অর্থ;-কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ৷
# সুরা যুমারেও এ আয়াতটি হুবহু এমনই এসেছে, শুধু শেষ শব্দটি ওখানে ‘হাকিম’ আর এখানে ‘আলীম’ হয়েছে৷
৩/غَافِرِ الذَّنبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ
অর্থ;-পাপ ক্ষমাকারী, (গাফির) কঠোর শাস্তি দাতা ও ক্ষমতাধর৷ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নাই৷ তারই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন৷
# এ আয়াতে ‘গাফির’, ‘ক্বাবিল’ ও ‘শাদীদ’ ও ‘জিততাওলে’ শব্দগুলি ‘সিফাতে ইজাফী’ বা ভিন্ন গুবাচক নাম৷
৪/مَا يُجَادِلُ فِي آيَاتِ اللَّهِ إِلَّا الَّذِينَ كَفَرُوا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ
অর্থ;-যারা কুফরী করেছে তারা ছাড়া কেউ আল্লাহর আয়াতে বিতর্ক করেনা৷ কাজেই নগরী সমুহে তাদের বিচরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্তিতে না ফেলে দেয়৷
# কাফেররাই শুধু আল্লাহর আয়াতে বিতর্ক করে৷ তারা যতই শক্তশালী মর্যাদাবান হোকনা কেন আপনাকে বিভ্রান্তিতে না ফেলে, বিচলিত না করে৷
৫/كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَالْأَحْزَابُ مِن بَعْدِهِمْ وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ وَجَادَلُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ
অর্থ;-তাদের পূর্বে নূহের কওম মিথ্যারোপ করেছিল, আর তাদের পরে অন্য দল ও প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ পয়গম্বরদেরকে পাকড়াও করে হত্যার অভিসন্ধি করেছিল৷ সত্যকে ব্যর্থ করার জন্য অনর্থক তর্কে লিপ্ত হয়েছিল৷ ফলে আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম৷ কেমন ছিল আমার শাস্তি!
৬/وَكَذَلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّهُمْ أَصْحَابُ النَّارِ
অর্থ;-এ ভাবেই কাফেরদের বেলায় আপনার বরের বাণী সত্য হল যে, তারা জাহান্নামী৷
৭/الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَّحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
অর্থ;-আর যারা আরশ বহন করে এবং তার চারপাশে রয়েছে, তারা তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা-মহীমা ঘোষণা করে এবং তার প্রতি ইমান রাখে আর মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের রব, আপনার রহমত ও জ্ঞান সর্বকিছুতে পরিব্যপ্ত, অতএব যারা তওবা করে ও আপনার পথে চলে, তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন৷
# সুরা যুমারের ৭৫ আয়াতে বিচারের শেষে আল্লাহর আরশ বহনকারী ও তার চারপাশে তার বন্দনকারী ফেরেশ্তাদের বিষয়ে বলা হয়েছে৷ এখানে তাদের কথাই বলা হচ্ছে৷ মুমিন বান্দা যারা তওবা করেছে ও আল্লাহর পথে চলেছে, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে অতি বিনয়ের সাথে নাজাতের জন্য সুপারিশ করবে৷
৮/رَبَّنَا وَأَدْخِلْهُمْ جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدتَّهُم وَمَن صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
অর্থ;-হে আমাদের রব, আর তাদেরকে দাখেল করুন চিরকাল বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের বাপ দাদা, পতি পত্নি ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে তাদেরকেও৷ নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়৷৷
# যারা উন্নত জান্নাতের অধিকারী হয়েছে অথচ তাদের বাপ দাদা, পতি পত্নি বা সন্তানগন সাধারণ জান্নাতের অধিকারী হয়ে থাকবে, ঐ ফেরেশ্তাগন তাদের সকলকে একত্রে উন্নত জান্নাত দেবার জন্যও আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে৷
৯/وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ وَمَن تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থ;-এবং আপনি তাদেরকে অমঙ্গল থেকে রক্ষা করুন। আপনি যাকে সেদিন অমঙ্গল থেকে রক্ষা করবেন, তার প্রতি অনুগ্রহই করবেন৷ এটাই মহা সাফল্য৷
বিষয়: বিবিধ
১৩২৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মিথ্যাবাদী কাফেররা বলে, কুরআন মুহাম্মদের(সা) বাণী। এজন্য আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে কুরআনের অনুরূপ একটি সূরা পেশ করার চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন।
সব কিছু যেনেও আজ আমরা দুনিয়ার লোভে এই আয়াতগুলি ভুলে যেতে চাই।
সুরা আল মু’মিন এর আরেকটা নাম সুরা গাফির’৷
জাজাকাল্লাহ খায়ের চাচাজান ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন