ভারত কি পারবে আওয়ামী সরকারকে বাঁচাতে?

লিখেছেন লিখেছেন রক্তলাল ২০ মে, ২০১৩, ০৫:০৪:৩০ সকাল



[পচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর ঢাকার রাজপথ]

আমরা যারা অনলাইন হোক আর রাস্তায় হোক, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছি তা মানুষ হত্যা বন্ধ ও গণতন্ত্রের জন্য।

আমরা কেউই চাইনা কারো অকাল মৃত্যু হোক। আমরা সব পক্ষকেই এ' ব্যাপারে নিবৃত থাকতে আহবান জানাই। কিন্তু অনেক ঘটনার বর্ণনায় অনেক অনাকাংখিত মৃত্যুর কথা চলে আসে। ইয়াহিয়া মানুষ হত্যা করেছিল রাতের অন্ধকারে। রক্ষি বাহিনী হাজার হাজার মানুষ খুন করেছিল। মুজিব নিজে সংসদে দাড়িয়ে সম্মানের জায়গা সংসদকে অপবিত্র করেছিল, "কোথায় সেই সিরাজ সিকদার" হুংকার দিয়ে। আমরা এসব মৃত্যুর নিন্দা জানাই।

ইয়াহিয়াও নাই মুজিবও নাই। তাদের আরেক সমকালীন ইন্দিরাকেও মেনে নিতে হয়েছে নিষ্ঠুর পরিণতি।

ইন্দিরা এবং মুজিবের দলকে দীর্ঘদিন ক্ষমতা থেকে দুরে রেখেছিল জনগণ।

এখন আসি মুল কথায়, হাসিনার সরকারকে কি টিকিয়ে রাখতে পারবে ভারত।

বিরোধীদল কার্যত নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। নেতাদেরকে ফাসিতে ঝুলানোর পায়তারা চলছে। ট্রাইব্যুনাল, বিচার এখানে অপ্রাসংগিক, ফালতু। ট্রাইব্যুনালের মত merit-less and sick বিষয় নিয়ে কথা বলাকেই আমার intellect কে অপমান মনে করছি।

যাইহোক, মত-প্রকাশেও দেওয়া হয়েছে তালা, প্রতিবাদকারীকে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

যে কেউ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে পশুত্বের সর্বনিম্নস্তরে নেমে atrocity চালানো হচ্ছে।

আবার অপরদিকে পোষা আর উচ্ছিষ্টভোগী মিডিয়ানামক পাপের পথে ঘৃণিত জীবিকা নির্বাহী গোষ্ঠী দিয়ে চালানো হচ্ছে মিথ্যা প্রচার।

সরকারের এসব করার কারণ, উদ্দেশ্য কি? সরকারকে টিকিয়ে রাখা।

রহস্য হল সরকারকি মাতাল? জনগণের আশা আকাংখা পুরণ না করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকবে কেমনে? দমন নিপীড়ন আর মিডিয়া দিয়ে?

এসব করে বিরোধীদলকে সাময়িকভাবে অপ্রস্তুত রাখা যায়। জনগণের আশা আকাংখা বিএনপি জামাত বা হেফযতকে ক্ষমতায় বসানো নয়।

জনগণের চাওয়া হচ্ছে তিন বেলা না হোক দু'বেলা যেন ভাত পড়ে। ছেলেমেয়েদেরকে যেনো স্কুল, কলেজে পাঠানো যায়। ভবিষ্যৎ নিয়ে যেনো একটু স্বপ্ন দেখতে পারে। দিনের পুরোটা নয়, অন্তত দরকারী কাজের সময় পানি-বিদ্যুৎ পায়।

সরকার কি পারছে এসবের পুরোটা না হোক অন্তত সন্তুষ্টপূর্ণ কিছু করতে?

নাকি উল্টো সরকার নিজেই নানা ঝামেলা যন্ত্রণায় জনগণকে অতিষ্ট করে তুলছে চাপাতিলীগ, চাকুরীবৈষম্য, প্রয়োজনীয় বিষয়ের অপ্রতুলতা, লাগামহীন দ্রব্যমূল্য এর মাধ্যমে।

যদি সত্যিকারের জনমুখী কাজ সরকার না করতে পারে তাহলে তারা কিভাবে টিকে থাকার স্বপ্ন দেখছে? বরং বিএনপি জামাত হেফাযত ছাড়া জনগণ অন্য কোথাও যাবার রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেনা সরকার?

নিজভূমে আজ এই আওয়ামী মন্ত্রীরা পরদেশী। বাস্তবেও তাই। সরকার পুরোটাই এখন ওপারের উপর নির্ভরশীল।

এখন কথা হল, সরকার তার এসব চাতুর্য্যের মাধ্যমে টিকবে কিনা? জনতা থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে তা সম্ভব নয়। ভারতের সাহায্যেও অসম্ভব।

আমাদের ইতিহাসের একটু, মাত্র একটু পেছনে যেতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের পর মুজিব যত জনপ্রিয় ছিলেন হাসিনা ততটুকু নয়। তিনিও শুধু তার পোষা মিডিয়া রেখে বাকি সব স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন।

তখনও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ঠিকমত গড়ে উঠেনি। ভারতের সামরিক বা রাজনৈতিক প্রভাব এখনকার চেয়ে আরো অনেক সরাসরি ছিল। ইন্দিরা খুব demanding ছিল। অযথাই নাক গলাত। এমনকি মুজিবকে না জানিয়ে ইন্দিরাই পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের চুক্তি পাকা করেছিল। মানে ঐ সময়ে ভারতের প্রভাব আরো অনেক বেশী ছিল।

মুজিব সংবিধান শুধু সংশোধন ই করেননি বরং নিজেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন।

সেই মুজিবের বিদায় হয়েছিল। - আমার মুল কথা তার মৃত্যু নয়, বরং এর পরে মানুষের প্রতিক্রিয়া। একটা কুকুর পর্যন্ত এসে ঘেউ করেনি প্রতিবাদে।

কি হয়েছিল? কি কারণে যে মুজিবের ছিল আকাশচুম্বী প্রভাব তার পতনে কারো কোনো শব্দ নেই।

অনেকে বলেন আর্মির ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি। মিথ্যা কথা!

কারণ মাত্র তিন বছর আগেই বাংলাদেশীরা যুদ্ধ করেছিল পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে। তাহলে কি হয়েছিল মুজিবের পতনের পর বাংলাদেশীদের মধ্যে?

সরকার জনগণের স্বার্থে্যের ছিলনা, যেমনটি নেই হাসিনার সরকার!

তাই যারা তাদের পতনকে ঠেকাতে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে গণহত্যার মত কাজ করতেও বিরত হচ্ছেননা, তারা তাদের পতনকে ঠেকাতেত পারবেনইনা বরং বাড়াচ্ছেন পরিণতির ভয়াবহতা ।

বিষয়: বিবিধ

১৩৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File