নামাজে একাগ্রতা

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৬:১০:২১ সন্ধ্যা

নামাজ যে আমাদের জীবনে কতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা। কিতাবে পড়েছি, মুসলমান হবার পর একজন মানুষ যে কাজটি দিয়ে সর্বপ্রথম ব্যবহারিক ভাবে তার মুসলমানিত্বের পরিচয় দেয় সেটা হলো তার নামাজ। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভটিই হলো নামাজ। ইচ্ছে করে নামাজ তরককারীর সাথে হাদীসের মর্মানুযায়ী মুসলমানদের জন্য কোন লেন দেন এমনকি বিবাহ শাদীর সম্পর্কও রচানো নিষেধ। শরীয়া আইন মতে একজন বেনামাজী মুসলমানকে তার নামায তরকের জন্য সাবধান করা হবে, তাতে ঠিক না হলে বন্দী করা হবে এমন কি তাতেও যদি সে নামাজ পাঠে মনোযোগী না হয়, তাহলে তার জন্য মৃত্যুদন্ডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তবে বেনামাজীদের হাশর কি হবে সে বিষয় নয়, আমরা নামাজীদের নামাজের অবস্থা পর্যবেক্ষণই আমার আজকের পোস্টের উদ্দেশ্য।

নামাজের সাথে আমাদের অনেকেই দিনের পর দিন যে বিমাতাসূলভ আচরণ করে চলছি, তা একবার ঠান্ডা মাথায় কল্পনা করলে ভবিষ্যত অন্ধকার বলেই মনে হয় আমাদের। আমাদের কারো বয়স, ৩০, কারো ৩৫, কারো বা ৪০, কারো বা ৫০ ছুঁই ছুঁই, আবার কেউ ৬০ পেরিয়ে ৬১তে পড়েছেন। অনেকে দশ বছর বয়স থেকেই নামাজে হাতে খড়ি নিয়েছেন, আবার কেউ একটু পিছিয়ে পড়েছেন দৌড়ে। কেউ হয়তঃ বাবা-মার আগ্রহে আরো আগেই নামাজে মন দিয়েছেন। আমিও মনে হয় দশ বছর বয়স হতেই নিয়মিত নামাজী হতে সচেষ্ট ছিলাম।

আজ যখন নীরবে বসে হিসেব করি, আমার বিগত প্রায় ৪০/৪৫ বছরের নামাজ দিয়ে আমি কতটুকু প্রভূর নিকটবর্তী হতে পেরেছি, কতটুকু তাঁকে রাজী করতে পেরেছি, কতটুকু নিজের আত্মার উন্নতি করতে পেরেছি, তখন অন্তরে খুব একটা ভরসা পাইনা, মুক্তিলাভে। ছোটকালে কবিতার বইতে মাঝি আর বাবুর মাঝে কথোপকথনে উঠে আসা বাবুর মতো নিজের জীবনের ষোল আনাই মনে হয় মিছে বলে প্রতীয়মান হয় তখন।

কথায় আছে, যে কাজ যতো উঁচু দরের বা যতো বেশী মূল্যবান, সে কাজটি সাধনে ততো বেশী বাধা বিপত্তি আসে। হাদীসের মর্মানুযায়ী একজন নামাজীকে নামাজ থেকে গাফেল রাখার জন্য শয়তান ও মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে যায়। শয়তান যে আমাদের নামাজে কতো বেশী বাধার পাহাড় দাঁড় করানোর চেষ্টা করে তা, একজন নামাজী নামাজে দাঁড়ানোর মূহুর্ত থেকেই আঁচ করতে পারে। নামাজে সূরা-ক্বেরাতে ভূল হওয়া, সূরার বাক্যসমূহের অর্থের দিক হতে মনোযোগকে বার বার ব্যাহত করা, রুকু সেজদায় গিয়ে তাছবীহগুলো ঠিক মতো পাঠ হলো কিনা বা দ্বিতীয় রাকাত শেষে বৈঠক না করে দাঁড়ায়ে গেলাম কিনা সে ব্যাপারে মনে সন্দেহ জাগানো, এসব ব্যাপারে মরদূদ শয়তান আমাদের মনে অনবরতঃ সন্দেহ সৃষ্টি করতে তৎপর থাকে। আবার দেখা যায় আমরা নামাজের ক্বেরাত পাঠকালে শয়তান আমাদের মনটাকে মূহুর্তেই সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে চলে যায় আমাদের অফিস আদালত কিংবা ব্যবসা বানিজ্যের হিসাব নিকাশের খাতায়, অথবা গতকাল কার সাথে কি লেনদেন করলাম, লেনদেনে ঠকলাম কি জিতলাম, আগামীকাল বসকে কি ভাবে ফেস্ করবো... অর্থাৎ একজন নামাজীর দেহটা তখন থাকে জায়নামাজে কিন্তু শয়তান মরদূদ অতি চতুরতার সাথে আমাদের মনটাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে চলে যায় বাহিরের জগতে, জায়নামাজের স্থান হতে দূরে, বহুদূরে। এভাবে শয়তান মানবের সাথে শত্রুতায় আল্লাহকে দেয়া তার শেষ প্রতিশ্রুতি পালনে চেষ্টার কোন ত্রুটি করে না। তাকে যখন মহান আল্লাহ তার অবাধ্যতার জন্য শাস্তিস্বরূপ বেহেশত হতে বের করে অভিশপ্ত আখ্যা দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দিলেন, তখন সে দম্ভভরে আল্লাহকে বলেছিল, 'আমি মানুষের সামনে থেকে আসবো, পেছন থেকে আসবো, তার উপর থেকে আসবো, ডান দিয়ে আসবো, বাম দিক থেকে আসবো এবং তাকে বিপথগামী করে ছাড়বো....", শয়তানের সে প্রতিজ্ঞার কথা যেন আমি আমার নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় বেশী বেশী উপলদ্ধি করি।

যাহোক, এটা হয়তঃ আমার একান্ত নিজের সমস্যা। সবার হয়তো এ সমস্যা নাও হতে পারে, বা হলেও তিনি বা তাঁরা সাধনার মাধ্যমে শয়তানকে তাঁদের জায়নামাজ হতে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তবে কেন জানি আমার মনে হয়, আমি এ ব্যাপারে নিজেকে সামলে নিতে এখনো ততটুকু সফল হতে পারি নি, যতোটুকু হওয়া একজন নিয়মিত নামাজীর জন্য এতোদিনে আবশ্যক ছিল। তবে, এটাও সত্যি যে, আমি আমার নামাজকে প্রভূর নিকট গ্রহনযোগ্য করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়মিত।

একজন নামাজী কিভাবে তার নামাজকে প্রভূর নিকট ক্ববুল করাতে সক্ষম হবেন, তার কিছু বর্ণনা আমরা কিতাব হতে বা রাসূলের (সাঃ) থেকে পাই। তবে আমরা নিজেরাও কিছু কিছু ফর্মূলা প্রয়োগ করতে পারি নামাজকে আল্লাহর নিকট গ্রহনযোগ্য করতে। আমি যে কয়টি ফর্মূলা এ ব্যাপারে প্রয়োগ করে থাকি তা এখন বলছিঃ

১) ধীরে সুস্থে নামাযের রুকুন গুলো যথোপোযুক্তভাবে আদায় করা;

২) ছোট ছোট সূরা যেগুলোর অর্থ জানি, সেগুলো বেশী বেশী ব্যবহার করা যাতে সূরা পাঠকালে অর্থের দিকে মনোযোগ দেয়া সহজ হয়;

৩) বিশেষ করে সূরা ফাতেহা পাঠকালে সেটাতে পূর্ণ মনোযোগ দেয়া, কারণ এই সূরার বিশেষত্ব, অর্থ এবং এর বিন্যাস এমন যে, যদি এটাতে মনোযোগটা পূর্ণ স্থিত করা যায় তাহলে মনে হবে যে নামাজের অর্ধেকটাই আদায় হয়ে গেছে, মনে প্রশান্তিও ফিল করা যায়। সূরায় প্রভূর প্রশংসা করার পর পর তাঁর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যের অঙ্গীকার এবং সবশেষে তাঁর নিকট সরল পথ প্রাপ্তির জন্য কাকুতি মিনতি সহকারে প্রার্থনা যেভাবে শিক্ষা দেয়া হয়েছে, তাতে আপনার মনে হবে যে ইবাদত এবং ইবাদত শেষে মানুষের কাম্য তথা প্রার্থনা সবটুকু ঐখানেই একত্রিত হয়েছে। নামাজ শেষে আর আলাদা করে প্রার্থনা করার প্রয়োজনও মনে হবে না তখন। এজন্যই তো সূরা ফাতিহাকে উম্মূল কোরআন বা কোরআনের মা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

৪) নামাজে দাঁড়িয়ে যদি ভাবেন যে এটাই হয়তঃ আপনার জীবনের শেষ নামাজ , এরপর হয়তঃ পরবর্তী নামাজ পাঠের সুযোগ নাও পেতে পারি, তাহলে ও নামাজে একাগ্রতা সৃষ্টিতে সহায়ক হয়(যেমন ফাঁসির আসামী তাকে দেয়া নামাজের শেষ সুযোগটিকে যেভাবে কাজে লাগায়)।

৫) নামাজে গিয়ে শুরুতেই যদি ভেবে নেই, বিগত ৩০/৪০ বছর যাবৎ কতো নামাজ পড়লাম, সেসব নামাজের ত্রুটি বিচ্যুতির কথা মনে করে নিজের মনে নিজেকে করুণা ও ধিক্কার দিয়ে, আজকের এই নামাজটি যদি এমন আজিজি এবং মনোযোগ সহকারে পাঠ করে প্রভূর নিকট ক্ববুল করিয়ে নিতে পারি, তাহলে তাঁর করুণায় হয়তঃ এই একটি নামাজই আমার মুক্তির জন্য পর্যাপ্ত হতে পারে, এই চিন্তাও নামাজটিকে খুশু ও খুযু সহকারে আদায়ে সহায়ক হতে পারে।

৬) নামাজে দাঁড়িয়ে ভাবি, আমি এ মূহুর্তে আমার সৃষ্টিকর্তার সামনে দাঁড়িয়েছি, যাঁর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দুনিয়ার যে কোন প্রশাসক, রাজাধিরাজ হতে কোটি গুন উপরে, এবং তাঁর সাথে আমি তাঁর শেখানো বাক্য দিয়ে সরাসরি কথোপকথনে লিপ্ত। আমি তাঁর কাছে প্রার্থনারত এবং তিনি আমার প্রতিটি উচ্চারিত শব্দের জবাব দিচ্ছেন, এই অবস্থা সৃষ্টি করতে পারাও একজন নামাজীর জন্য অতীব জরুরী। এমন কি ঐ নামাজের সময়টুকুতে যদি আপনি ভাবেন যে, আপনি এবং একমাত্র আপনিই এ মূহুর্তে দুনিয়ায় সবচাইতে ভাগ্যবান ব্যক্তি,(মহান আল্লাহর সাতে সরাসরি কথা বলছেন, তাই) তাহলেও আপনার সে চিন্তায় কোন ভূল কিংবা ভ্রান্তি নেই।

৭) নামাজে দাঁড়িয়ে ভাবুন যে, এখন এই মূহুর্তে আপনি যে কাজটি করছেন তার গুরুত্ব ও মর্যাদা আজকের কৃত অন্য সব কাজ হতে উপরে, আপনি যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন, সে স্থানটির মর্যাদা দুনিয়ার অন্যসব স্থানের চাইতেও উঁচুতে, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় রাজার মূল্যবান সিংহাসনের চাইতেও সে স্থানের দাম আল্লাহর নিকট বেশী, যে সময়টি আপনি অতিবাহিত করছেন, তা দুনিয়ার সেরা সময়ের অন্যতম, যার দরবারে আপনি হাতজোড় করছেন, তিনি এমন এক সত্ত্বা, যাঁর দয়া, করুণা, মহত্ত্ব, মর্যাদা এবং শ্রেষ্ঠত্ব দুনিয়ার তাবৎ সত্ত্বার চাইতে হাজার কোটি গুন শ্রেষ্ঠ এবং আপনার ঐ মূহুর্তের নামাজে দাঁড়ানোর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো সেই মহান প্রভূকে রাজী করানো, তাঁর দয়া, রহমত এবং মাগফেরাত লাভ করা, তাহলেও আপনি আপনার তখনকার আদায়কৃত নামাজে খুশু ও খুযু সৃষ্টিতে সফল হবেন, ইনশাআল্লাহ।

অনেক ভাই আছেন, যাঁরা তাঁদের নামাজের প্রতি নিষ্ঠায় কম যান না, কিন্তু দুনিয়ার ব্যবহারিক জীবনে অনেক দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকেন, কিংবা তাঁরা তাঁদের রোজগারের পয়সাটি হালাল কিনা সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন না, অথচ একটি প্রসিদ্ধ হাদিস মতে আল্লাহর নিকট নামাজকে ক্ববুল করানোর একটি প্রধান শর্ত হলো তার রুজি হালাল হতে হবে অর্থাৎ তিনি যে খাদ্য গ্রহন করছেন, যে কাপড়টি পরিধান করছেন তা হালাল রুজি দ্বারা অর্জনকৃত হতে হবে, তা না হলে আল্লাহ তার নামাজ তার মূখের উপর ছুঁড়ে মারবেন।

এই ব্লগে অনেক অনেক গুনী এবং আল্লাহভীরু মানব মানবী আছেন, যাঁরা তাঁদের নামাজের ব্যাপারে অতি যত্নশীল এবং সফল। আশা করবো, তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতা এই নগন্য মানুষটির পোস্টে আমাদের সবার জন্য শেয়ার করে দুনিয়া জাহানের বরকত এবং সফলতা লাভে ধন্য হবেন, আমীন।

বিষয়: বিবিধ

২২৮১ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

176359
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২০
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৪১
129695
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
176364
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ব্যতিক্রম ধর্মী লিখা লিখলেন সম্ভবত আমার দেখা প্রথম। যাক আনন্দ লাগছে, পয়েন্ট গুলো খুবই মূল্যবান। ইনশায়াল্লাহ মানার চেষ্টা করব। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। আরো বেশী বেশী করে লিখবেন বলে আশা করি। অনেক ধন্যবাদ, আল্লাহ কবুল করুন। আমীন।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৪৪
129698
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আমীন, ছুম্মা আমীন। আপনাদের মতো অগ্রসর কর্মী কবে ছিলাম যে আপনাদের মতো করে লিখতে পারবো? দোয়াপ্রার্থী। আর আপনিও দেখছি লিখার হার কমিয়ে দিয়েছেন। কারণটা কি?এভাবে আমাদের বঞ্চিত করছেন কেন?
176374
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : সুন্দর পরামর্শ। কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৪৫
129699
ইবনে হাসেম লিখেছেন : চেষ্টা আর সাধনাই তো বিশ্বাসীর মূলধন। ধন্যবাদ পাঠ করা ও মন্তব্যের জন্য।
176375
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৯
আবু সাইফ লিখেছেন : স্মরণ করিয়ে দিলেন তো,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ .

প্রাত্যহিক নামাজ অনেকটা দায়সারা গোছের-
কর্মব্যস্ততা ও সময়ের হিসাবে টানাটানি- এভাবেই চলে যায়

তবে বিশেষ প্রয়োজনে বিশেষ সময়ে একাগ্রচিত্ত হওয়ার যে স্বাদ দার বর্ণনা অসম্ভব

আল্লাহতায়ালা বলেছেন-
"ওয়াস্তাইনু বিস্সবরি ওয়াস সলাত.."

ঠেকায় পড়ে সাহায্য প্রার্থনার এমন সলাতের পর প্রায় তাতক্ষণিক সাড়া পাওয়ার অভিজ্ঞতা [নিজের/অন্যদের] বেশুমার..

তবে আমাদের তরুণ-যুবকদের সাধারণতঃ বয়স বিশের ঘর পেরুনোর আগে অধিকাংশেরই গাফলতি কাটেনা- যদিও শৈশব থেকে অভ্যস্ত করানো হয়! কারো কারো ৩০ পেরিয়ে যায়!

পরে এরাই নামাজী শুধু নয়- সার্বিক দিকেই খুব ভালো মানের মানুষ হয়ে গেছে!

আসলে আমাদের সমাজের স্রোতটা উল্টোমুখী- তাই ওদের খুব বেশী ভর্তসনা করা যায় না!!
{এটা আমার অভিমত/অভিজ্ঞতা}

শরীয়াহর নির্দেশের ব্যাপারে কথা বলা ধৃষ্টতা!
আমি যেভাবে বুঝি তাতে নিচের উদ্ধৃতাংশের বিধান কার্যকর করার অনেক পূর্বশর্ত রয়েছে, যেগুলো ছাড়া এ বিধানের প্রয়োগ তো দূরের কথা, তর্কের খাতিরেও শক্ত অবস্থান নেয়া সঠিক কিনা তা বিবেচনা ও গবেষণার দাবী রাখে!

আল্লাহতায়ালা ক্ষমা করুন, আমি নামাজের গাফলতির পক্ষে ওকালতি করছিনা- বরং সামাজিক-সাংস্কৃতিক অধোপতনের কুফলের মাত্রাটা বুঝাতে চেয়েছি!


আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাছীরান ...
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫১
129707
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আপনার মতো বিদগ্ধজনের মন্তব্য এবং পর্যালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। শরীয়াহর নির্দেষ সম্পর্কিত কথাগুলো যা বর্ণিত হয়েছে তাতে কোন ভূল থাকলে আল্লাহ ক্ষমা করুন। তবে এটা ঠিক যে বর্তমান সময়ে শরীয়াহর এ নির্দেশ প্রয়োগে আলিমদের মাঝে মতবিরোধ অবশ্যই আছে। ঠিক যেমন, ইসলামী শাসন কায়েম না থাকলে সেখানে শরীয়ার নির্দেশ মতো চোরের হাত কাটাও যাবেনা বলে বেশীর ভাগ আলিম মনে করেন।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুন, আমাদের ভূল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করুন, আমিন।
176376
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:০০
আবু সাইফ লিখেছেন : ইচ্ছে করে নামাজ তরককারীর সাথে হাদীসের মর্মানুযায়ী মুসলমানদের জন্য কোন লেন দেন এমনকি বিবাহ শাদীর সম্পর্কও রচানো নিষেধ। শরীয়া আইন মতে একজন বেনামাজী মুসলমানকে তার নামায তরকের জন্য সাবধান করা হবে, তাতে ঠিক না হলে বন্দী করা হবে এমন কি তাতেও যদি সে নামাজ পাঠে মনোযোগী না হয়, তাহলে তার জন্য মৃত্যুদন্ডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
176432
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২৬
পুস্পিতা লিখেছেন : নামাজে দাঁড়ালে যে সমস্যাগুলো আপনি ফেইস করেন তা বাস্তবে সবারই কমন সমস্যা। তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে দুই নামাজে এই ধরনের অমনোযোগিতা অনেক কম। ফজর ও তাহাজ্জুদ। এই দুই নামাজে একাগ্রতা কেমন জানি অটো চলে আসে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫৪
129709
ইবনে হাসেম লিখেছেন : নগন্য এ লিখাটি পাঠ ও মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট এর অভাব ফিল করছি বরাবর। কখন আবার নিয়মিত হচ্ছেন? আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুন, আমিন।
176492
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:১৬
শেখের পোলা লিখেছেন : মূল্যবান আমাদের বাইরে ভিতরে সব খানে শয়তানের বাসা তাই একাগ্রতা আনতে পারিনা ধন্যবাদ৷
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫৬
129711
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ শেখ সাহেবের গুনধর পোলা। আপনার পোস্ট কোথায়?
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:৪৩
129714
শেখের পোলা লিখেছেন : কি ভাই, কোথায় খোঁচা মারলেন৷ আমার বাপও শেখ ছিল তবে মুজিব বা তাদের আশে পাশেও নয়৷
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:১৯
129771
ইবনে হাসেম লিখেছেন : না ভাই খোঁচা দিলাম কোথায়? জাস্ট একটু সন্ধি বিচ্ছেদ করে লিখলাম। আপনি আমার প্রিয়জনদের মাঝে সামনের কাতারের একজন ভাই। মাইন্ড খাইয়েন না প্লিজ
176681
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:২৯
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। যাজাকাল্লাহু খাইরান Praying Praying Praying
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৭
129849
ইবনে হাসেম লিখেছেন : সত্যি বুঝি? আপনার মতো তো পারি না। উৎসাহ দানের জন্য ধন্যবাদ আপনাকেও।
176823
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৩০
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : নামাজে দাঁড়িয়ে মনোযোগ ঠিক রাখাটা সবারই মনে হয় কমন সমস্যা। তবে সূরার উচ্চারণ এবং অর্থের দিকে মনোযোগ দিলে এই সমস্যা অনেকটা এড়ানো যায়। চমৎকার পোস্টের জন্য যাজাকাল্লাহু Good Luck Praying Good Luck
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১০
130133
ইবনে হাসেম লিখেছেন : দুয়া করবেন ভাইজান, যাতে এমনি করে লিখায় হাত আসে, নিজের সাথে সাথে পাঠকদেরও কিছু লাভ হয়....
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২১
130222
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : স্যরি ভাইয়া, আমি বোন। আপনিও আমার জন্য দোয়া করবেন Happy Good Luck
১০
176926
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : যাহোক, এটা হয়তঃ আমার একান্ত নিজের সমস্যা। সবার হয়তো এ সমস্যা নাও হতে পারে, বা হলেও তিনি বা তাঁরা সাধনার মাধ্যমে শয়তানকে তাঁদের জায়নামাজ হতে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। - মনে কষ্ট পাইলাম ভাইজান, আপনি কি করে ভাবলেন শয়তান আপনার চেয়ে আমাদের কম পছন্দ করে কিংবা আমরা তার কম অনুসরন করি? তার বয়স এবং অভিজ্ঞতার তুলনায় তো আমরা শিশুতুল্যও নই। সুতরাং, সে জানে লেগে থাকলে আল্টিমেটলি আমরা সবাই তার ঝুড়িতেই যাব। সুতরাং, বাঁচার একটাই উপায় আছে। তাকে প্রতিহত করার চেষ্টায় লেগে থাকা, প্রতি মূহূর্তে নিজেকে সচেতন ও সংশোধন করা এবং অনবরত দু’আ পড়া – ‘রাব্বানা লা তুজিগ ক্কুলুবানা...’। দু’আ করবেন Praying Praying Praying Praying
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৩
130129
ইবনে হাসেম লিখেছেন : "সুতরাং, বাঁচার একটাই উপায় আছে। তাকে প্রতিহত করার চেষ্টায় লেগে থাকা, প্রতি মূহূর্তে নিজেকে সচেতন ও সংশোধন করা এবং অনবরত দু’আ পড়া – ‘রাব্বানা লা তুজিগ ক্কুলুবানা...’।"
সাদামাটা এই পোস্টটিকে আপনার এই অমূল্য মন্তব্যখানি যেন তার কপালে টিপ পরিয়ে দিল। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান। আপা, আমাদের জন্যও দুয়া করবেন, বেশী বেশী। সময়গুলো মনে হয় একটু কঠিনই যাচ্ছে, কারণটা হয়তঃ আপনাকে খুলে বলতে হবেনা। গড মাদারের লম্বা হাতের কেরামতি এখানেও.....
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:০৭
130405
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : Yawn Yawn Yawn Praying Praying Praying
১১
182063
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৭
সজল আহমেদ লিখেছেন : সুন্দর লেখাটির জন্য আন্তরিক মুবারকবাদ।যাযাকাল্লাহু খাইরান।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৭
134812
ইবনে হাসেম লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও, শুভ কামনার জন্য। আশা করি দেখা হবে আবার
১২
196057
২২ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:০৫
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : রাসূল (সাঃ) প্রদর্শিত পন্থায় নামাজ আদায়ের নির্দেশ থাকলেও আমরা মাযহাব এবং পীরক গুরুত্ব বেশী দিয়ে থাকি নামাজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায়। তার উপর খামখেয়ালী তো আছেই। নামাজে দাঁড়ালেই যেনো রাজ্যের সমস্ত চিন্তা মাথায় এসে জড়ো হয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সঠিক পন্থায় এবং একাগ্র চিত্তে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।
২২ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:১১
146499
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আমিন, ছুম্মা আমিন।
ভালো আছেন ভাই? দেশে মনে হয় বেশ কয়েকবার বেড়ায়ে গেলেন স্বল্প সময়ে...
১৩
196646
২৩ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:০৫
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : গুরুকে ধন্যবাদ নামাজের একাগ্রতা নিয়ে লেখার জন্য। শিখলাম অনেক কিছু। ভাল লাগল।
২৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০২
147139
ইবনে হাসেম লিখেছেন : গুরু তো ভাই আপনি, যেভাবে আবার ব্লগ মাতাইয়া দিলেন, আমার খুব হিংসে হচ্ছে কিন্তু। আমি নিয়মিত না হলেও এবার আপনার ভাবীকে নিয়মিত পাঠিকা করে দিয়েছে, তাই কাহিনীর প্রায় সবটুকুই উনার মূখেই আগে জেনে যাচ্ছি্।

১৩ নম্বরটি প্রকাশিত হলো?
১৪
197098
২৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৮
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : ধন্যবাদ। এ ধরনের পাঠকদের কারণেই আমি শক্তি পাচ্ছি। বই বের হলে ভাবীর নামেও উতসর্গ করবো কইলাম। কারন বোদ্ধা পাঠকদের স্মরণ রাখা উচিত।
০২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৩:২৬
151155
ইবনে হাসেম লিখেছেন : বস্, কত নম্বরে গেলেন? সময়ের সাথে দৌড়ে বার বার ফেল মারছি...
১৫
199320
২৮ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
আহমদ মুসা লিখেছেন : প্রথমেই আমি নিজের উপর নিজেই ধিক্কার দিচ্ছি- এতো সুন্দর অসাধারণ একটি পোষ্ট দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় আগে ব্লগে পোস্ট করলেও আমার পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আপনার প্রতি অত্যন্ত বাস্তবধর্মী উপকারী একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
আমরা নামাজের ক্বেরাত পাঠকালে শয়তান আমাদের মনটাকে মূহুর্তেই সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে চলে যায় আমাদের অফিস আদালত কিংবা ব্যবসা বানিজ্যের হিসাব নিকাশের খাতায়, অথবা গতকাল কার সাথে কি লেনদেন করলাম, লেনদেনে ঠকলাম কি জিতলাম, আগামীকাল বসকে কি ভাবে ফেস্ করবো... অর্থাৎ একজন নামাজীর দেহটা তখন থাকে জায়নামাজে কিন্তু শয়তান মরদূদ অতি চতুরতার সাথে আমাদের মনটাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে চলে যায় বাহিরের জগতে, জায়নামাজের স্থান হতে দূরে, বহুদূরে।

একদম খাটি কথাই বলেছেন। আমার মনে হয় বেশীর ভাগ নামাজীর এটি একটি কমন সমস্যা। আমি মাঝে মধ্যে ভাবি এ একটি বিষয়ই যদি গভীরভাবে চিন্তা করি তবে মহান আল্লাহ যে একজন আছেন তার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়। শয়তানও যে একটি সক্রিয় সত্বা মানুষের বাহ্যিক দৃশ্যমান শারিরিক অভয়ব এবং অদৃশ্য সত্বা তথা চিন্তা ও মমন জগতে অনুপ্রবেশ করতে পারে তার জলন্ত প্রমাণ হচ্ছে যখন আমরা নামাজে দাড়ায়। ভোর বেলা যখন আরামের বিচনাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া সত্বেও আজান শুনার সাথে সাথে কোন এক অদৃশ্য সত্বা এসে চোখের ঘুম এবং বিচনাকে আরো আরামদায়ক ও মজাদার হিসেবে উপস্থাপন করে। এ অপকর্মটা যে শয়তানের কাজ তা একজন আল্লাহভীরু মানুষের বুঝার বাকী থাকে না। আর তখনই সে শয়তানের অপকৌশলে চুনকালি দিয়ে, তার ওসওসাকে থোড়াই কেয়ার করে চোখের ঘুম এবং আরামের শয্য ত্যাগ করে মহান রবের ডাকে সাড়া দিতে মসজিদ মুখে রাওনা দেয়। কিন্তু শয়তান তো তার কর্মসূচী বন্ধ রাখার পাত্র নন! সেও মুমিন বান্দাহটিকে ধোকায় ফেলার জন্য নামাজে মনোযোগরত ব্যক্তিকে মিসগাইড করে অন্য মনস্ক করতে চেষ্টার কমতি করে না। শয়তান তখন নামাজীর অন্তরে গ্রোথিত করে দেয় নামাজের জন্য নির্ধারিত সময় ছাড়া বাকী সময়টাতে দুনিয়াবী কাজ কর্মের যাবতীয় হিসাব নিকাশের সবগুলো কষার যেন নামাজে দাড়ালেই উপযুক্ত সময়!
আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে অবুভব করতে পেরেছি নামাজে পূর্ণাঙ্গ মনোযোগ দেয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে ধীরে সুস্থে নামাজের ফরজ/ওয়াজিব আহকামগুলো আনজাম দেয়া এবং পবিত্র কোরআনকে কোরআনের দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী তেলাওয়াত করতে চেষ্ট করা। অর্থাৎ সুরা মোজ্জাম্মিলের সেই আয়াতের আলোকে وَرَتِّلِ القُرءانَ تَرتيلًا (এবং কোরআনকে আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে)
যদি আমরা কোরআন তেলাওয়াতের নির্দেশনাটুকু কোরআনের ভাষায় পালন করার চেষ্টা করি তবে অনেকাংশেই নামাজে মনোযোগী হতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:০০
149121
আহমদ মুসা লিখেছেন : আমার প্রোফাইলে দেয়া ছবিটা হচ্ছে আমার বড় মেয়ের বয়স যখন দু'বছর ছিল তখন তোলা ছবি। বর্তমানে তার বয়স আট বছর। ফেইসবুকের প্রোফাইলে ব্যবহৃত ছবিটি হচ্ছে আমার তৃতীয় মেয়ের ছবি। আমার মেয়েদের নিয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম।
এখানে লিংক দেয়া আছে
০২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৩:২৫
151154
ইবনে হাসেম লিখেছেন : সালাম। আপনার সূদীর্ঘ সুন্দর মন্তব্যের জন্য অস্যংখ ধন্যবাদ। আল্লাহ সব নামাজীদের নামাজকে মহানবীর (সাঃ) এর পঠিত নামাজের অনূরূপ করে পাঠের তৌফিক দিন এই দোয়া সব সময়। আপনাকে ও আপনার সন্তানদেরকে আল্লাহ তাঁর দ্বীনের জন্য ক্ববুল করুন, আমিন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File