ঘুরে এলাম ইউরোপের সবচেয়ে বড় মসজিদ(মস্চেয়া ডি রোমা Moschea Di Roma’)
লিখেছেন লিখেছেন কোরডোবা ০৭ মার্চ, ২০১৬, ০৮:৪৪:২৪ রাত
৯ই অক্টোবর ২০১৫ আমি মোহাম্মাদ জুবায়ের মিয়া,আব্দুল্লাহ আল মামুন ,রাকিবুল ইসলাম , ওমর শরীফ ও সাথে ৩ ভাবী লিসবন থেকে বিকাল ৪ টার দিকে রওয়ানা দিয়ে রাত্রে রোমে পৌছাই একটা কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য আমাদের রিসিভ করেন রোমের নিজাম ভাই আমিন ভাই সহ আরও কয়েক ভাই আমরা যথারীতি সবাই প্রত্যেকের থাকার যায়গা হোটেলে গীয়ে উঠি অবশ্য সবই ভালো ছিল মাঝপথে বৃষ্টি আমাদের কাবু করে ফেলে আমাদের সবাই প্রায় ভিজে যাই পড়ে যথারীতি হোটেলে গীয়ে সবাই জামা কাপর পরিবর্তন করে রাতের খাবার খেয়ে রেস্টে চলে যাই পড়ের ২ দিন ছিল কনফারেন্স ইহা শেষ করে পড়ের দিন সকালে সবাই রোমের দর্শনীয় স্থান Vatican city , Colosseum, St. Peter's Basilica, Vatican Museums, Piazza Navona , ইত্যাদি দেখি, পরের দিন সবাই লিসবন চলে আসে আর আমি চলে যাই ভেনিস দেখার জন্য সেখানে সারাদিন জুয়েল ভাই বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে দেখায় পরে দুপরে নজরুল ভাইয়ের বাসায় খানা খেয়ে রাতে গীয়ে উঠি সেজ মামার বাসায় রাভেন্না , মামার সাথে ২ বছর পর দেখা হয় মামার বাসা থেকে পড়ের দিন ট্রেনে বলনিয়া যাই আর এক মামার বাসায়, সেখানে রাতে থেকে পড়ের দিন ট্রেনে চলে যাই রোমে ইউরোপের বড় মসজিদ দেখার জন্য । রোমে গীয়ে একসময়ের একই প্রতিষ্ঠানে পড়া বড় ভাই সয়াইবুল হক চৌধুরীর সাথে দীর্ঘ ৫ বছর পর দেখা হয় তার সাথে সকালের নাস্তা একসাথে করে তার খালাতো ভাই হাসান কে নিয়ে চলে যাই মসজিদ দেখার জন্য অবশ্য আমার সাথে যাওয়ার কথা ছিল এলাকার ছোট ভাই সাদ্দাম হসেন সনেটের অর সাথে আগেই দেখা হওয়ায় ঐদিন কাজ থাকায় ও আর সাথে যেতে পারলনা , আমি আর হাসান ভাই গেলাম ১৫/১০/১৫ গীয়ে মসজিদে অজু করে দুখুলে মসজিদের ২ রাকাত নামাজ আদায় করলাম,ভিতরের কারুকার্য নয়নাভিরাম ডিজাইনে বার বার আল্লাহু আকবর লিখা উপরে আছে ঝাড়বাতি , ভিতরে মহিলা ও পুরুষের জন্য আলাদা নামজের যায়গা ,আরব লীগ থেকে আশা একটি গ্রুপ, ও লন্ডন থেকেও একটি ফ্যামিলি মসজিদটি দেখার জন্য আসে । দুঃখিত গল্প বলে আর সময় নষ্ট করবোনা এবার সরাসরি মসজিদের বর্ণনায় চলে যাই যদি সুজুগ হয় তবে অন্নান্য স্থানের বিসয় নিয়েও লেখব ইনশাআল্লাহ্ আজ শুধু মসজিদের বর্ণনাই দিচ্ছি ।
মস্চেয়া ডি রোমা
রোম নগরীর উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৪১°৫৬′৫.১৭″ উত্তর১২°২৯′৪২.৮″ পূর্ব দ্রাগিমায় Acqua Acestosa নামক এলাকায় সারিবদ্ধ বৃক্ষের সবুজ বেষ্টনীতে অবস্থিত এ মসজিদ কমপ্লেক্সে। এতে রয়েছে প্রশস্ত নামাজের জায়গা যেখানে মসজিদের ভিতরে ১২০০০ ও বাহীরে ৮০০০ মুস্ললি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে, এতে ১ টি গম্বু্জ ও ৪৩ মিটার উচ্চতার ১ টি মিনার আছে আরও আছে অজুখানা, শৌচাগার, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিলনায়তন, পাঠদান কক্ষ, উন্মুক্ত মাঠ, লাশ ধৌতকরণ ও জানাজার ব্যবস্থা। মসজিদ কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ১০ বছর।
মসজিদ নির্মাণের প্রেক্ষাপট
কথিত আছে একবার সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল ইবনে আবদুল আজিজ রাষ্ট্রীয় সফরে রোম আসেন নামাজের সময় হলে জামাতে নামজ আদায় করার কথা বলেন তখন জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য কোন মসজিদ নাপেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন পড়ে ফয়সাল ইবনে আব্দুল আজিজ রোমে একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন
মসজিদ নির্মাণ
১৯৬৯ সালে ২৪ টি মুসলিম দেশ ইতালি সরকারের কাছে রোমে একটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নির্মাণের কথা বলেন তখন ইতালি সরকার অনুমতি দেয়নি মুসলমানদের সংখ্যা কম হওয়ায় পড়ে অবশ্য মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ মিলিয়ন হলে মসজিদের অনুমতি দেয়। ১৯৭৪ সালে ইতালি সরকার (ইতালিয়ান সিটি কাউন্সিল ) মসজিদের জন্য জমি প্রদান করেন । এর কাজ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে তখন এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রী স্যান্ড্রো পার্টিনি এবং দশ বছর পর ১৯৯৪ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়| মসজিদটির প্রকল্পের নকশা ও পরিচালনা করেছিলেন ভিট্টোরিও গিগলিওটি ও ইরাকী স্থপতি স্যামি মোসাভি এবং প্রখ্যাত ইতালিয়ান স্থপতি ও শিক্ষাবিদ পাওলো পর্তুগিজি, যিনি পরবর্তীতে স্র্যাটবার্গ মসজিদেরও নকশা করেন|উল্লেখ্য নকশার জন্য ৪০ জন স্থপতি লে-আউট জমা দেন। তাদের মধ্যে উল্লিখিত দুইজনের লে-আউট গ্রহণ করা হয় । এই মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের উল্লেখযোগ্য ব্যয়ভার বহন করেন সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল ইবনে আবদুল আজিজ, আফগানিস্তানের নির্বাসিত প্রিন্স মুহাম্মদ হাসান ও তদীয় স্ত্রী প্রিন্সেস রাজিয়া বেগম।১৯৯৫ সালের ১ লা জুলাই মসজিদ টি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয় ।
যেভাবে যেতে পাড়েন
Roma Termini থেকে মেট্রো তে Flaminio সেখান থেকে উপরের ট্রেনে
Campi Sportivi তে নামতে হবে নেমে ওভার ব্রিজ পার হয়ে বাম দিকে ১/২ মিনিট হাঁটতেই চোখে পড়বে কাঙ্খিত মসজিদ,মসজিদে রোমা (Rome Grand Mosque) । অবশ্য মসজিদের নামেই এর সামনের রাস্তার নামকরন করা হয়েছে viale della moschea .
যোগাযোগের ঠিকানা
Rome Grand Mosque
Via Anna Magnani, 00197 Roma, ইতালী
ফোন:+39 327 883 9972
বি দ্র > সোমালিয়ান এক কর্মচারীর সাথে কথা বলে জানতে পাড়ি। দুঃখের বিষয় হল মসজিদটির ভিতরে মুল স্থানে যেখানে মেহরাব আছে সেখানে নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়না মুসল্লি সংকটে ! কিছু কর্মচারী আছে যারা পাশের একটি কক্ষে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এর অন্যতম কারন হল মসজিদটি মুসলিম জনবসতির অনেক বাহীরে অবস্থিত । তবে দর্শনারতীদের জন্য সপ্তাহে ২ দিন মসজিদটি খোলা থাকে ইচাছারাও বিভিন্ন অকেশনে মসজিদ টি খোলা হয় ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
http://www.first-bd.net/blog/blogdetail/detail/4419/dulal/74842
আপনি তো আমাদের আশে পাশে ঘুরে গেলেন!
সুন্দর পোস্ট, শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন