শাহবাগনামা - বিদায় চিত্রঃ বিনোদনের নিশ্চয়তা রইল, বিফলে পোস্ট ফেরৎ
লিখেছেন লিখেছেন রক্তলাল ১৬ জুন, ২০১৩, ০৫:২০:৩৫ বিকাল
এই অভূতপূর্ব পীরের নাম হইল বাবা ইমরান শাহে সরকার শাহবাগী।
তিনি এতদ অন্চলের মানুষজনকে কিছু চমক দেখাইয়াছেন বটে।
জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হইয়াও শুধু পিতৃপ্রদত্ত নামের বলে বলীয়ান হইয়া সরকারেরও সরকার রূপে আবির্ভূত হইয়াছিলেন।
বাবাজী শাহে শাহবাগী আলাদিনের ম্যাজিক কার্পেটে চড়িয়া হাওয়ায় ভাসিয়া শাহবাগ চত্বরে তাহার খানকা স্থাপন করিলেন। অবশ্য আবার আশ্চর্য গায়েবি কেরামতি দেখাইয়া বাতাসে মিলিয়া গেলেন। মধ্যখানে নীম্নোক্ত ঘটনা ঘটিল।
যতক্ষণ এই শাহবাগী বাবার কেরামতি ছিল, তখন তাবৎ মন্ত্রীকুল তাহার খানকায় মোমবাতি জালাইয়া বাবাজির মহিমা ছড়াইলেন।
সরকারেরও সরকার ইমরান বাবার মুরিদরাও দলে দলে ভিড় করিয়া নানা প্রকার মন্ত্রজপে মাতাইয়া রাখিলেন। চলিল গন্জিকার নন-স্টপ উৎসব। মেয়ে ভক্তরা বাবার দরবারে আসিয়া নানা উদ্দাম নৃত্যে আদিম উন্মাদনার এক বিশেষ আবহ তৈরী করিলেন।
এমন কেরামতি আর শক্তির ঐশী আভা বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করিয়া দিল্লীর মসনদে গিয়া পোছাইল।
দিল্লীর অধিপতি শ্রী প্রণি মুখ্যুজ্জীও তাহার সামন্ত বহর লইয়া উপস্থিত হইলেও বাবাজির দর্শন করিতে না পারিয়া আফসোস করিতে করিতে উড়োযানে চড়িয়া ফেরত গমণ করিলেন।
বংগ (পশ্চিম এবং পূর্ব) অন্চলের গণমাধ্যম গুলিও হুড়মুড় করিয়া জড়ো হইয়া নিখিল বিশ্বে খানকার কর্মকান্ডের মহিমা ছড়াইতে লাগিলেন। আহা এই হয়ত কালিংগার রাজা অশোকের মত কেউ আসিয়া শাহবাগী বাবার বিরোধীদের জবাই করিয়া ফাসি দিয়া রক্তগংগা ভাসাইয়া দিবে।
বাবাজীও যেন দিনকে দিন ভূমি হইতে আরো উপরে উন্নীত হইতেছিলেন। মাঝে মাঝে বেলুন কনডমও আকাশে উড্ডয়ন করিয়া বাবাজির নাগাল পাইবার জন্য ভক্তদের প্রতিযোগিতা চলিল।
বাবাজী যতই উপরে উঠিলেন ততই উত্তপ্ত সব আদেশ নির্দেশ দিতে লাগিলেন। তাহার ভক্তরাও তাহার বাণী পরম কর্তব্য মনে করিয়া এতদ অন্চলের প্রত্যন্তে ছড়াইয়া দিলেন। সকলে তটস্ত হইয়া, জাতীয় সংগীত বাজাইয়া দন্ডায়মান হইয়া বাবাজীর নির্দেশ পালন করিতে প্রতিযোগিতা শুরু করিয়া দিল।
সদ্যভূমিষ্ট শিশুসন্তানকে দিয়াও মনুষ্যনিধণের মন্ত্র জপ করানো হইল।
ধীরে ধীরে বাবাজীর কেরামতির খবর দুষ্কৃতিকারীদের কাছে গিয়া পৌছাইল। বাবাজীও চেতিয়া মেতিয়া শাসন করিতে লাগিলেন।
বাবাজীর বিরূদ্ধে গণরোষের রটনাও রটিল। শাপলা চত্বর নামক স্থানে নাকি নিযুতকতক লোক বাবার মহিমার বিরূদ্ধে অতি বেয়াদবি দাবী করিল।
কি জানি একখানা নির্বাচনও হইল। রটনা রহিয়াছে তাহাতেও লোকজন বাবাজীকে জুতা দিল।
অবশেষে বাবাজী তাহার সবচেয়ে বড় কেরামতি দেখাইয়া তাহার ম্যাজিক কার্পেটে চড়িয়া অদ্ৃশ্য হইয়া গেলেন। শাহবাগী দরবারের আশে পাশের অন্চলের লালসালুগুলো ও হাওয়া হইয়া গেল। ভক্তরা তল্পিতল্পা লইয়া প্রস্থান করিল। মন্ত্রী মহোদয়দের লোমও আর আশে পাশে খুজিয়া পাওয়া যায়না।
আর এইরূপ শেষ হইল শাহবাগী বাবা কেরামত শাহ ইমরান সরকারের তেলেসমাতি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন