বাংলার মসনদের দুই ভবিষ্যত কর্ণধার

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৮:৫১:৫১ সকাল

বাংলার মসনদের সম্ভাব্য দুই ভবিষ্যত কর্ণধারদের নিয়ে আজকের লিখাটার শুরু করবো বলে ভাবছি। জানিনা, নিজের সীমিত জ্ঞানের দ্বারা সেই প্রচেষ্টাকে কতটুকু সফল করতে পারবো, বা কতটুকু তা বস্তুনিষ্ঠ হবে। সীমিত জ্ঞান নিয়ে কোন কিছুর উপর আলোকপাত করতে যাওয়া নীতিগতভাবে যদিও ঠিক নয় জানি, তথাপি যেহেতু ব্যাপারটি দেশের চলমান রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই কিছু একটা বলে মনটাকে হালকা করার বাসনা থেকে এই প্রচেষ্টা।

আমাদের আলোচনার কেন্দ্রীয় চরিত্রদ্বয় যে জিয়া-তনয় তারেক জিয়া এবং হাসিনা তনয় জয়, তাতো পাঠকরা এতক্ষণে অনুমান করেই নিয়েছেন। প্রথমেই শুরু করছি আমার নিকট দেশের এই দুজন ভবিষ্যত দিকপালের ব্যক্তিগত ইমেজ এর ছায়াকল্প নিয়ে। তবে বলে রাখি, এরা দুজনের কেউই আমার আইডল কিংবা অনুকরণীয় কেউ নন। যেহেতু দেশের ভবিষ্যত রাজনীতিতে তাঁরা কম-বেশী সবসময় কেন্দ্রীয় আলোচনার বিন্দু হয়ে থাকবেন, সেই বিবেচনাতেই আমি আমার লিখার সূচনা করছি।

তারেক জিয়া- তার আচরণ এবং কথাবার্তায় আমি অনেকটা তার বাবা জেনারেল জিয়ার ভাবমূর্তি কিছুটা অনুভব করে থাকি। জেনারেল জিয়ার দলের কেউ না হয়েও তাঁর খাল কাটা কর্মসূচীর মতো সৃষ্টিশীল উন্নয়নমূলক অভিনব কর্ম দ্বারা তিনি দেশের গরীব দুঃখী সবার মন যেভাবে জয় করে নিয়েছিলেন, যার প্রতিফলন সেদিন আমি তার মাণিক মিয়া এভিনিউতে জানাজা পড়তে আসা লাখো জনতার উপস্থিতিতে টের পেয়েছিলাম, এই সত্যকেতো অস্বীকার করতে পারবো না। তাই তারেক জিয়া যখন কোন সভাতে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন, তখন তাতে আমি যেন তার মরহুম বাবার কন্ঠেরই প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। বাবার মতো আর্মির কেউ না হয়েও তার মতো আর্মি ছাঁটের খাটো চুল যেন তাকে তার বাবার ভাবমূর্তিতে আরো খানিকটা প্রতিষ্ঠা এনে দিয়েছে। নীতি নৈতিকতার দিক থেকেও তাঁকে ক্লীন ইমেজেরই মনে হয়। তার ছোট ভাইয়ের মতো মাদকাসক্তির কথা তার বেলায় কখনো কোন রিপোর্টে পাঠ করেছি বলে মনে পড়ছে না। বৈবাহিক সম্পর্কও গড়েছেন এমন এক পরিবারের মেয়ের সাথে, যাদের সম্ভ্রান্ত, উচ্চ মর্যাদাশীল হওয়া এবং ব্যাকগ্রাউন্ড সম্বন্ধে দেশের দল-মত-নির্বিশেষে কারো পক্ষ হতে কখনো কোন আঙ্গুল উঠেছে বা উঠবে এমনটি ভাবার অবকাশ নেই। আর শিক্ষাদীক্ষায় তিনি যেমন, তাঁর স্ত্রী মিসেস জোবায়াদাও তেমনি অগ্রগামী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিই আছে তাঁদের উভয়ের নিকট। তাছাড়া শুনেছি বিগত ৫ বছরের নির্বাসনকালে জনাব তারেক জিয়া কোন একটি বিষয় নিয়ে সেখানে তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে হাওয়া ভবনের ক্ষমতা ভোগের সময়কালে তার বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের যেই অভিযোগ সরকার কর্তৃক আনা হয়েছে, আজ পর্যন্ত তার প্রমাণ বা আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে অভিযুক্ত করে আদালত কর্তৃক শাস্তি প্রদানে সরকার আজ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। অর্থাৎ সরকার যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি এনেছে, তা যে তাদের অন্য আরো দশ বিশটি অভিযোগের মতোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল সাধারণ্যে তাই প্রমাণিত হতে চলেছে।

অপরদিকে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকার যে তারেক জিয়ার উপর অমানুষিক ও অমানবিক অত্যাচার করে তাকে পঙ্গুপ্রায় করে ফেলেছে, তার সেই করুণ অবস্থার পর তার প্রতি সাধারণ জনগনের যেই অভিযোগ ছিল রাস্ট্রূীয় তহবিলের অন্যায় তছরূপের ব্যাপারে, সেটিও ধীরে ধীরে তাদের মন হতে উবে গিয়েছে, অন্ততঃ আমার তাই মনে হচ্ছে। অতঃপর বাংলাদেশের আগামী কর্ণধার হিসেবে তার আসন যে অনেকটা কন্টকমুক্ত এবং ফুল বিছানো, তা অনুমান করতে কষ্ট হয় না।

সজীব ওয়াজেদ জয় - তার নাম শুনতেই প্রথম যে চিত্রটি আমার কিংবা সাধারণ মানুষের মনে ভেসে আসে তা হলো, 'হি ইজ অ্যা কমপ্লিট প্লেবয়'। এই কাঁচা বয়সেই তিন তিনটে নারীর পানি গ্রহণ করে ফেলেছে, তাও দুটিই বিদেশীনী। ভারতে পাঠগ্রহণ কালে নাকি এক শিখ যুবতীর প্রেমে পড়ে তাকে বিয়েও করেন, কিন্তু, তার মা নাকি সেই বিয়ে মেনে নেন নি, সেজন্য পরে ছাড়াছাড়ি। আর আমেরিকান বিবি ক্রিস্টিনার ব্যপারেও বাজারে আছে নানা কথার ছড়াছড়ি। আমেরিকায় প্রবাসকালে মাতাল হয়ে লিমিটহীন গতিতে গাড়ি চালানোর দায়ে কয়েকবার হাজতবাস করতে হয়েছে। আর পদ্মা সেতুর বিগ স্ক্যান্ডালের বিগ নায়ক তো এখন জয়কেই গণ্য করা হয়ে থাকে। জয়ের এসব আনইথিকাল কাজকর্মের জন্য ক্রিস্টিনার সাথে তার চলছে ভীষনরকমের মন কষাকষি। ক্রিস্টিনা নাকি তালাকের ব্যাপারেও আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছে।

বাজারে এই কথাও চাউর হয়ে আছে যে আমেরিকা ও কানাডায় পদ্মাসেতু কেলেঙ্কারীর ব্যাপারে জয়ের সরাসরি জড়িয়ে থাকার ব্যাপারে ইনভেস্টিগশন হতে গা বাঁচাতেই এখন জয় ও পুতুল দুজনেই দেশে এসে মায়ের আঁচলের নীচে আশ্রয় গ্রহন করে আছে। এই জয়-ই ৫ বছর আগে আমেরিকান এক সেনাকর্মকর্তার সাথে মিলে সেখানকার এক পত্রিকায় বাংলাদেশের আর্মি এবং ইসলাম সম্পর্কে এমন বিরূপ সমালোচনা করেছিল, (আর্মিতে নাকি ইসলামী চেতনা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, কারণ যারা রিক্রুট হচ্ছে তারা মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাইন্ড হতে আসছে, আর দেশে বোরকাধারীর সংখ্যা কেবল বাড়ছে) যাতে সাধারণ মানুষ হতে নিয়ে দেশের বিদগ্ধ মহলেও রয়েছে তার সম্পর্কে বিশাল এক নেতিবাচক ধারণা।

বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমনভাবে সে নাক গলাচ্ছে যে, সেটাকেও দেশের মানুষ নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে। এইতো দুদিন আগেই সে তিনদিনের মধ্যে দেশবাসীকে কি এক বিশাল চমক দেখাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মসজিদে জুম্মা পড়তে গিয়ে কর্মীদের নাকি বলেছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করতে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতির সে যে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ফেলেছেন। এদিকে অন্য এক স্থানে বক্তৃতাকালে বলেছে, মাদ্রাসা কমিয়ে দেশে স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে হবে, তাহলে দেশে শান্তি আসবে......।

পাঠক পাঠিকাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম, তাঁরা এমন এক ব্যক্তিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন।

বিষয়: বিবিধ

১২৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File