না বলা কথা;-পর্ব দুই

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:৫৬:৪১ রাত



বছরে দুইটা পরীক্ষা হত৷ প্রথম ষান্মাষিক পরীক্ষার ফলাফলের পরই আমার বসার জায়গা সামনের বেঞ্চের ফার্স্ট বয় খুশীদের পাশে চলে আসে৷ খুরশীদ খুবভাল ছাত্র ছিল,৷ ভারী নরম মেজাজের আর লতিফ ছিল লেখা পড়ায় খুব ভাল নাহলেও বেশ উদ্যমী, তাই সকল বিষয়ে শুধু ক্লাশে নয় পুরা স্কুলে ছিল তার কর্তৃত্ব৷ বলতেই হয় আজকের ছাত্রনেতাদের সাথে সেকালের ছাত্রনেতাদের যোজন যোজন তফাৎ ছিল৷ তখন ছাত্ররা শিক্ষকদের আন্তরীক ভাবেই শ্রদ্ধা করত৷৷ আমার অভিজ্ঞতার ঝুড়িতে শিক্ষক হিসেবেও কিছু অভিজ্ঞতা জমা আছে৷ সুযোগ হলে জানাব৷ এখানে সামান্য বলি, যখন আমি ক্লাশ টেনে পড়ি তখন এক বাড়িতে তিনটি বেজায় দুষ্টু ছেলেকে পড়াতাম, ওরা টু, থ্রী আর ফোরে পড়ত৷ বড় কষ্ট হত ওদের কন্ট্রোল করতে৷ এমন অনেক দিন গেছে ওদের বাবা এসে পড়ার টেবিলে আমার উপস্থিতিতেই বেদম মেরেছে৷ এ সময়েই মুক্তি যুদ্ধ শুরু হয়, তারা ছিল হিন্দু৷ সন্ধ্যার অন্ধকারে গ্রাম পারকরে পিছনের আতাই নদীতে নৌকায় করে তাদের লোহাগড়া, যশোরের বাড়ি পাঠাতে সাহায্য করেছিলাম৷ স্বাধীনতার পরে তাদের বিদ্ধস্ত ভিটায় তারা আবার ফিরে আসে৷ তিন ভাইই পড়াশোনা করে বড় বড় অফিসার হয়েছিল৷ কদাচিৎ পথে দেখা হলে, সাইকেল, মটর সাইকেল, রিক্সা থেকে নেমে কদিনের প্রাইভেট স্যারকে সালাম না জানিয়ে আজও চলে যায়না৷

আসল কথায় ফিরে আসি, একেতো কাদের স্যারের ভাগ্না তার পর রেজাল্ট ভাল তাই অল্পদিনেই অনেক বন্ধু হয়ে গেল, কারও মাঝে বিহারী বাঙ্গালী ভেদ ছিলনা৷ বৎসর গেল, ক্লাশ বদল হল৷ খেলার মাঠ ছিলনা, তাই স্কুল চত্তরে একটা সাংষ্কৃতীক অনষ্ঠানের আয়োজন হত৷ পাকা চুল দাড়ি বানিয়ে লাঠি হাতে নাতীর হাত ধরে জসীমুদ্দীন সাহেবের কবর কবিতার অভিনয়াবৃত্তি করে, সোজন বাদিয়ার ঘাট পেয়ে ছিলাম৷ এছাড়া কোরান তেলাওয়াতে, কোরআন, ক্লাশে প্রথম হওয়ায় কাজী নজরুলের, নজরুল রচনাবলী আর ভাল ব্যহারের জন্য একটি ডিক্শনারী পেয়ছিলাম৷

স্কুলে লাইব্রেরী হবে, আলমারী এল আর সাথে এল গাড়ি গাড়ি বই৷ সবই মিল কর্তৃপক্ষের টাকায়৷ এ সবে তাদের মধ্যে কোন কার্পণ্য ছিলনা৷ কিন্তু তার পরও অনেকের মনে একটা চাপা ক্ষোভ কাজ করত৷ কারণ শ্রমিক হিসেবেও উচ্চ পদগুলি অ বাঙ্গালীদের দখলে ছিল আর প্রশাসনেও বড় পদগুলিও তাদের দখলে ছিল, অবশ্য ওপার হতে আসা কিছু বাংলাভাষীও এ দলে ছিল৷ (কারণ হিসেবে তাদের পূর্ব দক্ষতার কথা আগেই বলেছি৷) সেই সঙ্গে অফিসারদের কোন ছেলে মেয়ের এই স্কুলে না পড়া৷ তারা খুলনায় ইংলীশ স্কুলে পড়ত আর প্রাইভেট বাসে যাতায়াত করত৷

বই গুলিকে বিষয় ভিত্তিতে আলাদা করে, নম্বর লাগিয়ে আলমারিতে সাজাবার ভার পড়ল আমার আর লতিফের উপর৷ বইগুলি ছিল বাংলা আর উর্দূতে, লতিফ ছিল উর্দূভাষী৷

কাজ শেষ হলে হেডস্যার রেজিষ্টার নিয়ে বললেন, কে কোন বই নেবে এস৷ অনেক আগে থেকেই আমার মনে শরৎ বাবুর শ্রীকান্ত পড়ার লোভ ছিল, বই কিনে পড়ার সাধ্য ছিলনা, ভাবলাম আজকে সুযোগ কাজে লাগাব৷ কে কি চেয়েছিল আর পেয়ছিল মনে নেই৷ আমি শ্রীকান্ত চেয়ে বসলাম৷ কাজী ইমদাদুল হক, বর্তমান হেডস্যার রেজিষ্টারে সই নিলেন৷ ভিতরে খুশীর ঝড় চলছে, উনি আলমারী থেকে বই বার করে হাতে দিয়ে বললেন এইটি আগে পড়৷ মাথা নীচু করে বাইরে এলাম৷ মোটা বইখানা উল্টে দেখলাম, তা ভারতের প্রথম প্রধান মন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর তাঁর কন্যা ইন্দীরা গান্ধীর কাছে লেখা চিঠির সমাহার, যা ভারতের ইতিহাস রূপে গ্রহন্থিত হয়েছে৷ মনটা খারাপ হয়েছিল৷ কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আজও আমার সেই চির হিতাকাঙ্খী মরহুম স্যারকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম ও দোওয়া৷

আমাদের জন্য আরও একটি সুখবর ছিল, তাহল, কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছে, এ স্কুলে ক্লাশ নাইন ও পরে টেন খোলা হবে৷ এখান থেকেই মেট্রিক পরীক্ষা দেওয়া যাবে৷৷ কিন্তু বিধি বাম৷ বাৎসরীক পরীক্ষার পরই কিংবা কিছু আগে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে হঠানোর আন্দোলন শুরু হয়৷ ঘন ঘন হরতাল, মার্শাল ল, কারফিউ প্রভৃতিতে দেশ অশান্ত হয়৷ ফলে মিল মালিকদের সিদ্ধান্ত বদলে যায়৷ স্কুলে নতুন ক্লাশ আর চালু হয়না৷ আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয় যে, প্রত্যেককে ক্লাশ নাইনের এক সেট করে বই দেওয়া হবে আর নিজেরা গিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তী করে দেবেন৷ তাই হয়, উর্দূভাষীরা খুলনার কায়েদে মিল্লাত স্কুলে আর বাংলাভাষীরা পাশের ক্রিসেন্ট জুটমিলসের স্কুলে ভর্তী হয় আমি বাদে৷ কারণ তখন আমি আমার দুই স্যারের সাময়ীক বইয়ের দোকান সামলাতে ব্যস্ত৷ মার্চ মাসে বইয়ের দোকান শেষ করে, অন্য স্কুলে চান্স নাপেয়ে আমারই গ্রামের হাই স্কুলে গিয়ে হাজির হই৷ কাজী গোলাম মোস্তফা স্যার আমার মার্কশীট দেখে, কোন প্রশ্ন না করে ভর্তী করে নেন৷

ক্লাশ সেভেন আর এইট বিনা বেতনে পড়লেও এখন অন্যান্ন ফির সাথে মাসিক নয় টাকা বেতন দিয়েই ভর্তী হলাম৷ বেতন, খাতা কলম প্রভৃতীর জন্য মাসিক ৩/৪/ও ৫ টাকা বেতনে ছাত্র পড়ানো শুরু করলাম৷ ক্লাশ টেন এ উঠে নিজের পড়ার জন্য খুব কমই সময় পেতাম৷ অবশ্য তাতেও আল্লাহর ইচ্ছায় আমার রেজাল্টে ঘাটতি পড়েনি৷ মেট্রিক পরিক্ষার ফিস ১০৩ টাকা বড় ভাইয়ের কাছথেকেই পেয়েছিলাম৷ জমাও হয়ছিল কিন্তু ক্রমে দেশ ভোলার জলোচ্ছাস ও নির্বাচন নিয়ে অশান্ত হতে হতে চরমে পৌঁছল৷ সম্ভবতঃ ’৭১ এর মার্চেই পরীক্ষার ডেট ছিল৷ পরীক্ষা দিতে খুলনা শহরে যেতে হত৷ অনেকে পরীক্ষা দিলেও আমি সহ বেশীর ভাগই পরীক্ষা দিতে পারিনি৷যারা দিয়েছিল স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকার তা বাতিল ঘোষণা করে ও ৭২এ পরীক্ষার নামে একটা তামাশার আয়োজন করে৷ আমার সীট পড়েছিল খুলনা বি, কে স্কুলের দোতলায় রুমের সামনের বেঞ্চে, যেখানে পরিদর্শক স্যার বসে বসে ছেলেদের কাণ্ড দেখতেন৷ ছাত্ররা যার যার বই খাতা নোট নকল সামনে রেখে লিখে চলেছে৷ সবাই সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবাদ চলবেনা, করলে উপর থেকে নীচে ফেলে দেওয়া হবে৷ প্রতিটা পঞ্চাশ মার্কের পাঁচটা বিষয়ের পরীক্ষা৷ মুলতঃ এখান থেকেই নকলের প্রবনতা অঙ্কুরিত হয়ে পরে পত্রপল্লবে বিস্তৃত হয়৷ প্রথম বেঞ্চে সীট হওয়ায় আমি বেশ নিরাপদেই ছিলাম৷৷ একদিন এক স্যার জিজ্ঞেস করলেন আমার বই দেখার প্রয়োজন নাই কেন৷ বলে ছিলাম বই দেখলেই বরং আমার লিখতে অসুবিধা হবে তাই৷ বলা বাহুল্য ঐ পরীক্ষায় গরু গাধাও পাশ করেছিল৷ পরে অবশ্য কলেজ পাশকরে প্রায় সকলে এ অধ্যায় চাপা দিয়েছিল, শুধু আমিই এ কলঙ্ক নিয়ে রয়ে গেলাম৷

আবার একটু পিছনে ফিরতে হচ্ছে৷ ২৬ শে মার্চ ৭১(তারিখটা ভুলও হতে পারে) অবাঙ্গালীদের উপর বাঙ্গালীদের চাপা ক্ষোভের ফষল কয়েক হাজার অবাঙ্গালী আবাল বৃদ্ধ বনিতার লাশ ভৈরব নদে ভাসতে দেখা যায়৷ দুর্গন্ধে নদীপাড়ের স্কুল, দোকান বাজার, সব বন্ধ হয়ে যায়৷ খালিশপুর এলাকা, মিল ফ্যাক্টরীগুলো সহ আলাদা রাজ্য হয়ে পড়ে৷ শুরু হয় ভাষার পার্থক্যে ভাইয়ে ভাইয়ে খুনো খুনী৷ মুক্তি যুদ্ধের নয় মাস কোন বাঙ্গালী ভুল করেও খালিশপুর গিয়ে পড়লে ফিরতে পারতো না আর বিহারীরা কোন কাজে বাইরে এলে ফিরে যেতে পারতোনা৷ এর পর পাকসেনারা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে তাদের দৌরাত্ম আরও বেড়ে যায়৷৷

যেহেতু অবাঙ্গালীরা অভিজ্ঞ ছিল তাই তাদের দিয়ে মিল গুলো পুনরায় চালু হয়৷ কয়েক মাস পর নিরপেক্ষ কিছু বাঙ্গালী অবাঙ্গালী বন্ধবান্ধবদের সহযোগীতায় একে একে মিলে যাওয়া শুরু করে৷ আমার বড় ভাইও মিলে যাওয়া শুরু করে৷ স্কুলগুলোও চালু হয়েছিল, তবে যে স্যার আওয়ামীলীগার ছিলেন তাদের জন্য প্রবেশ নিষেধ ছিল৷ প্রধান শিক্ষক কাজী ইমদাদ স্যার খালিশপুরে থাকতেন৷ বহু কষ্টে ক্লেশে তিনি সেখান থেকে বার হয়ে, অনেক দিন পর লোহাগড়ার বাড়ী পৌঁছেছিলেন৷ ইতি মধ্যে তাঁর ভাই তাঁকে খুজতে খালিশপুরে গিয়ে বিহারীদের শিকার হন৷ আমার সহপাঠি লতিফ ছিল তখন ঐ এলাকার নেতা৷ খবর পেয়ে তাকে খুন করার দায়িত্ব নিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে এরিয়া পার করে অভয় দিয়ে, জানতে চায় আপনাকে দেখতে একেবারে স্যারের মত, আপনি কে? আগন্তুক জানায় আমি বড় ভাইয়ের সন্ধানে এসেছিলাম, আমিতার ভাই৷ লতিফ জানায় তাদের এরিয়া পার করে দিয়েছিলাম, হয়ত বেঁচে আছেন, কোথায় আছেন বলতে পারব না, আপনাকে বাসে তুলেদিই বাড়িযান, আর কোনদিন এভাবে আসবেন না৷ হেড স্যার অনেকদিন পর বাড়ী পৌঁছেছিলেন ও স্বাধীনের পর পুনরায় স্কুলে জয়েন করে ছিলেন৷

