" আমি বণী ইস্রাঈলকে কিতাবে পরিষ্কার বলে দিয়েছিলাম যে, তোমা পৃথিবীতে দু বার অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং অতিশয় স্বৈরাচার হবে"৷

লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:৫৬:২৮ সন্ধ্যা

(উর্দূ বয়ানুল কোরআনের সরল বাংলা অনুবাদ)

সুরা বণী ইস্রাঈল রুকু;-১ আয়াত;-১-১০

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

রসুল সঃ এর মেরাজের দুটি অংশ রয়েছে৷ প্রথমটি মর্ত বা দুনিয়া সম্পর্কীয় আর দ্বিতীয়টি উর্দ্ধ্বলোক সম্পর্কীয়৷ এ সুরার প্রথম রুকুটিতে তারই প্রথমাংশের সামান্য ঈঙ্গীত রয়েছে৷ দ্বিতীয় অংশটি সংক্ষেপে সুরা ‘নজম’ এ পাওয়া যাবে৷ এ ছাড়া এ রুকুতে সাবেকা উম্মতে মুসলেমা, বা ইহুদীদের দুই হাজার বছরের ইতিহাসের চারটি উত্থান ও পতনের ‘দওর’ বা কালের কথা বলা হয়েছে৷

১/سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ

অর্থ;-পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রীবেলা মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমন করিয়েছিলেন’ যার চতুর্ষ্পার্শকে আমি বরকতময় করেছিলাম৷ যাতে তাকে দেখাই আমার কুদরতের কিছু নিদর্শণ৷ নাশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বশ্রেষ্ঠ৷

# এ আয়াতে রসুল সঃ কে বান্দা বলা হয়েছে৷ এটিই মেরাজের প্রথমাংশ৷ রসুল সঃ কে মসজিদে হারাম বা ক্বাবা শরীফের নিকট হতে রাত্রীবেলা বাইতুল মোকাদ্দাস ভ্রমন করিয়েছিলেন যাকে ও যার আশপাশকে আল্লাহ তায়ালা বরকতময় করেছিলেন৷ এখানে অগনিত নবী রসুল এসেছিলেন৷ তাদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে৷ আবহাওয়ার দিক দিয়েও জায়গাটি মনোরম৷ এটি উম্মতে মুসলেমার সাবেকা কিবলাও বটে৷ প্রথমে রসুল সঃ এখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ এটিই তাঁর মেরাজের মর্তলোকের ভ্রমন৷ উদ্দেশ্য, সেখানে অন্যান্ন নবী রসুল গনের রহের সাথে সাক্ষাৎ ও রসুল সঃ কে সাবেকা উম্মতের মুতাওয়াল্লী বানানো৷ এখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর মেরাজের উর্দ্ধলোক ভ্রমন৷

২/وَآتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَجَعَلْنَاهُ هُدًى لِّبَنِي إِسْرَائِيلَ أَلاَّ تَتَّخِذُواْ مِن دُونِي وَكِيلاً

অর্থ;-আমি মুসা (আঃ)কে কিতাব দিয়েছিলাম এবং সেটিকে বণী ইস্রাঈলের হেদায়েতর জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম৷ যাতে তারা আমাকে ছাড়া কাউকে কার্যনির্বাহী স্থির না করে৷



# মুসা আঃ কে দেয় কিতাব, যাতে ছিল হেদায়েত ও নূর তা বণী ইস্রাঈলের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল৷ অপর দিকে পবিত্র কোরআন হল সমগ্র মানব সভ্যতার জন্য হেদায়েত৷ তওরাতে আল্লাহ তায়ালা তৌহীদের মূল বিষয়, যেন তারা আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে কার্যনির্বাহী স্থিল না করে, এ আদেশ দিয়ে দিয়েছিলেন৷

৩/ذُرِّيَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ إِنَّهُ كَانَ عَبْدًا شَكُورًا

অর্থ;-তোমরা তাদের সন্তান, যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় সওয়ার করিয়েছিলাম৷ নিশ্চয়ই সে ছিল কৃতজ্ঞ বান্দা৷

# মহা প্লাবনে নূহ আঃ এর নৌকায় তাঁর সঙ্গীদের সাথে তাঁর তিন ছেলেও ছিলেন৷ তাদেরই একজন ছিলেন শাম৷ এই শামের বংশধরই ইব্রাহীম আঃ আবার ইব্রাহীম আঃ এর বংশধর ঐ বণী ইস্রাঈল৷

৪/وَقَضَيْنَا إِلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ فِي الْكِتَابِ لَتُفْسِدُنَّ فِي الأَرْضِ مَرَّتَيْنِ وَلَتَعْلُنَّ عُلُوًّا كَبِيرًا

অর্থ;-আমি বণী ইস্রাঈলকে কিতাবে পরিষ্কার বলে দিয়েছিলাম যে, তোমরা পৃথিবীতে দুবার অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং অতিশয় অবাদ্ধ স্বৈরাচার হবে৷

৫/وَقَضَيْنَا إِلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ فِي الْكِتَابِ لَتُفْسِدُنَّ فِي الأَرْضِ مَرَّتَيْنِ وَلَتَعْلُنَّ عُلُوًّا كَبِيرًا

অর্থ;-অতঃপর যখন প্রতিশ্রুত দুটির প্রথমটি এল তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কঠোর যোদ্ধা বান্দাদেরকে পাঠালাম৷ অতঃপর তারা প্রতিটি জনপদের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ল৷ এ ওয়াদা পূর্ণ হওয়ারই ছিল৷



# এ আয়াতে বণী ইস্রাঈলের দুটি বড় বিপর্যয়ের কথা বলা হয়েছে৷ এছাড়াও তাদের উত্থান পতনের ঘটনা আমরা সুরা বাক্বারায় পড়ে এসেছি৷ এ উত্থান পতন তাদের নৈতীক আর ঈমানী উত্থান পতন৷

তাদের দুই হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখি;-হজরত মুসা আঃ তাদের ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার করার পর তূর পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নেন ও তৌরাত প্রাপ্ত হন৷ অতঃপর উত্তর পূর্ব দিকে তারা অগ্রসর হতে থাকে৷

যুদ্ধ করে নিজ মাতৃভূমী উদ্ধারের আদেশকে তারা প্রত্যাখ্যান করে চল্লিশ বৎসর ছিন্নমূল হয়ে বাস করতে থাকে৷ এ ঘটনাটি ছিল ১৪০০ খ্রীষ্টপূর্ব অব্দে৷ মুসা আঃ ও হারুন আঃ এর ইন্তেকালের পর নুতন প্রজন্ম নুতন উদ্দমে মুসা আঃ এর খলিফা হজরত ইউসা ইবনে নুন এর নেতৃত্বে মুশরীক কওমের সাথে লড়ে একে একে সমগ্র ফিলিস্তিন উদ্ধার করে৷ তারা ছিল বারোটি কওম৷ সেই অনুযায়ী আলাদা বারোটি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে৷ এটি ছিল তাদের উত্থান৷ বারোটি শাসন ব্যবস্থার ফলে নিজেদের মধ্যে দাঙ্গা ফাসাদ, কলহের সৃষ্টি হয়৷ এই সুযোগে আশপাশের শক্তিশালী কওম তাদের উপর আধিপত্ত বিস্তার করে৷ এক পর্যায়ে একে একে প্রায় সকলকেই দেশছাড়া হতে হয়৷ শুরু হয় পতন৷ এমতাবস্থায় তিন শত বৎসর অতিক্রান্ত হয়৷ অতঃপর বারো গোত্র একত্র হয়ে যুদ্ধ করে দেশ পুনরুদ্ধার করার মানষে তৎকালীন নবী হজরত শ্যামুয়েল আঃ এর কাছে একজন যোগ্য সেনাপতির আবেদন জানায়৷

আল্লাহ হজরত তালুত আঃ কে আল্লাহ মনোনিত করেন৷ তাঁর সেনাপতিত্বে একে একে সমগ্র ফিসিস্তিন পুনরুদ্ধার হয়৷ জেরুজালেমকে রাজধানী করে উত্তরাঞ্চলে ইয়াহুদা ও দক্ষীনে সামেরীয়াকে রাজধানী করে ইস্রাঈল নামে দুটি দেশের পত্তন হয়৷ আবারও তাদের উত্থান শুরু হয়৷

তালুত আঃ ১৬ বৎসর তার পর দাউদ আঃ ৪০ বৎসর ও সুলায়মান আঃ আরও ৪০ বৎসর এ শাসন কায়েম রাখেন৷ এ যেন ছিল বনী ইস্রাঈলের খোলাফায়ে রাশেদার যুগ৷ এর পর সুলায়মান আঃ এর দুই পুত্রের দ্বারা তা আলাদা হয়ে দূর্বল হয়ে পুনরায় পতনের দিকে চলে যায়৷ ঠিক যেন রসুল সঃ এর পর হজরত আবুবকর রাঃ, হজরত ওমর রাঃ ও হজরত ওসমান রাঃ এর পর হজরত আলী রাঃ এর আমলে শাম ও মিশর আলাদা হয়ে খোলাফায়ে রাশেদীনের পতনের সূচনার মত৷

এ আয়াতে বর্ণীত প্রথম পতন বা শাস্তির সূচনা এভাবেই শুরু হয়৷ প্রথমে এসিরীয়ানগন তাদের উপর হামলা চালায় ও ইস্রাঈল ধ্বংস করে৷ ঘটনাটি ঘটে খ্রীষ্ট পূর্ব ৭/৮ শত অব্দে৷ এর পর নমরূদ বাদশাহ, নখতে নজর (নেবুকাট নজর) ৫৮৭ খ্রীষ্ট পূর্ব অব্দে তাদের উপর হামলা চালায়, ছয় লাখ বণী ইস্রাঈল নিধন করে ও সম সংখ্যক বন্দী করে পশু পালের মত করে ইরাক নিয়ে যায়৷ সাথে হজরত সুলায়মান আঃ নির্মীত ইবাদত খানা, হায়কলে সুলায় মানী নস্যাত করে৷ শুরু হয় তাদের নিকৃষ্ট বন্দী জীবন৷ আর ফিলিস্তিন বীরান অবস্থায় পড়ে থাকে৷

পুনরায় আসে তাদের উত্থানের পালা৷ ৪৫৮ খ্রীষ্ট পূর্ব অব্দে জুলকারনাইন ইরাক দখল করে ও বনী ইস্রাঈলদের নিজ আবাস ভূমে ফিরে গিয়ে বসবাসের অনুমতি দেয়৷ ইতি মধ্যে হজরত ওজায়ের আঃ এর আগমন ঘটে ও বীরান ভূমী পুনরায় আল্লাহ কিভাবে আবাদ করবেন তা দেখাবার মানষে তাঁকে শত বৎসর ঘুমন্ত রাখেন৷ প্রায় সোয়াশো বৎসর পর হজরত ওজায়ের আঃ তাদের নৈতীক ও ঈমানী শক্তিতে জাগিয়ে তোলেন৷ এ ঘটনা আমরা সুরা বাক্বারায় জেনে এসেছি৷ এক পর্যায়ে তারা পূর্বাপেক্ষা বড় দেশ বাক্কাবী সালতানাত গঠন করে৷

কালে কালে তাদের মধ্যে না ফরমানী শেরেকী পুণঃ প্রবেশ করে ও পতনের পথে পা বাড়ায়৷ শুরুহয় তাদের দ্বিতীয় দফার শাস্তি৷ প্রথমে গ্রীক বীর আলেকজাণ্ডার ও পরে তারই সেনা পতি সেলুকাস ও তারও পরে রোমানগন ৭০ খ্রীষ্টাব্দে এদের উপর হামলা চালায়৷ এক লাখ তেত্রিশ হাজার ইহুদী নিধন করে ও জেরুজালেম ধ্বংসের সাথে ওজায়ের আঃ কর্তৃক পূনঃ প্রতিষ্ঠিত হায়কলে সুলায়মানী পুনরায় নস্যাৎ করে, যা আজও সে অবস্থায় রয়েছে৷ এখানেই শেষ নয়, ক্রমশঃ আরও জানা যাবে৷

এ ঘটনার ৫০০ শত বৎসর পর হজরত মোহাম্মদ সঃ এর আগমন ঘটে৷ কোরআন নাজীল হয়৷

এই বণী ইস্রাঈলের কথা সুরা বাক্বারায় দুইবার বলা হয়েছে যে, তাদের দুনিয়া বাসীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হেয়েছিল৷ এদের কাছে নবুয়ত ছিল ১৪ শত বৎসর৷ পাঠানো হয়েছিল তিনটি কিতাব৷ পরের দুটি আয়াতে এ ঘটনার কথা জানা যাবে৷

রসুল সঃ বলেছেন যে, সাবেকা উম্মত অর্থাৎ বণী ইস্রাঈল আর উম্মতে মোহাম্মদীর মাঝে সাদৃশ্য এমনই যেমন এক জোড়া জুতা, যা পাশাপাশি রাখলে সামান্য পার্থক্য দেখা যায় কিন্তু দুইটি তল একত্র করলে কোন পার্থক্য দেখা যায়না, এমনই৷ তাই যে পরিস্থিতি বা যে অবস্থা তাদের হয়েছে, ঠিক তেমন অবস্থা হবে তাঁর উম্মতেরও৷

মদীনা মুনাওয়ারা থেকে শুরু হয় উত্থান আর তা ধ্বংস হয় প্রথমে ক্রুসেডরদের দ্বারা তার পর তাতার, চেঙ্গীস খান আর হালাকু খানের দ্বারা৷ পুণরায় তুরষ্কের মাধ্যমে উত্থান শুরু হয় আর ধ্বংস হয় বণী ইস্রাঈলেরই মত ইউরোপিয়ানদের দ্বারা৷ আজও সে পতন অব্যাহত থাকলেও আশার কথা সামান্য হলেও পুনরায় তা মাথা চাড়াদিয়ে উঠছে৷ উদাহরণ স্বরূপ ইরাণ, ইখওয়ান ও জামাতে ইসলামীর আন্দোলনের কথা বলা যায়৷

৬/ثُمَّ رَدَدْنَا لَكُمُ الْكَرَّةَ عَلَيْهِمْ وَأَمْدَدْنَاكُم بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَجَعَلْنَاكُمْ أَكْثَرَ نَفِيرًا

অর্থ;-অতঃপর আমি তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে পালা বদলে দিলাম এবং তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দিয়ে সাহায্য করলাম এবং তোমাদেরকে জন সংখ্যার দিক দিয়ে গরিষ্ঠ করলাম৷

# প্রথম বিপর্যয়ের পর তারা হজরত ওজায়ের আঃ এর দ্বারা ইমান আমানে ফিরে আসে৷ আর আল্লাহ তাদের ধনে জনে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন৷ এমন করেই পালা বদল হয়৷

৭/إِنْ أَحْسَنتُمْ أَحْسَنتُمْ لِأَنفُسِكُمْ وَإِنْ أَسَأْتُمْ فَلَهَا فَإِذَا جَاء وَعْدُ الآخِرَةِ لِيَسُوؤُواْ وُجُوهَكُمْ وَلِيَدْخُلُواْ الْمَسْجِدَ كَمَا دَخَلُوهُ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَلِيُتَبِّرُواْ مَا عَلَوْاْ تَتْبِيرًا

অর্থ;-যদি তোমরা ভাল কাজ কর তবে তা নিজেদের জন্য করবে৷ আর যদি মন্দ কাজ কর তবে তাও নিজেদের জন্য করবে৷ অতঃপর যখন দু-বারের মধ্যে দ্বিতীয় বারের প্রতিশ্রুত সময় এল (আমার কঠোর বান্দাদেরকে প্রেরণ করলাম) যাতে তোমাদের মুখ মণ্ডল বিকৃত করে দেয়৷ আর মসজিদে ঢুঁকে পড়ে যেমন প্রথমবার ঢুঁকে ছিল৷ আর যেখানেই জয়ী হয় সেখানেই পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়৷



# প্রথম উত্থানের পর পুনরায় তাদের মাঝে শির্ক, না ফরমানীশুরু হয় ও ক্রমে তাদের গ্রাস করে৷ তখনই আসে তাদের দ্বিতীয় বারের শাস্তি৷ এ আয়াতে ‘আমার কঠোর বান্দাদেরকে প্রেরণ করলাম’ কথাটির পুনরাবৃত্তি ঘটেনি তবে তাদের উদ্দেশ্য, ধংসের কথা বলা হয়েছে৷ আরও বলা হয়েছে, প্রথমবার যেমন হাইকল বিদ্ধস্থ হয়েছিল তা আবার দ্বিতীয় বার রোমান রাজা টাইটাসের দ্বারা ধ্বংস হয়৷ আর তা আজও সেই অবস্থায় আছে৷

৮/عَسَى رَبُّكُمْ أَن يَرْحَمَكُمْ وَإِنْ عُدتُّمْ عُدْنَا وَجَعَلْنَا جَهَنَّمَ لِلْكَافِرِينَ حَصِيرًا

অর্থ;-হয়ত তোমাদের রব তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন৷ কিন্তু যদি পুণরায় তদ্রুপ কর আমিও পুনরায় তাই করব৷ আর আমি জাহান্নামকে কাফেরদের জন্য কারাগার বানিয়ে রেখেছি৷

# এ হল বণী ইস্রাঈলের দু হাজার বছরের উত্থান পতনের ইতিহাস যা ১৯১৭ খ্রীষ্টাব্দে বেলফোর ঘোষণার পর আবার উত্থানের দিকে চলেছে৷ মধ্যপ্রাচ্চে ইস্রাঈল এখন বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে৷

শেষ নবী এসেছেন, কোরআন এসেছে, এ কোরআন সবার জন্য হেদায়েতের সদর দরজা৷ এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের আশার বাণী শোনাচ্ছেন, সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি, যদি বণী ইস্রাঈল রসুল সঃ এর উপর ঈমান আনে, কোর আনের উপর ইমান আনে, তবে আশা করা যায় আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতেও পারেন৷ আর যদি তারা পুনরায় আগের মত করে তবে আল্লাহও আগের মতই পালা বদল করবেন৷ আর অবিশ্বাসীদের জন্য পরকালে জাহান্নাম তো আছেই৷

৯/إِنَّ هَـذَا الْقُرْآنَ يِهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ وَيُبَشِّرُ الْمُؤْمِنِينَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ أَجْرًا كَبِيرًا

অর্থ;-অবশ্যই এ কোরআন এমন পথ প্রদর্শণ করে যা সর্বাধীক সরল৷ আর সৎকর্ম পরায়ন মুমিনদেরকে সু সংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরষ্কার৷

# রসুল সঃ এর উপর আর তাঁর প্রতি নাজিলকৃত কোরআন যা সৎকর্মী মুমিনদেরকে সর্বাধীক সরল পথের সন্ধান দেয়, তা মেনে নেয় তবে এখনও আশা করা যায় আল্লাহ ইহুদীগনকে অনুগ্রহ করতেও পারেন৷

১০/وأَنَّ الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا

অর্থ;-আর যারা পরকালে বিশ্বাস করেনা আমি তাদের জন্যে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি৷

# যেখানেই ইমানের কথা বলা হয়েছে, সেখানেই এসেছে আখেরাতের কথা৷ আখেরাতই ইমানের আসল অংশ৷ যারা আখেরাতে বিশ্বাস করেনা সেখানেই তাদের জন্য রয়েছে কঠোর আজাব৷

বিষয়: বিবিধ

১৪৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File