শাহবাগিরা কই? ইহারা কি বিলুপ্তপ্রায় প্রানীর তালিকায় যোগ হইয়াছে নাকি ইতিমধ্যে দেশ হইতে বিলুপ্ত হইয়াছে?
লিখেছেন লিখেছেন সচেতন_ নাগরিক ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:৩৯:৪৩ রাত
কিছুদিন যাবত শাহবাগীদের কোন খবর পত্রিকায় বা টিভির খবরে কোথাও দেখিতেছিনা। সত্যি কথা বলিতে শাহবাগীদের কথা আমি প্রায় ভুলিয়াই গিয়াছিলাম। আজকের আমারদেশ এর রিপোর্ট পড়িয়া আমার আবার নতুন করিয়া ভাবনার উদয় হইলো। এই বিলুপ্তপ্রায় প্রানীদের খবর সর্বশেষ কবে টিভিতে দেখিয়াছি তাহাও মনে করতে পারিতেছিনা। বড়ই চিন্তার বিষয়। অথচ একবার একখানি পত্রিকার কুইজে দেখিয়াছিলাম:
প্রশ্ন: বাংলাদেশের সরকার কে চালায়?
ক। আওয়ামী লীগ সরকার
খ। বিএনপি সরকার
গ। বিদেশী সরকার
ঘ। ইমরান এইচ সরকার
সঠিক উত্তর:
ঘ। ইমরান এইচ সরকার
(‘রাজাকারের নাতি’ খ্যাত শাহবাগিদের নেতা ইমরান এইচ সরকার)
এককালের প্রতাপশালী শাহবাগীরা ডাইনোসারদের মতো সম্পুর্ন বিলুপ্ত হইলে চেতনা ব্যবসায়ীদের কি হইবে আমি অনেক ভাবিয়াও কিছু ঠাহর করিয়া উঠিতে পারিতেছিনা। আপসুস, বড়ই আপসুস। রিপিার্টখানি পড়িলে পাঠকগনও নিশ্চয়ই আমার মতোই চিন্তিত হইবেন বলিয়া মালুম হয়।
শাহবাগিরা লাপাত্তা! : এখন আর আসে না ‘প্রতিরোধের’ ঘোষণা
মুক্তিযুদ্ধের কথিত চেতনা ফেরি করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাতকে শক্ত করতে মাঠে নামা শাহবাগি কুশীলবরা হঠাত্ উধাও হয়ে গেছে দৃশ্যপট থেকে! পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করার আগেই জনগণের বিভিন্ন দাবির কাছে আওয়ামী লীগ সরকার নতিস্বীকার করতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে সটকে পড়েছে ক’দিন আগেও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে চিত্কার করা এই ধর্মদ্রোহী ভণ্ডরা।
গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জামায়াত-শিবিরের এমন কোনো হরতাল বা বড় কর্মসূচি ছিল না—যা শাহবাগিরা ‘প্রতিহতের’ ঘোষণা দেয়নি। যদিও ঘোষণা দিয়ে বেশিরভাগ সময় নিজেরাই তাদের পুলিশবেষ্টিত মঞ্চে আসারও সাহস করেনি। আবার কখনও সকালে জামায়াতবিরোধী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে লোক জোগাড় করতে না পেরে বিকালে হাতেগোনা ক’জনের মাধ্যমে তা পালন করেছে। আর জামায়াত-শিবির একই সময় তাদের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেছে পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে।
তবে এতদিন অন্তত মাঠে থাকার ঘোষণায় কোনো কমতি না তাদের; থাকলেও গত ক’দিন ধরে তারা আর এমন ঘোষণাও দিচ্ছে না। ফেসবুক আর ব্লগেও এখন আর চেতনাধারী ‘স্ট্যাটাস’-এর ঝড় উঠছে না। এমনকি ‘রাজাকারের নাতি’ খ্যাত শাহবাগিদের নেতা ইমরান এইচ সরকার এখন ফেসবুকে আবেগপ্রবণ স্ট্যাটাস দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদেরও হাঁকডাক নেই বললেই চলে। দু’একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের একমাত্র আলোচ্য বিষয় এখন কে কখন তাদের হুমকি দিয়েছে—তা জানানো। কিন্তু জামায়াতের কর্মসূচি প্রতিরোধের ঘোষণার কোনো নাম-গন্ধও নেই। এ নিয়ে সমালোচকদের অনেকে তাদের পেজগুলোতে বিভিন্ন প্রশ্ন ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করলেও শাহবাগি নেতাদের কোনো সাড়া নেই তাতে। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ২৫ অক্টোবর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগিদের চেতনারও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে!
২৫ অক্টোবর আগের ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকায় ১৮ দল সমাবেশ করার ব্যাপারে অটল থাকলে সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়। এ উদ্যানটি শাহবাগ সংলগ্ন হওয়ায় অনেকে ধারণা করেছিলেন শাহবাগিরা হয়তো এখানে জামায়াত-শিবিরের আগমন প্রতিহতের ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো চিত্র। শাহবাগিদের পক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা এলো না। বরং ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দখল নেয় শিবির। এরপর দুপুর থেকেই শিবির নেতাকর্মীরা শাহবাগে অবস্থান নেয়। সেখানে সরকারদলীয় এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত একাধিক বিলবোর্ড-ব্যানার ভেঙে ও ছিড়ে ফেলা হয়। তারা সেখানে শাহবাগিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগানও দেয়। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শাহবাগের দখলে ছিল শিবির। কিন্তু এ সময় কথিত চেতনাধারী শাহবাগিদের টিকিটিরও সন্ধান পাওয়া যায়নি কোথাও। এরপর ফেসবুক বা ব্লগেও এ প্রসঙ্গ নিয়ে তাদের কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।
সর্বশেষে গতকাল এ যাবত্কালের সবচেয়ে কার্যকর ও সহিংস হরতাল পালিত হয়েছে দেশব্যাপী। ১৮ দলের এ হরতালে জামায়াতও ছিল সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। কিন্তু এই হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণায়ও শাহবাগি রেওয়াজ ভঙ্গ হয়েছে।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধের কথিত চেতনাকে পুঁজি করে ভারতের মদতে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় শাহবাগি ‘গণজাগরণ নাটক’-এর এমন করুণ পরিণতিতে ভার্চুয়াল জগতে চলছে বেশ হাস্যরস ও ব্যঙ্গাত্মক আলোচনা। গতকাল আদনান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মাঠে খুব মিস করছি শাহবাগিদের!’
চিন্তার সুত্র: Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন