কঠিন ঈমানের জ্বলন্ত স্বাক্ষী
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:৫৬:০৩ সকাল
হাইকোর্টের চত্বরে হাঁটছি আর বিভিন্ন
জনের বিশেষজ্ঞ টাইপের মন্তব্যগুলো শুনছি।
হঠাৎ দেখলাম এক ভাই দশ পনের জন লোক
নিয়ে পত্রিকা বিছিয়ে বসে গল্প করছেন।দেখেই বুঝে ফেললাম তিনি শিবিরের। সামনের গিয়ে সালাম দেওয়ার পরে তারা সবাই এক যোগে সালামের জবাব দিলো। কুশল বিনিময় করে নিজের সাংগঠনিক পরিচয় দেওয়ার পরে কয়েকজন
আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। আলাপের এক পর্যায়ে জানলাম তার বাড়ি সায়েদাবাদে কিন্তু মিরপুরের ঘটনায়ও তাকে আসামী করা হয়েছে। বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতেও তার নাম এসে যায়। সব মিলিয়ে তিনি প্রায় ত্রিশটির মতো মামলার আসামী। আমার অবাক হওয়া দেখে তিনি বললেন, আমাদের সভাপতি যদি পচাঁন্নব্বইটি মামলার আসামী হতে পারে, সেই হিসেবে আমাদের তো হাজার মামলার আসামী হওয়া উচিত ছিলো। তিনি অত্যন্ত আবেগ দিয়ে বললেন যে,
আমাদের বিশ্বাস যদি এটা হয় যে, আল্লাহ পাকের হুকুম ছাড়া কোন বিপদ আপদ আসে না তাহলে ভয় কিসের। ধরে নিতে হবে এই বিপদ গুলির মাধ্যমে আমাদের কে পরীক্ষা করা হচ্ছে যাতে দুর্বল লোকগুলো সংগঠন থেকে সরে যায় এবং কেবল
মাত্র একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য কাজ করা লোকগুলোই ময়দানে থেকে যায়। এ অত্যাচার নির্যাতনের মাধ্যমে আমাদের
ভিতরকার দুনিয়া পুজারী লোকগুলো কে চিনে নেওয়া হলো।
এ ছাড়া এও তো হতে পারে যে, এসব অত্যাচার নির্যাতন আমাদের কোন না কোন গুনাহ খাতা থেকে মুক্তি দেওয়ার
ব্যবস্থা মাত্র। কারন আল্লাহ পাক তার বান্দাদের ছোট খাটো গুনাহ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এমন সব বিপদ আপদ দিয়ে থাকেন। তাদের সাথে বিদায় নিয়ে আসার সময় কেবল ভাবছিলাম যে, আল্লাহর ওপর নিখাদ ঈমান শেখার জন্য মানুষ কত ধরনের পথ ও পন্থাকে অবলম্বন করে চলছে। কিন্তু আধুনিক শিক্ষিত একদল ছেলে কিসের ছোঁয়ায় আল্লাহর ওপর এমন জবরদস্ত ঈমান ধারণ করলো যে, এত নির্যাতন আর অত্যাচারকেও তারা আল্লাহর হুকুম হিসেবে মেনে নিয়েছে এবং তার পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে হাসি মুখে গ্রহণ করছে । একটি পরীক্ষার পরে পরবর্তি পরীক্ষার জন্য সাদরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কাল কেয়ামতের মাঠে এদের ঈমানের সাথে কথিত বিশাল বড় বড় ডিগ্রিধারীদের আর লেবাসওয়ালা ব্যক্তিদের ঈমান কি এক কাতারে শুমার করা হবে ? যারা সামান্য হুমকি ধমকির ভয়ে সত্যকে অহরহ গোপণ করে জুলুমের পক্ষ নিয়ে নিরব হয়ে বোবা শয়তানের রুপ ধারণ করে চলে তাদের ঈমানের কথিত মুখ ভরা বুলি কি কেয়ামতের ময়দানে এই সকল মজলুম লোকদের ঈমানের সাথে তুলনা করার যোগ্য হতে পারে? আল কোরআন কি বলে?কোরআন কিন্তু আমাদের কে আশ্বস্ত করছে এই বলে যে- পরীক্ষাই হলো হক আর বাতিল চেনার একমাত্র উপায়। সত্য মিথ্যা নির্ণয় কোন বুজুর্গের ফতোয়ার ওপর নির্ভর করে না। এর জন্য চাই পরীক্ষায় যোগ্য হওয়া এবং ময়দানের দৃঢ়তা অবলম্বন করে নিজের ঈমানের দাবির পক্ষে সতত স্বাক্ষ্য দেওয়া। আল্লাহ পাক
বলেন- “লোকেরা কি মনে করে রেখেছে,আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর
পরীক্ষা করা হবে না ? অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের
সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি। আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে (ঈমানের দাবিতে)সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক।”-
সূরা আনকাবুত-১-৪।
ও আমার রব, সব কিছু কেড়ে নাও, তোমার
প্রতি অবিচল আস্থাটুকু আমাদের অন্তর
থেকে কেড়ে নিও না, এটা তো আমাদের
একমাত্র সম্ভল। আমাদের কে তোমার
পথে দৃঢ় রাখো, আমাদের ওপর কোন
ভারি বোঝা চাপিয়ে দিও না। আমরা তো দুর্বল, গুনাহগার, আমাদেরকে ক্ষমা করো।
(সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন