এ মূহুর্তে সবচাইতে বেশী প্রয়োজন আমাদের ব্যক্তিগত অবস্থান সংহতকরণ ও ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:০৭:১৪ সকাল
গতকাল সারাটা দিন ছিল তুমুল ঝড় আর বৃষ্টিময়। ঝড়ের কারণে স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত সব ছুটি, হাতে প্রচুর সম। রান্নাঘরে গিন্নি ভূনা খিচুড়ির আয়োজনে ব্যস্ত। আমি ফেবুতে সাঁতার কাটছিলাম আর স্বদেশের কথা ভাবছিলাম।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলীগুলো এক এক করে মনের পর্দায় ভেসে আসছিল। লক্ষ্য প্রাণের প্রিয়, কোরআনের পাখী, বাংলার পরম সম্পদ, মাওঃ দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবের রায়ের পরিবর্তন, গণমানুষের প্রতিক্রিয়া, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দলগুলোর অবস্থান, ইত্যাদি...ঘুরেফিরে মনের জানালায় উঁকি দিয়ে যায়। আমরাও তাঁর ব্যাপারে এর চাইতে বেশী কিছু আশা করিনি। কিভাবে করবো? কারণ, আমরা যে এখনো নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি । আমাদের যে এখনো বহু কাজ বাকী পড়ে আছে, যার মধ্যে প্রধান প্রধান কাজ হলোঃ
১) আমরা এখনো প্রধান বিরোধী দলের শক্তি অর্জন করতে পারিনি,
২) যে পর্যায়ের ত্যাগ তিতিক্ষা এ কঠিন ময়দানের জন্য প্রয়োজন তা এখনো দেয়া হয়নি, কবের জন্য যে রিজার্ভ রেখে দিয়েছি, বুঝতেছিনা;
৩) ইসলামী দলগুলোর মধ্যে এখনো নিজেদের ছোটখাট মতভেদ দূর করে শুধুমাত্র একটি/দুটি মূল লক্ষ্য স্থির করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একই প্লাটফর্ম হতে কাজ করার মানসিকতা তৈরী হয়নি, বরং এখনো সেই বাতিলের হাতের ক্রীড়নক হয়ে নিজেদের মাঝে কাদা ছুঁড়াছুঁড়িই তাদের রাজনীতির প্রধান উপজীব্য মনে হচ্ছে; সব ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম এখন সময়ের দাবী। সেটা হলে বিএনপি-র মতো দু নম্বরী দলের সাথে থাকার ও প্রয়োজন হবেনা।
৪) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুসলমানদের যে সংস্থা 'ও,আই,সি' সেটাও যেন মৃতপ্রায় হয়ে আছে। আজ যদি সেটাকে মুসলিম দেশের নেতাগন জাতিসঙ্ঘর বিপরীত একটি শক্তিতে রূপ দিতে পারতো তাহলে মুসলিম বিশ্বের আভ্যন্তরীন সমস্যাগুলো এতো জটিল হতে পারতোনা, বা বছরের পর বছর তা একইরূপ নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতো না। দেখে শুনে মনে হচ্ছে যে OIC-র এই মৃতপ্রায় অবস্থার পেছনেও কার্যকর রয়েছে ইসলাম বিদ্বেষী আন্তর্জাতিক চক্রান্ত।
৫) আমাদের ব্যক্তিগত অবস্থানও অতি নড়বড়ে। মূলতঃ এই ব্যাপারটি নিয়ে আমাদের সবাইকে এহতেছাবের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা আমাদের শারিরীক, মালী এবং বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির চূড়ান্ত ক্বোরবানী করতে পেরেছি কিনা সে ব্যাপারে একটু গভীর ভাবে ভাবতে হবে।
নিজের বৃহত্তর পরিবারের দিকে একটু নজর বুলিয়ে নিলাম এই অবসরে। নাহ্, সেখানে গর্ব করে বলার মতো কিছুই পেলাম না। গত ছয় বছরের আন্দোলন সংগ্রামে, আমাদের বাড়ির কেউ একজন ও শহীদ হয়নি, আহত হয়নি, কিংবা জেলের ঘানি ও টানতে হয়নি। মালি ক্বোরবানী কে কতটুকু করেছে তা ব্যক্তিই বলতে পারবে। ভাবলাম, ৬৪ হাজার গ্রামের প্রতিটি গ্রামের অন্ততঃ অর্ধেক পরিবার (কিছু কম হলে ক্ষতি নেই), দ্বীনের জন্য জানপ্রাণ ক্ববুল করে এগিয়ে না আসবে, ততোদিন কি দেশে ইসলামী শাসনের কথা তথা ইসলামী বিপ্লবের কথা ভাবা আমাদের উচিত হবে? নাকি ভাবাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
মহান আল্লাহর দরবারে প্রতিদিন প্রার্থনা করি, হে আল্লাহ, ইসলামী আন্দোলনের পুরোভাগে এই অধমকে সবসময় রেখো, দ্বীনের জন্য এই অধমকে শহীদ হিসেবে ক্ববুল করে নিও। এই পরিবারটিকেও তোমার দ্বীনের জন্য ক্ববুল করে নিও। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১১৩১ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই দেশের শতকরা ৮৮ জন মুসলিম। এরমধ্যে নাস্তিক বা প্রকৃত ধর্মনিরেপেক্ষতা বাদি ১ শতাংশ ও নয়। কিন্তু তারাই এখন দেশের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছে। কারন একটাই বাকিরা সংগবদ্ধ নয়।
বাড়ীর কাছে আরশে নদী,
সেথায় পড়শী বসত করে;
আমি একদিনও না
দেখিলাম তারে....।
দেশে যাওয়ার সময় একই ফ্লাইটে গিয়েছি। ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পর নুর আয়েশার স্বামীর সাথে কথা বললেও পাশে বসা আয়েসা কিছু জিজ্ঞেস না করায় যেচে কথা বলতে যাইনি। চট্রগ্রাম এয়ারপোটে নেমে দুর থেকে পরস্পর দেখা হলেও দুজনার দুটি পথ চলে গেছে বহু দুরে....।
মন্তব্য করতে লগইন করুন