সফলতার জন্য ৭ টি বিষয়
লিখেছেন লিখেছেন ইকুইকবাল ২১ মার্চ, ২০১৪, ০৩:০১:৫৪ দুপুর
সফলতার বিপরীতে রয়েছে ব্যর্থতা। ব্যর্থতা বলতে আমরা বুঝি কিছু নেতিবাচক বা ভুল কাজের ধারাবাহিক পূণরাবৃত্তি। ব্যর্থতাকে অতিক্রম করেই উন্নতি করতে হয়। উন্নতি হল বর্তমানের কাজ ও ভবিষ্যতের দৃঢ় প্রত্যয়। এবার আমাদের আসল বিষয় সফলতায় আসা যাক। সফলতা হচ্ছে কার্যকর দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ধৈর্য্য সহকারে কর্মের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করার নাম। পৃথিবীর এমন কোন সফল ব্যক্তি নেই যাকে ব্যর্থতায় আঁচ করেনি। ব্যর্থতা হচ্ছে সফলতার যাত্রা পথে একটু বিরতি মাত্র। আসুন সফলতার জন্য ৭ বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেই তাহলেই আমরা সফল হব ইনশাআল্লাহ। যথা:-
১. চিন্তা,
২. প্রস্তুতি,
৩. চেষ্টা,
৪. সময়,
৫. মেধা,
৬. পরিকল্পনা ও
৭. কাজ।
১. চিন্তা: চিন্তা শক্তির প্রখরতা মানুষের মনের অলৌকিক পরিবর্তন আনতে পারে। যে সৎ চিন্তায় নিমগ্ন থাকে কলুষতা তাকে স্পর্ষ করতে পারেনা। শিক্ষা ছাড়া চিন্তা বিপদজনক। যে যুক্তির সাথে চিন্তা তার চিন্তা কখনও নীতি ধর্মের বিরোধী হতে পারে না। মহৎ চিন্তাভাবনা যার সাথী সে কখনও ব্যর্থ হতে পারে। ভাল একটা চিন্তা করলে বিধাতা পথ দেখাবেনই। নেপোলিয়ান পাহাড়ে বসে চিন্তা করেই সফল হয়েছেন। কলম্বাস আবিষ্কারের চিন্তা করেই বিখ্যাত হয়েছেন। জগদ্বিখ্যাত ও সফল ব্যক্তিরা কোন বিষয়ে বেশি চিন্তা করেছিলেন?
ক) স্বপ্ন নিয়ে
খ) লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে
গ) জীবন নিয়ে
ঘ) নিজের ও মানবতার শুখ শান্তি নিয়ে।
২. প্রস্তুতি: প্রস্তুতির অর্থ ব্যর্থতাকে সহ্য করা। কখনও ব্যর্থতাকে মেনে নেয়া নয়। এর অর্থ পরাজিতের মানসিকতাকে ত্যাগ করে পরাজয়ের মুখোমুখি হওয়ার সাহস। একবার ব্যর্থ হয়েও নিরুৎসাহিত না হওয়া। প্রস্তুতির অর্থ ভুলগুলি থেকে শিক্ষা গ্রহণ। আমরা সকলেই ভুল করি। ভুল করা কোনো অন্যায় নয়। একজন নির্বোধ একই ভুল বারবার করে। ভুল করে যে নিজেকে সংশোধন না করে সে ভবিষ্যতে আরও বড় ভুল করবে। প্রস্তুতি না থাকলে মনের উপর চাপ বাড়ে। আকাঙ্খা ও অল্প চিন্তাতে কোন কাজ হবেনা। প্রস্তুতির ফলেই কেবল প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য পাওয়া যায়। জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠান, বিয়ের পূর্তি, ভেলেন্টাইনস দিবস, জাতিয় যে কোন দিবস বা কোন পার্টির আয়োজনে আমরা আগ থেকেই অনুষ্ঠানটি সুন্দর করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি। কিন্তু আমরা সোনার হরিণ বা সুখের পায়রা নামক সফলতাটি নিজের ললাটে যুক্ত করতে চাই অথচ তেমন কার্যকরী ও বাস্তব প্রস্তুতি গ্রহণ করি না। তাহলে কি সফল হওয়া সম্ভব? আমরা আমাদের জীবনে পরিবর্তন করতে যাচ্ছি তাহলে কেমন প্রস্তুতি চাই?
প্রস্তুতির ২টি ভাগ আছে। যথা:-
প্রথম ভাগ: বিশ্বাস করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে (আমরা যেটি নিয়ে কাজ করব সে সম্পর্কে বিশ্বাস)
ধৈর্য ধরা ও লেগে থাকার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
দ্বিতীয় ভাগ: শারিরিক প্রস্তুতি: ড্রেসকোড, অফিসিয়াল ইনস্ট্রুমেন্ট
মানসিক প্রস্তুতি: প্রো-একটিভ, পজিটিভ হওয়া
সম্ভব বলা, বাধা আসবে জেনেও তা প্রতিরোধ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা এবং অবশ্যই পারব বলা।
৩. চেষ্টা: চাওয়াটাকে পাওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠে-পড়ে লাগাই চেষ্টা। (ব্যর্থ হলেও না থামা)
৪.সময়: সফলতার জন্য আমাদের ‘পূর্ণ সময়ের মানসিকতা’ থাকা দরকার। অর্থাৎ আমাদের সীমাবদ্ধ সময়ের মধ্যে যেটুকু আছে সেটুকুর পূর্ণ সময় দিতে হবে। প্রথমে জানার ক্ষেত্রে অর্থাৎ যে কোন বিষয় না বুঝলে সে ব্যপারে তথ্য অর্জনের পিছনে সময় ব্যয় করতে হবে। সফল হতে গেলে অনেক বিষয়ে অনেক রকম তথ্য সংগ্রহ করা একান্ত প্রয়োজন। অফিসে নিয়মিত আসার জন্য সময় দিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৭ থেকে ১০ ঘন্টা সময় বিনিয়োগ করতে হবে। সীমাবদ্ধ সময়ের যেটুকু এখন বিনিয়োগ করছি তা দিয়ে ভবিষ্যতের ‘পাইপলাইন’ সৃষ্টি হবে। আমরা নিজের জন্য কিছু সময় অর্জন করতে সক্ষম হব যা দিয়ে আমাদের পরিবারের জন্য বড় ধরনের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব। জীবন গঠনের জন্য সু-অভ্যাস প্রয়োজন। পরবর্তী ৩০ দিন যদি কঠোর অধ্যাবসায়ী হই এবং আমি নিশ্চিত যে, এটি আমাদের অভ্যাসে পরিণত হবে।
৫. মেধা: সফলতা অর্জনের জন্য কিছু মেধা বিনিয়োগ করতে হবে। এই মেধা বিনিয়োগ করতে হবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। যেমন- আমাদের মাঝে ৯৫% লোক নেতিবাচক। এরা আমাদের প্রতিনিয়ত নেগেটিভ ও ব্লকিং প্রশ্ন করতে থাকে। তাই এদেরকে সন্তুষ্টজনক উত্তর দেয়ার জন্য সুক্ষ্ণ মেধা ব্যয় করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের লোক অর্থাৎ চাকুরিজীবী (পুলিশ, ব্যাঙ্কার, শিক্ষক), পেশাজীবী (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, সাংবাদিক, কবি), ব্যবসায়ী (এজেন্ট, হোলসেলার, রিটেইলার) দেরকে কন্ট্রোল করার জন্য ও কাঙ্খিত ক্ষেত্রে আমন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল জানতে হবে। এবং তাদেরকে বাগে আনার জন্য নতুন নতুন নিয়ম বের করার জন্য মেধা ব্যয় করতে হবে। সর্বপরি ক্রিয়েটিভ অর্থাৎ সৃজনশীল হওয়ার জন্য মেধা ব্যয় করতে হবে যেটি দক্ষ দায়িত্বশীল বা লিডার হওয়ার পূর্বশর্ত। সফলতার জন্যও।
৬. পরিকল্পনা: কিভাবে টার্গেট পূরণ করা যায় এবং লক্ষ-উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার জন্য মাস্টার প্ল্যান করা। কিভাবে লিডার, ক্রিয়েটিভ, ট্রেইনার, মটিভেটর হওয়া যায় তার জন্য পরিকল্পনা করা।
৭. একশন বা কাজ: জীবন মানেই কাজ। সফলতার জন্য প্রয়োজন চিন্তা, পরিকল্পনা ও কাজ। আর কাজ হল সফলতার সাথে সরাসরি যুক্ত। কাজের মধ্যে ধারাবাহিকতা জরুরী। তাহলেই সফলতার দিগন্ত উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ।
-আমার লেখাগুলি সম্পূর্ণ নিজের ব্যর্থতা ও কাজের অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া।
বিষয়: সাহিত্য
১১৫০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
১, কত কি করার যে চিন্তা করি।
২, প্রস্তুতিও নেই ।
কিন্তু সময়ে হলে আর করে উঠিনা।
বা অলসতা করি। যা মোটেও উচিৎ নয়।
কি আর করবো অলসতাতো কাটেনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন