৬ই এপ্রিলের ঢাকা অভিমূখী লংমার্চ সাবোটাজ করতে ওরা মরিয়া।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ৩০ মার্চ, ২০১৩, ০১:৫৩:৫৬ দুপুর
এটা কিছুতেই সম্ভব নয় যে, হেফাজতে ইসলামের ডাকা ৬ই এপ্রিলের ঢাকা অভিমূখী লংমার্চ সরকার চোখ বুজে আর মুখে আঙ্গুল দিয়ে অবলোকন করে যাবে। যেমন আমাদের ডক্টর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতদিনও পুলিশের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলে দিয়েছেন, 'ওরা কি মূখে আঙ্গুল দিয়ে বসে থাকবে নাকি?"
এদিকে হেফাজতে ইসলামের ঘোষনা মোতাবেক সেদিন রাজধানীতে কম করে ৫০ লাখ লোকের সমাগম ঘটাবার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে তাঁরা এমন বিশাল সংখ্যার হিসেব দিয়েছেন, তা বিদেশে বসে যাচাইয়ের আমার কোন উপায় নেই। তবে যাই হোক, তাঁরা যদি সেদিন ঢাকায় অন্ততঃ দশ লাখ লোকেরও সমাগম ঘটাতে পারেন, তবে তা বিভিন্ন বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য এক নজীরবিহীন ঐতিহাসিক ঘটনা বলে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ কিন্তু তাদের নেতার ভাষায় 'মূখে আঙ্গুল দিয়ে বসে নেই'। তারা তাদের কাজ করে যাচ্ছেন, আর সরকারকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মিনিট টু মিনিট অবহিত করে যাচ্ছেন। সরকার যে এই লংমার্চ কে অসফল করতে তাদের যাবতীয় বুদ্ধি বিবেচনা খরচ করবে এবং প্রশাসনযন্ত্রকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখবে, সে ব্যাপারটি বিনা অংক কষেই বলে দেয়া যায়। সরকারের টনক যে ইতোমধ্যে নড়ে গেছে এবং তার কিছু কিছু ছেলেমি নাটক দ্বারা তা জনসমক্ষে প্রকাশ ও হয়ে গিয়েছে, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে? ফরিদউদ্দীন মাসুদ নামের সরকারের ধামাধরা এক আলেম নামধারী কুলাঙ্গারকে দিয়ে সেদিন শাপলা চত্বরে 'মহাসমাবেশ' এর নাটক করতে গিয়ে কি কঠিন ধরাটাই না সরকার খেল। এরপরে এলো গতকাল শুক্রবারের জনৈক পীর সাহেবের মহাসমাবেশের পালা। পীর সাহেব যদিও সরকারের ধামাধরা কেউ নন, কিন্তু সরকার তাদেরকে একটি বিবেচনায় সেই মহাসমাবেশ করায় কোন বাঁধা দেয়নি। বিবেচনার বিষয়টি হলো পীর সাহেব তাঁর পুরনো অভ্যাস অনুযায়ী 'জাশি'র বিরুদ্ধে কুৎসা গেয়ে জনসভাস্থল মাতিয়ে তুলবেন, আর অন্য সব ব্যাপার গৌন হয়ে যাবে। কিন্তু বিধি বাম সরকারের এ অভিলাষও এবার পীর সাহেবের দ্বারা পূরণ হলোনা। 'জাশি'র বিরুদ্ধে স্বভাবদোষে যদিও বা কিছু বলেছেন, তবে তাঁর প্রধান প্রাধান দাবীগুলোর কাছে তা ছিল অতি নগন্য।
তাঁর মূল দাবী ছিল, নাস্তিক ব্লগারদের যদি সত্ত্বর গ্রেফতার করা না হয় এবং ফাঁসির ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে ৬ই এপ্রিলের ডাকা হেফাজতে ইসলামের লংমার্চকে তাঁরা সমর্থন দিবেন। নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাশ করার দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ঘেরাওয়ের কর্মসূচীও দেয়া হয়েছে এই সভা থেকে। আর যায় কোথায়।
তড়ি ঘড়ি এবার সেনাপ্রধানকে পাঠানো হচ্ছে ভারত সফরে। বস্তুতঃ ইতোপূর্বে দেশের সেনাপ্রধানের ভারত সফর সম্পর্কে দেশের মানুষ কিছুই জানতো না। একটি দেশের সেনাপ্রধান কোথায়ও সফর করতে হলে এ ব্যাপারে দেশের পত্রপত্রিকায় প্রায় মাস তিন চার আগে থেকেই লেখালেখি হয়ে থাকে। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের নায়ক কুখ্যাত মঈন যেমন সে সময়ে হঠাৎ ভারত সফর করে আসার পর এ দেশের গদিতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাশীন হয়, এবারে কোন বিশেষ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সেনাপ্রধানের ভারত যাত্রা, এ নিয়ে চিন্তাশীল মহলে জল্পনা কল্পনার আর শেষ নাই।
সেনাপ্রধানের ভারত সফরের তারিখ হলো ১-৪ এপ্রিল, ৬ই এপ্রিলের ঠিক আগ মূহুর্ত। অতএব দেশপ্রেমিক, তৌহিদী জনতা এবং ইসলামী নেতৃবৃন্দকে হতে হবে অনেক বেশী সাবধান, অনেক বেশী সংযমশীল এবং অনেক বেশী দূরদর্শী, তৌহিদী জনতার কাংখিত বিজয় মূহুর্তে কোন ভূল পদক্ষেপ ও আভ্যন্তরীণ কোন্দল (যা জিইয়ে রাখতে সরকারের প্রচেষ্টার অন্ত নেই) এর বদৌলতে, তীরে এসে যাতে নৌকার ভরাডুবি না ঘটে। আল্লাহ তৌহিদী জনতার উদ্দেশ্য ও নিয়্যতে বরকত দিন, আমিন।
বিষয়: রাজনীতি
১২৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন