বিদায় হাসিনা! বাংলাদেশের ইতিহাসের নিকৃষ্টতম অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি, আর আস্তাকুঁড়ে আওয়ামী চাপাতী লীগ
লিখেছেন লিখেছেন রক্তলাল ০৩ মে, ২০১৩, ০৯:২৭:১১ সকাল
১৬ই এপ্রিল নীচের পোস্টটি লিখেছিলাম - দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই আওয়ামীদের বিদায়ের ঘন্টা বেজে উঠল। হাসিনার সংলাপের প্রস্তাব হুসনী মোবারোকের শেষ দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। হাসিনা আর তার চামুন্ডারা এখন পালানোর সময়। সব সীমান্ত পথে পাহারা বসানো হোক।
মখার কোনো সাড়া নাই। পালিয়ে গেছে অলরেডি?
==------==------==
যারা মনে করছেন শয়তানী কুটচালে আর প্রণব দাদার বদৌলতে ২০০৮ সালের মত হাসিনা আবারো পার পেয়ে যাবেন, তারা সম্পূর্ণ ভূল। নিজেদের পিঠ বাচানোর অবচেতন খেয়ালে পরাজয়ের মানসিকতায় সমাগত সত্যকে দেখতে দৃষ্টিহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন।
কেউ কেউ আছেন নিজেদের ইসলামের বিজয়ের দরদী বুঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু একেবারে নিছক কিছু ব্যাপারকে নিয়ে আসেন জামাত-শিবিরের দোষ ধরতে।
প্রথম কথা এই ব্যাপারে, বর্তমান পরিস্থিতিতে জামাতের এসব দোষ গুন কি মুখ্য কিংবা আদৌ প্রাসঙ্গিক?
কথা হচ্ছে সরকারের পৈশাচিক আচরণে মানবতা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। দেশের জনগণ হচ্ছে নিস্পেষিত। জামাত খারাপ দল, তাই বলে নির্বিচারে বা বিচারের নাটকের মাধ্যমে ফাসি দিতে হবে? নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করতে হবে? তাদের স্বাভাবিক ব্যাক্তিগত এবং রাজনৈতিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিতে হবে? যদি তাই না হয়ে থাকে তাহলে এসব ছিটেফোটা দোষগুণের অভিযোগ দাঁড় করানোর উদ্দেশ্য কি?
দ্বিতীয় কথা, জামাত খারাপ দল এইজন্য দেশের মানুষের জীবনের নিশ্চয়তা থাকবে না? জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বন্চিত হতে হবে? লেখাপড়ার নিশ্চয়তা নেই, কলেজ ইউনিভার্সিতি বন্ধ। ছাত্রলীগের আধিপত্য নিশ্চিত করতে দিনের পর দিন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে আছে। ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, বিদ্যুত ও পানি সঙ্কট, শেয়ার বাজার-হলমার্ক কেলেঙ্কারি, এসব ব্যাপারে জনজীবনের গতি রোধ্য।
এসব মুখ্য না হয়ে ফালতু কিছু বিষয় নিয়ে আসার উদ্দেশ্য কি হতে পারে?
আমার মনে হয় এসব হল অথর্ব স্বার্থান্বেষী কিছু লোক আওয়ামীদের বিরাগভাজন হয়ে সমস্যায় যেন না পড়তে হয় সেজন্য নিজেদের দায়মুক্ত করার অপপ্রয়াস। ভুজুং ভাজুং কথা বলে নিজেকে স্বান্তনা দেওয়ার আত্মতুষ্টিকে জায়েজ করার আত্মপ্রতারণামুলক চাতুর্য্য।
হাসিনার পতন কি আসন্ন?
ভারতীয় চাপে হাসিনার হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিকৃত সেনাপ্রধান মঈনুদ্দীন কাপুরুষের মত দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল।
হাসিনা আর তার বহর ক্ষমতা পেয়েই তাদের সব প্রতিশোধ নেওয়ার উন্মত্ততায় তাদের সকল রক্ততৃষণা মেটাতে হুড়মুড় খেয়ে নেমে পড়ে।
মানুষের চাহিদার দিকে নজর না দিয়ে তাদের পাশবিক এজেন্ডা পুরণ করতে তারা ব্যাস্ত থাকে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আগুন, সেনাবাহীনির অফিসারদের হত্যা, নতুন বিমানবন্দর নিয়ে টালবাহানা, খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ, পুলিশের গ্রেফতার বানিজ্য, ছাত্রলীগের চাপাতির নির্মমভাবে ব্যবহারের প্রদর্শনী, হলমার্ক-শেয়ার বাজার-সোনালি ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি, বিরোধী দলের উপর নিষ্ঠুর অত্যাচারের খড়গ, এরকম হাজারো নেতিবাচক বিষয়ের কারণে দিনে দিনে জনগণের মাঝে ক্ষোভগুলো পুঞ্জীভূত হতে থাকে। দানা বাধতে থাকে গণবিস্ফোরণের।
সেই গনবিস্ফোরনকেই শিবির আস্তে আস্তে বাস্তবিক রূপ দিতে থাকে। বাংলাদেশ প্রথম বারের মত গর্জে উঠে ২৮ শে ফেব্রুয়ারি। ৬ ই এপ্রিল আরো একবার দেয় হুঙ্কার। ইংরেজিতে বলে ওয়ান টু পান্চ। মানে পরপর দুই আঘাত। আর তাতে নড়বড় হয়ে পড়ে হাসিনার তখ্ততাউস। মাঝখানের শাহবাগী পাপেট শো এর সরকারের তৈরী কাগুজে বাঘগুলো বাতাসে এসেছিল, হাওয়াতে মিশে গেছে। তারা এখন এখানে সেখানে কোনাকান্চিতে মিয়াও মিয়াও করে। হাসিনাই তাদেরকে উচ্ছিষ্টের মত ছুঁড়ে দিয়েছে অনাকাংখিতদের রাখার জায়গাতে।
এইমুহুর্তের বাস্তবতা হচ্ছে দেশের সর্বত্র-ই আওয়ামীরা পড়েছে গণরোষে। পুলিশ বিজিবি দিয়ে কাজ হচ্ছেনা। ২৮শে ফেব্রুয়ারির অভ্যুথানে যা দেখা গিয়েছিল।
ঢাকার কিছু নিদৃষ্ট জায়গা ছাড়া আওয়ামী আর শাহবাগীদের যাওয়ার জায়গা নাই। কোনোমতে ওরা প্রশাসন আঁকড়ে আছে নিজেদের ক্ষয়িষণু আত্মাকে স্বান্তনার ফানুসী হুঙ্কারে।
বালির দুর্গ ঝরে পড়তে এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সেনাবাহিনী জনগণের উপর গুলি চালাবে না বরং উল্টা হতে পারে।
আর দাদাবাবুরা সেনা হস্তক্ষেপের ঝামেলায় যাওয়ার নির্বুদ্ধিতা দেখাবেনা। অনেক ভারতীয় তাবেদার খেয়াল রাখেন না যে চীন কিন্তু ভারতকে ঘিরে রেখেছে।
হাসিনার পতন দোরগোড়ায়।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন