শৈশব স্মৃতিঃ স্মৃতিতে অম্লান, নানাবাড়ির উপাখ্যান (শেষ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৫২:৪৮ সকাল
Click this linkপ্রথম পর্ব এখানে
আহা! আমার লাল টকটকে, পূণ্যবতী জান্নাতবাসী নানু, যাঁর হাতের রান্নার স্বাদ যেন জিহ্বার আগায় এখনো অনুভব করি। শুটকির ভর্তা বলুন, বেগুন ভর্তা বলুন, কি ইলিশ শুটকি দিয়ে পাকানো কচুর লতির কথা বলুন, যেন অমৃত হতো, অমৃত। ঐযে বলছিলুম ভূতের আড্ডাখানা পথের উপরের বিরাট বটগাছ পেরিয়ে যাবার পরপরই দেহমনে আরো বেশী শক্তি ও সাহস সঞ্চার হতো, নানুর হাতের পাকানো উপাদেয় সব খাবারের আসন্ন ঘ্রাণে। সাথে সকালবেলায় নাস্তা হিসেবে আসা বিভিন্ন পদের পিঠার (শুরুতে বর্ণিত) চিন্তা আর সিজনাল ফলফলারীর লোভনীয় হাতছানি, সব মিলেই কিন্তু ভূত চিন্তাকে মাথা থেকে তাড়াতে সফল হয়ে যেতাম। শুধু কি এই এক নানু? আমার নানুদের সংখ্যা কিন্তু হাতে গুনে শেষ করা যাবেনা। নূতন বাড়ি, পুরান বাড়ি, দুই ভূঁইয়া বাড়ি সব মিলিয়ে প্রায় ২ ডজন নানুর অধিকারী ছিলাম। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমার আদরটা কেমন হতো। যদিও এখন ইসলামী শিক্ষার প্রসারের কারণে কদমবুছি করার চল প্রায় উঠে গেছে, সেসব বিগত সময়ে কিন্তু ঐভাবে পা ধরে ছালাম না করাকে বেয়াদবী ধরা হতো। তাই ছালাম করতেই হতো, তবে যদি কোন পদযুগলের মালিক হতেন অত্যন্ত ফর্সা, আর সালাম করে উঠতে দেরী হতো, তখন নানুভাইর তীর্যক মন্তব্যে কানের লতি গরম হতে সময় লাগতোনা। অবশ্য শ্যামলা বা কালো নানুরাও যে তীর্যক মন্তব্য করতে পিছে ছিলেন না তা বলাই বাহুল্য, নানা-নাতী সম্পর্ক বলে কথা। তবে কতগুলো ঠোঁটকাটা নানু ছিলেন, যাঁদের ঐসব মন্তব্যের ধার তীব্র থাকায়, সহজে তাঁদের সামনে যেতাম না। বাল্যকালে আবার কথা কম বলতাম, ছিলাম অত্যন্ত লাজুক প্রকৃতির।(তাই বলে কিন্তু এখন কথা বেশী বলি তা নয়)।
বাইন পুকুর ছিল নানা বাড়ির সদরের (সামনের) পুকুর, যেখানে মূলতঃ পুরুষরাই গোসল করতেন। স্বচ্ছ টলটলায়মান পানির অধিকারী এ পুকুরটির বিশেষত্ব ছিল, এখানে কাউকে মাছ ধরতে দেখিনি। আর একটা কথা প্রচলিত ছিল যে, এখান অতীতে কোন এক মানুষ গোসল করতে গেলে তাকে কিছু একটা টেনে নিয়ে যায় মাঝ পুকুরে, তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। তাই ঐখানে গোসল করতে গেলে কখনো একা যেতাম না, আর নামলেও পাড়ের আশেপাশেই থাকতাম।
চিড়া, মুড়ি, আমসত্ত্ব, ছাঁইয়া পিঠা, রাব (খেজুরের রসকে জাল দিয়ে ঘন করে ব্রাউন রং এ বদলে দেয়া), নারকেল, কলা এসব প্রায় বার মাসই নানুর জোগাড়ে থাকতো, আর তা যাতে অপব্যবহার না হয়, সেজন্য তুলে রাখতেন সিলিং এর উপর যাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হতো 'দমদমা'। কিন্তু এই বাঁদরটার হাত থেকে রেহাই পেতোনা সেসব মজাদার খাবার, তা যেখানেই থাক না কেন। আমার গুনবতী মরহুম নানুর আর একটা গুন ছিল, তিনি বাড়ির পেছনের পুকুরে (অন্দরমহলের) সব সময় আট দশটা বড়শি গেঁথে রাখতেন, বিশেষতঃ রাতের বেলায়। সকাল বেলায় উঠে সেই বড়শীতে