নিইয়র্ক টাইমসের এডিটোরিয়াল বোর্ডের সরকারকে কড়া ভাষায় হুশিয়ার করে দেয়া লেখার অনুবাদ -

লিখেছেন লিখেছেন রক্তলাল ১০ আগস্ট, ২০১৩, ১২:৪২:০৯ রাত



গরিব মহিলাদের স্বল্প ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ক্ষূদ্র ব্যাবসা শুরু করা এবং তার বৃদ্ধিতে সহযোগিতার দিশারী ব্যাপক সমাদৃত গ্রামীণ ব্যাংককে ভেংগে জাতীয়করণের চিন্তা করছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের আইনপ্রণেতারা এমন ধ্বংসাত্বক ধারণা প্রত্যাখ্যান করে ৮৪ লাখ গ্রাম্য মহিলাদের সেবাদানকারী এ' ধরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কাজকর্মে অনধিকার হস্তক্ষেপ বন্ধ করা উচিত।

গত দু' বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনুস আর তার গড়া গ্রামীণ ব্যংাকের বিরুদ্ধে ধংসাত্বক প্রচারণাযুদ্ধ চালাচ্ছে। হাসিনার কর্মকান্ডে প্রতীয়মান হচ্ছে যে এটা মুহাম্মদ ইউনুসের উপর তার প্রতিশোধ কারণ ড. ইউনুস ২০০৭ সালে নির্বাচিত হতে চেয়েছিলেন, যদিও তিনি পরে তার নির্বাচনী পরিকল্পনায় আগান নি।

২০১১ সালে হাসিনার আস্থাভাজনরা ড. ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে চাকুরির বাধ্যতামূলক অবসরের বয়সসীমা ৬০ পার হয়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে, যদিও এ'ব্যাপারে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রকরা এর আগেই তাকে চাকুরিতে থাকার অনুমোদন দিয়েছিল। এর পর থেকেই সরকার বিভিন্ন তদন্ত শুরু করে এবং এখন তা ১৯ ভাগে ভাগ করে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ফন্দি করছে। যদিও ব্যাংকের বৃহত্তর মালিকানা এটার ঋণগ্রহীতাদের।

১৯৭০ সালে তৈরী ড. ইউনুসের ক্ষূদ্র ঋণের সেই পদ্ধতি ইদানিং কিছু কার্যকারিতা হারিয়েছে গ্রামীন ব্যাংকের বাইরে কিছু ঋণদানকারী সংস্থার বিতর্কিত কার্যক্রমের কারণে। তারপরেও, গ্রামীণ ব্যাংকের কাজের ধরণ এখনও দারিদ্র বিমোচনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এটি সারা বিশ্বে লাখ লাখ গরিব মহিলাকে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু এবং গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশে।

সরকারের একটি শাখায় রূপান্তরিত করা হলে ব্যাংকটির মূল উদ্দেশ্য হুমকির মুখে পড়বে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে। একদিকে যখন সরকারী ব্যর্থতার বিপরীতে জাতীয়ভাবে সমাদৃত এই প্রতিষ্ঠানের প্রভাব ধ্বংস করা হচ্ছে, আবার ভাগ করার ফলে গ্রামীণ ব্যাংক প্রাশাসনিকভাবে নিস্তেজ হয়ে যাবে।

সরকার নিয়োজিত কমিশনের পর্যবেক্ষণের পর ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভবত আগামী সপ্তাহের এক রিপোর্টে তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হবে। স্থানীয় সংবাদের ভিত্তি অনুযায়ী, এই নির্দেশনার একটি হবে, ব্যাংকটি ভাগ করে দিয়ে জাতীয়করণ। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন ব্যাংকের কর্মচারী এবং ঋণ গ্রহীতারাদের নেতিবাচক প্রচারণার সুযোগ করে দেয়াকে এড়াতে জাতীয় নির্বাচনের আগে হয়ত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কমিশনের নির্দেশিত কোনো পদক্ষেপ নিবেন না।

হাসিনা যখনই সিদ্ধান্ত নিন না কেনো, সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী ঋন সেবার অন্যতম এই আন্দোলন যা লক্ষ লক্ষ নারীদের জন্য সুফল নিয়ে এসেছে তা সম্পূর্ণ ভেংগে দেয়ার পেছনে তিনি কোনো অকাট্ট যুক্তি দেখাতে পারেন নি।

বিষয়: বিবিধ

১৬৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File