১৫০০ বছর আগের সামাজিক অবস্থা ও আজকের অবস্থা
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২৯ আগস্ট, ২০১৪, ০২:৫৭:৪০ দুপুর
আইয়ামে জাহিলিয়ার যুগে আরব সমাজের সামাজিক অবস্থার বর্ণনা।
চরম অস্থিরতা, কুপমন্ডুকতা ছিল সমাজ জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট। অজ্ঞতা, অশ্লীলতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিল পুরো সমাজ্। অসত্য ও অন্যায়ের নিকট সত্য ও ন্যায় হয়ে পড়েছিল সম্পূর্ণ পর্যদূস্ত। সাধারণ মানুষকে পশুর মত জীবন যাপন করতে হতো। বাজারের পণ্যের ন্যায় ক্রয়-বিক্রয় হতো নারী, দাস-দাসীরা। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের সাথে ব্যবহার করা হতো পণ্য সামগ্রীর মতো্। গোত্র কিংবা রাষ্ট্র যাই বলা হোক না কেন, প্রশাসনের মূল ভিত্তি ছিল ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এর ভিত্তির উপর। প্রশাসন পরিচালিত হতো শক্তিধরদের স্বার্থ রক্ষায়। দুর্বল শ্রেণীর সাধারণ মানুষের কল্যাণের কোনরকম চিন্তা করা হতো না। জনগণ হতে গৃহীত অর্থ সম্পদ দ্বারা কোষাগার ভরে তোলা হতো। প্রতিদ্বন্ধী পথের মানুষদের বিরুদ্ধে সৈন্যদলের মহড়া ও যুদ্ধ বিগ্রহরে উদ্দেশ্যেই তা সংরক্ষিত ও ব্যায়িত হতো।
( ১৯৭৮ সালে শাঈখ সফিউর রহমান মোবারকপুরী কৃত “আর রাহিকূল মাখতুম” গ্রন্থ হতে)
এবার আসুন আমরা বর্তমানের একটি দেশের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অবস্থার সাথে উপরের চিত্রটির তূলনা করে দেখি। এখানকার অবস্থা মোটামুটি নিম্নরূপঃ
চরম অস্থিরতা, কুপমন্ডুকতা, আইন শৃংখলা ব্যবস্থার চূড়ান্ত অবনতি, হত্যা, খূন, ধর্ষন রাহাজানি, গুম ইত্যাদি হলো সমাজ জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট। ধর্মীয় অজ্ঞতা, অশ্লীলতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন পুরো সমাজ্। অসত্য ও অন্যায়ের নিকট সত্য ও ন্যায় হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণ পর্যদূস্ত। সাধারণ মানুষকে কোরবাণীর পশুর মত জীবন যাপন করতে হচ্ছে।তাদের জানমালের কোনই নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন অগুনতি মানুষ হয় গুম হচ্ছে, নাহয় বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। বাজারের পণ্যের চাইতেও নিকৃষ্ট উপায়ে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে নারীর মান সম্মান ও ইজ্জত।ধর্ষণ, ধর্ষন শেষে হত্যা, ধর্ষন চিত্র ধারণ করে তা আবার সিডি-র আকারে বাজারে ছেড়ে দেয়া যেন আজ নিতান্ত সাধারন ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র নামের পশুরা এমনকি শিক্ষকরাও তাদের বোন/কন্যাদের ইজ্জত হরণ করে সেঞ্চুরী উৎসব পালন করে মিডিয়ায় ঢেঁডা পিটিয়ে। সরকারী প্রশাসন এদের বিচার তো করেই না বরং ক্ষেত্রবিশেষে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের কাজের বাহবাও দেয়। তাদের মাথার উপর ছায়া দেবার ঘোষনা দেয়। সমাজ কিংবা রাষ্ট্র যাই বলা হোক না কেন, প্রশাসনের মূল ভিত্তি হলো ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এর ভিত্তির উপর। প্রশাসন পরিচালিত হয় কেবল শক্তিধরদের স্বার্থ রক্ষায়। দুর্বল শ্রেণীর সাধারণ মানুষের কল্যাণের কোনরকম চিন্তা করা হয় না।যা করা হয় তা শুধু বাইরের জগতকে ধোঁকা দেবার জন্য মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারের জন্য। জনগণ হতে গৃহীত অর্থ সম্পদ দ্বারা কোষাগার ভরে তোলা হয়। শুধু তাই নয়, সরকারী ব্যাংক, শেয়ার বাজার ইত্যাদি হতে নানা প্রজেক্টের নামে কোটি কোটি টাকা বেনামে উঠিয়ে বিদেশের ব্যাংকে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে ক্ষমতাশীনরা, এভাবে তাদের ভবিষ্যত পথ নিষ্কন্টক করে রাখতেই তারা মগ্ন। জনগনের অর্থে প্রতিপালিত পুলিশ, র্যাব ইত্যাদি দ্বারা ভিন্নমত দমন আর দলনের নামে জনগনের উপরই অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালানো হয়।নিজ দলের খুনীরাও জেলে জামাই আদরে আপ্যায়িত হয়, আর প্রতিদ্বন্ধী দলের একজন গণ্যমান্য নেতাকেও কেবল মাত্র এ কারণে জেলে পুরে, রিমান্ডে নিয়ে চরম নির্যাতন করে পঙ্গু বানানো হচ্ছে, শুধুমাত্র তারা দেশে এক আল্লাহ প্রদত্ত কোরআনের রাজ কায়েম করতে চায় বলে।মিথ্যা মামলায় ফাঁসির ঘটনাও এখন সাধারণ ব্যাপার। প্রতিদ্বন্ধী পথের মানুষদের বিরুদ্ধে সৈন্যদলের মহড়া ও তাদের ন্যায্য আন্দোলন দমাতে প্রয়োজনে রাত্রির আঁধারে গণহত্যা করার উদ্দেশ্যেই তাদের সংরক্ষিত ও ব্যাবহৃত হতে দেখা যায়।
এখন বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি ১৫০০ বছর আগের আইয়্যামে জাহিলিয়ার সময় মানুষ বেশী কষ্টে ছিল নাকি বর্তমানে?
বিষয়: বিবিধ
১২৮৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7228
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
মন্তব্য করতে লগইন করুন