আমার মামা ছিলেন স্কুলে আওয়ামীলীগের নেতা৷ তাই স্কুল চালু হলে, সহকারী হেড স্যার, নেছার আহমদ সাহেব প্রধান শিক্ষকের দায়ীত্ব পান৷ উনি অবাঙ্গালী ছিলেন৷ ফলে মামা বেকারই রইলেন৷

ইতি মধ্যে আমি একটা চাকরী পেয়েছি৷ রওশন সাহেব ভারতীয় বাঙ্গালী ইঞ্জিনিয়র, খালিশপুর ছেড়ে আমাদের পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছেন৷ ক্রিসেন্ট জুটমিলের পাঁচটি জেনারেটর বিশিষ্ট নিজস্ব একটা পাওয়ার হাউস ছিল, ওনার আণ্ডারে৷ ওখানের কয়েকজন কর্মচারী ফিরে আসেনি, লোকের অভাব৷ আমাকে নিয়ে গেলেন, ঝাড়া মোছা কাজের জন্য৷ মাস খানেক পরেই প্রমোশন, এ্যাসিস্টেন ড্রাইভার৷ বেতন ১৩৭ টাক৷ মাসে দুই রবিবার ওভার টাইম৷ বেতন আসে ২০০ টাকা৷ তা থেকে মামাকে দিই ৫০ টাকা৷ আর কিছু ছেলে পড়িয়ে কোন রকমে মামার সংসার চলে৷ উনার অনুরোধে আমি জীবনের ঝুকি নিয়ে নয় মাসে দুইবার খালিশপুরে গেছি৷ সাহস এটাই যে আমি ওদের মতই উর্দূ বলতে পারি ফলে অপরিচিতদের কাছে বিহারী আর পরিচতরা ভালকরেই চেনে, অতএব নিরাপদ৷ প্রথমবারের ঘটনা বলি; লতিফের বাড়ি গেলাম, এমন বহুবার গেছি৷ ওর মা বাবা সবাই আমার পরিচিত৷ উদ্দেশ্য লতিফকে নিয়ে নেসার স্যারের কাছে গিয়ে মামার জন্য অনুরোধ করা, যদিও আমরা কেউই এখন ঐ স্কুলের নই৷ কিন্তু আমরা দুজনই তার পছন্দের ছাত্র৷ লতিফের বাড়ি বসে সে পরামর্শ করছি, এমন সময় লতিফের বাপ এল, সালাম দিলাম৷ কিন্ত জবাবের পর ছেলেকে দেওয়া আদেশে আমার হৃৎপিণ্ড থেমে যাবার উপক্রম৷ হিন্দীতে যা বলল তার সারমর্ম হল, যেখান থেকে এসেছি সেখানে পুনরায় আমি ফিরে না যেতে পারি তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ বাপের কথার জবাব দিয়ে লতিফ আমাকে নিয়ে নেসার স্যারের বড়ি গেল৷ সেখানে আর এক দৃশ্যের অবতারণা হল৷ প্রাণের ভয়ে যে অবাঙ্গালীরা ঐ রাতে জান বাঁচাতে নদি সাঁতরে সেনহাটি এসে লাশ হয়ে নদীতে ভেসেছিল, মায় স্কুল মসজিদের বৃদ্ধ ইমাম, মওলানা আইয়ুব সাহেবের খুনের দায় আমার উপর চাপালেন৷ অথচ আমি নদীথেকে অন্ততঃ এক কিলোমিটার দূরে, মাত্র পাঁচ বছর আগে এসেছি৷ আমরা এমন হোমরা চোমরাও নই যে, আমরা প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছি৷ আর বিহারীদের মত আমাদের শরিরেও রিফিউজীর গন্ধ রয়েছে৷ সর্বপোরি ঘটনাগুলি ঘটেছে রাতের আঁধারে, আমার জানার বাইরে৷ এ যাত্রা মামার কোন উপকারের আশ্বাস পেলাম না৷ নিরাশ হয়ে ফিরলাম৷ লতিফ আমার সাথে নদীর ঘাট পর্যন্ত এসে আমাকে নৌকায় উঠার আগে তার বাপের বলা কথা মনে করিয়ে উপদেশ দিল আর যেন এমন রিস্ক না নিই৷ যতক্ষন আমি আমার পারে না নামলাম ততক্ষন সে দাঁড়িয়ে ছিল, পরে হাত ইশারায় বিদায় জানিয়ে ফিরে গেল৷ একজন প্রকৃত বন্ধুরসাথে এখানেই চির বিদায় হয়ে গেল৷ কয়েক বৎসর পর তার একটা চিঠি পেয়েছিলাম৷ স্বাধীনের পর, নেপাল,ও ভারত ঘুরে পাকিস্তানে গিয়ে কোন এক জুটমিলে সুপার ভাইজারের চাকুরী অবস্থায় লেখা৷ তার পর আর জানিনা৷

চলবে;-

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৬ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268437
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:১০
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আজকের লেখা থেকেও অনেক কিছু জানা হলো; আবারও ধন্যবাদ আপনাকে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৫
212208
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনাকে ও ধন্যবাদ৷
268455
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৯
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৬
212209
শেখের পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ৷ আবার আসবেন৷
268456
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৯
আফরা লিখেছেন : খুবই ভাল লাগল অনেক কিছুই জানলাম সাথে ১৯৭২ এর পরিক্ষার কথা আমার মামনির মুখে শুনেছিলাম । আজকে আপনার লেখায় সেটা পরিস্কার ভাবে জানলাম । অনেক অনেক ধন্যবাদ চাচাজান ।
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২০
212211
শেখের পোলা লিখেছেন : এ পরীক্ষাটা আমার জন্য লজ্জ্বার বিষয় ছিল৷ কারণ পরের পর্বে থাকবে৷ ধন্যবাদ মা মণিকে৷
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
212367
আফরা লিখেছেন : চাচাজান আপনি যখন আমাকে মমনি, জননী বলেন আনন্দে আমার চোখে পানি চলে আসে ।অনেক শুকরিয়া চাচাজান ।
268465
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৫৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনার লিখাটি ইতিহাস আর নির্মম সত্যের একটি দলিল হয়ে থাকবে।শর্মিলা বসুর "ডেড রেকনিং" বইতে এই ঘটনার বিবরন আছে। চট্টগ্রামে আমার আব্বার মুখেই শুনেছি ফিরুজ শাহ কলোনিতে ২১-২৫ এ মার্চ এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। যার পরিনিতিতে বিহারিরা ২৫ শে মার্চ এর পর বেশি প্রতিশোধপরায়ন হয়ে উঠে।তবে মুল চট্টগ্রাম শহরে কোন পক্ষেই বিশেষ ঘটনা ঘটেনি। দশ-বার বছর আগে আমি একদিন দেখি এক ভদ্রলোক আমাদের সামনের রাস্তায় ভাঙ্গা বাংলায় কারও কথা জিজ্ঞেস করছে। আমি মনোযোগ দেওয়ার আগেই একজনের কাছে তিনি তথ্য পেয়ে যান। আমি আমার কাজে চলে যাই। আসার পর জানতে পারি যে যিনি এসেছিলেন একসময় তিনি একজন বিহারি জিনি পরিবার সহ আমাদের এলাকায় ছিলেন এবং তাদের চট্টগ্রামের বিখ্যাত নিউমার্কেট এ দোকান ছিল। ১৭ই ডিসেম্বর তার পিতা কে ধরে নিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা নামধারি কিছু সন্ত্রাসি। আমার আব্বা বিকেলে দিকে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহাজ্যে। উল্লেখ্য রাজনিতিতে জড়িত না থাকলেও আমার আব্বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফায়েল আহমদ ও রাশেদ থান মেনন দের সহপাঠি ছিলেন। আর আমার ছোট দাদা অর্থাত আব্বার চাচা ছিলেন তৎকালিন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামিলিগ এর সভাপতি। একটি যুদ্ধ অনেক ভাল মানুষকেও প্রতিশোধ পরায়ন অমানুষ করে তুলে।

বাহাত্তর এর ঘটনার কথায় মনে পড়ল আমার খালাম্মাও সেই বছরই মেট্রিক পাস করেছিলেন। ছোট বেলা দেখেছি মাঝে মাঝে তিনি কিছু নিয়ে আব্বার সাথে তর্ক করতে থাকলে আব্বা তাকে মেট্রিক পাশ বাহাত্তরে বলে ভেংচাতেন!!
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২৪
212212
শেখের পোলা লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন, পরিস্থিতি মানুষকে হিংস্র করে তোলে৷ অবাঙ্গালীদের আগে নির্বিচারে কাটা হয়েছে এ কথা ইতিহাসে হয়ত নাই, কিন্তু সত্য৷ ধন্যবাদ৷
268493
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০১:২২
দ্য স্লেভ লিখেছেন : মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। আপনার ভাড়ে বহুত রসদ আছে। বহু অবিজ্ঞতা...চলুক
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২৫
212213
শেখের পোলা লিখেছেন : জীবন থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতার সামান্যই এখানে দিয়ে যাচ্ছি মাত্র৷
268495
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০১:২৪
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : অজানা অনেক তথ্য জানলাম, আশাকরি সময় করে বিস্তারিত লিখবেন! আপনার শৈশব সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আমাদের দেশের অতীত জানা হচ্ছে এটাও অনেক গুরুত্বপূর্ন! আপনার পরবর্তী লিখনীর অপেক্ষায়.. Hurry Up
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২৭
212214
শেখের পোলা লিখেছেন : ভাল লাগায় ধন্য হলাম৷ ইনশা আল্লাহ পাবেন৷
268553
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৫১
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : অনেক কিছু জানলাম আপনার মাধ্যমে। জাযাকাল্লাহ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৪
212411
শেখের পোলা লিখেছেন : জানাতে পেরে ধন্য হলাম৷ ধন্যবাদ, আবার আসবেন৷
268557
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৫
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : ইতিহাস ভি্ত্তিক এই লেখাটি পড়ে জানছি অনেক কিছু.... ধন্যবাদ।
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
212412
শেখের পোলা লিখেছেন : জীবন থেকে নেয়া উত্থান পতনের কাহিনী৷ আপনাকে ধন্যবাদদ৷
268964
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৪৮
পবিত্র লিখেছেন : আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু জানলাম আমাদের দেশ সম্পর্কে। অনেক ভালো লাগলো, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম! জাযাকাল্লাহু খাইরান।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৫
212797
শেখের পোলা লিখেছেন : পড়ার জন্য ধন্যবাদ৷ পাবেন ইনশাআল্লাহ৷
১০
270441
০১ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:০৯
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ৩রা মার্চ ১৯৭১ এর পরে দেশের বহু জায়গায় বিভৎস গনহত্যা সংঘটিত হযেছে। যার কারণে ২৬শে মার্চের গনহত্যা সংঘটিত হবার কারন তৈরী হয়েছে। মানুষ ওসব গনহত্যার কথা জানেনা। তবে এসবও একদিন লিখিত হবে। অনেক ধন্যবাদ
০১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৫
214490
শেখের পোলা লিখেছেন : আমার আঙ্গীনা আপনার আগমনে ধন্যহল৷ ধন্যবাদ৷
১১
271050
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৭:৫৮
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : অবাঙ্গালীদের উপর বাঙ্গালীদের চাপা ক্ষোভের ফষল কয়েক হাজার অবাঙ্গালী আবাল বৃদ্ধ বনিতার লাশ ভৈরব নদে ভাসতে দেখা যায়৷ দুর্গন্ধে নদীপাড়ের স্কুল, দোকান বাজার, সব বন্ধ হয়ে যায়৷ - আভিধানিক অর্থে এসব টার্গেটেড হত্যাকান্ডকেই কিন্তু গণহত্যা বলা হয় যেটা একাত্তরেই শেষ হয়ে যায়নি। ওদের কথা কেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে লেখা হয়নি? ওরা কি তবে মানুষ নয়?
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:১৮
215125
শেখের পোলা লিখেছেন : আমাদের ইতিহাস লেখকের মর্জির উপর নির্ভর করে৷ তাই নিজের অপরাধ লেখা হয়না হয় প্রতিপক্ষের৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File