পেতাম ইয়া বড় সব ষোল, মাগুর আর রুই মাছ। আহ্, পুকুরের তাজা মাছের সেকি স্বাদ। আবার নির্দিষ্ট বিরতিতে পুকুরে জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য লোক ডাকা হতো। প্রায় অর্ধদিন চলে যেত মাছ ধরার উৎসবে, আমরা ছোটদের আনন্দই ছিল আলাদা সেসব সময়। দমদমায় উঠে যখন চুরি করে খাই, তখন আর হুঁশ জ্ঞান থাকেনা বলে অনেক সময় বদ হজমের শিকার হতে হতো। এবার আপু ভাইজান সকলে একটু কাপড় লুঙ্গি সামলে বসেন, মজার এক ঘটনা বর্ণনা করছি। হাসতে হাসতে কাপড় খুলে গেলে আমাকে দোষ দিয়েন না।
সেদিন মনে হয় কাঠালটা বেশী খাওয়া হয়েছিল। দু একটা দানাও আস্ত ফুরুৎ করে গলার নীচে চলে যায়। রাতে শুতে গেলে পেট মোচড় দিয়ে উঠলো। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, কি করি, কি করি? কাউকে না বলে চুপি চুপি দরজা খুলে ঘরের পেছনে গিয়ে ডেলার উপর কাপড় খুলে বসে পড়লাম, ২ মিনিটে পেট খালি করে দিয়ে উপরে টিনের চালা বেয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতেই ঝটপট পরিষ্কার হয়ে আবার পা টিপে টিপে ঘরে ফিরে কাঁথা মুড়ে শুয়ে পড়লাম। মনে কিন্তু একটু আশঙ্কাও হচ্ছিল সকালে ডেলার উপর মনুষ্য বর্জ্য দেখে না আবার হৈচৈ শুরু হয়, আসামী ধরা না পড়ে। কিন্তু সকালে ভয়ে ভয়ে স্থান পরিদর্শনে গিয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। রাতের বর্জ্যর কিছুই নেই অবশিষ্ট সেখানে, শুধু আস্ত দুটো কাঠালের বিচি ছাড়া। আল্লাহকে হাজার শুকরিয়া জানালাম মনে মনে। কিন্তু পরবর্তী ঘন্টাখানেক পর যা ঘটলো - মায়ের এক কাজিন সকালে আন্তা দিয়ে কিছু গুঁড়ো মাছ ধরে তা রান্না করার জন্য ইতিউতি আরো সরঞ্জাম খুঁজতে গিয়ে ঐ ডেলার কাছে গিয়ে বৃষ্টিতে ধোয়া সুন্দর কাঠাল বিচি দুটো পেয়ে খুশীমনে তা তুলে নিয়ে রান্নাঘরে চলে যান। এবং অন্যসব উপাদানসহ মাছ দিয়ে তা মজা করে রান্না করে উদরপূর্তি করে ফেলেন। এ কাহিনী মানে কাঠাল বিচি আহরণের কাহিনী আমি উনার কাছেই পরে শুনেছিলাম। মনে মনে তখন হাসিটা দমন করা ছাড়া আর কি কোন উপায় ছিল, আপনারাই বলেন তো? ) )
ভুলে যাবার আগে নানুবাড়ির সামনে মুহুরী গাং সম্পর্কে মনে আসা আর একটা তথ্য দেই। নদীতে জোয়ার আসার সময় হলে দৌড়ে চলে যেতাম জোয়ারের রূপ দেখতে। জোয়ারের পরপর নদীর পানির উচ্চতা প্রায় এক হাত পরিমান বৃদ্ধি পেত। জোয়ারে যখন ভাটার টান পড়ে এবং পাড়ের অনেকটা ভুমি আত্মপ্রকাশ করে তখন সেখানে বড় বড় কিছু গর্ত আবিষ্কার হয়। মামারা সবাই তখন দেখতাম গর্তের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে বড় বড় বাইলা মাছ বের করে আনতেন। নদীর একটা স্তন্যপায়ী প্রাণী 'শুশুক' স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ছুছুম দেখার জন্যও অনেক সময় মাঝ নদী বরাবর তাকিয়ে থাকতাম। সমবয়সীরা বলতো, ঐ ছুছুম তোর দুধ দেখা, আর অমনি ছুছুম কে দেখা যেতো বুক উঁচিয়ে পানির উপর দেহের কিছু অংশ ভাসিয়ে দিয়ে আবার উধাও। তার আসল রূপটা কি তা কিন্তু আজো জানিনা।
প্রকৃতি প্রেমীদের কি কি গুন থাকে জানিনা। কিন্তু যখন নিজেকে আবিষ্কার করি প্রকৃতির মাঝে, আল্লাহ সৃষ্ট প্রাকৃতিক উপাদানের মাঝে তখন যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলি, তখন অমুকে আমাকে কি কাজ দিয়েছে, কখন তা শেষ করতে হবে, কিছু আর মনে থাকেনা। গ্রামের শান্ত, নিরিবিলি আর সবুজ অরণ্যময় পরিবেশটা যে প্রকৃতির কত বড় উদাহরণ তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে? তাই গ্রামীণ পরিবেশ আমাকে সবসময় কাছে টানে। বিশেষতঃ দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত, ক্ষেতের স্বচ্ছ পানিতে (প্রাকৃতিক এ্যাকুইরিয়াম) সাঁতার কাটা ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছের ছুটাছুটি, এক পায়ে দাড়িয়ে থাকা তালগাছ, গাছের পাতায় ঝুলে থাকা বাবুইদের কতো মজবুত প্রযুক্তির বাসা, আমজাম, নারকেল সুপুরি গাছের সারি, বাঁশবন, বেতঝাড়, মা-মুরগীর ডজনখানেক ছাও নিয়ে এসবের ফাঁকে ফাঁকে খাদ্য আহরণের দৃশ্য, চিল এলে কক্ কক্ শব্দে কান ঝালাপালা করে শত্রুকে সিকি মাইল তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া, পুকুরে হাসা-হাসির জলকেলী, ছাগল ছানা আর বাছুরের দুরন্ত লাফালাফি, গরুর ওলান ধরে বাছুরের মুখ দিয়ে টান দিয়ে ওলান সতেজ করে গৃহস্থের দুধ দোহনক্রিয়া, কৃষকের জমিতে লাঙ্গল চাষ, রাখালের বাঁশীর সুর, কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলি?
প্রকৃতির সাথে নিজেকে মিশিয়ে নেয়ার আর এক উপমা হলো, বাদলা দিনে কাচারী ঘরে শুয়ে শুয়ে টিনের চালের বৃষ্টি নামার ঝংকারময় ছন্দ শোনা আর চালভাজা দিয়ে রাব দিয়ে মোয়া বানিয়ে খাওয়া, অথবা নিকানো উঠানে নেমে কয়েকজনে মিলে বৃষ্টির মাঝে পায়ের হিলের উপর ভর করে দৌড়ে বহুদুর পর্যন্ত পিছল খেয়ে যাওয়া (অনেকটা আধুনিক স্কেটিং এর মত), হাতের কাছে হাসের ছানা পেয়ে পরম আদরে যখন মুঠোর মাঝে তাকে চেপে অজ্ঞান করার অবস্থা, তখন নানুভাইর দৌড়ে 'আহা, নাতি কি কররে, কি কররে' বলতে বলতে এসে সেটাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া, নাহ্, মনে হয় আর দীর্ঘ করাটা ঠিক হবেনা, সকলের ধৈর্য্যচ্যুতি হলে, তখন পাঠক পাওয়া কষ্টকর হবে।
আল্লাহর কাছে সবসময় দোয়া করি, তিনি যেন আমার জীবনের শেষ দিনগুলো এই নির্মল, পবিত্র এবং উদার গ্রামীন পরিবেশে কাটানোর সুযোগ করে দেন।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৩ বার পঠিত, ৭২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কাহিনীটি পড়ে আমার নানুর একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। সময়ের অভাবে দীর্ঘ ঘটনাটি লিখতে পারলাম না। যাক, আপনার নানুর বাড়ীর সাথে আমার নানু বাড়ীর অনেক কিছুর মিল আছে। উপভোগ্য কাহিনী টির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সেই দুরন্ত শৈশব আর উন্মক্ত আনন্দ কি এখনকার শিশুরা পায়।
এখনকার শিশুরা তো সব এখন কম্প্যূটার এর সাদাপর্দার (নাকি রঙ্গীন পর্দার) প্রেমে মজে এখন স্বশরীরে গৃহবন্দীর জীবন বেছে নিয়েছে...
দুরন্ত শৈশবের প্রানবন্ত ঘটনা খুব ভালো লাগলো! শেয়ার করার জন্য শুকরিয়া
আর আমি ছিলাম ঐ বংশের সবার বড় জনের প্রথম ছেলের প্রথম মেয়ের প্রথম ছেলে
আমার আম্মার দাদা-দাদী পর্যায়ের অনেকের আদর-যত্ন পেয়েছি,
আর নানী-খালাদের "খেলনা" ছিলাম আমি!
আমিতো সূত্র উল্লেখ করেছি
@ইবনে হাসেম : এমাসেই দেবার ইচ্ছে আছে ইনশাআল্লাহ-
দোয়া চাই
@ইবনে হাসেম : এমাসে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারলাম না, আগামী মাসে হবে ইনশাআল্লাহ
@সূর্যের পাশে হারিকেন : সূত্র উল্লেখ করে দায়মুক্তি পেয়েছি মনে হয়
আপনার বর্ণিত কাঁঠালের বিচির ঘটনা ব্লগার গ্যাঞ্জাম খান ভাই কোথাও মনে হয় লিখেছিলেন। আমি ভেবেছিলাম সেটা দুষ্টামি। এখন দেখছি এমন ঘটনা অনেকের জীবনে ঘটেছে ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। উপভোগ করলাম আপনার শৈশব পর্ব
এবার একটু হাসেন
আবারো ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
নজরুল ইসলাম টিপু যা যা লিখেছেন .... স হ ম ত
েো
পোস্টটি স্টিকি না হলে নজরে পড়তো না হয়ত। ধন্যবাদ মডারেটর।
দোয়াপ্রার্থী
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন ভাইয়া
কাজটা কি ভাল করলেন? শটকী ভর্তাতার কথা বলে এখন মনে হচ্ছে আমারও বাচ্চাদের মত বিব লাগবে
পিঠা বানাতে পারিনা, শুধু খেতে পারি। আর নোয়াখালী ফেনী হোল পিঠার মাস্টার। খেতে না দিলে লোভ দেখালেন কেন :"(
আহ! রাব! মোয়া!
কাঁঠালবিচি আমার ভীষণ পছন্দ। কিন্তু যে গল্প শোনালেন, আর তো খেতে পারবনা
প্রকৃতির সাথে নিজেকে মিশিয়ে নেয়ার আর এক উপমা হলো, বাদলা দিনে কাচারী ঘরে শুয়ে শুয়ে টিনের চালের বৃষ্টি নামার ঝংকারময় ছন্দ শোনা - আহ! সে অলস সময় আবার কি পাব?
আরে আপনি তো আর কোন বাড়ির ডেলা থেকে কুড়িয়ে নিবেন না। আপনার সামনে কাঠাল খুলে তার বিচি দিয়ে ভর্তা করে খাওয়াবো। সো ডোন্ট ওরী।
'টিনের চালে গাছের ডালে, বৃষ্টি নামে তালে তালে'- সেই বহু বছর আগে এমন মাইস্টিক কবিতাটি পাঠ করেছিলাম।
আপনার এই লিখাটি পর্বাকারে লিখেছেন, তাই এই পর্বটি আমার দৃষ্টি কিভাবে এড়িয়ে গেলো বুঝলাম না। তবে একই শিরোনামের অন্য লেখাগুলো পড়েছিলাম এবং মন্তব্যও করেছিলাম বোধহয়।
বেশ সাবলীল শৈশব স্মৃতির ভিতরে প্রবেশ করে অনেক আনন্দ পেলাম।
সুন্দর পোষ্টটি স্টিকি হওয়াতেও আপনাকে অভিনন্দন জানাই।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ধন্যবাদ
যে দিন গেছে সে দিন কী আর ফিরিয়ে আনা যায় ?
কোথাও যদি কোন প্রকৃতির বর্ণনা পাই, তা আমি পড়ার চেষ্টা করিই ।
আচ্ছা, এটা কি কোন ভালবাসা ?
আমার মনে কী প্রেমের সঞ্চার হয়েছে ?
...সাথে আপনিও নিজের পায়খানা যে খেলেন তা কিন্তু এড়িয়ে গেছেন। কারণ নানুর আদরের নাতিকে বাদ দিয়ে নিশ্চয়ই নানু এত মজার তরকারী খায়নি। খাওয়ার পর বুঝতে পেরেছেন...
আপনার অতীতের স্মৃতিকথা নিয়ে ষ্টিকী পোষ্টটি সত্যিই অনেক মজাদার। থেংক্যু।
মন্তব্য করতে লগইন করুন