এই সংকট সময়ে
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৩:৫০:০৫ রাত
দেশটার জন্য বড়ই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে যে মোড় নিচ্ছে তা দেশের বাইরে থেকে আঁচ করাটা অত্যন্ত দূরূহ। তবে একটি ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে গেছে সবার কাছে, আর তা হলো, দেশের ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ধর্মনিরপেক্ষ নাস্তিক গোষ্ঠী এবঙ ধর্মপ্রাণ গোষ্ঠী এ দুই গোষ্ঠী এখন মূখোমূখি দাঁড়িয়ে গেছে। সরকারের কিছু ভ্রান্ত পদক্ষেপ যে এজন্য বহুলাংশে দায়ী তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
৯০% মুসলমানের দেশ যার আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় আজানের ধ্বনি সকাল সন্ধ্যা, উচ্চারিত হয় হযরত শাহ জালাল রঃ, হযরত শাহ পরান রঃ, হযরত শাহ মাখদুম রঃ এর মত বুযুর্গদের নাম, যাঁদের কল্যাণে আমার পূর্ব পুরুষ হতে নিয়ে আমরা নিজেদের মুসলমান বলে পরিচয় দিতে পারছি, সেই দেশে গুটিকয় নাম গোত্রহীন নাস্তিক মুরতাদরা ইসলামের বিরুদ্ধে আস্ফালন করবে, আর ধর্মপ্রাণ মানুষ মুখে আঙ্গুল পুরে বসে তা চুপ করে দেখতে থাকবে, এটা আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়।
নাস্তিক মুরতাদরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবির আড়ালে যে মূলতঃ ইসলাম ধর্মকেই তাদের মূল টার্গেট করেছে, তা আজ দিেনের আলোর মতই পরিষ্কার। চিহ্নিত নাস্তিক ব্লগারদের ব্লগে গিয়ে একবার ঢুঁ মেরে এলে যে কেউ তার প্রমাণ পেতে পারেন। তাছাড়া আন্দোলনের নামে তারা প্রকাশ্যে ইসলামী নামধারী যতো আর্থিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সবগুলোর বিরুদ্ধে যে বিষোদগার করছে, আগুন দিচ্ছে, ভাংচুর করছে তা থেকেও একজন পাগল ও বুঝতে পারবে ওদের আসল মতলবটা কি। ওরা ইতোমধ্যে দাবী করেছে এদেশে ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। যদিও সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কোশেশে বলছে যে ওরা ইসলামী রাজনীতি নয়, জামায়াতের রাজনীতি বন্ধ করবে। ঐ নাস্তিক ব্লগারদের ব্লগে ইসলাম, আল্লাহ, তাঁর প্রেরিত নবীদের বিশেষ করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে যে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা সভ্যতা ও ভব্যতার যাবতীয় সীমানা পেরিয়ে গেছে। এক দুই লাইন পাঠ করেই সাধারণ মানুষ আর এগোতে পারেনা ঐ নর্দমা সম ব্লগের মাঝ দিয়ে। অথচ আমাদের এমনই বদ নসীব, শুধুমাত্র ক্ষমতার গদী রক্ষার মানসে আমাদের সরকার প্রধান হতে তাঁর মন্ত্রী উপদেষ্টা সবাই আজ এসব নাস্তিকদের মাথায় তুলে নাচছে। এর ফলে প্রাকারান্তে যে তারা নিজেরাও তাদের ঈমানকে নরকের আগুনে ছুঁড়ে ফেলছে, সে ব্যাপারে ভাববার বুদ্ধিও যেন তাদের লোপ পেয়েছে।
সরকার প্রধানকে বলবো, এক নাস্তিক মুরতাদ তসলিমা নাসরিন, নারী হয়েও এবং আপনার শাসনামলেও যদি এদেশে ঠাঁই না পায়, তাহলে পুরুষ নাস্তিকরা কি করে এদেশে ঠাঁই পাবার আশা করে? নারী হয়ে নারীকে যেখানে প্রশ্রয় দেবার সাহস আপনার হয়নি, সেখানে পুরুষদের কিভাবে আপনি আশ্রয় দেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য দেশের মানুষের ট্যাক্স এর পয়সায় গানম্যান দেন? যে নাস্তিক রাজিব নারীঘটিত কেলেঙ্কারী/অর্থ ভাগাভাগির কোন্দলের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে, তাকে আপনি জাতীয় বীর আখ্যা দিয়েছেন, আপনার সহচররা তাকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ বলে ইসলাম আর ইসলামের পরিভাষার সাথে পরিহাস করেছেন, জানাজার হক্বদার না হওয়া সত্বেও তার জানাজা পড়িয়ে দেশের লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে বিষবৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন, রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে, দেশের মানুষের সাথে যে প্রতারণা করেছেন, এর চাইতে বড় ধোঁকাবাজি আর কি হতে পারে?
একদিকে আপনার পেটোয়া বাহিনী ইসলামের মর্যাদা রক্ষার খাতিরে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামা মিছিলকারীদের উপর গুলি করে পাখির মতো মানুষ হত্যা করছে অন্যদিকে আপনি রাষ্ট্রীয় খরচে ওদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছেন, একদিকে বলছেন, ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তার বিচার হবে অন্যদিকে ধর্মপ্রাণ মানুষদের রক্তে হোলী খেলছেন এমন দ্বৈতনীতি দ্বারা আপনি কিভাবে আপনার ক্ষমতার মসনদ নড়বড়ে করে ফেলছেন তা কি একটু ভাববার অবসর নেই আপনার? আজই তো আপনার আশীর্বদপুষ্ট আওয়ামী ওলামা লীগ ঐ নাস্তিকদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে, তাতেও কি আপনার বুদ্ধির বন্ধ অলিন্দ খুলবেনা?নাকি নাস্তিকদের ফাঁসি দাবী করায় এখন আপনি এদেরকেও দল থেকে বহিষ্কার করবেন, আদালতে বিচারের জন্য রিমান্ডে দিবেন?
মানুষ মাত্রই ভূল করে, আপনিও মানুষ। তবে ভূল করে তা বুঝার পরও সে ভূলের উপর অটল থাকলেই হয় বিপত্তি। একজন অল্পশিক্ষিত ক্ষুদে নাগরিক হয়ে আপনাকে জ্ঞান দেবার স্পর্ধা আমি করবোনা। তবে এতটুকু অবশ্যই বলবো, আমার আল্লাহ দয়াবান, ক্ষমাশীল। ভূল করে তওবা করলে তিনি ক্ষমা করে দেন। নাস্তিক মুরতাদদের পক্ষ নিয়ে আপনি দেশের আলেম ওলামা ও সাধারণ মানুষদের উপর যেই অত্যাচার করছেন, অবিলম্বে সেজন্য আল্লাহর দরবারে তওবা করে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। সময়ের একফোড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। সময় থাকতেই তওবা করুন। আল্লাহ বড়ই মেহেরবান, দয়ালু, ক্ষমাশীল।
বিষয়: বিবিধ
১০২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন