"আওয়ামী খয়রাত"
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২০ জুলাই, ২০১৪, ১০:১৬:৫৪ রাত
অল্প দিনের জন্য দেশে গিয়েছিলাম৷ ছোট বড় অনেক ঘটনা দেখলাম,সে সব কথা যাক৷ দেশের আমলা কর্মচারীদের প্রকাশ্যে খয়রাত চাওয়া ও তার জন্য জুলুম করাটাই আমার কাছে বড় ঘটনা বলে মনে হল৷ তাই আপনাদের অবগতির জন্য শেয়ার করতে মনস্থ করলাম৷
ফিরেছি ১ লা জুলাই৷ আগে জানাতে পারলে আরও হয়ত অনেকে বিড়ম্বনার হাত থেকে এড়াতে পারতেন৷ দুঃখিত, শুধু বিষয়টা নিশ্চিত হতে একটু সময় লেগে গেল৷
২রা রমজান,রোজা অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এয়ার পোর্টে এলাম৷ সাথে ইফতার ছিল, ভাবলাম বাইরে দাঁড়িয়ে ইফতার সেরেই ভিতরে যাব৷ তাই হল এদিকে ইফফতার বিরতীর জন্য গেটও বন্ধ করা হল৷ প্রায় এক ঘন্টা পরে গেট খুললে ভিতরে গিয়ে অন্ততঃ দুশো লোকের পিছনে লাইন দিলাম৷ জেনে রাখা ভাল আমিরাতের প্লেনে ৪/৫ শো যাত্রী ওঠে৷ যাইহোক প্রায় দেড় ঘন্টা পরে দুইজনের তিনটি লাগেজ সহ বর্ডিং পাশের জন্য চালু তিনটি বুথের একটিতে জনৈক ম্যাডামের সামনে হাজির হলাম৷ দুইটি লাগেজ স্কেলে তুলে দিয়ে পাশপোর্ট দুটি বাড়িয়ে দিলাম৷ ম্যাডাম টিকিট চাইলেন, বললাম, ইলেট্রোনিক টিকেট, তার কোন কাগজ নেই, তবে ট্রাভেল সিডুইল আছে৷ তাই দিতে বললেন৷ জানতে চাইলেন ট্যাক্স দিয়েছি কিনা৷ বললাম, আমাদের যাবতীয় ট্যাক্স টিকিটের সাথে দেওয়া আছে৷ চেক করে দেখে নিন৷
উনি বললেন, আজই বেলা তিনটায় অর্ডার হয়েছে বহির্গামী যাত্রীদের নগদ এক হাজার টাকা করে বাড়তি ট্যাক্স দিয়ে যেতে হবে৷
কিছু মানুষকে অযথা দৌড়াদৌড়ি, মোবাইলে বাইরের সাথে বাড়তি যোগাযোগের অর্থাৎ টাকা জোগাড়ের মরিয়া অবস্থাটা বোধগম্য হল৷ বাইরে আমার কোন আত্মিয় বন্ধু আমার জন্য টাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলনা৷ যারা আমাকে এ বিপদ হতে সাহায্য করতে পারে তারা সব খুলনায়৷ এখানে ডলার বা ক্রেডিট কার্ডও গ্রহনযোগ্যও নয়, আবার এ টাকা না দিতে পারলে বোর্ডিংপাশও মিলবে না৷ দেশের টাকা বিদেশে ছেঁড়া কাগজ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ আবার কবে দেশে যাব তাই খরচের পর পকেটে থাকা দু একশো টাকা ততদিনে সচল থাকবে কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই৷ তাই যথা সম্ভব আমরা দেশের টাকা সাথে নিইনা৷ অবস্থাটা একবার ভাবুন৷
যাক্, লাগেজ দুইটা স্কেল থেকে নামালাম৷ কিছু কটু কথাও বললাম৷ ম্যাডাম নিরব,খয়রাতীদের বেজার হতে নেই তাই হবে হয়ত৷ আমার পকেটে দেখলাম চারটা পাঁচশত টাকার নোট তখনও ছিল৷ কারণ আল্লাহ জানতেন এমন হবে, তাই হয়তো ব্যবস্থাটা করেই রেখেছিলেন৷ একটু দুরেই দেখলাম একজন টেবিল নিয়ে বসে রয়েছেন৷ কোন ফুটা থালা নয়, কিছু কাগজ পত্র টেবিলের উপর, কারণ সরকারী খয়রাতী কিনা৷ পোশাক আশাক ভালুই৷ পাশপোর্ট আর টাকা দিলাম৷ একটা ফরম পূরণ করে সীল মেরে ম্যাডামকে দিতে বললেন৷ যেহেতু খয়রাত তাই রিসিট দেবার নিয়ম নেই৷ ইতিমধ্যে অনেক দেরী হয়ে গেছে, তাই অন্যের কি হল তা না দেখে এগিয়ে গেলাম৷
বাঙ্গালী সহনশীল তাই আমি কিছু কটু কথা বললেও আর কাউকে কিছুই বলতে শুনলামনা৷
টরোন্ট এসে আমার ট্রাভেল এজেন্ট কামাল ভাইেয়ের কাছে ট্যাক্সের বিষয়টা জানতে চাইলে উনি বললেন,এমন কিছু হলে অন্ততঃ একমাস আগে এয়ার লাইন্স আমাদের জানিয়ে দেয়৷ওটা আওয়ামী চাঁদা৷ ভাবলাম, সামনে ঈদ ওদেরওতো লালজামা কেনার শখ আছে৷ ওনারা সন্মানিত লোক রবি পথ শিশুদের লাল জামা কিনে দিলেও ওদেরতো দেবেনা৷ আর ওনারাতো টোকাইও নন৷
বিষয়: বিবিধ
১০৭৩ বার পঠিত, ৩২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের দেশের প্রশাসন কত দক্ষ হয়ে গিয়েছে!!!!!
প্রবাসে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখে মনে হয় আমাদের দেশটাও যদি এমন হত! আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় ভাই আপনাকে।
আমি ও যেদিন মদিনাতে আসি সেদিন নানা রকম ঝামেলায় পড়েছিলাম আল্লাহ সুযোগ দিলে কখনো শেয়ার করবো ইনশা-আল্লাহ!
আল্লাহ এদের হেদায়াত দিন।
যাবার সময় আপনাকে সময় দিতে না পারায় খুব মনস্তাত্ত্বিক কষ্টে ছিলাম।
আল্লাহ আপনার সহায় হোন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন